শাহ আবদুল করিমের ছেলেবেলা কেটেছিল দারিদ্রে।
সুনামগঞ্জের হাওরবাওর অঞ্চলে জন্ম। বাড়ির পাশে ঘাসে ছাওয়া মাঠ নেমে গেছে বিস্তীর্ণ পানির দিকে। গরু নিয়ে যেতে হত মাঠে সাত সকালে। তারপর ঘন্টার পর কাটত মাঠে। একা। নির্জনে। তখন তন্ময় হয়ে কি ভাবত বালক করিম?
অনেক অনেক পরে একটি গান লিখেছিলেন করিম-
বন্ধু মায়া লাগাইছে
পিরিতি শিখাইছে;
দেওয়ানা বানাইছে
কী যাদু করিয়া বন্ধু মায়া লাগাইছে ...
বাংলাদেশজুড়ে তুমুল জনপ্রিয় একটি গান।
কিন্তু আমি অন্যকথা ভাবি।
শাহ আবদুল করিমের একটিই পুত্রসন্তান। নূর জালাল। স্ত্রী আবতাবুননেসা। করিম নাকি সোহাগ করে ডাকতেন সরলা।
মায়া লাগাইছে গানটি কি সরলাকে নিয়ে? এমন ভাবাইতো স্বাভাবিক। স্ত্রীকে ভালোবাসতেন। শ্রদ্ধা করতেন। একবার বলেছিলেন, আমার স্ত্রী আমার মুর্শিদ।
গানটি শাহ আবদুল করিমের স্ত্রী সরলাকে নিয়েই হবে।
তারপরও আমি ভাবি অন্যরকম।
শাহ আবদুল করিম একজন বাউল । যেমন রবীন্দ্রনাথ। রুমী। হাফিজ। ওমর খৈয়াম। এঁদের অনেক গান-কবিতায় নাকি ঈশ্বর ও প্রেমিকা একাকার হয়ে রয়েছে।
করিমের এই গানটিতেও কি?
এই গানটি তা হলে কাকে নিয়ে?
ছেলেবেলায় গরু নিয়ে মাঠে যেতে হত। ঘন্টার পর কাটত মাঠে। একা। নির্জনে।
তখন তন্ময় হয়ে কি ভাবত বালক করিম?
গানটির আরও দুটো চরণ এরকম-
বসে ভাবি নিরালায়,
আগে তো জানি না বন্ধুর পিরিতের জ্বালা
নিরালায় কোথায় বসেছিল করিম?
সেই হাওরবাওরের পাশের মাঠে?
কি দেখেছিলেন করিম?
বালক বয়েসে?
যা কে দেখেছিল- সেই কি পরে গানে উঠে এসেছে প্রেমিকা রুপে?
কে বলতে পারে!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:৫০