somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নোংরা রাজনীতি

২৭ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবার একত্রিত হয়েছে হায়েনার দল। ভাবতেই অবাক লাগে, যারা রাজপথে পিটিয়ে মানুষ মারল, যারা নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেবার জন্য একটি কাকতাড়ুয়াকে নির্বাচন কমিশনার পদে বসিয়েছিল, যারা জনগনের ইচ্ছাকে গলা টিপে হত্যা করতে নিজেদের মত করে সাজিয়েছিল প্রশাসন তাদেরকে আবার ক্ষমতায় বসানোর জন্য আমরা মরিয়া হয়ে উঠেছি। কথাটা আসলেই সত্যি যে, মুর্খের দেশে গনতন্ত্র অচল। সচেতন প্রতিটা নাগরিকই স্বীকার করবেন আমারদের দেশের রাজনীতি এককেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছে আর সেটা হয়েছে দুটো দলকে কেন্দ্র করে। যারা রাজনীতিকে নিজেদের আখের গোছানোর হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছে। দুটো প্রধান দলই নির্বাচনে জয়লাভ করে জনগনের কথা বেমালুম ভুলে গেছে। জনগনের প্রতিনিধি বিধায়ক হিসাবে তারা গুরুত্বপূর্ন পদে বসিয়েছে লুৎফর রহমান বাবরের মত ব্যক্তিকে, আসলে কার কথা বলব, যে দেশের প্রধান খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ২০ কোটি টাকা ঘুষ নেবার মত ঘটনার সাথে জড়িত থাকে তাদের কি চরিত্র বলে কিছু আছে? আর তারা এসব করেছে শুধুমাত্র ব্যক্তিস্বার্থকে প্রধান্য দিতে, নিজের আখের গোছাতে! অন্য দিকে নির্বচিত হয়ে ব্যক্তিগত কারনে ৬০ মাসের মধ্যে দীর্ঘ ১৩ মাস বিদেশে কাটিয়েছেন আমাদেরই হতভাগা দেশের প্রধানমন্ত্রি! যারা নিজ দলীয় নেতার ধর্ষনে সেঞ্চুরিয়ান ছেলেকে শাস্তি না দিয়ে পুরস্কৃত করে বিদেশে পাঠিয়ে দিতে পারে তাদের কি আসলে দেশপ্রেম বা চরিত্র বলে কিছু আছে? (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা)। সত্যিই সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ!!

আসলে বলে শেষ করা যাবেনা তাদের এই কুর্কীর্তির কথা। কিন্তু বেহায়ার মত তারাই বড় গলায় দেশের উন্নতির কথা বলে, দেশের মানুষের মঙ্গলের কথা বলে আসলে কি জানেন চোরের মায়ের বড় গলা। এদের অবস্থা হয়েছে তাই, এদের গলা বড় না হলে চলবে কেন? গাড়ি চোর ছেলের পিতা দলের মহাসচিব যিনি প্রতিনিয়ত টিভি, রেডিওতে দেশের জনগনের মঙ্গলের কথা বলে, গনতন্ত্রের কথা বলছেন, গলা ফাটাচ্ছেন একবারও কি তিনি ভেবে দেখেছেন নিজের ঘড় সামলাতে পারেন না তিনি কেমন করে জনগন সামলাবেন? একটু কি লজ্জাবোধ উনার মধ্যে আছে, যদি থাকত তাহলে অন্তত এমন দায়িত্ব তিনি নিতেন না। অবশ্য তার ছেলেতো আর শিধেল চোর নয়, গাড়ি চোর! এমন একজনকে মহাসচিব পদে কিভাবে একটি দল দায়িত্ব দিতে পারে?

যদিও পুরানো কথা তবুও মনে করিয়ে দিচ্ছি, মনে পড়ে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা? জাল পড়ে লজ্জা নিবারনের একটা ছবি সারা পৃথিবীতে আলোড়ন তুলেছিল, সেই যে, মেয়েটা, কি যেন নাম, হ্যা বাসন্তি সেই মেয়েটা আজ অবধি কিন্তু আধা পাগল, যার বাড়িতে আজ অবধি কাচা ঘড়! অথচ তার আধা উলঙ্গ ছবি দেখিয়ে তৎকালীন সরকার বিদেশ থেকে প্রচুর সাহায্য এনেছে কিন্তু সেই মেয়েটার কোন লাভ হয়নি, পরিবর্তন হয়নি তার ভাগ্যের! কি মনে হয় জানেন, ঐ সময় যারা ক্ষমতায় ছিল তারাতো দেশ স্বাধীন করার দাবীদার তাই হয়তো যুদ্ধের ক্ষতিপুরন হিসাবে যা পেয়েছে নিজের মনে করে রেখে দিয়েছিল, তাইনা? তানা হলে সরকার প্রধান কি করে আক্ষেপ করে বলে যে, সাড়ে সাত কোটি কম্বলের মধ্যে আমার ভাগেরটা গেল কোথায়!
সেই থেকে যে ট্রেডিশন শুরু হল তা থেকে কেউ বের হয়ে আসতে পারে নাই। কেউ প্রয়াত বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে, কেউ প্রয়াত স্বামীর! দু:খজনক কি জানেন? তাদের এত স্বপ্ন তাদের তিরোধানের পরই বের হতে শুরু হয়েছে, সম্ভবত গোপন কোন ডাইরীতে লিপিবদ্ধ ছিল! আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাদের জীবন হয়েছে তাদের হাতের পুতুল, আমরা হয়েছি গিনিপিগ! ইচ্ছে মত ব্যবহার করা হচ্ছে সহজ সরল নিরীহ জনগনকে, মারা হচ্ছে গুলি করে, বাসে পুড়িয়ে, অথবা তাদের চেলাদের নতুন নতুন স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে বলির পাঠা হতে হচ্ছে আমাদের। অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে, নেতাদের কথাই ধ্র“ব সত্য তাদের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত! অবশ্য তার কারনও আছে! তারাতো আর আমাদের বিচার বুদ্ধি প্রদত্ত্ব ভোট পাননা, তারা ভোট কিনে নেন। পাঠক হয়তো ইতোমধ্যেই আমার ধৃষ্টতার জন্য ক্ষেপে গিয়ে আমাকে নিয়ে কড়া কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন কিন্তু একটু ভেবে দেখুনতো আমরা ক'জন নাগরিক নিজের বুদ্ধি বিবেচনা করে ভোট দিয়ে থাকি? খুব কম ভোটার সম্পুর্ন নিজস্ব বিবেচনা থেকে ভোট দেন। শুধুমাত্র শিক্ষিত ভোটার বাদে মফস্বল শহরের, গ্রামের নাগরিক বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই মাথায় হাত বুলিয়ে দেবার বদলে, এক কাপ চা, পাচ কেজি চাল, পাচ টাকা থেকে পাচশত/একহাজার টাকার বিনিময়েই তাদের ভোট বিক্রি করে থাকেন। আর তাই যেহেতু নেতারা ভোট কিনেই নেয় তাই তাদের দায়িত্ব কি নাগরিকের প্রতি থাকার কথা? ক’জন ভোটার একটা মিছিলে থাকে তা নিশ্চই আপনাদের জানা আছে। সেই চা, পাচ দশ টাকা বা মিষ্টি কথা বলে রাস্তার টোকাই বা স্কুলের ছাত্র/অছাত্র বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক যারা ভোটার নয় তাদের নিয়ে মিছিল করতে হয় এ দেশের নেতাদের, ভাড়া করে লোক নিয়ে শোডাউন করতে হয়! সচেতন জনগন, সচেতন ভোটার মিছিলে খুবই কম থাকে তা আপনারা একটু ভালভাবে দেখলেই বুঝবেন।

সত্যিকারের দেশপ্রেমিক সৎ নাগরিক নেতা কেউ নেই যারা এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে, পারে আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে! সৎ নাগরিক নেই বলতে আমি এটা বোঝাতে চাইছি না যে, কেউই সৎ নয়। এর অর্থ এই যে, যারা দেশের হাল ধরতে পারে এমন কেউ সাহসি সৎ যোগ্য নের্তৃত্ব দেবার মত কেউ নেই। যারা আছে তারা ভারতের হিন্দি ছবির ভিলেনের মত এদেশের তথা কথিত দরদী ভন্ড নেতা, যারা গুন্ডামি, মাস্তানি, ভন্ডামি করে দেশের দরদী নেতা বনে গেছে! যেমন এক খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধা নেতার দুই ভাই (যারা তিন জনে সুবিধার জন্য দুই দল করে), তথা কথিত চিরকুমার মহান নেতা যিনি এক সরকার প্রধানের প্রিয় পাত্র, এ সবই আমরা সবাই কম বেশী জানি। সারা দেশে এই একই অবস্থা বিরাজ করছে। কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারি নাই। আর এ সবইতো এক সর্ষে পরিমান বিচ্ছিন্ন ঘটনার বর্ননা। আমি আর কতটুকু জানি আপনারা আরও অনেক অনেক বেশী অবগত। এই লেখা দেখে কেউ খুশি হতে পারবেন কিনা জানিনা কিন্তু অ-নে-ক পাঠকই যে অখুশি হবেন তা আমি জানি। কিন্তু পাঠক একটু ভেবে দেখবেন কি ব্যক্তি স্বার্থকে প্রধান্য দিয়ে আমরা আজ কোথায় গিয়ে ঠেকেছি? কাদের নিয়ে আমরা রাজনীতি করছি? কি ভবিষ্যত এই অভাগা দেশের?

পরিশেষে এই বলে শেষ করব যে, খুবই আশা করেছিলাম এই কেয়ারটেকার সরকারের পদক্ষেপের ফলে দেশের জনগন হয়তো একটু নড়ে চড়ে বসবেন, চোখ খুলে যাবে তাদের, সৎ যোগ্য কেউ হয়তো হাল ধরতে বের হয়ে আসবেন এবার। সত্যিকারের গনতন্ত্রের পথে হয়তো যাত্রা করবে এই হতভাগা দেশ। কিন্তু আসলে কি তাই হতে যাচ্ছে? আর তাই তো শুরুর কথা দিয়েই শেষ করছি ”আবার একত্রিত হচ্ছে হায়েনার দল, এবার সতর্ক সাবধান তারা, আগের চাইতে আরও অধিক মনোযোগের সাথে আমারদের ভাগ্য নিয়ে খেলবেন তারা। এবার কোথায় নিয়ে যাবে তারা আমাদের?"
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×