somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গাদীর একটি ঐতিহাসিক স্থান ও একটি ঐতিহাসিক ঈদ দিবস

২৫ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(৫) দারামী’র এক মহিলার প্রমাণস্বরূপ উত্থাপিত গাদীরের হাদিসঃ
সে ছিল দারামের অধিবাসী আলীর (আঃ) অনুসারীদের মধ্যে একজন কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা যে, মদীনার হুজুন এলাকায় বসবাস করতো। আর সে কারণেই তাকে দারামীয়া হুজুনীয়া বলা হত। তাই তার এই উপনামের প্রসিদ্ধতার কারণে তার প্রকৃত নাম ইতিহাসে উল্লেখ করেনি। হজ্জের সময় মোয়াবিয়া তাকে ডেকে বললঃ তুমি কি জান কেন তোমাকে ডেকেছি?
বললঃ “সুবহানাল্লাহ! (আল্লাহ মহা পবিত্র) আমি অদৃশ্যের জ্ঞানের অধিকারী নই” (অদৃশ্যের বিষয়ে কিছু জানিনা)
বললঃ “আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করতে চাচ্ছিলাম যে, তুমি কেন আলীকে ভালবাস আর আমার প্রতি বিদ্বেষপোষণ কর? তার শাসন-কর্তৃত্ব মেনে নিয়েছ অথচ আমার সাথে শত্রুতা কর?”
বললঃ “যদি সম্ভব হয় আমাকে এরূপ প্রশ্নের উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে ক্ষমা কর” (বাধ্য কর না)
বললঃ না, তোমাকে ক্ষমা করবো না। (তোমাকে বলতেই হবে)
বললঃ এ রকমই যখন তাহলে শোন! আলীকে ভালবাসি কারণ, তিনি দেশের নাগরিকদের সাথে ন্যায় সঙ্গত আচরণ করতেন ও বাইতুল মাল (সরকারী সম্পদ) সবার মধ্যে সমানভাবে বিতরণ করতেন। তোমার প্রতি ঘৃণাপোষণ করি কারণ, যে ব্যক্তি খেলাফতের ক্ষেত্রে তোমার চেয়ে অনেক বেশী উপযুক্ত ছিল তুমি তার সাথে যুদ্ধ করেছ ও যেটা তোমার চাওয়ার অধিকার নেই, সেটা দাবী করেছ। আলীর শাসন-কর্তৃত্ব মেনে নিয়েছি কারণ, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাকে শাসন কর্তৃত্ব প্রদান করেছেন এবং তিনি ছিলেন গরীব-দুঃখীদের বন্ধু ও দ্বীনদার ব্যক্তির সম্মানকারী। আর তোমার সাথে শত্রুতা করি কারণ, তুমি মানুষের রক্ত ঝড়িয়েছ ও বিবাদ সৃষ্টি করেছ, বিচারকার্যে অন্যায় করেছ এবং নাফ্‌সের চাহিদা মোতাবেক হুকুম প্রদান করেছ।
(৬) এক অজ্ঞাত যুবকের প্রমাণস্বরূপ পেশকৃত গাদীরের হাদিসঃ
আবু হোরায়রা কুফার মসজিদে প্রবেশ করলো। আর প্রবেশ করার সাথে সাথে জনগণ তাকে চারিপাশে ঘিরে বসলো এবং সবাই তাকে নানা ধরণের প্রশ্ন করতে লাগলো। এমনই সময় এক যুবক দাঁড়িয়ে বললঃ “তোমাকে আল্লাহর কসম দিচ্ছি! তুমি কি আল্লাহর রাসূলের (সাঃ) নিকট থেকে শুনেছ যে, তিনি বলেছেনঃ আমি যাদের মাওলা বা অভিভাবক এই আলীও তাদের মাওলা বা অভিভাবক। হে আল্লাহ তাকে তুমি ভালবাস যে তাকে ভালবাসে ও তার সাথে শত্রুতা কর যে তার সাথে শত্রুতা করে”?
আবু হোরায়রা বললঃ “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি রাসূলের (সাঃ) কাছ থেকে ঠিক এভাবেই শুনেছি”।
অনুরুপভাবে ইসলামী ইতিহাসেও দেখা যায় যে, যারা আলীর (আঃ) বিপরীতে রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছিল তারা আলীর (আঃ) সাথে শত্রুতা থাকা সত্ত্বেও গাদীরের হাদিসটি ঠিক অনুরুপ বাক্যই ব্যবহার করে প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরতেন।
(৭) আমর ইবনে আস-এর প্রমাণ হিসেবে উত্থাপিত গাদীরের হাদিসঃ
সকলেই জানে যে, আমর ইবনে আস, আলীর একজন ঘোর শত্রু ছিল, সে-ই মোয়াবিয়াকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির বুদ্ধি দিয়েছিল এবং আলীর (আঃ) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য উস্কানি দিয়েছিল। স্বীয় চক্রান্তের মাধ্যমে তাকে নির্ঘাত পতনের হাত থেকে রক্ষা করেছিল ও প্রজ্ঞাপূর্ণ নকশার দ্বারা শামের (সিরিয়ার) সৈন্যদেরকে শক্তি যোগিয়ে ছিল এবং কুফার সৈন্যদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দিয়েছিল। আর সেই স্থানটি ছিল, যেখানে খারিজীদের (দ্বীন ত্যাগীদের) বীজ বপিত হয়েছিল আর তার এসব সহযোগীতা করার কারণেই সে মোয়াবিয়ার নিকট থেকে পুরস্কার স্বরূপ মিশরের শাসনভার পেয়েছিল। মোয়াবিয়া তার হাতে শাসন ক্ষমতা ন্যস্ত করার পূর্বে তার নিকট সাহায্য কামনা করে একটি পত্র লিখেছিল। তাতে লিখেছিলঃ “আলী ছিল উসমান হত্যার কারণ, আর আমি হলাম উসমানের খলিফা”।
আমর তার প্রতিত্তোরে লিখেছিলঃ
তোমার পত্রটি পাঠ করলাম ও বুঝলাম। কিন্তু তুমি যে আমার কাছে সাহায্য চেয়েছ যেন আমি দ্বীন ত্যাগী হয়ে তোমার সাথে পথভ্রষ্টতার উপত্যকায় প্রবেশ করি ও তোমার ঐ ভ্রান্ত পথে সাহায্য করি এবং আমিরুল মোমিনীন আলীর উপর তলোয়ার পরিচালনা করি, সেটাও আবার ঐ অবস্থায় যে, তিনি রাসূলের (সাঃ) ভাই, অভিভাবক, প্রতিনিধি ও ওয়ারিশ এবং তিনিই যিনি রাসূলের (সাঃ) দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আর তাঁর অঙ্গিকারগুলো রক্ষা করেছেন, তিনিই যিনি তার জামাতা, বিশ্বের নারীদের নেত্রীর স্বামী, বেহেশতের যুবকদের সরদার হাসান ও হোসাঈনের পিতা, তাকে হত্যা করি এ প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারলাম না। কিন্তু যেহেতু বলেছঃ আমি উসমানের প্রতিনিধি আর উসমানের মৃত্যুর সাথে সাথে তুমি হয়েছ পদচ্যুত আর তোমার খেলাফত হয়েছে নিশ্চিহ্ন ও আরো বলেছঃ আমিরুল মোমিনীন আলী, উসমানকে হত্যার জন্য সাহাবীদেরকে উস্কানি দিয়েছে, এটা মিথ্যা ও অপবাদ। তোমার জন্য দুঃখ হয় এই মোয়াবিয়া! তুমি কি জান না আবুল হাসান (আলী) আল্লাহর পথে আত্মোৎসর্গ করে দিয়েছিল ও রাসূলের (সাঃ) বিছানায় ঘুমিয়েছিল এবং রাসূল (সাঃ) তার সম্পর্র্কে বলেছেনঃ আমি যাদের মাওলা এই আলীও তাদের মাওলা।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×