somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরিস্থিতি!

২৩ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

# ১.
সন্ধ্যা সেই সাত সকাল থেকে মুড অফ করে আছে!কিচ্ছু ভালো লাগছে না তার!একটা মানুষের লাইফ এতো বোরিং কি করে হয়?
যাবেদ ও এতো খারাপ হয়েছে আজকাল...একটা মিস কল ও দেয় না...কল তো দূরের কথা!!কিপ্টা হলেও একটা কথা ছিল!!!কিপ্টা ও না...তাও কল দেয় না।মোবাইল ফোন নাকি দরকারী কথা বলার জন্য! আজিব!!ইচ্ছা করলেও তাকে পাওয়া যায় না!!অনুভূতির কোন দাম ই নাই তার কাছে!রাগ করতে করতে রাগ করাটার উপর ই রাগ হয় এখন! রাগ করে যখন কল রিসিভ অফ করে দেয় তখন বাবুসাহেব এর সরি বলার জোস উঠে!!উফ! কোন বেক্কল টা যে এই " সরি " ওয়ার্ড টা আবিষ্কার করছিল!!!!
অনেক দিন ছাদে যাওয়া হয় না!!!ছাদে গিয়ে খানিকটা সময় কাটানোর চেষ্টা করলে কেমন হয়??? মন্দ হয় না ভেবেই উপরের সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালো সন্ধ্যা!!!
ঠিক তখনি পাশের বাসার নিতু আপু দরজা থেকে ডাক দিলেন। "এই সন্ধ্যা, জলপাইয়ের ভর্তা খাবি? অনেক ঝাল হইসে! "
উফ!জলপাই এর নাম শুনেই তো জিভে জল এসে গেলো!!! বাটিতে করে অনেকটুকু নিয়ে ছাদের দিকে হাঁটা দিল সন্ধ্যা!
একটা একটা করে জল্পাইয়ের গোটা খাওয়া হতেই ছাদ থেকে ছুঁড়ে
মারলো নিচের দিকে! টাইম কাটানোর অভিনব উপায়!নিতু আপুর ছোট বোন বুবলী ও পাশে এসে মজা দেখতে দাঁড়ালো! যখন গাড়ীর উপর পড়ে তখন টুং করে সাউন্ড হয়!!আর ২ জন ই অন্যপাশে পালিয়ে যায়।দেখতে দেখতে খেলাটা ভালোই জমে উঠলো!
হঠাৎ নিচের চেঁচামেচি শুনে বুবলী দৌড়ে নিচে গেল।হাঁপাতে হাঁপাতে কিছুক্ষন পর আবার ছাদে এসে সন্ধ্যাকে বললো..." কি করলা তুমি আপ্পি! তোমার জল্পাইয়ের গোটা একটা গাড়ীতে ধাক্কা খেয়ে এক আঙ্কেলের চোখে গিয়ে লাগছে।এতো জোরে ...উনি প্রচন্ড ব্যথায় চিৎকার করছেন!"
সন্ধ্যার মায়ামাখা মুখটা আরো মলিন হয়ে গেল!সামান্য দুষ্টুমি এতো বড় সমস্যা ডেকে আনবে বুঝে নি সে!ছাদ থেকে নেমে আসে সন্ধ্যা!

# ২ .
এমনিতেই বিকেল থেকে মনটা খারাপ! তার উপর যাবেদ একটা কল পর্যন্ত দেয় নি!এই ছেলেটা কি কোন দিন মানুষ হবে না?? কিচ্ছু কি বুঝে না??? কান্না পায় সন্ধ্যার!
মন খারাপ হতে হতে মেজাজে হানা দেয়! মেজাজ প্রচন্ড খারাপ হয়ে যায়!আজ এর শেষ দেখে নেবেই!! দেখা যাক! কতক্ষন কল না দিয়ে থাকতে পারে!!!
রাতের খাওয়া অনেক কষ্টে মুখে গুজে সন্ধ্যা! এক বর্ণ কিচ্ছু পড়তে পারেনি সারা সন্ধ্যা!শুধু বই নিয়ে বসে ছিল!বিশ্বাসি হয় না! ছেলেরা এতো তাড়াতাড়ি কি করে চেইঞ্জ হয়ে যায়?
এই বার আর ধৈর্য্যের বাঁধ মানে না তার!দিবে না দিবে না করেও মোবাইলের ফোনবুকে গিয়ে জ়ে বাটন খুঁজে ঠিক ই ইয়েস করে দেয়!কল যাছে...কল যাচ্ছে! আরে কল ওয়েটিং! ও...অন্যদের সাথে কথা বলার টাইম আছে!আমার সাথে কথা বলার টাইম নাই তাহলে!রাগে দুঃখে ফেটে পড়তে চায় সন্ধ্যা! কেমন মানুষ এ!!! আমার কল দেখেও সে অন্য কল টা কেটে আমার কল টা রিসিভ করছে না!!!উফফ!!আর সহ্য হয় না!!
আবার কল দিলো সন্ধ্যা!এইবারো ধরলো না!!
মোবাইল্টা ছুঁড়ে মারলো বিছানায়!!কষ্ট ,রাগ,দুঃখ,অভিমান সব এক সাথে জট পাকিয়ে যাচ্ছে!!!
হঠাৎ রিং বেজে উঠলো!!! না! না ! না!!! কিছুতেই ধরবো না!! কোন অজুহাত ই আমি শুনবো না! অনেক হইসে অনেক!!দিস ইস এনাফ নাউ!
আর না!এমন ছেলের সাথে প্রেম করার ই মানে হয় না!!!
কিন্তু পারে না!!এতো রাগের কাছে ও হার মেনে যায় সে!ফোন টা তুলে নিয়ে গম্ভীর গলায় হ্যালো বলে কোন মতে!
ওপাশ থকে প্রচন্ড শব্দ শোনা যাচ্ছে!যাবেদ এর গলাটা অসম্ভব তাড়াহুড়ো মনে হল! " সন্ধ্যা,আমি অনেক বড় বিপদে আছি! তোমাকে যে জানাবো সেই সময়টুকুও পাইনি!সত্যি,রাগ কোর না..."
রাগে ফুসছে সন্ধ্যা! " ছাই তোমার বড় বিপদ!!! আর কত এক্সকিউজ বানাবা???আমাকে সারা দিন একটা ফোন দাও নাই!!আমি এতক্ষন অপেক্ষা করে কল দিলাম!! তাও ধর নাই!!আবার এখন বলতেসো রাগ না করতে? তোমার মত ছেলের সাথে রাগ করে কি লাভ? কিছু কী বুঝ??? হাহ???"
যাবেদ কোন মতে বলে " দেখ!! এখন এতো টাইম নাই...বুঝতে চেষ্টা..."
- এক দম চুপ!!কত্তবড় সাহস!! এতক্ষনে কল দিয়ে আবার বলে এখন এক দম টাইম নাই!!ক্যান ??? নাই ক্যান টাইম? আরো ১০০টা গার্ল ফ্রেন্ড এর জন্য টাইম কাভার করতেসে না???"
----উফ! বলে তো শেষ করতে দাও...আজকে...
- কি বলবা তুমি?? হাহ...সব আমার জানা আসে!! ২ বছরে তোমার যত এক্সকিউজ আমি শুনছি আর কেউ শুনে নাই!!!
----নন্সেন্স!চুপ করে আমাকে কথাটা শেষ করে দিবা তুমি???ইডিয়ট!!!!!
-ওহ!!তাই!!নাহ ?আমি ইডিয়েট!!! হুম...এইটাই বাকি ছিল!! ওকে...নো মোর টক উইথ ইউ! জাষ্ট গুড বাই!!!!!
মোবাইল্টা এতো জোরে ছুঁড়ে মারলো যে ব্যাটারী গেল এক দিকে আর কেসিং গেল অন্যদিকে!!
আধ ঘন্টা পর রাগ নেমে এলো সন্ধ্যার!!!কিন্তু অভিমান এক বিন্দুও না!!!একটা মানুষ এমনটা করে কি করে ?
সন্ধ্যা জানে...যাবেদ অনেক ভালো একটা ছেলে! কিন্তু ওর এই খামখেয়ালী গুলো যে সন্ধ্যাকে এতো কষ্ট দেয়...কেনো ও রিয়েলাইজ করে না???
মোবাইলের সব জোড়াতালী দিয়ে যখন ওপেন করা হলো...কিছুক্ষনের মধ্যেই স্ক্রীন এ একটা মেসেজ ভেসে আসলো!
যাবেদ এর ই হবে!!
অপেন করেই সন্ধ্যা থ!!!!!!
এস.এম.এস. টি ছিল এরকম---
বাবাকে নিয়ে বারডেম এ আসছি।অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হল!আজকে রিকশায় করে আসার সময় কি করে যেন একটা জল্পাইএর গোটা এসে চোখে লাগে! খুব বাজে ভাবে লেগে ভিতরের কর্ণিয়ায় আঘাত করে! আর হাই সুগার লেভেলের জন্য অবস্থা অনেক বেগতিক।তুমি কিছু না শুনেই ফোনটা অফ করে দিলা...?

সন্ধ্যা কি করবে বুজছে না! আবার ফোন বেজে উঠলো!! কি করে রিসিভ করবে সে???





১৩টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×