somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লন্ডনী কন্যাদের বিয়ে করার পরও সহজে ভিসা পাবে না বাঙালীরা

১৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ফোর্স ম্যারেজ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বৃটিশ হোম অফিস। ইতোমধ্যে ৫টি পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্তও জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি বৃটেন হোম অফিস থেকে জানানো হয়েছে নতুন এ তথ্য। একজন ব্রিটিশ নাগরিক বা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্পাউস ম্যারেজ ভিসার অধীনে তার স্ত্রী কিংবা স্বামী বৃটেনে আসতে পারেন। তবে তখন ঐ বৃটিশ সিটিজেনশীপপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে স্পাউসের স্পন্সর হতে হবে। এই আইনের ফাঁক গলে বৃটেনের বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয় সমপ্রদায়ের ভিতরে ফোর্সড ম্যারেজ সংঘটিত হবার প্রমাণ পাওয়া গেছে বিভিন্ন সময়ে। যাদের মধ্যে বাংলাদেশও অন্যতম। বিশেষ করে সিলেটের লন্ডনী কন্যাদের বিয়ে করেই বৃটেনের ভিসা পাওয়া যেতো সহজেই। কিন্তু বৃটেন হোম অফিসের এই কঠোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিয়ে করার পরও ভিসা পেতে বেগ পোহাতে হবে বাঙালীসহ সকলকে। অভিযোগ আছে যে, অভিভাবকদের চাপের মুখে বৃটেনে জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা ছেলে মেয়েদের কেউ কেউ অন্যদেশের ছেলে-মেয়েদের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধ্য হয়। এক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায় অন্যদেশী পাত্র-পাত্রীটি ব্রিটিশ অভিবাসী অভিভাবকটির জন্মস্থানের মানুষ হয়ে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীটি অভিভাবকদের রক্ত সম্পর্কের আত্মীয় হলেও ফোর্স ম্যারেজের সাথে বিপুল অংকের অর্থ জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে বিভিন্ন সময়ে। বৃটেনে আসা কিংবা নাগরিকত্ব পাইয়ে দেয়ার মতো অসৎ উদ্দেশ্য থেকে নামে মাত্র বিয়ে করার কথা প্রায়ই শোন যায় বাংলাদেশে। বাংলাদেশে এ ধরণের বিয়েকে কন্টাক্ট ম্যারেজ বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। শুধুমাত্র কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের মাধ্যমেই এতোদিন সিলেটের অনেক মেয়েই হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা এবং বিভিন্ন আদম পাচারকীর চক্র এতে সম্পৃক্ত ছিল বলে জানা যায়।
বৃটেনের পরিবেশেরে সাথে বেড়ে উঠা ছেলে মেয়েরা নিজেদের মত প্রকাশে পুরোপুরি স্বাধীন। অনেক সময় অভিভাবকরা তাদের দেশে বেড়াতে নিয়ে যাবার পরে চাপের মুখে বা আবেগী প্রক্রিয়া ব্যবহার করে ছেলে মেয়েদেরকে অপরিচিত পাত্র-পাত্রীর সাথে বিয়েতে বাধ্য করেন। প্রায়ই ক্ষেত্রে এসব পাত্র-পাত্রী অভিভাবকদের পূর্বপরিচিত কিংবা আত্মীয় হয়ে থাকে। ফোর্সড ম্যারেজের শিকার ব্যক্তিরা বছরের পর বছর ধরে শরীরিক এবং মানসিক নিপীড়নের শিকার হন অনেক সময়। কখনও কখনও অপরাধের শিকার ব্যক্তিটিকে অবৈধভাবে আটকে রাখে বা ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে থাকে।
দেশে নিয়ে গিয়ে আর কোন অভিভাবক যেন তার ছেলে মেয়েকে জোরপূর্বক বিয়ে দিতে না পারে সেজন্যও প্রত্যেককেই বৃটেনের বাইরে বিয়ে করতে যাবার আগে কর্তৃপক্ষের কাছে বৃটেনের বাইরে বিয়ে করার সিদ্ধান্তটি রেজিষ্ট্রার করতে হবে। এর ফলে পরবর্তী সময়ে ম্যারেজ ভিসার স্পন্সর হতে কোন প্রকার বাধা থাকবে না। কতর্ৃপক্ষ মনে করে, এই ব্যবস্থার ফলে অন্যদেশে গিয়ে বিয়ে করার ব্যাপারে সম্পূর্ণ ধরণের যেমন কার সাথে বিয়ে হচ্ছে, পাত্র বা পাত্রীটির যোগ্যতা ইত্যাদি সম্পকে ধারণা পাওয়া যাবে।
কোন ব্রিটিশ নাগরিক ম্যারেজ ভিাসার স্পন্সর হতে হলে তার বয়স অবশ্যই আঠারো হওয়ার যে বিধান ছিল তাও আর থাকছে না, বর্তমান তা বাড়িয়ে একুশ বছর করা হয়েছে। হোম অফিস জানায়, স্পন্সরের বয়সসীমা বৃদ্ধির ফলে ফোর্সড ম্যারেজড প্রথার বিরুদ্ধে কার্যকর লড়াই করা সম্ভব হবে। হোম অফিসের সূত্রে জানা গেছে, ফোর্সড মারেজ ইউনিট ইতিমধ্যে ফোর্স ম্যারেজের শিকার হওয়া যতো ব্যক্তিকে নিয়ে কাজ করেছে তাদের মধ্যে ৩০শতাংরেই বয়স আঠারো থেকে একুশের মধ্যে।
হোম অফিসের দেয়া তথ্যমতে, কর্তৃপক্ষ বছরে গড়ে ফোর্সড ম্যারেজ বা ফোর্সড ম্যারেজের ঝুঁকি সংক্রান্ত আনুমানিক ৫ হাজারটি অনুসন্ধান ও ৪ শত মামলা পরিচালনা করে। ২০০৭ সালে বৃটেনের ফোর্স ম্যারেজ ইউনিট ২১৫টি ওবারসীজ ফোর্স ম্যারেজ ঘটনার ব্যাপারে যুক্ত হয়েছে। ফোর্সড ম্যারেজ একেবারেই বন্ধ করতে হোম অফিস নতুন পাঁচটি পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। ব্রিটিশ সরকার এ সংক্রান্ত সমস্যাগুরো প্রতিরোধ নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে তা হলো -
ম্যারেইজ ভিসার জন্য স্পন্সর হতে আগ্রহী ব্যক্তির বয়সসীমা একুশ বছর হতে হবে। হোম অফিস মনে করছে, স্পন্সরের বয়সসীমা বাড়ানো হলে ফোর্সড ম্যারেজ সংখ্যা কমে যাবার সমূহ সম্ভাবনা আছে। এক্ষেত্রে আঠারো বছরের তুলনায় একুশ বছরের একজন ব্যক্তি কাকে বিয়ে করবে না করবে সে ব্যাপারে অধিক সচেতন, স্বাধীন এবং ব্যক্তিগত মতামত প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অধিক সক্ষম বলে ধারণা নেয়া হয়েছে।
অন্যদেশ থেকে ম্যারেজ ভিসার অধীনে বৃটেনে আসতে ইচ্ছুক স্পাউসটিকে বৃটেনে আসার আগেই ইংরেজী শিক্ষার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সাথে বুঝাপড়ায় আসতে হবে। বৃটেনে বসবাসের জন্য ইংরেজী ভাষার উপর ভালো দখল থাকতে হবে বলে। বৃটেনের আসার পরে স্পাউসটি পূর্ব অঙ্গীকার রক্ষা করছে কি না তা পরীক্ষা করবে ইউনাইটেড কিংডম বোর্ডার এজেন্সী। যদি দেখা যায় যে, স্পাউসটি পূর্বের অঙ্গীকার পালন করছে না, তাহলে তার বৃটেনে থাকার অনুমতি বাতিলের অধিকার কর্তৃপক্ষের হাতে থাকবে।
বিয়ে সংক্রান্ত সম্পর্কটির অপব্যবহার হয়েছে এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে লীভ টু রিমেইন এর সুযোগ বাতিল করার ক্ষমতা থাকবে কর্তৃপক্ষের হাতে।
ফোর্সড ম্যারেজের শিকার হতে পারে এমন ব্যক্তিদের যাতে বিশেষজ্ঞ দল চিহ্নিত করতে পারেন, তা কোড অফ প্যাকটিসের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে।
বৃটেনের বাইরে গিয়ে বিয়ে করার তিনি যে বিয়ে করতে যাচ্ছেন সে বিষয়ে পূর্বে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের কাছে রেজিষ্ট্রার করতে হবে।
ফোর্স ম্যারেজ প্রবণতা রোধ করতে হোম সেক্রেটারী জ্যাকি স্মীথ বলেন, ফোর্সড ম্যারেজের কোন স্থান আমাদের এই সমাজে নেই। ফোর্সড ম্যারেজ নিমর্ুল করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে যথাযথ সাহায্য সহযোগিতা দেয়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য সকল কিছু করতে প্র্রস্তুত।
স্পন্সরে বয়সসীমা বাড়ানো সিদ্ধান্তটিকে ফোর্সড ম্যারেজ বন্ধের ব্যাপারের সরকারের দৃঢ় অবস্থানের প্রমাণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে হোম অফিস। ইমিগ্রেশন মিনিষ্টার লিয়ান ব্রাইন নতুন সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে জানান, যাকে খুশী তাকে বিয়ের করার অধিকার ব্রিটিশ নাগরিকদের আছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ দেখতে চায় নবাগতরা বৃটেনে এসে সাফল্যের পরিচয় দিচ্ছে এবং সাধারণ মানের সাথে নিজেদের মিলিয়ে নিতে পারছে।
নিউজ : ইউকে বিডি নিউজ
ই-মেইল : [email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:১৯
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। VF 3 Mini: মাত্র 60 মিনিটে 27 হাজার বুকিং!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪



আমার ব্যাক্তিগত গাড়ি নেই কিন্তু কর্মসূত্রে বেঞ্জ , ক্যাডিলাক ইত্যাদি ব্যাবহার করার সুযোগ পেয়েছি । তাতেই আমার সুখ । আজ এই গাড়িটির ছবি দেখেই ভাল লাগলো তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট: বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন

লিখেছেন করুণাধারা, ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন! view this link

সামহোয়্যারইনব্লগ থেকে কয়েকজন ব্লগার আলাদা হয়ে শুরু করেছিলেন সচলায়তন বা সংক্ষেপে সচল ব্লগ। এটি বন্ধ হবার মূল কারণ উল্লেখ করা হয়েছে দুটি:

১)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×