somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

=ফুলের গন্ধ, উত্তাপ-হিম, বাতাস যদি বয়/অনন্ত সত্য আমার আল্লাহ্ দয়াময় @মানুষ

১৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৮:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(এটি একটি মন্তব্য, ভাবলাম পোষ্টেই রাখি, তাই পোষ্ট করা।)
মানুষ ভাই বললেন এখানে না কি আমাদের কিছু বলা হইছে- Click This Link

"মানুষ বলেছেন: Click This Link Click This Link
এইখানে ঢুঁ দিয়েন। আপনাদের কিছু বলা হইছে। "


কিন্তু মানুষ ভাইয়ের পোষ্ট পড়ে তো আমার কিছু বলা জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে-

"১৫০০ বছর আগে মানুষ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও দর্শনে বহু পিছায় ছিল।"

পিছায়া ছিল মানি, কিন্তু একথাই বা বলবেন কেমন করে যে, তারা বিজ্ঞান প্রযুক্তি জানতো না। পৃথিবীতে বহু জাতি পরিপূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে, যার উদাহরণ কুরআন বহুভাবে পেশ করেছে। এবং সেসবের বাস্তব প্রমাণ আজো বিদ্যমান। উদাহরণ স্বরূপ মিসরের মমি বানানোর প্রক্রিয়া, সুলাইমান আলাইহিস্ সালামের বাতাসের বাহন(যার কোন অবশিষ্টাংশ অবশ্য নেই, তবে কেউ এ ব্যাপারে নিশ্চত বলতে পারেননা যে সেটা হয়তবা আধুনিক উড়োজাহাজের মতই কোন প্রযুক্তি ছিল), মূসা আলাইহিস্ সালামের সময়ে সামেরী স্বর্ণকে গলিয়ে যে গোবৎস বানিয়েছে তাতে প্রমাণ হয় তারাও শিল্পকলায় তখন অনেক সমৃদ্ধ ছিল, কেননা গোবৎসটি বানিয়েছিল সে সিনাই উপত্যকার পথে বা সেখানে থাকাকালীন। বলাবাহুল্য যে, সিনাই উপত্যকা মিসরে তাদের মূল বাসভূমি থেকে অনেক দূরে ছিল তখন। কেননা, ফিরআওনের ভয়ে তারা সেখানে পালিয়ে গিয়েছিলেন। বলার উদ্দেশ্য এই যে, মরুভূমিতে বসবাস করেও তারা খু স্বল্পসময়ে আগুনে পুড়িয়ে সোনার গোবৎস বানিয়ে তার পূজা করেছিল, তাই তারা যে খুব একটা পিছিয়ে ছিল শিল্পকলায়, তা বলা ঠিক হবে না। এছাড়া মাদায়েনে সালেহ (সউদী আরবে)-এ সালেহ আলাইহিস্ সালামের জাতি পাহাড় কেটে যে ঘরবাড়ী নির্মাণ করেছিল আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়াই তাতেও উড়িয়ে দেয়া যায় না যে, তাদের কাছে শিল্পকলার ঘাটতি ছিল। তারা সমূলে ধ্বংস হয়েছে সাথে সাথে তাদের শিল্পকলার কৌশল, বিজ্ঞান প্রযুক্তিও পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে।

"ঈশ্বরের সন্ধান করতে করতে মূর্তি পূজার মতো সংস্কৃতি চইলা আসছিল সে সময়টাতে।"

ঈশ্বরকে কিন্তু পৃথিবীর প্রথম মানুষ আদম আলাইহিস সালামও চিনতেন এবং মূর্তিতে সন্ধান না করেই চিনতেন। তাঁর পরবর্তী যুগের মানুষেরাও জানতেন, কিন্তু বিভ্রান্তরা সর্বদা মূর্তিতেই তালাশ করতো। তাই এটাকে সুস্থ সংস্কৃতি না বলে অপসংস্কৃতি বলাই শ্রেয়।

"হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যা করছিলেন, তৎকালীন সময়ে সেটাকে বিপ্লবই বলা চলে। মূর্তি পূজার মতো হাস্যকর একটা ব্যাপার তিনি বন্ধ কইরা দিছিলেন। তাঁকে ধন্যবাদ জানাই অন্ধত্ব থেকে আলোর পথ দেখানোর জন্য।"

আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আজ আর কেউ মূর্তি পূজা করে না? :) আপনার কথিত "মূর্তি পূজার মতো হাস্যকর একটা ব্যাপার" আপনার প্রতিবেশী হিন্দুরাই যে করছে? যেন সেটা সে সময়েরই বিপ্লব ছিল তার পর থেকে আর তার অবশিষ্ট নেই। বরং সত্য হলো আজো আছে মূর্তিপূজা এবং এখন মুসলমানদের সমাজেও ভাস্কর্যের নামে, স্মরণের নামে সেই মূর্তিপূজার প্রচলন ঘটিয়ে মুসলমানদের ঈমান ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে আর সেসবকে আপনাদের মত ভদ্রলোকেরা "মর্ডাণ" হবার ধোঁয়ায় আড়াল করতে সচেষ্ট রয়েছেন।

"আইজ ১৫০০ বছর পরে আইসা দেখি যে লাউ সেই কদুই হইতেছে ঘুরে ফীরে।"

১৫০০ বছর পর কি মূর্তিপূজা শেষ হয়ে গেছে? যায়নি, উপরে বলেছি এ ব্যাপারে।

"১৫০০ বছর আগের সংবিধান একেবারে সুপার গ্লুর মতো চাইপ্পা ধইরা রাখতে হইবো নইলে নাকি ধর্ম থাকে না।"

বাহঃ কি চমৎকার আপনাদের কথা, হাসতেও শরম লাগতেছে, যদি বোকা বোকা লাগে এই ভয়ে। ১৫০০ বছর আগের সংবিধান বলতে যদি কুরআন বুঝিয়ে থাকেন, তাহলে আপনিই বলুন ইসলাম হিসেবে আমরা এ যুগের মানুষেরা পেয়েছি কি? নবী পেয়েছি? না, ওহী নাযিল হতে দেখেছি? না, সাহাবী দেখিছে? না, শুধুমাত্র যা পেয়েছি, তা হলো আল্লাহর অবিকৃতি কিতাব আলকুরআন, রাসূলের সহীহ্ হাদীসসমূহ এবং সাহাবীদের জীবনিতিহাস। এখন এইটুকুক সম্বলকে যদি আঁকড়ে ধরে না রেখে ছেড়ে দিতে বলেন, তাহলে দুনিয়ায় মুসলমানই তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। বরং খুঁজে পাওয়া যাবে মুসলমান নামের একটি সম্প্রদায়, যারা মূর্তি পূজাও করবে, মসজিদেও শিরনী দিবে, মাজারেও মোমবাতি জ্বালাবে অথবা বলবে ধর্ম আফিম, ধর্মের কোন প্রয়োজন নেই। ইত্যাদি।

"মাঝে মাঝে ভাবি কোন ধর্মটা সত্য। আদম (আঃ) ধুপ কইরা স্বর্গচ্যুত হওয়া, নূহুর নবীর কাঠের নৌকায় বিশ্বের তাবৎ জানোয়ারের আশ্রয় নেওয়া, ঈসা নবীর পানির উপর হাঁটা আর মরা মানুষরে জ্যাতা করা, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর চাঁদ দিখন্ডিত করা অথবা দূর্গার দশহাতি গল্প সবই আমার কাছে হাস্যকর রকমের রুপকথা মনে হয়।"

এতক্ষণে নিজের পরিচয়টা সুন্দরভাবে প্রকাশ করেছেন। নবীদের মু'জিজা, আদর্শ, ইতিহাস, প্রচারিত ধর্ম ইত্যাদি যখন রূপকথা ঠেকে, সাথে সাথে অন্য ধর্মেরগুলোও; তবে তো নাস্তিক না হয়ে পারেই না। জবাব অবশ্য আপনিই ভালো দিতে পারবেন।

"হয়তো সবাই আমার মতো ভাবে আর আমার মতোই চাইপ্পা থাকে, না জানি কখোন ধার্মিকদের কোপানলে পড়তে হয় সেই ভয়ে।"

উঁহু, উঁহু, সবাই না। আপনার মত কেউ কেউ। গুণলে ১১ জনের প্রচারণায় ৯ জনের মত পেয়ে গেলেও যেতে পারেন।

"উপর ওয়ালা আছেন মজায়। মানুষ নামের আজিব চিড়িয়া বানাইয়া তিনি মেগা সিরিয়াল দেখতেছেন। আর আমরা সেইখানে ডাই হার্ড অভিনয় করতে করতে মইলাম। ভাইরে এইটা ৫৭০ খৃষ্টাব্দ না এইটা ২০০৮ সাল। এই যুগে আর কতো রুপকথা নিয়া বইসা থাকবেন, এইবার চোখ খুলেন।"

আমাদের যে চোখ/কান খোলা আছে, সেটা আবার আপনারা অতি পাওয়ারের অত্যাধুনিক গ্লাস লাগানোর কারণে হয়ত দেখতে পাচ্ছেন না। মজার ব্যাপার হলো আমরা আমাদের "সংবিধান"-এর মাধ্যমে কোন সত্যকে জানি ১৫০০ বছর থেকে, এবং আগামী কালের সূর্যোদয়ের মত বিশ্বাস করি, তখন আপনারা বহু কষ্টের পর সেটাকে প্রমাণ করে বলেন: "জেনেছি"। :)

"আর তারপরেও যদি মূর্তি দর্শনে আপনাগো ধর্ম গায়েবুল মোবারক হয় তাইলে নিজেগো চোখটারে কানা করা মনে হয় বেটার আইডিয়া হইব।"

হুম, পৃথিবীটা যদি সাড়ে তিন গণ্ডা নাস্তিক শাসন করতো, তবে হয়ত তাই করা লাগতো। কিন্তু আল্লাহ্ সে দুর্ভাগ্যে এখনো মানব জাতিকে ফেলেননি। অবশ্য কিছু কিছু এলাকায় কিছুদিনের জন্য নাস্তিকদের ব্যর্থতার উদাহরণ হিসেবে কিছু নজীর পেশ করেছেন। সুতরাং পৃথিবীটা আপনার/আপনাদের একার নয়; এজাতীয় কথা বলার ক্ষেত্রে আরো সাবধান হবেন আশা করছি।


"নিজের দুটি চরণ ঢাকো, তবে
ধরণী আর ঢাকিতে নাহি হবে।' "


কবিতা শুনবেন? এগুলো শুনেন, কাজে আসবে-
"বিশ্বাসী গগণ জুড়ে পূর্ণিমা বার মাস
অবিশ্বাসী শিকড় খোঁজে বানর-ব্যাঙ্গাচীতে,
ফুলের গন্ধ, উত্তাপ-হিম, বাতাস যদি বয়
অনন্ত সত্য আমার আল্লাহ্‌ দয়াময়।"
-ফজলে এলাহি মুজাহিদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৮:২২
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×