somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিরাষ্ট্রীয়করণ বন্ধ করতে হবে

১৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় ব্লগার
এটি তৌফিকুর রহমান সেন্টু , পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন থেকে ই-মেইলে পাঠিয়েছেন আমি হুবহু পোষ্ট দিলাম।

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিরাষ্ট্রীয়করণ বন্ধ করতে হবে ।

রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিরাষ্ট্রীয়করন বন্ধের করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতা মালিক জনগণ এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল সংবিধানের অধীনও ও কতৃত্বে কার্যকর হবে। এ রাষ্ট্রের সকল সম্পত্তির মালিকও জনগণ। জনগনের সম্মতি ব্যতীত এই সম্পত্তি বিক্রি/হস্তান্তর করার অধিকার সরকারের নেই। গতকাল ১৩ অক্টোবর ২০০৮ দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সম্পদ সুরক্ষা মোর্চা ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন এর ''পরিবেশ সংরক্ষন ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিরাষ্ট্রীয়করণে সরকারের এখতিয়ার'' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

বক্তারা বলেন রাষ্ট্রীয় সম্পদগুলো বিরাষ্ট্রীয়করণের ফলে শুধুমাত্র পরিবেশ নয়, ক্ষতিগ্রসত্দ হচ্ছে অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক এবং সবোপরি দেশের মানুষ। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বিভিন্ন কোম্পানির অনিয়ন্ত্রিত এবং অনৈতিক ব্যবসায় সর্বশানত্দ হচ্ছে মানুষ। সরকারী মনিটরিং সংস্থাগুলোকে সুকৌশলে দূর্বল করার মাধ্যমে চিকিৎসা, ঔষধ এবং খাদ্যের মতো অত্যাবশকীয় জিনিসগুলোর জিম্মি করে জনসাধারণকে প্রতারিত করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় বিগত কয়েক বছরের বিভিন্ন সেবাখাতগুলোর উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করার ফলে বিদেশী কোম্পানিগুলো যোগাযোগ, শিল্প ও বাণিজ্য খাত হতে হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু হাজার কোটি টাকা পাচারের সাথে সাথে ধ্বংস করছে পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক। কোম্পানিগুলোর অনৈতিক ও অনিয়ন্ত্রিত কার্যক্রমের বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয়।

আলোচকগন অভিযোগ করেন বিগত দিনের অভিজ্ঞতা হতে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূল কান্ডারী সরকার কোন ধরনের শিক্ষা গ্রহণ না করে বর্তমানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিরাষ্ট্রীয়করণের লক্ষ্যে কোম্পানি করার প্রতিযোগিতা গ্রহণ করেছে। বিগত ২ বছরের রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেবাখাতকে কোম্পানিতে রূপান্তর করেছে। আর সাথে সাথেই বিদেশী কোম্পানিগুলো এখাত দখলের প্রচেষ্টায় মত্ত আছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে এখন প্রশ্ন করার বিষয় কি ভিত্তি, কোন শক্তি, কিসের কারণে এই রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হস্তান্তর করা হচ্ছে।

বক্তারা বলেন রাষ্ট্রীয় সম্পদের হস্তান্তরে ফলে ইতিমধ্যে পরিবেশ যথেষ্ট ক্ষতিগ্রসত্দ হয়েছে। বিদেশী কোম্পানি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় সম্পদ তেল গ্যাস অনুসন্ধানের নামে লাউয়াছড়া, মাগুরছড়ার পরিবেশ বিপর্যয় আমাদের সকলের জানা। পরিবেশ ও সম্পদ ধ্বংস করা স্বত্বেও এই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন আইনী প্রতিকার গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। সমপ্রতিক শেভরন কোম্পানি ও গ্রামীণ ফোনের বিরুদ্ধে লাউয়াছড়ায় পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠা স্বত্বেও, তাদের বিরুদ্ধে সরকারীভাবে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। শুধু বাংলাদেশ নয় উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকার ও নীতিনির্ধারকদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দূর্ণীতি একটি কার্যকর অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। দূনীতির দোহাই তুলে রাজনীতিবিদের কোনঠাসা এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোম্পানিতে রূপান্তরের পরিকল্পনা মূল হোতা এই সংস্থাগুলো নিজে দূনীতিমুক্ত কি না তা অনেকেরই প্রশ্ন। বর্তমানে ঋণপ্রদানকারী সংস্থা, বিভিন্ন বেসরকারী সংগঠনগুলো সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দূর্ণীতি নিয়ে অনেক সরব। কিন্তু বেসরকারী কোম্পানিগুলোর অন্যায় বাণিজ্য বা দূর্ণীতি নিয়ে ঋণপ্রদানকারী সংস্থা বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নীরব। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দূনীতি নিয়ে এই সংস্থাগুলো নিয়মিত তথ্য পরিবেশন করে বিরাষ্ট্রীয়করণের ক্ষেত্রে তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালণ করে বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশ্বব্যাংক, এডিবি এবং আইএমএফ এর মতো ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোর হস্তক্ষেপ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকল্পের কাজ পাবার আশায় সরকারী কর্মকর্তা এ সকল সংস্থাগুলোর অনৈতিক ও নীতি বর্হিভূত কার্যক্রমের কোন ধরনের প্রতিবাদ করে না। এই সংস্থাগুলোর হস্তক্ষেপ দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে। যদি এ সংস্থাগুলোর পরামর্শে দেশ পরিচালিত হবে তবে জাতীয় সংসদের ভূমিকা ও কার্যকারিতার প্রশ্ন বিদ্ধ হবে। বিরাষ্ট্রীয়করনের ফলে দেশের যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থ, পরিবেশ সকল ক্ষেত্রেই আজ জিম্মি অনৈতিক ব্যবসায়ীদের হাতে। খাদ্যে অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রণহীন যাতায়াত ভাড়া, চিকিৎসা খরচ বৃদ্ধি, ঔষধদের অনিয়ন্ত্রিত মূল্য, বীজ সংকট, মোবাইল কোম্পানিগুলোর অস্বাভাবিক রেট, ব্যাংকগুলোর অযৌক্তিক চার্জ, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানহীন শিক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণহীনতার ফসল।

বক্তারা বলেন রাজনৈতিক ও নীতিনির্ধারকগণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রাষ্ট্র ও প্রশাসনে ঋণপ্রদানকারী সংস্থাগুলো অযৌক্তিক প্রকল্প, সিদ্ধানত্দ এবং স্বেচ্ছাচারী কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ, বিগত কয়েক বছরের বিরাষ্ট্রীয়করণকৃত সম্পদ রাষ্ট্রীয়করণের উদ্যোগ গ্রহণ, বিরাষ্ট্রীয়করণের জন্য পরামর্শ প্রদানকারীদের শাস্তি প্রদান এবং নির্বাচনী মেনুফেসটুনে রাষ্ট্রীয়খাত রক্ষায় সুপষ্ট দিক নির্দেশনা প্রদানের আহবান জানান। গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখনে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতা কৃষিবিদ আব্দুল রাজ্জাক, জাসদের সভাপতি, হাসানুল হক ইনু, কমিউনিস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, বিশিষ্ট কলামিস্ট আবুল মকসুদ, তেল-গ্যাস বন্দর রক্ষা কমিটির- ইঞ্চিনিয়ার মোঃ শহিদুল্লাহ, পরিবেশবিদ আবু নাসের খান, হায়দার আকবর খান-সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি, এডভোকেট শাহ আলম, প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি গোলাম রব্বানী, সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় সম্পদ সুরক্ষা মোর্চা-র সমন্বয়ক কামাল লোহানী।

বার্তা প্রেরক

তৌফিকুর রহমান সেন্টু
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন
৫৮/১ কলাবাগান ১ম লেন (নিচতলা)
উত্তর ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৫
ফোন : ০১৮৯২১৮০৩৫, ৮১৪১২৪১, ৯১৩৪৬৭২
[email protected], http://www.environmentmovementbd.org

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৮:১৮
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×