somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা হবে আফগান? মে বি নট

১২ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশুদ্ধ জিহাদ এক অদ্ভূত আমল। মানুষের কাছে পৃথিবীতে যে যত যাই বলুক না কেন নিজের প্রাণের চেয়ে প্রিয় আর কিছুই নেই। আর আল্লাহর ওয়াস্তে সেই প্রাণের মায়াকে তুচ্ছ করে ঝাঁপিয়ে পড়া দ্যাট'স ওয়ান অফ এ কাইন্ড। আর শুধু যে নিজের প্রাণের ওপর ঝড়ঝাপটা তাই না, নিরীহ শান্তিপ্রিয় মানুষকেও প্রয়োজনে নরদানবে পরিণত হতে হয়, হতে হয় অন্যের মৃত্যুর কারণ। তাই আমি সাধারণভাবে জিহাদের আউটপুটগুলো খুঁজি। মুসলিমদের বিজয়ের ক্ষেত্রে সামান্য রণসম্ভারের বিপরীতে বিপুল অপশক্তির পরাজয়, অবিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত আর ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা। আর মুসলিমগণের পরাজয়ের ক্ষেত্রেও মুজাহিদীনের রক্তের বিনিময়ে দেখা গেছে বিপুল বিপদের ঝঞ্ঝা প্রতিহত হয়ে গেছে। শহীদ বা গাযী যাই হোক এই ত্যাগ সর্বদাই আমূল্য।

আজকালকার ধোঁয়াটে বিশ্বপরিস্থিতিতে যেখানে সারা পৃথিবীতে আঞ্চলিক সংঘাতে পরিপূর্ণ সেখানে বিশুদ্ধ জিহাদের সুযোগ সামান্যই। গত শতাব্দীতে একবারই বিশ্বের মুসলিম সমাজ একমত হয়েছিল কোন এক সংঘাতের জিহাদের স্ট্যাটাসের বিষয়ে আর সেটি ছিল আফগান-রাশান সংঘাত । পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি পূর্ণশক্তি নিয়ে ঢুকে আফগান পাহাড়ীতে কম্যুনিজমের বীজ সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য, শুধু এটুকু টের পাবার জন্য কেঁচো মনে করে যার লেজ নিয়ে টানাটানি করছিল সেটি ছিল দিব্যি মোটাসোটা কিং কোবরা। উনাশি থেকে উননব্বই পর্যন্ত দশ বছরে আধপেটা আফগানদের ভদ্রস্থ করতে গিয়ে একানব্বইতে রাশাই ফের পনর টুকরো হয়ে যায়।

সেই রাশাও নেই, সেই বিক্ষুব্ধ দিনগুলোও নেই কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত টেরিটরিগুলোর মধ্যে আফগান একটা রয়েই যায়। রাশার পতনে একমাত্র সুপারপাওয়ার হিসেবে আম্রিকা ফুলতে থাকে তো ফুলতেই থাকে। তার পরে তো ইরাক আম্রিকার যুদ্ধ গেল, আরবে অফিশিয়ালি আম্রিকা আইল, বড় বশ গেল, ক্লিন্টন আইল, ফের বুশের বেটা বুশ আইসা পড়ল।

ওইদিকে পোস্ট আফগান ওয়ারে যেই আহাম্মকগুলা গদিতে বইল তাগোর ওপর চেইতা আরেক বর্বরের গ্রুপ তালেবানী নামে আয়া পড়ল। তার বাপের ওপরে মাইনষে এমনিতেই খ্যাপা আসিল, এইবার বেটারে চেতানোর লাইগা দুই দালান ফালায়া দিল।

বেটা খেইপা গেল, ক্ষেইপা একলগে আফগান আর সেই সাথে সাদ্দামের লগে ফাইট লাগাইয়া দিল। ভাঙ্গাচুরা দেশের না খাওয়া পাব্লিক, এগোর না আছে পড়াশুনা, না আছে টেকাপয়সা, না আছে ইলম কালাম। এক্কারে জানোয়ারের নেক্সট জ্ঞাতিভাই। মাগার এগোর মাথায় একপিস থিউরি ঢুকসে হেডি হইল, আমার দ্যাশে বিদেশী আর্মী ক্যান বন্দুক তুলব? পৃথিবীর টপ সবগুলা দেশেরই জলপাই আইসা একলগে প্রায় ছয় বছর হয়া গেল মাইরপিট করল তারপরেও যা অবস্থা তাতে জলপাইগোর ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি কইলেই মনে হয় ভাল হয়।

গত সপ্তাহে বিলাতী আর্মির চীফ যা কইল তাতে আমি নিজেই তাজ্জব। এদ্দিন ফাইট কইরা এখন কয়, যে এই বর্বরগো লগে মাইর কইরা জিতার চান্স নাই। খুব বেশী হইলে তাগোরে এট্টু ঠান্ডা করা সম্ভব। তারপরে এই ঝামেলা ওইখানকার গভমেন্টের হাতে ছাইড়া দিয়া কাইটা পড়াই ভাল। এই বক্তব্যের পরে সারা দেশে মেলা কানাঘুষা হচ্ছে, মাগার যেই ইলাকায় আলেক্সান্দারের আমল থিকা কেউ দাদাগিরি কইরা টিকতে পারে নাই সেখানে অখনকার মিলিটারির অবস্থাও কেরোসিন। তয় রোমানগোও বর্বরাই সিংহাসন থিকা টাইনা নামাইসিল।

দুই হাজার একের দালান ভাঙ্গনের পরে ফেডারেল রেইটের পানির দামের ফলে গত ছয় সাত বছরে পুরা মানি মার্কেটে চলেছে মগের মুল্লুক। হেজ ফান্ড আর প্রাইভেট ইকুইটির হাতে পইড়া টেকা পয়সার যাচ্ছেতাই। যারে তারে যেই সেই লোন দিয়া পুরা ইকনমির বারোটা। গত এক সপ্তাহে দুনিয়ার ফাইন্যানশিয়াল মার্কেটে যা ঘটল, ফিলিমের কাহিনী ফেইল। বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেটে এখনো ধসের ধাক্কাটা লাগে নাই। নাকি ঝড়ঝাপটা জাহাজের ওপরে যায় আর বাদামের খোসা বাইচা যায় সেইটা নেক্সট দুই তিন মাসেই টের পাওয়া যাবে।

১৯৮৯ সালে আমেরিকার জাতীয় দেনা হিসাবের লাইগা একখান ন্যাশনাল ডেট ক্লক বসানো হয়েছিল। ম্যানহাটনের এই ঘড়িতে সারা দেশের দেনার সাথে পরিবারপিছু দেনার সাইজ দেখাইত। দুই দিন আগে এই ঘড়ির বারোটা বাইজা গেছে। ট্রিলিয়নের ঘর পর্যন্ত দেনা গোণার লিমিট ছিল। অহন দশ ট্রিলিয়ন ছাড়ায়ে যাবার পরে আর ইজ্জতের ফালুদা হবার কিছু বাকি নাই।

পশ্চিমা অর্থনীতি এই ধাক্কায় বেতাল হইলেও কিছুদিন পরে ঠিকই সামলায়ে উঠবো, মাগার সব্বাই যা বলছে তা হইল, টেকাপয়সার বেপারে আম্রিকার একচ্ছত্র মোড়লীর দিন মনে হয় শেষ। দূরপ্রাচ্য আর মধ্যপ্রাচ্য থেকে ধারকর্য কইরা যদি কিছু ঠিক করবার পারে। আমরা তো এদ্দিন পশ্চিমের পা থেকে শুরু কইরা জুতার তলা পর্যন্ত চাটার লাইগা রেডি ছিলাম। এখন পাওয়ারের ব্যালেন্স অন্যদিকে সরে গেলে নতুন কোন প্রভূর পা চাটার জন্য জিহ্বারে অখনি রেডি করা লাগে।

যা নিয়া শুরু করেছিলাম, বিশ্ব অর্থনীতির ছারখার করার জন্য শেষ পর্যন্ত মাকে আঙ্গুল তুলতে হচ্ছে এই স্বাধীনচেতা, গোঁয়ার, দূধর্ষ, বর্বর এই জাতির দিকেই। যারা শ্লোগান দেয় বাংলা হবে আফগান, সেই ছাগলগুলোর আইডিয়া নাই হোয়াট ইট টেকস টু বি এন আফগান। তাই গত পনের বছরে এই প্রথমবারের মত আমি স্যালুট অফ অনার জানালাম পাহাড়ীদের। ভালো থেক তোমরা। আর বিশ্ববাসীকে আফিমের ভালোবাসা জানানো বন্ধ কর!

ব্লগে আমার এই প্রথম এবং সম্ভবত শেষ জিহাদী পোস্ট। মশকরার ব্যাপারস্যাপার কেউ মাইন্ড খাইয়েন না।

৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×