এরপর হুজুর নামাজের নিয়ম কানুন দেখিয়ে দিলেন কিভাবে অতিরিক্ত ছয় তাকবীরের সাথে নামাজ আদায় করতে হবে। সবাই সম্মতি দিলো তারা বুঝেছেন, হুজুর সবার অনুমতি নিয়ে নামাজ শুরু করলেন। তারপরেও দেখা গেল নামাজের ভিতর অনেকেই অতিরিক্ত তিন তকবীর না দিয়ে রুকুতে চলে গেল।
এরপর নামাজ শেষে খুতবা শুরু হলো। প্রথম ভাগ শেষ হলো সুন্দর ভাবে। আমরা সবাই শুনছি চুপ করে বসে থেকে। খুতবার সময় কথাবার্তা বলা বা বিশেষ অঙ্গভঙ্গি করা নিষেধ। খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা ওয়াজিব। এই অবস্থায় দেখা গেলো কিছু অতি উৎসাহী লোক মসজিদ আর হুজুরের টাকা তোলার জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়লো। এরা একটু পাতিনেতা গোছের। একটু নেতাগিরি ফলিয়ে নিজেদের নাম ফলানো ব্যর্থ চেষ্টা। এরা মসজিদ কমিটির লোকজন। কোন কাজই নেই আলগা মাতব্বরি করা। শিক্ষার লেশ মাত্র নেই। প্রতি কাতারে কাতারে তারা জোড় করে ছেলেদের রুমাল দিয়ে চাঁদা কালেকশনের হুকুম দিয়ে দিলো। ভাবটা এমন যেন হাটের ইজারাদার। মনে হচ্ছে ওর মহল্লায় নামাজ পড়তে এসেছি। দেখা যাচ্ছে বেশীভাগ ক্ষেত্রেই এরা আমাদের মহল্লার স্থানীয় কেউ নয়, কোথাও কোন বাসায় থাকে। আমরা এতবছর ধরে এই মহল্লায় স্থানীয় কিন্তু এলাকার মুরুব্বীদের উপরে কোনদিন কোন কথা বলিনি।
এইরকম অবস্থা দেখে হুজুর ক্ষেপে গেলেন। খুতবা পড়তে পড়তে গলা মোটা করে উনি কিছুক্ষণ উনি খুতবা পড়লেন। চোখ বড় বড় করলেন। এতেই ওরা বুঝে গেলো, পুরোপুরি দমে গেলো। নামাজের পরে মহল্লাহর মুরুব্বীরা ওদের এই বেয়াদবী করার জন্য বকাঝকা করলেন।
বাসায় ফিরতেই ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হলো। সকালের রৌদ্রউজ্জল আকাশ এখন মেঘাচ্ছন্ন আর বৃষ্টি চলছে। রাস্তা ফাঁকা, বাচ্চা ছেলেমেয়েদের রাস্তায় ঘোরাঘুরি বন্ধ। মহল্লার মোড়ে মোড়ে উঠতি মাস্তানদের জোড়ে গান বাজানোও বন্ধ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:৩৬