মেহরানকে যারা দেখেননি তারা `দ্য টারমিনাল' ছবিটি দেখতে পারেন। ২০০৪ সালে নির্মিত টম হ্যাঙ্কসের এই ছবির কাহিনী মেহরান করিম নাসেরির জীবন থেকে নেওয়া। ইরানি এই শরণার্থী টানা ১৫ বছর ধরে বসবাস করেছেন ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে।
প্যারিসের চার্লস দ্য গাওল্লে বিমানবন্দরের ডিপারচার লাউঞ্জে থাকা শুরু করনে ১৯৮৮ সালের আগস্ট থেকে। ১৯৭৭ সালে রাজনৈতিক কারণে মেহরানকে ইরান থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে কেটে যায় কয়েক বছর।
অবশেষে বেলজিয়াম তাকে আশ্রয় দেয়। পরে তিনি ইংল্যান্ডে যাওয়ার জন্য ফ্রান্সে আসেন। তখন ১৯৮৮ সাল। প্যারসি থেকে একটি ফ্লাইটে লন্ডনের হিথ্র বিমানবন্দরে পৌঁছেন তিনি। কিন্তু তার সর্বনাশ যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছিল ফ্রান্সেই। ফ্রান্সের একটি রেলস্টেশেনই চুরি হয়ে গিয়েছিল তার ব্রিফকেস। তাতে ছিল শরণার্থী পরিচয়ের সব কাগজপত্র। তাকে আবার ফেরত পাঠানো হয় প্যারিসে।
টানাহেঁচড়া আর বিভিন্ন দেশের আমলাতান্ত্রকি জটিলতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের অসহযোগিতায় ততদিনে মেহরান একেবারে বিপর্যস্ত। জেদ চেপে যায় তার। ভাবেন, অনেক হয়েছে, আর নয়। চার্লস দ্য গাওল্লে বিমানবন্দরের লাউঞ্জে বিছানাপত্তর গুছিয়ে সংসার শুরু করেন তিনি। সেখানেই কেটে গেছে একটানা ১৫ বছর। অসুস্থ হয়ে পড়ায় পর মেহরানকে সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
২০০৭ সালের মার্চ থেকে তার আশ্রয় মিলেছে। থাকছেন প্যারিসের একটি বাস্তুহারা শিবিরে। মেহরান করিম নাসেরি স্যার আলফ্রডে মেহরান নামেও পরিচিত। তার একটি আত্মজীবনীও প্রকাশতি হয়েছে।