somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুপিদির কথা মনে পড়ে...তার চার ছেলে মেয়ে।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাস থ্রির ঘটনা। ক্লাসের শিক্ষক আমার এক সহপাঠিকে পড়া ধরলো কিন্তু সহপাঠি বন্ধুটি কিছু বলছে না। মাথা নীচু করে শুধু মিটিমিটি হাসছে। ঠিক তখনই আরেক সহপাঠি উঠে দাড়িয়ে স্যারকে উদ্দেশ্য করে বললো,‍"সার ওই না প্রেমে পরছে কতা কয়না খালি আসে।" আমরা সবাই ভয় পেয়ে গেলাম। কেন ভয় পেয়েছিলাম? কারন আমরা বুঝতে পারিনি। আমাদের কাছে প্রেম বিষয়টি পরিস্কার ছিলনা। কিরকম অনুভুতি হলে বা কি বিশেষ আচরনকে প্রেম বলে, আমরা জানতাম না। তাছাড়া এই বিষয়টির পুরো দখলে ছিল বড়রা। স্যার অবশ্য তাকে সেদিন মারেনি, শুধু হেসেছিল। স্যার কেনইবা হাসলো তাও বুঝতে পারিনি। আমরা সবাই প্রেমে পরা ওই সহপাঠিকে এড়িয়ে চলতাম। কেন এড়িয়ে চলতাম তাও তখন বুঝিনি। তবে পাশের বাড়ির সুপিদির সাথে ও বউচি খেলতো। একসাথে স্কুলে আসতো। সুপি দিদি ছিল খুবই সুন্দরী। আমাদের বাড়ি আর সুপিদির বাড়ির মাঝখানে একটি সরকারী নালা। সে নালাতে প্রায়ই পানি থাকতো না তবে কাদাও কখনো শুকাতো না। সুপিদি ওপারে দাড়িয়ে আমাকে ডাকতেন, বিবালরে দেক, গাছে আমডা কেমন পাকছে? তুই পাকাডা খা আর আমারে কাচাঁডা পাইরা দে মাখাইয়া খামুনে একহাতে? আমি বলতাম না সুপিদি মায় মারবো দুফুরকালে গাছে উঠলে। সুপিদি বলতো আরে যাহ! খালারে আমি কমুনে তুই আয় আমার কাছে। বিকেল হলে পাশের গ্রামের বড় ভাইয়েরা দলবেধেঁ সুপিদি আর আমাদের নালার পাশদিয়ে গল্প আর গান করতে করতে হেঁটে বেড়াতো। কোথায় যে তারা যেতো আর আসতো? তা জানার প্রয়োজনের কথা আমি ভাবতাম না। তবে তাদের কথা আর গানের স্বর আমাদের বাড়ির কাছে এলে বেড়ে যেতো। একদিন বাড়ির পাশের সুপাড়ি বাগানে ওসব লুঙ্গি আর ফুল প্যান্ট পড়া বড়ভাইকে প্রেম বিষয়ক কথা বলতে শুনেছিলাম তারা পরিকল্পনা করছিল কে আগে সুপিদির পাজামা টান দিবে। আমি তখনও বুঝতে শিখিনি প্রেমের সাথে পাজামার সম্পর্কটা ঠিক কোথায়? তবে আমার তাদেরকে গুন্ডা মনে হয়েছিল। এরপর থেকে কোথাও ডাকাতির খবর শুনলেই আমার ওইসব বড় ভাইদের চেহারা মনে আসতো। আমি আর সুপিদি প্রতিদিনই কোন না কোন ফল একসাথে মাখিয়ে খেতাম। আম তেতুল না হয়, টক ডুয়ে ফল মা বলতো সুপিদির চুল নাকি খুবই সুন্দর এমন দীঘল কালো চুল সারা গায়ে একজনেরও নেই। আমার কিন্তু তার চেয়ে বেশি ভালো লাগতো সুপিদির সুন্দর মুখ। মায়াবী একখানা মুখ নিয়ে সুপিদি প্রায়ই আমার দিকে তাকিয়ে হাসতো। আসলে সুপিদির মুখটাই একটা হাসি। সুপিদি যে ঘরে রাতে ঘুমায় তার পুবে ছোট্ট পুকুর আমি সারা দুপুর ঝাপিয়ে বেড়াতাম। একদিন ডুব ডুব খেলতে যেয়ে সুপিদির পাজামার ফাসঁ এটে গেলো। পরে ঐ ফাসঁ ছাড়াতে সুপিদি আমার কাছে এসেছিল। আমি দাত দিয়ে কুটকুট করে কেটে দিয়েছিলাম। সুপিদি কি আমার সাথে প্রেম করতো? আমি আজো জানিনা। সুপিদিদের বাড়িতে একটা কামরাঙা গাছ ছিল, হায়রে কামরাঙা ধরতো! একবার কামরাঙা পেড়ে দিলাম। তারপর মাখিয়ে খেয়ে দেয়ে সুপিদির ওড়নায় মুখ মুছলে সুপিদি হাসি হাসি মুখ করে আমাকে বললো ওই বিবাল নোযাই আমরা চোকে পলক না হালাইয়া চাইয়া থাকি দেহি কে কতক্ষুন চাইয়া থাকতে পারে? আমি তাকিয়ে ছিলাম, অবশ্য আমারই আগে পলক পড়েছিল। আহা সুপিদির চোখ কত কালো আর গভীর ছিল! সুপিদির সাথে কি আমি প্রেম করতাম? জানিনা জানিনা জানিনা!!! এমনকি আমি এখনো পরিস্কার না আমার ওই সহপাঠি আসলে কেন কথা বলতো না শুধু মিটিমিটি হাসতো। খুলনার এক কাপড় ব্যবসায়ীর সাথে সুপিদির একদিন বিয়ে হয়ে গেল। বিয়ের দিন সুপিদিকে খুব খুব খুবই সুন্দর লাগছিল। কাটা তরমুজের মতো। আজ আমাদের বাড়িতে একটা তরমুজ এনেছে আমার মা। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:১৩
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×