somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তাজুল ইসলাম মুন্না
সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ালেখা করছি। পাশাপাশি অনলাইন জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করছি দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে। ব্লগে ফেরার ইচ্ছা বহুদিনের। একদিন হয়তো হুট করে আবারও রেগুলার হয়ে যাবো।

রস+আলো (২৮ জানুয়ারী, ২০০৮) পর্ব ২

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিয়ে মোটেও লটারি নয়
তাহসান+মিথিলা
আপনাদের জুটি তো ‘লোহায় সোহাগা’ (প্রচলিত আছে লোহা সোনা অপেক্ষা মূল্যবান)। আপনাদের অনেক নামডাক। তাই রস+আলোর আয়োজনে পাঠক আজ আপনাদের কথোপকথন শুনবে। তাহলে শুরু করা যাক।
তাহসান: আগে বলবেন তো। আমার ‘কথোপকথন’ অ্যালবামটি দুই বছর আগে বাজারে এসেছিল। আগে বললে ওটা সঙ্গে নিয়ে আসতাম। এখন কীভাবে যে ম্যানেজ করি।
রস+আলো: ধন্যবাদ। ওটা এ মুহুর্তে দরকার নাই। আমরা তাহসান-মিথিলার কথোপকথন শুনতে চাই। আচ্ছা, তাহলে আমরাই শুরু করি। আপনাদের মধ্যে প্রথম কে কাকে প্রস্তাব দেন?
তাহসান: ইয়ে, মানে, আমিই সেই লোক। আমি। আমিই প্রস্তাব করেছিলাম। দারুণ নার্ভাস আমি। ওই দিনের কথা ভাবতে এখনো নার্ভাস হচ্ছি।
মিথিলা: আর বইল না। আমারও সেই দশা হয়েছিল। যতক্ষণ তুমি প্রস্তাব করনি ততক্ষণ নার্ভাস ছিলাম। আচ্ছা সেদিন তুমি এত ঘামছিলে কেন?
তাহসান: কই ঘামছিলাম। আরে নাহ! শহরে তো বেশির ভাগ সময় লোডশেডিং থাকে। তার ওপর নায়কগিরি ফলাতে গিয়ে স্যুট-প্যান্ট... (কথাটা বলতে বলতে আনমনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে তাহসান। গুনগুন করে গান ধরে। এ কী ভুল আমি করলাম...)।
মিথিলা: কী? কী গান গাইলা তুমি? আরে ভুল তো আমি করছি। আমি...।
তাহসান: আরে আমি আবার কী গাইলাম। আমি তো গাইতে ছিলাম এ কী সোনার আলো...।
মিথিলা: হয়েছে, হয়েছে। আর প্রলাপ বকতে হবে না।
তাহসান: তাই তো, তাই তো! শেষেরটা তো তাই ছিল!! প্র অ অ লাপ!
মিথিলা: কথা না বলে খেলা দেখো। অস্ট্রেলিয়া একটা টিম বটে।
তাহসান: তাহলে কি বাংলাদেশ ‘দুটি’ টিম।
রআ: সুপ্রিয় তারকা জুটি, আমরা ঝগড়া-ফেসাদে না জড়াই। যুদ্ধ নয় শান্তি, সংঘাত নয় আলোচনা। আসলে বিয়ে একটা লটারি। কী বলেন?
তাহসান: অবজেকশন। বিয়ে মোটেও লটারি নয়। আরে ভাই, লটারিতে অনেক অপশন থাকে। নগদ টাকা, ফ্ল্যাট, গাড়ি...আরও কত কী? আর বিয়েতে একটাই অপশন।
রআ: শৈশবের কোনো মজার ঘটনা বলেন, যা মনে পড়লে এখনো হাসি লাগে।
তাহসান: হিঃ, হিঃ, হিঃ, হোঃ, হোঃ ...। হাসি আসতাছে, হাসি। আমি একবার মাউথ অর্গান বাজাতে গিয়ে গিলে ফেলছিলাম। এখন তো পিয়ানো বাজাই। যদি...হিঃ হিঃ।
মিথিলা: আচ্ছা তাসু, বলো তো ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তোমার কোনো ধারণা আছে?
তাহসান: আছে। স্পষ্ট ধারণা আছে। ভবিষ্যৎ একবারই আসে। আর এসেই অতীত হয়ে যায়। ‘বউ’ তোমার জন্নস্থান কোথায়?
মিথিলা: এই ঢাকা শহরেই। সেই থেকে ঢাকা হলো গর্বিত মিথিলাপ্রসু।
তাহসান: তাহলে ঢাকার ইতিহাসে প্রথম অবাক কান্ডও ঘটেছে।
মিথিলা: দেখো, কথা বেশি বলছ। আমি কম কথার মানুষ। এই তো এই শাড়িটা গত সোমবার মার্কেটে গিয়ে মাত্র ২৮টা দোকান পছন্দ করে কিনেছি। ওই যে দোকান থেকে কিনেছি, ওই দোকানদার আবার আমার ভক্ত। শাড়িটা কেনার জন্য আমাকে কত অনুরোধ। আফসোস। ভদ্রলোক নিঃসন্তান, আমাকে বলে, ‘মা, শাড়িটা নেন। মানাবে খুব।’ ওনার এক ভাগ্নি আবার আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত। আমার ভক্ত। ভদ্রলোক এই শাড়িটার দাম চাইল সাড়ে চার হাজার টাকা। শেষে একশো টাকা কমে কিনলাম। ঘরে পরা যাবে।
তাহসান: হুম। শুনলাম! উফ্!
রআ: শুনেছি আপনাদের ভালোবাসা আকাশছোঁয়া?
তাহসান: বলতে পারেন। তবে আমরা যে বিল্ডিংয়ে থাকি ওটা আকাশছোঁয়া হলেও আমরা থাকি দ্বিতীয় তলায়।
রআ: এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব দেন। আপনার সংগীতজীবনের হাতেখড়ি কার কাছে?
তাহসান: কী যে বলেন, সংগীত কি হাত দিয়ে গায় নাকি কেউ। বলুন গলায় খড়ি।
রআ: সংগীতে নোবেল প্রাইজ পেতে আপনি কী করবেন?
তাহসান: সংগীতে নোবেল পেতে হলে বেশি করে ঘুমাব। কারণ বাস্তবে তো আর সংগীতে নোবেল পাওয়া সম্ভব না। তাই স্বপ্নে যদি পাওয়া যায়।
মিথিলা: আরে তুমি তো কথার দোকান খুলে নিয়ে বইছো।
তাহসান: আজ্ঞে!
"" মাসুম অপু

একটি আধুনিক প্রেমপত্র এবং এর উত্তর
জিনাত রিপা
কবুতরের পায়ে চিঠি বাঁধার যুগ এখন ইতিহাস। মুঠোফোনও পার করেছে প্রেমের একাধিক ধাপ। নতুন কিছু চাই এখন। ইনিয়ে-বিনিয়ে মনের কথা জানিয়ে প্রেমপত্রই বা চলে আর কত দিন! এমনতর নানা চিন্তায় সদ্য কলেজে পা-পড়া আকাশের যখন ‘শ্যাম রাখি, না কুল রাখি’ দশা, তখনই তার মাথায় এল নতুন এক আইডিয়া। রেশমাকে তার ভালো লাগে, এ কথা জানাতে নিজেই আবিষ্ককার করল ‘নো দাইসেলফ’ প্রথা। এক সাগর সাহস সঞ্চয় করে শেষ পর্যন্ত আকাশ লিখল তার প্রথম প্রেমপত্র; ক্লাসের সবচেয়ে ভালো লাগা রেশমা নামের মেয়েটিকে।

প্রিয় রেশমা,
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে তুমিই পারো আমার মনের দরজা খুলে দিতে। তোমার সুবিধার জন্য জানিয়ে রাখছি, প্রতিটি প্রশ্নের ‘ক’ উত্তরের জন্য তুমি ১০, ‘খ’ উত্তরের জন্য ৫; আর ‘গ’ এর জন্য পাবে ৩ নম্বর।

প্রশ্ন: ১. প্রতিদিন যখন তুমি ক্লাসে ঢোকো, প্রথমেই আমার দিকে তাকাও। কারণ−
(ক) ভালোবাস তাই।
(খ) আমার দিকে না তাকিয়ে তুমি থাকতে পারো না।
(গ) সত্যিই তাকাই নাকি...জানতাম না তো!

প্রশ্ন: ২. কোনো শিক্ষক যদি কৌতুক বলেন, তুমি হাস আর সঙ্গে সঙ্গে আমার দিকেও তাকাও, কেননা−
(ক) আমাকে হাসতে দেখলে তোমার ভালো লাগে।
(খ) তুমি দেখতে চাও, আমার রসবোধ আছে কি না।
(গ) আমার হাসি তোমাকে উদ্বেলিত করে।

প্রশ্ন: ৩. একদিন ক্লাসে গান গাইছিলে। আমি ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তুমি গান বন্ধ করে দিয়েছিলে। মনে আছে তোমার? কেন−
(ক) আমার সামনে গাইতে তুমি লজ্জা পাও।
(খ) আমার উপস্িথতি তোমাকে ওলট-পালট করে দেয়।
(গ) তুমি ভয় পাও, যদি আমি তোমার গান পছন্দ না করি!

প্রশ্ন: ৪. ছোটবেলার ছবিগুলো একদিন তুমি সবাইকে দেখাচ্ছিলে, আমি আসতেই লুকালে সেগুলো। কারণ−
(ক) তুমি লজ্জা পেয়েছিলে।
(খ) অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলে।
(গ) তুমি জানো না, আসলে অনুভুতিটা কী?

প্রশ্ন: ৫. একবার কলেজের সবাই বনভোজনে বান্দরবান গেলাম। খেয়াল আছে তোমার? পাহাড়ে ওঠার সময় আমি ও আমার বন্ধুরা তোমাকে সাহায্যের হাত বাড়াতেই আমার এক বন্ধুর হাতকেই বেছে নিলে তুমি। কারণ−
(ক) তুমি আমাকে হতাশ করতে পছন্দ কর।
(খ) তুমি জানো, একবার ধরলে আমার হাত
আর ছাড়তে মন চাইবে না তোমার।
(গ) তুমি জানো না, কেন।

প্রশ্ন: ৬. কাল বাসস্টপে গাড়ি আসার পরও উঠলে না তাতে। দাঁড়িয়েই রইলে। কেননা−
(ক) আমার অপেক্ষায় ছিলে তুমি।
(খ) আমাকে নিয়েই ভাবছিলে তুমি! এতই মগ্ন
ছিলে যে বাস কখন চলে গেল খেয়ালও করনি।
(গ) বাসে খুব ভিড় ছিল।

প্রশ্ন: ৭. তোমার মা-বাবা কলেজে এলে তুমি তাঁদের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলে। কারণ−
(ক) আমি তোমার জীবনসঙ্গী হতে যাচ্ছি।
(খ) তুমি বুঝতে চাইছিলে, তোমার মা-বাবা আমাকে নিয়ে কী ভাবছেন।
(গ) তুমি শুধু তাঁদের সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়েই দিতে চেয়েছিলে।

প্রশ্ন: ৮. ‘মেয়েদের খোঁপায় গোলাপ আমার ভালো লাগে’ বলেছিলাম একদিন। পরদিনই খোঁপায় গোলাপ দিয়েছিলে তুমি। কারণ−
(ক) আমার ইচ্ছাপূরণের জন্য।
(খ) গোলাপ তোমারও পছন্দ।
(গ) তুমি কোনো না কোনোভাবে সেদিন
একটি গোলাপ পেয়েছিলে।

প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও, আর তোমার প্রাপ্ত নম্বর যোগ করো। যদি তা ৪০-এর বেশি হয়, তবে তুমি আমাকে ভালোবাস। দয়া করে তা প্রকাশ করতে আর দেরি কোরো না। নম্বর যদি ৩০ থেকে ৪০-এর মধ্যে হয়, তবে আমার প্রতি তোমার প্রেম কুঁড়ি অবস্থায় আছে। একে পূর্ণরূপে বিকশিত হতে দাও। আর নম্বর ৩০-এর কম হলে আমাকে ভালোবাস কি বাস না, তা নিয়ে তুমি সন্দিহান। তোমার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।
অনেক ভালোবাসা
আকাশ

চিঠি লেখা শেষ হলে আঠা দিয়ে উত্তমরূপে খাম বন্ধ করে আকাশ তা রেশমার হাতে পৌঁছে দিল। ‘হূদয় মন্দ্রিল ডমরু গুরু গুরু’ দশা নিয়ে কাটল তার পরবর্তী ১০ দিন। অবশেষে সব প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে রেশমার উত্তর এল।

আকাশ,
দয়া করে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর কেবল ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দিয়ে দাও।

প্রশ্ন: ১. কেউ যদি প্রতিদিন ক্লাসের প্রথম বেঞ্চে বসে, ক্লাসে ঢুকতেই তার দিকে চোখ পড়ে কি না?
(ক) হ্যাঁ।
(খ) না।

প্রশ্ন: ২. কোনো মেয়ে যদি হাসতে হাসতে কারও দিকে তাকায়, তা-ই বুঝি ভালোবাসা?
(ক) হ্যাঁ।
(খ) না।

প্রশ্ন: ৩. গান গাইতে গাইতে কেউ যদি গানের কলি ভুলে যায়, সে কি গান বন্ধ করে দেয়; না কি গাইতেই থাকে?
(ক) হ্যাঁ।
(খ) না।

প্রশ্ন: ৪. আমি আমার ছোটবেলার কিছু ছবি বন্ধুদের দেখাচ্ছিলাম (যারা আবার সবাই মেয়ে!)। তার মধ্যে তুমি হঠাৎ নাক গলালে, যা আমরা কেউই পছন্দ করিনি। তখন কি ছবিগুলো লুকিয়ে ফেলাটাই ঠিক না?
(ক) হ্যাঁ।
(খ) না।

প্রশ্ন: ৫. পর্বতারোহণের সময় তোমাকে এড়িয়ে গিয়েছি আমি, তুমি তা এখনো বোঝনি?
(ক) হ্যাঁ।
(খ) না।

প্রশ্ন: ৬. আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু রোকসানার জন্য কি আমার বাসস্টপে অপেক্ষা করা উচিত নয়?
(ক) হ্যাঁ।
(খ) না।

প্রশ্ন: ৭ . তোমাকে একজন বন্ধু হিসেবে মা-বাবার সঙ্গে পরিচয় করানোটা কি উচিত নয়?
(ক) হ্যাঁ।
(খ) না।

প্রশ্ন: ৮. শাপলা, কলার ফুল, কচুরিপানার ফুল এমনকি ফুলকপিও তোমার প্রিয়। এমনই তো বলেছিলে সেদিন তুমি−তাই নয় কি?
(ক) হ্যাঁ।
(খ) না।

যদি একটি প্রশ্নের উত্তরও তোমার ‘হ্যাঁ’ হয়, তবে আমি তোমাকে ভালোবাসি না। আর যদি ‘না’ হয়, তবে ভালোবাসার অর্থই তুমি এখনো বুঝে উঠতে পারোনি।
আশা করি, পুরো ব্যাপারটা এখন তোমার কাছে ‘জলবৎ তরলং’, নয় কি?
ইতি
রেশমা

পরিশেষ
কী আর করা। রেশমার কাছ থেকে এমন উত্তর পাওয়ার পর আক্ষরিক অর্থেই যেন আকাশের মাথায় ‘আকাশ’ ভেঙে পড়ল। তবে আকাশ এ যুগের স্নার্ট ছেলে; আর রবার্ট ব্রুশ তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব। তাই সে হতোদ্যম না হয়ে পুনরায় প্রেমপত্রের নতুন ফরম্যাট খুঁজছে। হয়তো বা অন্য কারও জন্য। কেউ পারবেন নতুন ফরম্যাটের একটি প্রেমপত্র দিতে?

হুমকি যদি দিয়েই বসে
ইকবাল খন্দকার
হুমকি আমাদের প্রায়ই শুনতে হয়। কিন্তু আপনাকে যদি এ ধরনের হুমকি কেউ দিয়ে বসে, তাহলে আপনার করণীয় কিংবা ভাবনীয় কী, ভেবেছেন কখনো? না ভাবলে জেনে নিন নিখরচায়।

পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে ফেলব
আপনাকে যদি পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে ফেলার হুমকি কেউ দিয়েই ফেলে, তাহলে প্রথমেই আপনি ভেবে নিন বর্তমান বাজারে কাঠের দরদামের কথা। একটা দরজা বানাতে যে পরিমাণ তক্তা লাগে, আর সেই তক্তার যে কী দাম, তা ভাবলেই দেখবেন হুমকিটার কোনো নেগেটিভ প্রভাব আপনার ওপর পড়ছে না; বরং আপনি হুমকিদাতাকে আদরের সঙ্গে বলেও ফেলতে পারেন−ভ্রাতা, পিটিয়ে তক্তা যখন বানাবেনই, একটু উন্নত মানের তক্তা বানালে অতিশয় উপকৃত হইতাম। যাতে ঘুণেটুনে না ধরে আর-কি!

থাপড়ে চাপার দাঁত ফেলে দেব
আপনাকে যখন কেউ থাপড়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়, তখন আপনি নগদে ভেবে ফেলুন একজন দাঁতের ডাক্তারের কথা, যিনি একটা দাঁত ফেলতেই শ পাঁচেক টাকা নেন। চাপার পুরো দাঁত ফেললে তিনি লাখখানেক টাকা চেয়ে বসবেন। অথচ এই লোকটা বলছে, কোনো রকম ফি-টি ছাড়াই আপনার চাপার দাঁত ফেলে দেবে। বর্তমান দুনিয়ায় এমন দরদি পাবলিক আর কোথায় পাবেন, বলুন? কুইক! তার প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করুন।

পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে ফেলব
আপনার পিঠের ছাল তথা চামড়ার অবস্থা একেবারে বেজায় রকম খারাপ। বিভিন্ন রকম চর্মরোগে আক্রান্ত হয়ে আপনার চামড়া গন্ডারের চামড়ার মতো মোটা হয়ে গেছে। কত দাওয়াই যে খেয়েছেন, তার কোনো হিসাব নেই। এই চামড়া এখন আপনার লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন কেউ যদি আপনার পিঠের এই চামড়া তুলে দেয়, তাহলে মন্দ কী! আর যা-ই হোক, চুলকানির বংশটা তো নির্বংশ হবে। তবে এটাও ঠিক যে নতুন চামড়া না ওঠা পর্যন্ত কিন্তু আপনাকে ভুগতে হবে।

ঠ্যাং ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেব
দুনিয়াটা এমনভাবে পাল্টে গেছে যে এখানে দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন পাবলিক খুঁজে পাওয়া ভার। অধিকাংশ পাবলিকেরই দায়িত্বজ্ঞান বলতে কিছু নেই বললেই চলে। অথচ যে আপনাকে ঠ্যাং ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিল, সে নিঃসন্দেহে বিশাল দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন পাবলিক। সে আপনার ঠ্যাং ভেঙে দিয়েই চলে যেতে পারত। কিন্তু না, সে শুধু ঠ্যাং ভাঙা পর্যন্তই ক্ষান্ত থাকেনি; কারণ, আপনার ভাঙা ঠ্যাংটি হারিয়ে যেতে পারে। হারিয়ে গেলে আপনার মুসিবত আরও বাড়তে পারে। আর এ জন্য সে এটি আপনার হাতে ধরিয়ে দিতে চাইছে দায়িত্বের সঙ্গে। তাকে একটা থ্যাংকস দেওয়া উচিত।

মেরে ভুত বানিয়ে ফেলব
জন্েনর পর থেকেই আমরা নানা জাতের মিথ্যা শুনে আসছি। তেমনই একটা বিশেষ মিথ্যা হচ্ছে ভুতসংক্রান্ত। অথচ ভুত বলতে কিচ্ছু নেই। এটা একটা ফাউ জিনিস, ফাউ কথা। ভুত বলতে জগতে কিছু না থাকলেও আপনাকে যে মেরে ভুত বানিয়ে ফেলার হুমকি দিল, সে নিশ্চয়ই জাদুটাদু কিছু একটা জানে। তা না হলে একজন জলজ্যান্ত মানুষকে কীভাবে ভুত বানাবে? যা-ই হোক, সে যেহেতু আপনাকে মেরে ভর্তা বা এ জাতীয় নিম্নমানের কোনো জিনিস না বানিয়ে ভুতের মতো আকর্ষণীয় জিনিস বানাতে চাইছে, অতএব কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তাকে একদিন দাওয়াত করে চা পান করান।

পিটিয়ে লম্বা করে ফেলব
বাংলা ছবির নায়ক বা এ টাইপের কিছু হওয়ার ইচ্ছে আপনার পিচ্চিকাল থেকেই। কিন্তু বয়স বাড়ার পর জানতে পারলেন, আপনার সাইজ আর বাড়বে না। তার মানে টেনেটুনে আপনি ফুট চারেক হন আর-কি। আপনাকে যে-ই পিটিয়ে লম্বা করে ফেলার হুমকি দিক না কেন, আপনি এখন এই মুহুর্তে তার পায়ে পড়ে যান। কারণ, একমাত্র সে-ই পারবে আপনার বহুদিনের ইচ্ছে পূরণ করতে। পিটুনির চোটে আপনি যখন ফুটখানেক লম্বা হবেন, তখন নায়ক হওয়া আপনার আর ঠেকায় কে! আপনি নায়ক হবেন, ডজন ডজন নায়িকা তখন আপনার পেছনে ঘুরবে। ভাবতেই কেমন সুখ সুখ লাগছে, তাই না ব্রাদার?

হাড়-মাংস আলাদা করে ফেলব
মাংসের বাজারে গেলে আপনাকে গরুর মাংস বলে মহিষের মাংস তো দিয়ে দেবেই, এমনকি এক কেজি মাংসের সঙ্গে পৌনে এক কেজি হাড় ঢুকিয়ে দেবে। ভাবখানা এমন যে ওরা হাড়-মাংস আলাদা করতে জানে না বা শেখেনি। কিন্তু যে আপনাকে এই হুমকি দিল−হাড়-মাংস আলাদা করে দেবে−সে নিঃসন্দেহে এ কাজে খুব পারদর্শী। তাকে দিয়ে একটা কিছু হবেই হবে। অতএব এই মহান লোকটার প্রতি রাগ না করে তার দিকে তাকিয়ে বিগলিত মুখে একটি হাসি দিন।

তাস এখন হিট খেলা
আহসান হাবীব
এক লোক তার পোষা অসুস্থ মুমূর্ষু কুকুরকে নিয়ে গেল এক ভেট-এর কাছে। ভেট একনজর দেখেই মাথা নেড়ে বলল−
‘গন কেস’
−মানে?
−মানে আপনার কুকুর মারা গেছে।
−আপনি তাকে ভালোমতো না দেখেই বলে দিলেন মারা গেছে?
−আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না? বেশ...। ভেট এবার ছোট্ট একটা শিস দিল। মুহুর্তেই ছুটে এল একটা বিড়াল। এসে কুকুরটার মুখের কাছে একটু শুঁকল। তারপর মাথা ঝাঁকাল।
দেখলেন? দেখলেন তো? আমার কথা বিশ্বাস করলেন না, এখন দেখুন বিড়ালটাও বুঝে গেছে আপনার কুকুর আর ইহজগতে নেই। পশুর মৃত্যু পশুর চেয়ে আর ভালো কে বুঝবে বলুন!
কুকুরের বিমর্ষ হতাশ মালিক মেনে নিল তার হতভাগ্য কুকুরের নিয়তি। এ সময়ে ভেট নিরীহ মুখে একটা প্যাডের কাগজ বাড়িয়ে দিল।
−ওটা কী?
−আমার বিল!
−বিল? বিল দেখে কুকুরের মালিক তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠল যেন−‘কী বলছেন?...শুধু মুখে বললেন কুকুরটা মারা গেছে এর জন্য বিল এগারো শ পঞ্চাশ টাকা?’
−না না, আপনি ভুল বুঝছেন। আমার বিল বেশি না, মাত্র পঞ্চাশ টাকা।
−তাহলে এই এগারো শ টাকা কিসের?
−ক্যাটস স্ক্যান।
এ তো গেল এনিমেল স্ক্যানের গল্প। এবার মনুষ্য স্ক্যানের গল্প শোনা যাক। ঢাকা শহরে ব্যাগ অ্যান্ড ব্যাগেজ নিয়ে দুই লোক একটা হোটেলে উঠল।
−খালি রুম হবে?
−হবে। তার আগে আপনাদের ব্যাগগুলো চলমান ট্রেটার ওপর রাখুন।
−মানে?
−মানে ওগুলো স্ক্যান করতে হবে।
−কেন? স্ক্যান করতে হবে কেন?
হোটেলের লোকেরা তাদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে স্ক্যান শুরু করে দিল। এবং হঠাৎ একজন আর্কিমিডিসের মতো সোল্লাসে চেঁচিয়ে উঠল, ‘ইউরেকা ইউরেকা...!!’
−কী পাওয়া গেছে? উদ্বিগ্ন লোকটি জানতে চায়।
−তাস। তাসের প্যাকেট।
−তাতে সমস্যা কী?
−আপনি আমাদের হোটেলের রুমে বসে তাস খেলবেন? আরে আমাদের হোটেলের নিচেও একটি প্রাইভেট ব্যাংক আছে, সেখানে লকারও আছে।
আগে মুরব্বিরা বলল, ‘দাবা, তাস, পাশা−তিন সর্বনাশা।’ দাবা আর পাশার কথা জানি না, তবে তাস যে সর্বনাশা তা প্রমাণিত হয়ে গেছে। শুক্রাবাদের নীদমহল হোটেলের রুমে কয়েকজন প্রতিভাবান বোর্ডার দিনের পর দিন তাস খেলে... তারপরের ইতিহাস তো সবাই জানে। গ্রাহকদের লকার ভেঙে ২০ কোটি টাকার অলংকার নিয়ে লাপাত্তা! তবে এটাও ঠিক, ইনডোর গেম হিসেবে তাস এখন লাইম লাইটে। আগে ধারণা ছিল, পয়সা বোধহয় শুধু ক্রিকেট-ফুটবলের মতো আউটডোর গেমেই। ‘লকার ব্রেকাররা’ সে ধারণার মর্মমূলে ইলেকট্রিক কাটার চালিয়েছে, বলাই বাহুল্য!!
ক্যাট স্ক্যান দিয়ে শুরু করেছিলাম। ক্যাটওয়াক দিয়ে শেষ করি। বাংলাদেশের এক বিখ্যাত মডেল চলছে ফ্রান্সে, গিমে মিউজিয়ামের (!) গ্যালারিতে ক্যাটওয়াক হবে। কারণ, তিনি আন্তর্জাতিক মানের ক্যাটওয়াক করে থাকেন। মা-বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বিখ্যাত মডেল চললেন এয়ারপোর্টের উদ্দেশে। কিন্তু একটু বাদেই ফিরে এলেন!
−কী হলো? ফিরে এলে যে? মা-বাবা দুজনেই অবাক!
−আজ যাব না।
−কেন?
−আজকের যাওয়াটা শুভ হবে না।
−কেন?
−যাওয়ার সময় সামনে দিয়ে একটা কালো বিড়াল হেঁটে গেল যে?

আজ খ্যাপটা -নিক্ষেপ- হয়ে গেছে
সংগীতাঙ্গনের বুলিভান্ডারে অনেক ধরনের শব্দ আছে, যেগুলোর অর্থ শুধু সংগীতাঙ্গনে জড়িত ব্যক্তিরাই ভালো বোঝেন (অন্য অঙ্গনের কেউ কেউ ব্যবহার করলেও এর উৎপত্তি সংগীতাঙ্গন থেকেই) এবং নিয়মিত ব্যবহার করেন। আসুন, সংগীতাঙ্গনে ব্যবহূত তেমন কিছু শব্দের অর্থ বোঝার চেষ্টা করি।
খ্যাপ: সাধারণত বাণিজ্যিক কোনো অনুষ্ঠান হলে শিল্পীদের বলতে শোনা যায়, "আজ একটা ফুল "খ্যাপ" আছে।" এর মানে এ অনুষ্ঠানে ভালো গিয়াসউদ্দিন (টাকা) পাওয়া যাবে এবং গিয়াসউদ্দিন নিয়ে কোনো ঝামেলা হওয়ার আশঙ্কা নেই।
সংক্ষেপ: সাধারণত অনুরোধের কোনো অনুষ্ঠান হলে সম্মানীটা একটু কম থাকে। এ ধরনের অনুষ্ঠান সম্পর্কে শিল্পীদের বলতে শোনা যায়, "আজ ফুল খ্যাপ না, "সংক্ষেপ"।" মানে গিয়াসউদ্দিন কম।
আক্ষেপ: কোনো শিল্পীর কাছে অনুষ্ঠানের প্রস্তাব এসেছে; কিন্তু আলোচনা চুড়ান্ত করার সময় সম্মানী নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় খ্যাপটা ছুটে গেল। তখন তাঁকে বলতে শোনা যায়, খ্যাপটা "আক্ষেপ" হয়ে গেছে। মানে খ্যাপ এসেছিল, কিন্তু গিয়াসউদ্দিন ঠিক হয়নি, তাই "আনতারা" (কেউ কেউ এ শব্দও ব্যবহার করেন) বাতিল।
নিক্ষেপ: এই শব্দের প্রয়োগ শিল্পী যখন করেন, তখন তাঁর মনের অবস্থা খুবই খারাপ থাকে। শিল্পী কথাবার্তা চুড়ান্ত করেছেন, কিন্তু অগ্রিম কোনো গিয়াসউদ্দিন নেননি। আয়োজকেরা খুব ভালো ব্যবহার করে অনুষ্ঠানে নিয়ে গেলেন। অনুষ্ঠান শেষে দেখা গেল, গিয়াসউদ্দিনের খবর নেই। আয়োজক লাপাত্তা। খ্যাপ মেরেও গিয়াসউদ্দিন না পেয়ে আক্ষেপ নিয়ে তখন শিল্পীকে বলতে শোনা যায়, "আজ খ্যাপটা "নিক্ষেপ" হয়ে গেছে।"
পদক্ষেপ: সংগীতাঙ্গনে এ শব্দের ব্যবহার একটু কম। কেউ কেউ এটা মজা করে বলেন। ব্যাখ্যাটা এ রকম−একটা খ্যাপ হওয়ার কথা আছে, কিন্তু হবে হবে করছে; মানে "পদক্ষেপ" নেওয়া হয়েছে।
ভ্রূক্ষেপ: এই শব্দের ব্যবহারও তুলনামূলক কম। যাঁরা বলেন, তাঁদের ব্যাখ্যাটা হলো−খ্যাপটা তাঁর কাছে এসে চোখের সামনে দিয়ে অন্য শিল্পীর কাছে চলে গেল। তাঁকে কোনো রকম "ভ্রূক্ষেপ" করল না।
"" কবির বকুল

একদা তাহারা আবিষ্ককারক
দেবব্রত মুখোপাধ্যায়
অনেক আগে একটা বিজ্ঞাপন দেখানো হতো চ্যানেলগুলোতে। আজহারউদ্দিন আর অজয় জাদেজা পাশাপাশি বসে খুব আরাম করে ব্যাট চিবিয়ে খাচ্ছেন। দেখে মনে হতো, ব্যাটের চেয়ে সুস্বাদু বস্তু এই ধরাধামে আর কিছু নেই। আমি নিশ্চিত, এখন হাতের কাছে পেলে আপনারা ক্রিকেটারদের মুন্ডুটাই অমনি করে চিবিয়ে খেতেন। এমন ইচ্ছাতে দোষ নেই; আমারও ইচ্ছা করছে। কিন্তু মানুষের মুন্ডু সম্ভবত ব্যাটের মতো অত সুখাদ্য হবে না। তা হলে এত দিনে এই ৭০০ কোটি লোক কোথায় চলে যেত!
তাই এবারের মতো ক্রিকেটারদের মুন্ডুগুলো ছেড়ে দিতে বলছি। বরং যে নিউজিল্যান্ডে বসে ওরা আপনাকে চটিয়েছে, সেই নিউজিল্যান্ডের একটা গল্প শুনে ফেলুন। গল্পটা এই সফরের নয়; বাংলাদেশের প্রথম নিউজিল্যান্ড সফরের, সেই ২০০১ সালের।
বাংলাদেশ তখন টেস্টে একেবারেই নতুন দল। নিউজিল্যান্ডে এমনিতেই প্রায় সব ক্রিকেট দল সফরে যায় আগে থেকে কাঁপতে কাঁপতে (ভয় এবং শীত উভয়ার্থে)। বাংলাদেশ দল কাঁপছিল না−এমন দাবি কেউ এখন পর্যন্ত করেননি। তবে তিনজন খেলোয়াড়ের মধ্যে নাকি কাঁপুনি বলে কিছু ছিল না−মোহাম্মদ আশরাফুল, মাশরাফি বিন মুর্তজা আর তুষার ইমরান। ভাবছেন, বাড়ি থেকে শীতের পোশাক বেশি করে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে তাঁদের কাঁপাকাঁপি কম ছিল। মোটেও না। আসল রহস্যটা হলো, ভয় জিনিসটা তখনো খুব একটা বুঝে উঠতে পারেননি তাঁরা (আসলেই তখন ছোট মানুষ এ তিনজন)। এই ত্রিরত্নের তাই প্রধান কাজ ছিল, সিনিয়ররা কে কী করেন, সেটা আবিষ্ককার করে বেড়ানো।
একদিন মহাপর্যটক কলম্বাসের (ইদানীং লোকে অবশ্য মহাদস্যু বলে) মতো তাঁরা আবিষ্ককার করে ফেললেন একটা ফোন বুথ। ফোন বুথ তো ফোন বুথই; এর আবার আবিষ্ককার করার কী? আছে, আছে। দস্যু বা পর্যটক−যা-ই বলুন, তাঁরা লক্ষ করলেন, এই ফোন বুথে এক সিনিয়র ক্রিকেটার (নাম বলা নিষেধ আছে) ঢুকেছেন তো ঢুকেছেনই; বেরোনোর কোনো লক্ষণ নেই। আপনি-আমি হলে ধৈর্যে কুলাত না; কিন্তু এই তিনজন যে আবিষ্ককারের নেশায় মেতেছেন! তাই ‘অনন্তকাল’ অপেক্ষার পর বুথে ঢুকে বের করার চেষ্টা করলেন রহস্য কী। বের হলো। একসঙ্গে তিনজনই ‘ইউরেকা’ বলে চিৎকার করে উঠলেন (আসলে চিৎকার করেছিলেন কি না জানি না)। এই বুথে ফোন করার আগে কয়েন ঢোকালে সেটা ফোন শেষে আবার বের হয়ে আসে। সোজা কথায় যন্ত্রটা বিগড়েছে। এক কয়েনে দিন কেন, বছর কাবার।
আর পায় কে! এই তিনজনের ফোনের দৌরাত্ম্যে সেই সিনিয়র আর বুথের কাছে আসেন না। দুনিয়ার যত জানা-অজানা ফোন নম্বরে ‘জরুরি’ কথা চলে তিন আইনস্টাইনের। কথা শেষই হয় না। শেষ করতে হলো সফর শেষ হলো বলে।
গল্পটা এখানেই শেষ করা যেত। তাহলে বলতে পারতেন, ‘ধুস! এমন তো কতই করেছি।’ আরেকটু থেকে গেছে। এর কয়েক দিন পরই ওই নিউজিল্যান্ডে গেল অনুর্ধ্ব-১৯ দল। সেই হোটেলেই উঠল। এবার আশরাফুল এই দলে সিনিয়র। খুব ভাবটাব নিয়ে ‘ছোটদের’ বললেন, ‘আয়, তোদের একটা মজার জিনিস দেখাই।’ মজার জিনিসটা কী, সেটাও বলে দিলেন। যেহেতু সিনিয়র মানুষ, তাই নিজের পকেট থেকেই মনে হয় কয়েনটা বের করেছিলেন। সবই ঠিক ছিল, কেবল কয়েনটা আর বের হলো না। দিব্য চোখে দেখতে পাচ্ছি, আশরাফুল শুন্য রানে আউট হয়ে ফেরার মতো মুখ করে বুথটা ধরে ঝাঁকানোর চেষ্টা করছেন আর বলছেন, ‘কী হলো! কী হলো!’
হোটেলওয়ালারা রেড ইন্ডিয়ানদের মতো কলম্বাসের হাতে সব ছেড়ে দেয়নি মনে হয়; যন্ত্রটা সারিয়ে ফেলেছে।

একটা সতর্কবাণী: এই গল্পের বক্তা তুষার ইমরান আর মাশরাফি বিন মুর্তজা। পড়ে মজা পাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না; যা কিছু বিরক্তি তা এঁদের ওপর ঝাড়বেন।

ডাকযোগে পাওয়া
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়
"" রস+আলো নামটি সত্যিই রসে ভরা। তবে সাবধান, রস যেন উপচে না পড়ে!
সোহেল, বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী।
"" একদম টেনশন করবেন না। এক ফোঁটা রসও উপচানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। রস যাতে শুকিয়ে না যায়, সেই চিন্তায় অস্িথর আছি এখন।

"" রস+আলোর দ্বিতীয় সংখ্যাটি কেমন হয়েছে, বলতে পারব না; সংখ্যাটি আমি পড়তে পারিনি। কারণ, আমি দুই নম্বর পাঠক না।
পসর কুমার ভৌমিক, চৌগাছা, যশোর।
"" তো, কী আর করা! ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড থেকে বঞ্চিত হলেন। (রস+আলোর সব দুই নম্বর পাঠককে আমরা ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাঁরা পাননি, তাঁদের যোগাযোগ কাম্য নয়।)

"" সকালবেলা উঠে দুই মিনিটে দাঁত ব্রাশ করে দুই কিলোমিটার হেঁটে রেলস্টেশনের দুই নম্বর প্লাটফর্র থেকে রস+আলোর দুই নম্বর সংখ্যা দুই হাতে বুঝে নিয়ে দুই চোখ বোলাতে লাগলাম। দুই দুইতম [২২] পৃষ্ঠায় আমার চিঠি ছাপা হওয়ায় আনন্দে আমার দুই চোখে পানি চলে এল। পথের দুই ধারে সে পানি ফেলতে ফেলতে আবারও দুই কিলোমিটার পথ দুই পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরলাম।
সোহেল রানা বাবু, সান্তাহার, বগুড়া।
"" ভালোই দুই নম্বরি শিখেছেন!

"" বললেন, পাঠকের লেখা ব্যাপকভাবে ছাপানো হবে। দুটি সংখ্যা বের হলো; কই, পাঠকের লেখা তো চোখে পড়ল না।
হুমায়ুন কবির রাশেদ, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম।
"" যিনি পাঠ করেন, তিনিই পাঠক। যাঁদের লেখা ছাপা হয়েছে, তাঁরা নিয়মিত রস+আলো পাঠ করেন।

"" বিশেষ জনমত জরিপ কেটে পাঠানোটা মেনে নিতে পারছি না। কারণ, আমরা আমাদের প্রিয় রস+আলোকে কাটতে চাই না।
ফাহমিদা আলম লীনা, আনসার ক্যাম্প, মিরপুর, ঢাকা।
"" রক্তারক্তি পছন্দ না করলে ফটোকপি করে পাঠান।
"" প্রত্যাশা ভঙ্গের বেদনা সইতে প্রস্তুত হয়ে হাতে পেলাম রসাল ফলের মতো সুস্বাদু রস+আলো। একে যেন কখনোই ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে পাকানো না হয়।
তানজিলা হ্যাপী, আকুয়া, ময়মনসিংহ।
"" টাটকা জিনিস পেটে সইবে কি না, আগে নিশ্চিত হোন।

"" আমি আরও লেখা পাঠাতে চাই; কিন্তু কোথাও পোস্টকার্ড পাচ্ছি না। একই খামে কি একাধিক লেখা পাঠানো যাবে?
সুমন্ত বড়াল সকাল, রাজাপুর, ঝালকাঠি।
"" অবশ্যই যাবে। এমনকি চাইলে এক লেখা দুই খামে ভরেও পাঠাতে পারেন।

"" প্রথম সংখ্যাটি পড়ে লেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। তাই খাতা-কলম নিয়ে রসের ছড়াছড়ি করতে বসে গেলাম। ভাই রে, লেখা দ্রুত ছেপে আমার টেনশন ভ্যানিশ করে দিন।
জামসেদুর রহমান, চরনারায়ণপুর, রাজবাড়ী।
"" ভাই রে, ভালো লেখা পাঠিয়ে আমাদের টেনশনও ভ্যানিশ করে দিন।
সংলাপ
বিয়ের আগে: (বিয়েতে রাজি হওয়ার পর)
ছেলে: অবশেষে তুমি রাজি হলে! সত্যিই আমি আর সইতে পারছিলাম না।
মেয়ে: তুমি কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?
ছেলে: অবশ্যই না! এ নিয়ে কখনো ভেবো না তুমি।
মেয়ে: তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?
ছেলে: অবশ্যই...সারা জীবন...
মেয়ে: আমাকে কখনো ধোঁকা দেবে?
ছেলে: নাহ্! এ ধরনের কথা তোমার মাথায় আসছে কীভাবে!
মেয়ে: তুমি কি আমার চুল নিয়ে খেলা করবে?
ছেলে: নিশ্চয়ই! যতবার সুযোগ পাব...
মেয়ে: আমাকে কখনো আঘাত করবে?
ছেলে: তুমি কি পাগল! আমি মোটেই সে ধরনের মানুষ নই।
মেয়ে: আমি কি তোমাকে বিশ্বাস করতে পারি?
ছেলে: হ্যাঁ।
মেয়ে: প্রিয়তম!

(আর বিয়ের পরের সংলাপ? ওপরের লেখাটা শুধু নিচ থেকে ওপরের দিকে পড়ে যান।)
"" রাকিব, বটতলা, বরিশাল

খাঁটি সরিষার তেল কোথায় পাওয়া যায়

Click This Link

অফিসে ঘুমানোর পদ্ধতি

Click This Link

ঢাকার বাসে একদিন

Click This Link

খরগোশের আত্মহত্যা

Click This Link


আজকের পর্বটা এখান থেকে কনভার্ট করা‍!!!

পর্ব ১ এই লিংকে


রস+আলো (১৪ জানুয়ারী, ২০০৮)



রসিক গ্রুপেও পোস্ট করা হল।।।
১০টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×