(২)
- হুম তারপর বল।
- কি বলব? আসলে তোমার সাথে আমি এত এত কথা বলেছি যে আমার সব কথা মনে হয় ফুরিয়ে গেছে। আর আমার বলার চেয়ে শুনতেই বেশি ভাল লাগে। আচ্ছা তোমার একটা ফ্রেন্ড ছিল না ফরহাদ। মোবাইল কোম্পানিতে চাকরি করত। ওর কি খবর?
- জানি না।
- এখন আর যোগাযোগ নেই?
- না, নাই। আর ওর কথা বাদ দাও। ফালতু কোথাকার!
- কে ফালতু আমি নাকি ফরহাদ?
- আররে তুমি তো আমার জান!
ফাহমিদার মুখে এ কথাটা শুনতে মশিউলের অসম্ভব ভাল লাগে। অবাকও লাগে। এত বড় লোকের মেয়ে! অথচ মশিউলকে এত কেয়ার করে! ফাহমিদার সাথে মশিউলের সম্পর্ক প্রায় ছয় মাসের। একদিন রাতে মেসের সবাই মোবাইলে ব্যস্ত। চুপচাপ বসে ছিল মশিউল। আর তা দেখে বোধহয় খুব মায়া হয়েছিল জয়ের। বলতে গেলে একরকম জোর করেই ফাহমিদার নম্বরটা মশিউলের হাতে ধরিয়ে দিল জয়। সেই থেকে শুরু। প্রথম প্রথম মশিউলই বেশি কল করত। এখন ফাহমিদাই করে। মশিউলের সাথে কথা না বলে ও একদম থাকতেই পারে না। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ওরা নানান জায়গায় ঘুরতে যায়। হাত ধরাথরি করে হাঁটে। একসাথে আইসক্রিম খায়। ফুচকা খায়। আস্তে আস্তে মশিউল অনুভব করতে শুরু করেÑতার জীবনটা এখন আর কালারলেস নয়।
(৩)
- কি ব্যাপার? কার সাথে কথা বলছিলে? প্রায় দু’ঘন্টা ধরে ট্রাই করছি।
- ও তাই। মশিউলের প্রশ্নের কেমন যেন নিঃ¯প্রাণ জবাব দেয় ফাহমিদা। আচ্ছা আমার এখন ঘুম পাচ্ছে। তোমার সাথে পরে কথা বলি।
আস্তে আস্তে এ কথাগুলো মশিউলের জীবনে রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হতে শুরু করে। কিন্তু ফাহমিদার আচরণে হঠাৎ এ পরিবর্তন কেন? এ “কেন”র জবাব হঠাৎ একদিন পেয়ে যায় মশিউল বসুন্ধরা সিটিতে।
- মশিউল, এই হচ্ছে ফরহাদ। আর ফরহাদ এ হচ্ছে মশিউল। আমার খুব ভাল বন্ধু। বলল ফাহমিদা।
ফরহাদ হাত বাড়িয়ে দেয়, হ্যাঁ, আমি শুনেছি আপনার কথা। ইউ আর এ ভেরি নাইস পারসন!
- থ্যাঙ্ক ইউ।
একটুপর ওরা চলে গেল। মশিউল একা দাঁড়িয়ে রইল। ফরহাদ আর ফাহমিদা হাঁত ধরাধরি করে হাঁটছে। দেখতে খুব ভাল লাগছে। একজনের হাত আরেকজনের হাতে। নাহ এভাবে তাকিয়ে থাকা ঠিক না! ভাবে মশিউল। নিজেকে কেমন যেন থার্ড পারসন বলে মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ৮:০৮