১.
তখন ক্লাস সিক্ট অথবা সেভেনে পড়ি। নাহ্, সেভেনে থাকতে ঘটা ঘটনা। আমাদের ক্লাসে দুইটা ছেলে ছিল। একজনের নাম মনে আছে। হৃদয়। আরেকজনের নাম মনে পড়ছে না। হয়তো শহীদুল। নাম দিয়ে কি হবে? ছেলেগুলোর সাথে আমার অনেক ভাল সম্পর্ক ছিল। ওদের মধ্যে শহীদুল ছিল ব্লগার নীলহীরার বন্ধু। নীলহিরার সাথে আমার বন্ধুত্ব অনেক ভাল। যদিও ও আমার চেয়ে এক ক্লাস উপরে পড়ে। কিন্তু আমরা ওদের বাসার পাশেই ছিলাম। মাঝেমধ্যে পুরো দিন ওর সাথে কাটাতাম। শহীদুল ছিল ওর বন্ধু। সেইসূত্রে শহীদুলের সাথে আমার বন্ধুত্ব ছিল।
একদিন স্কুলে গিয়ে শুনলাম আমাদের স্কুলের কয়েকটা ছেলে নাকি মারা গেছে বেরিবাধ এলাকায় সাতার কাটতে গিয়ে। তাদের ভিতরে শহীদুল আর হৃদয় ছিল। শহীদুলের লাশ পাওয়া গেলেও হৃদয়ের লাশ পাওয়া যায় নি। অসম্ভব খারাপ লাগলো। ছেলেদুইটার মুখ এখনো চোখে ভাসে। হৃদয়ের লাশ পাওয়া গিয়েছিল দুইদিন পরে। একটা লঞ্চে নাকি বাড়ি খেয়েছিল। স্কুলে দোয়া পড়ানো হয়েছিল ওদের জন্যে।
২.
যখন ক্লাস ফাইভে পড়ি তখন বৃত্তি কোচিং করলাম। স্কুলে সেই বছর-ই নতুন ভর্তি হয়েছিলাম। তাই কিছু ছেলের সাথে তেমন একটা বন্ধুত্ব ছিল না। প্রথম দিকের ছেলেগুলোর সাথেতো ছিল-ই না। কারণ তারা ছিল অন্য সেকশনের। দেখা-সাক্ষাত না হওয়ার পর-ও বুঝতে পেরেছিলাম আরিফ (ফার্স্ট বয়) খুব মেধাবী ছাত্র। ও এখন পর্যন্ত আমাদের ক্লাসের প্রথম বা ফার্স্ট বয়। ওর ধারে-কাছে কেউ নেই। ওর পরেরজনের আর ওর নাম্বারের পার্থক্য প্রায় একশ। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আরিফের মা নেই। অষ্টম শ্রেণীতে থাকতে ওর মা মারা গেছে। আরিফ আমাদের জন্যে বিস্ময়। মা মারা যাবার পরেও ও একদিন স্কুল কামাই করেনি। সেদিন স্কুলে এসে মন-মরা করে বসে ছিল। আমার সাথে ওর তখন তেমন সম্পর্ক ছিলনা বলে কিছুই বলিনি। মা মারা যাবার কষ্টের কোন সান্তনা হয়না। অন্তত আরিফের বয়সী কারো জন্যে। আরিফ অষ্টম শ্রেণীতে থাকতে একবার এক্সিডেন্টের শিকার হলো। একটা প্রাইভেট কার এসে মাথার ডানপাশে বাড়ি মারলো। আবারো মনখারাপ হলো আমার। আহারে, এরকম মেধাবী ছেলেটা আঘাত পেল। গাড়ির লোকেরা ভাল ছিল। আরিফকে তারাই গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে গেল।
আরিফ এখন আমার খুব ভাল বন্ধু।
আজকে আর লিখতে ইচ্ছা করছে না। পরে আবার লেখার চেষ্টা করবো। আজকে সারা শরীর ব্যাথা করছে। ভেবেছিলাম এক পর্বের লেখা লিখবো। কিন্তু তা হবেনা বোধহয়।।।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ৮:৩৮