এক ছোট্ট শহরে ছিল এক ছোট্ট পাখী। পাখীটি ছিল খুবই সুখি। কোন কিছুরই অভাব ছিলনা তার। সারাদিন এই গাছ থেকে ঐ গাছে, এই ডাল থেকে ঐ ডালে উড়ে বেড়াতো। সারাদিন আড্ডা দিয়ে বেড়াতো বন্ধুদের সাথে।
একদিন এক ছোট্ট গাছের এক সাদা ফুলের প্রেমে পড়ে যায় সে। কিন্তু ফুলকে কোনভাবেই তা বলতে পারেনা। অনেক সাহস সঞ্চয় করে ফুলের সামনে যেয়েও না বলেই বার বার ফিরে আসে। বন্ধুরা তাকে এ নিয়ে অনেক খেপায়। মাঝে মাঝে বাজি ধরে তার এই ব্যাপার নিয়ে যে সে কোনদিনও বলতে পারবে না। কিন্তু তারা সবাই মন থেকে চায় সে বলুক। পাখিটি সারারাত ধরে ভাবে। পরদিন খুব ভোরে উঠে সে বেরিয়ে যায়। দুর থেকে ফুলটির দিকে তাকিয়ে থেকে ভাবে কিভাবে বলবে তাকে মনের কথাটি। অনেক ভাববার পর সে আজ সন্ধ্যায় বলবে। সারাদিন দুরে বসে থেকে সন্ধ্যায় সে ফুলটির পাশের ডালে যেয়ে বসে।
পাখিঃ তোমাকে আমার কিছু বলার ছিলো।
ফুলঃ বল।
পাখিঃ তুমি কিছু মনে করবে নাতো?
ফুলঃ না।
পাখিঃ সত্যি বলছো তো?
ফুলঃ আরে বাবা! হ্যাঁ সত্যিই বলছি।
পাখিঃ কথাটা তোমার পছন্দ না হলেও আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করবে নাতো?
ফুলঃ না করবো না।
পাখিঃ আমি তোমাকে ভালবাসি।
ফুলঃ দুঃখিত! আমি তোমাকে ভালবাসিনা।
মন খারাপ করে পাখিটি চলে গেল। সেদিন সারা রাত না ঘুমিয়ে পরদিন সকালে আবার এল ফুলের কাছে। তাকে বোঝালো। কিন্তু ফুল সেদিনও তাকে ফিরিয়ে দিল।
এভাবে রোজ পাখিটি ফুলের কাছে আসে এবং বোঝাতে চেষ্টা করে। কিন্তু ফুল প্রতিবারই তাকে ফিরিয়ে দেয়। বেশ কিছুদিন যাবার পর ফুলটি পাখিকে বলে যেদিন আমার রং লাল হবে সেদিন আমি তোমাকে ভালবাসবো। পাখিটি সেদিনও মন খারাপ করে ঘরে ফিরে গেল। রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবে কিভাবে ফুলকে লাল করতে পারে। অনেক ভাববার পর তার মাথায় একটি বুদ্ধি আসে।
পরদিন আবারো খুব ভোরে সে যায় ফুলের কাছে। তখনও ফুলের ঘুম ভাঁঙ্গেনি। পাখিটি ফুলের ঠিক উপরের ডালে বসে নিজের দুটো পাখা কেটে ফেলে আর তার রক্ত দিয়ে ফুলকে লাল করে দেয়। ফুলের ঘুম ভাঙ্গে। চোখ খুলে সে দেখতে পায় সে লাল হয়ে গেছে। তখন তার পাখির কথা মনে পড়ে। চারদিকে তাকিয়ে সে পাখিকে খোঁজে। না পেয়ে সে মন খারাপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে গাছের নিচে ডানাকাটা পাখিটির নিরব মৃতদেহ পরে আছে।
[আজ সন্ধ্যায় এক বন্ধুর কাছ থেকে একটি এসএমএস পেয়েছিলাম। ঐটার উপরই ভিত্তি করেই এই লিখা।]
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ১২:২৭