যদি প্রশ্ন করা হয় কোন দৃশ্যটি সবচেয়ে প্রিয়? নিঃসঙ্কোচে বলব প্রিয় দৃশ্য হচ্ছে উঠতি বয়সে লুকিয়ে কোনো বিবাহিত মহিলার গোপন শৈল্পিক সৌন্দর্য উপভোগ করা। এই দৃশ্য স্বর্গের ছবির মতো। এমন স্বর্গীয় ছবি ক্লান্তিহীনভাবে দেখতে চাই। এমন স্বর্গীয় দৃশ্য যারা তার কৈশোরে দেখেছে, আর মহিলাদের ভালোবাসতে শিখেছে, আমি তাদের মতো। যে আবেদনময়ীর শৈল্পিক সৌন্দর্য দেখে ফেলেছিলাম, উনার নাম রমিতা সেন। তখন উনার বয়স ছিল সাতাশ বছর। আর আমার বারো। ক্লাস সিক্সে পড়ি। উনি কেবল চাকরি পেয়েছিলেন। রাজশাহী ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজিতে অনার্স ও মাস্টার্স। আমাদের বাড়ির অদূরে বাহারাপুর কলেজ। তিনি ঐ কলেজের ইংরেজির নিউ লেকচারার। উনার স্বামী রবি চৌধুরী ব্যাংকে জব করেন। যেদিন উনারা আমাদের পাশের বাড়ি চন্দনভিলায় বাসা ভাড়া নিতে এসেছিলেন সেদিন রমিতা সেনকে নীল রঙের শাড়ি পরিধিত অবস্থায় দেখেছিলাম। এত সুন্দর মহিলা জীবনে প্রথম দেখেছিলাম। কী শৈল্পিক বুক! চোখ দুটো খুব সুন্দর ও আকর্ষণীয়। ঐ চোখের দিকে তাকিয়েই কেউ সারাজীবন বেঁচে থাকতে পারে। তার আর কিছুই করা লাগবে না। দারুণ আবেদনময়ী একটা গেট-আপে উনাকে দেখেছিলাম। আজো রমিতা সেনের ঐ সুশ্রী চেহারাটুকু দেখতে পাই। সেদিন রমিতা সেনের প্রত্যেকটা অঙ্গ আবেদনময়ীতার রং মেখে ছিল। সত্যিই আকর্ষণীয়। এর পূর্বে কোনো মহিলাকে দেখে এতটা জৈবিক তাড়নায় আলোড়িত হইনি। আমার পুরুষত্বের জন্মদাত্রী রমিতা সেনের সেই দিনের সেনসেশন।
উনার দেহের শিল্প দেখে যেন অন্ধ হয়ে যাই। সবসময় লুকিয়ে দেখার চেষ্টা করি। উনার দিকে তাকিয়ে থাকতেই ভালো লাগে। ইচ্ছা জাগে কথা বলার জন্য। কিন্তু এর মধ্যে একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনার পর উনার সাথে কথা বলার সাহস পেতাম না। উনারা চন্দনভিলায় আসার সপ্তাহখানেক পর। রাতে পড়ছিলাম। গরম লাগছিল। জানালা খুলে দিলাম। জানালা খুলতেই দেখি রমিতা সেনের ঘরে লাইট জ্বলছে। এত রাতে লাইট জ্বালানো দেখে মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি কাজ করল। রাতের রমিতা সেনকে দেখতে চাইলাম। ভাবলাম, এত রাতে তাদের ঘরে লাইট জ্বালানো কেন? তারা কি সত্যিই সত্যিই জেগে আছে? এত রাতে উনাকে যদি একবার দেখতে পেতাম, অনেক বড় কিছু পাওয়া যেত। দেখি কীভাবে স্বামী-স্ত্রী রাতে পাশাপাশি শুয়ে থাকে। রুম থেকে বের হলাম। সরু গলি দিয়ে জানালার দিকে এগিয়ে গেলাম। শুনলাম অচেনা আওয়াজ ভেসে আসছে। খুবই মৃদু। সারা শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। এই দৃশ্য দেখার জন্য পাগল হয়ে গেলাম। উপায় খুঁজছিলাম। কীভাবে দেখা যায়? হঠাৎ চোখে পড়ল পাশের সুপারি গাছ।
তারপর গাছে চড়ে যে শিল্প দেখেছিলাম তা উনারা না জানলেও তাদের অপ্রকাশিত সৌন্দর্য আমার কাছে প্রকাশিত ছিল। সেই থেকে উনার দেহের প্রতি আমার একটা গভীর চাহিদা কাজ করত। মনে হত উনাকে কোনো ভাবে যদি খুব কাছাকাছি পাওয়া যেত। যদি উনার বুকের ওপর হাত রাখতে পারতাম, যদি উনার শাড়ির আঁচলের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারা পেটের সৌন্দর্যটা নিরবিচ্ছিন্নভাবে দেখতে পেতাম। উনাকে একপলক দেখার জন্য সেই সময় খুব পাগল ছিলাম। পরের দিন খুব সকালে উঠে বসে আছি বাড়ির বারান্দায়। হঠাৎ উনি বের হলেন। অবাক হয়ে গেলাম। গভীর নয়নে চেয়ে রইলাম। উনি আমার দিকে তাকালেন। কিন্তু কিছু বললেন না।
উনি মেইন রোডের উদ্দেশ্যে হাঁটছিলেন। আমি পেছনে পেছনে আসছিলাম। শাড়ি পরা রমিতা সেন হাঁটছিলেন। আমি এক নয়নে তার ব্যাকসাইডে তাকিয়ে আছি। অন্য দিকে একটু তাকাব। সেই সুযোগ ছিল না। এত শৈল্পিক হাঁটার স্টাইল! রোডে এসে উনি রিক্সা নিলেন। অতৃপ্ত মনে ফিরে এলাম। আজ স্কুল যাব না। উনাকে দেখতে কলেজ যাব।
কলেজে এলাম। উনাকে দেখার চেষ্টা করলাম। কিন্তু দেখা পেলাম না। যদি নামটা জানতাম তাও না হয় খোঁজা যেত। নামটাও জানি না। চলে এলাম।
দুপুরের দিকে তিনি এলেন। বাইরে দেয়ালের ওপর বসে আছি। উনি একবার আমার দিকে তাকালেন। তারপর ভেতরে চলে গেলেন। ভাবি এই মহিলাকেই রাতে দেখেছি। ইনিই সে মহিলা? সেই সময় আর এই সময় কত পার্থক্য। এখন উনাকে কী সামাজিক মনে হচ্ছে! আর কাল রাতে কী অসামাজিক ছিল! যদি সে জানত আমি তার স্বপ্নময় জগতটা দেখে ফেলেছি, উনি লজ্জা পেতেন। আমার দিকে তাকাতেনও না। বেঁচে গেছি। যদি না তাকাত, মরে যেতাম। এত মায়াবী দৃষ্টিতে কে আমার দিকে তাকাত?
বিকালবেলা। উনি ছাদে উঠে কাপড় মেলে দিচ্ছেন। ভেজা চুল। ভেজা দৃষ্টি। হতবাক হয়ে চেয়ে থাকি। এসময় উনি শাড়ির আঁচলটা সরিয়ে ঠিক করলেন। পাগল হয়ে গেলাম। কী সুন্দর! কত শৈল্পিকভাবে লাল ব্লাউজটি চেপে ধরে আছে উনার বুক। মনে হচ্ছিল উনার ছাদে লাফ দিই। একবার উনার বুকটা স্পর্শ করে আসি।
ছাদে উনার শাড়ি মেলানো দেখলে আমার মনটা উত্তাল হয়ে উঠল। ভাবতাম, উনি ¯œান করেছেন। শাড়ি চেন্জ করেছেন। তারপর শাড়ি মেলে দিতে এসেছেন ছাদে। যদি সেসময় থাকা যেত উনার পাশে যেসময় উনি ¯œান করে শাড়ি চেন্জ করছেন। স্বপ্নের মতো হত।
মাঝে মাঝে দিদির শাড়ি ছাদে মেলানো থাকত। ছাদে গিয়ে উনার শাড়িতে মুখ মুছে আসতাম। শাড়ি থেকে কী মিষ্টি সেন্ট বের হত! পাগল হয়ে যেতাম। এই সেন্ট নেওয়া আমার নেশার মতো হয়ে গিয়েছিল। একদিন দিদির নীল শাড়িটা হারিয়ে গেছে। উনার প্রিয় শাড়ি ছিল। অনেক খোঁজাখুজি করেছিলেন। আমি সেই শাড়ি চোর ছিলাম। এটা উনি কখনো জানেননি। আমি ঐ শাড়ির ওপর শুয়ে থাকতাম। ঐ শাড়ির ওপর না শুইলে ঘুম আসত না। মনে হত উনার সাথেই শুয়ে আছি। এরকম খন্ড খন্ড পাগলামি আছে। সেগুলো বলে শেষ করা যাবে না। তবে উনার খুব কাছাকাছি যেতে পারতাম না। এমনকি কথাও বলতে পারতাম না। কেমন জানি ভয় লাগত। ঠিক ভয় না। উনাকে দেখলে কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলতাম।
শুক্রবার। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে চন্দনভিলার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ছাদের ওপর রমিতা সেন দাঁড়িয়ে আছেন। অনিমেষ নয়নে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। কী অসাধারণ বুকের সৌন্দর্য! ভাবছি, ওটা আমি স্পর্শ করতে পারব না? স্পর্শ করতে পারলে আর চাওয়ার কিছুই থাকবে না। কী সুন্দর ঠোঁট! ঐ মানুষটা চুমো খায় ঐ ঠোঁটে। প্রতিদিন খাই। আমি কি একবার পারি না চুমো খেতে? উনি মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকাচ্ছেন। তখন আমার কী যে ভালো লাগছে! প্রকাশ করার মতো না।
এমন সময় পেছন থেকে একজন ডাকল। এই যে বাবু, কী দেখছো ওভাবে?
পেছনে ফিরে দেখি রমিতা সেনের স্বামী। লজ্জায় লাল হয়ে গেছি। তিনি আবার বললেন, কী, এত মনোযোগ দিয়ে ছাদের ওপর কী দেখছ? ভালো লাগছে ভাবীকে?
নিচে নেমে এলেন রমিতা সেন। গ্রিল খুলবার জন্য। রমিতা সেন বলল, কী হল? এসো। কী হয়েছে?
রবি চৌধুরী একটু কৌতুক করে বললেন, তোমাকে ছেলেটির ভালো লেগেছে। দূর থেকে লক্ষ করছি ও তোমার দিকে এক নয়নে চেয়ে আছে। দেখো কী নায়কের মতো চেহারা নিয়ে বড় হচ্ছে! এই চেহারায় তোমাকে শান্তিতে থাকতে দেবে মেয়েরা?
রমিতা দিদি বললেন, কী নাম তোমার?
ওমা, তিনি আমার সাথে কথা বলছেন! দিলাম এক দৌড়। দৌড়াতে দৌড়াতে চলে এলাম খেলার মাঠে। খেলার মাঠে এক কোণে বসে জিরিয়ে নিচ্ছি। ঘেমে গেছি। কী লজ্জা লাগছে রে বাবা! এভাবে ধরা পড়া গেলাম। আমার কী দোষ? ঐ মহিলা এত সুন্দর! মাথা ঠিক থাকে না। সবসময় চেয়ে থাকতে ইচ্ছা করে।
বইটি পাওয়া যাবে মুক্তচিন্তা প্রকাশনীতে। স্টল নাম্বার ৭৩-৭৪