somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কারাগার ( নাটক)

২১ শে আগস্ট, ২০০৮ সকাল ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা পূর্বেতে বন্দনা করি গো
সূর্যেতে প্রণাম
পশ্চিমে বন্দনা করি
মক্কাতে সালাম
উত্তরে বন্দিব পাহাড়
দক্ষিণে সাগর
আকাশ বন্দিব আমরা
মাথার উপর
মাটিত বন্দনা করি গো
দেহ করি স্নান
পৃথিবী বন্দিব আমরা
বাধিয়া পরান।
অন্তর বন্দনা করি
মানব জীবন
যে অন্তরে বসত করে
যে করেন সৃজন।

আনন্দ বন্দণা করি
আমরা সত্যতে বন্দনা করিগো
অন্তরে তে ভ্রমি
যে দেশেতে যোনী আমার
আমার হৃদয় ভূমি।

হু হু হু হু হা হা হা হু হু হু হা হা হা

(হামিং চলতে থাকবে। অভিনেতারা বিভিন্ন ভাবে সংলাপ বলতে থাকবে।)

গল্পটা কিভাবে শুরু হয় কেউ জানেনা ওরা। তারা শুধু জানে এখানে তাদের আসতে হয়েছে অথবা নিয়ে আসা হয়েছে।
যায়গাটা সুন্দর সন্দেহ নেই। হা হা হা অবশ্য আমার দৃষ্টি আর উপলদ্ধিতে।

ধোয়া ধোয়া ধোয়া ধোয়া
ধোয়া ঘুড়ে কালে কালে
কালও বান্ধা দেখাও বান্ধা
ধোয়ার ধোয়া ধোয়া ছলে।
কালো কালো ধোয়া উরে শহরে বন্দরে
জনপদ ঢেকে গেছে ধোযার চাদরে
ধোয়া ধোয়া ধোয়া ধোয়া
ধোয়া ঘুরে কালে কালে
সালও বান্ধা জীবনও বান্ধা
ধোয়ার ধোয়া ধোয়া ছলে

হু হু হু হু হা হা হা হু হু হু হা হা হা
(হামিং চলতে থাকবে। অভিনেতারা বিভিন্ন ভাবে সংলাপ বলতে থাকবে।)

চারিদিক ধুলায় অন্ধকার।
এ্যই তুই কিছু জানিস ?
না।
এই তুই কিছু বলছিস?
না।
এই তুই কিছু শুনেছিস ?
না।
এই তোমরা গিয়েছিলে সেখানে ?
জানিনা।
এই তোমরা এসেছিলে এখানে ?
জানিনা।

(চরিত্র গুলো একটা ঘোরের মধ্যে আবর্তিত ও বিবর্তিত হয় । বন্দি হয় তারা । একটা কারাগার।)

হা হা হা হা হা লজ্জা পাচ্ছ ?
নাঃ
হা হা হা হা
হাসছ কেন ?
হা হা হা হা হা
হাসছ কেন ?
জানিনা। ক্ষিদে পেয়েছে। তোমার ক্ষিদে পায়নি।
হু
ও কি আমাদের পাহারা দিচ্ছে ?
দেখতে পাচ্ছনা।
আমাদের পাহারা দেয়ার কি দরকার। আমরা তো পালাবনা । পালাতে পারবওনা।
পালিয়ে যাবই বা কোথায় ?
আচ্ছা ওরা কি আমাদের বন্দি ভাবছে ?
হয়তবা । নাহলে পাহারা কেন ?
আচ্ছা কে কার পাহারা দেয় ?
সবাই সবাইকে।
বাদ দাও। ক্ষিদে পেয়েছে তো।
তো আমি কি করব ?
ও কে বলোনা । ও ছাড়া তো আর কেউ নেই।
তুমি বলো।
এইযে ভাই হ্যালো ---
বলুন
আমাদের ক্ষিদেপেয়েছে । খাবারের ব্যবস্থা করুন। আপনাদের আর কাওকে দেখতে পাচ্ছিনা কেন ?

( লোকটি সূর্যের দিকে তাকিয়ে সময় অনুমান করল।)

হুয়া হো হুয়া হো হুয়া
লোকটি বেরিয়ে গেল।

হুয়া হুহু হো হুয়া হা হা হা হা এটার মানে কি?
জানিনা
ঘন্টা ধ্বনি । আচ্ছা এখানে ঘন্টা নেই কেন ?
জানিনা। তুমি একটু চুপ করবে ?
কেন ? আমি তো খারাপ কিছু বলছিনা।
আমি তা বলিনি । বিরক্ত লাগছে।
না না এগুলো তো মৌলিক প্রশ্ন।
প্রশ্নহীন থাকা যায়না ? ধরো জীবনে কোন প্রশ্ন নেই।
পাগল । হা হা হা হা প্রশ্নহীন জীবন।
লোকটি কোথায় গেল ? খাবার আনতে গেছে বোধ হয়। প্রশ্নহীন জীবন। গুড আইডিয়া। ওকে আমরা আর কেউ কাওকে প্রশ্ন করবোনা।

(লোকটি অনেক গুলো খাবার নিয়ে এল। )

বা বা অনেক খাবার তো। বাঃ খুব টেষ্ট ফুল। আচ্ছ ভাই হুয়া হুযা কি ভাই ? সরি ভুলে গিয়েছিলাম। এইযে ভাই শুনুন-
বলুন ।
লোকজন কাওকে দেখছিনা কেন ভাই? সরি আবার ভুলে গিয়েছিলাম। প্রশ্ন করা যাবেনা।

(লোকটি মিট মিট হাসে।)

হা হা হা হা তোমার দিকে তাকিয়ে আমার খুব হাসি পাচ্ছে। আচ্ছা তুমি চুপচাপ আছ কেন ?
সিসসসসস কোন প্রশ্ন করা যাবেনা।
কেন বলোতো ?
আবার ?
এবার কিন্তু তমিও ?
হা হা হা হা হা
হা হা হা হা হা
এইযে ভাই শুনুন
বলুন
তুমি কি আমাদের পাহারা দিচ্ছ ?
জানিনা
আপনি এত কম কথা বলেন কেন ?
হু ?
কম কথা বলেন কেন ?
জানিনা
কি জানেন আপনি ? ফালতু লোক কোথাকার। আচ্ছা বলুন আর লোকজন কোথায় ?
আছে
কোথায়?
জানিনা
উঃ
কি তুমি কি ঘুমিয়ে পড়লে ?
হূ
আর কিন্তু ভাল লাগছেনা । একদম ভাল লাগছেনা।
কোথায় গেলে ভাল লাগবে ?
হু। কোথায় গেলে ভাল লাগবে ? জানিনা।

চলো
কোথায় ?

ঐদিকে
না। সীমান্ত।
ঐদিকে
না। সীমান্ত।

(দুজনেই বিভিন্নদিকে ছুটোছুটি করে কিন্তু দারোয়ান তাদের আটকে দেয়। ছুটোছুটির মধ্যে একসময় ক্লান্ত হয় সবাই।
হঠাৎ সব অভিনেতারা সামনের দিকে ছুটতে থাকবে।)

দৌড়াও দৌড়াও দৌড়াও
সময় নেই সময় নেই

(দুর থেকে শোনা যায়)


দাঁড়াও । আমাকে নিয়ে যাও।
দাঁড়াবার সময় নেই
ছুটো ছুটো ছুটে যাও
তোমরা আমাকে নিয়ে যাও । আমি তোমাদের আপনজন।
পেছনে তাকানো যাবেনা।
পেছনে তাকালে পড়ে যাবে।
দৌড়াও দৌড়াও
ছুটো ছুটো ছুটে যাও
পালাও পালাও পালাও
কোথায় পালাও তোমরা
আমরা কেউ কিছু জানিনা
আমাকে ফেলে যেওনা । আমাকে তোমাদের সাথে নিয়ে যাও। আমাকে চিনোনা তোমরা ?
হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা
চিনিনা চিনিনা চিনিনা চিনিনা

(একটি মৃদু কান্নার শব্দ শোনা যায়। মনে হয় বহু দূর থেকে ভেসে আসে । আবার শুরু হয় হামিং। দেখা যায় একজন অভিনেতা মাটি থেকে বিভিন্ন কিছু সংগ্রহ করছে নিজের আচলে । হামিং আবার শুরু হয়।)

এই তুমি কে ?
সময়ের ঘোড় দৌড়ে সহযাত্রীরা চলে গেছে। পেছনে তাকানো ছিল মানা। আমি যাত্রী প্রশ্নবিদ্ধ ছিলাম। পেছনে পড়ে গেছি তাই।
কি প্রশ্ন ছিলো তোমার ?
হা হা হা হা সামান্য।
বলো কি প্রশ্ন ছিলো তোমার ?
এইতো আমাকে কি চেনোনা তোমরা ?
তারা কি বলেছিলো ?
চিনিনা চিনিনা চিনিনা
তোমরা কারা ?
আমরা তুমি । আমরা তুমি।
তুমি কি কুড়োচ্ছো ? কি কুড়োচ্ছো ?
ধান কুড়ানির হাতে কোচায় তুলে নিচ্ছি অশ্বুর দলিত আউশ ধানের ছড়া
কৃষানীর নাকের নোলক আমার মায়ের তসবিহ দানা
আর ?
রাখালের ভাঙা বাঁশি
মেলা থেকে কিনে আনা কাজলের কৌটো আর
বনলতা সেনের লেখা একখানা চিঠিও পেয়েছি ।
কোচা ভরে গেলে কি করবে ?
করোতোয়ার পাড়ে অদৃশ্য হাতে গড়া মহামিউজিয়ামে জমা দিয়ে চলে যাব প্রান্তরের দিকে।

ধোয়া ধোয়া ধোয়া ধোয়া
ধোয়া ঘুড়ে কালে কালে
কালও বান্ধা দেখাও বান্ধা
ধোয়ার ধোয়া ধোয়া ছলে।
কালো কালো ধোয়া উরে শহরে বন্দরে
জনপদ ঢেকে গেছে ধোযার চাদরে
ধোয়া ধোয়া ধোয়া ধোয়া
ধোয়া ঘুরে কালে কালে
সালও বান্ধা জীবনও বান্ধা
ধোয়ার ধোয়া ধোয়া ছলে।

(অভিনেতারা কোচা পেতে খোঁজা খুজি শুরু করবে মৃদু গুঞ্জনের সাথে। গুঞ্জন আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে।)

এই পেয়েছিস ?
না
একটা খালি বস্তা পেয়েছি
ছেড়া কিতাব কিছু
দুধবাটি
ওটা ওটা কি ?
ঝলসানো কোকিল
একতারা , বাউলের পাগরি
ওটা ওটা ওটা কি ?
সোজন বেদের বীণা
এখানে একটা পাত কুয়ো ছিলো
তার পাশে ছিলো বাতালেবুর গাছ
এখানে একটা গরুর বাথান ছিলো
একটা পুকুর
একটা বট গাছ
কোথায় সেগুলো
কোথায় কোথায় কোথায়
আপনি জানেন ?
আপনি জানেন সেগুলো কোথায় ?
আপনি জানেন ?
কথা বলছেন না কেন ?

কোথায় কোথায় কোথায়


লুট হয়ে গেছে লুট হয়ে গেছে !
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×