somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নানা ধর্মের মাঝে মিল সমূহ - বিবিধ প্রসঙ্গ

১৪ ই আগস্ট, ২০০৮ সকাল ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"প্রাককথন"

"একক ঈশ্বর প্রসঙ্গ"



মোজেস/মোসেস/মোশি/মুসা প্রবর্তিত ইহুদী ধর্ম বা ইহুদীবাদ, মিশরে জন্ম নেয় সম্রাট আখেনটেন/আকেনাটেন-এর পরপরই। অনেকেই ধারণা করেন মোজেস মিশরীয় ছিলেন। মিশরে প্রচলিত মোজেস/মোসেস শব্দের অর্থ পুত্র। যেমন : থথ মোসেস (thoth এর পুত্র); রা-মোসেস (সুর্যদেব ra এর পুত্র)। মোজেস/মুসা মিশরীয় ছিলেন কিনা তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ যা, সেটা হলো তার প্রচারিত ধর্মে মিশরীয় প্রভাবের বাহুল্য।

যেমনঃ

০১) মিশরীয় পুরোহিত প্রথা ইহুদীরা অনুসরণ করে। যেটা দেখা যায় মুসার মৃত্যুর পরে তার ভাই হারুন/অ্যারনকে তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব গ্রহনের মাধ্যমে। একই রকম পাওয়া যায় ইসলামের চার খলিফার আগমনের মাধ্যমে কিছুটা মডিফায়েড রূপে। সনাতন ধর্মেও ব্রাক্ষ্মন পুরোহিত রীতি প্রাচীন মিশরীয় রীতিরই কিছুটা পরিবর্তিত রূপ। খ্রীস্টধর্মে পোপ নির্বাচন এই রীতিরই মডিফায়েড রূপ।

০২) মিশরীয় পুরোহিতরা জনসাধারণকে যখন আদেশ দিতেন তখন বলতেন এ আদেশ ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ (revelation) এবং অবশ্য পালনীয়। এই নিয়মানুযায়ী প্রায় সকল ধর্মপ্রচারক/প্রফেটদেরই দাবী যে তারা ঐশ্বরিক প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত।

০৩) মিশরে থথ(thoth) হলেন ঈশ্বর মনোনীত প্রধান দেবদুত বা বার্তাবাহক যার মাধ্যমে প্রফেটরা তাদের প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত হন বলে দাবী করেন। ইহুদী (দানিয়েল ৯:২১) এবং খ্রীস্টধর্মে প্রধান দেবদুত হলেন গ্যাব্রিয়েল আর ইসলামে জিবরাইল।

০৪) মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো প্রত্যেক মানুষের কর্ম ঈশ্বর লিপিবদ্ধ করেন। সকল ধর্মেই এই ব্যাপারটা অপরিবর্তিত ভাবে গ্রহীত হয়েছে।

০৫) মৃত্যুর পরে বিচার এবং ভালো কাজের পুরষ্কার স্বরূপ ওসিরিসের সাথে তার আবাসভুমে বসবাস মিশরীয়দের একটি বিশ্বাস। যা পরবর্তীতে সকল ধর্মে সাগ্রহে গ্রহণ করা হয়। শুধু বৌদ্ধ ধর্মেই মৃত্যু পরবর্তী জীবনের কোন অপার্থীব হাতছানি নেই।

০৬) ওসিরিসের শত্র“ ছিলো সেট (set)। এই শব্দ থেকে ইহুদীরা মানুষের শত্র“ হিসাবে ংধঃধহ- এর ধারণা তৈরী করে।

০৭) খাতনা প্রচীন মিশরের অতি প্রাচীন প্রথা। যা ৩২০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দ থেকে প্রচলিত। মুসা ইহুদীদের মিশর থেকে উদ্ধার করে আনার পর সার্বজনীন খাতনা প্রথা প্রচলন করে। যা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও প্রচলিত।

০৮) সম্রাট আখেনটেন/আকেনাটেন সুর্য উঠার আগে এবং সুর্যাস্তের পর পরই প্রার্থনা করতেন, কারণ মিশরে সুর্যকে দেবতা হিসেবে মানা হতো। ইহুদীরাও তেমনি ভোরে এবং সুর্যাস্তের পর প্রার্থনা শুরু করে। এই দুই প্রার্থনা প্রচলিত ছিল ”শেমা” এবং ”তেফিল্লাহ” নামে। ইসলামে ফজর এবং মাগরিব নামে এই প্রার্থনা চালু রয়েছে। সনাতন ধর্মেও ভোরে এবং সন্ধায় প্রার্থনার রীতি রয়েছে।

০৯) মিশরীয় চিত্র এবং বাস রিলিফ থেকে এটা প্রমানিত যে- প্রার্থনার সময় আখেনটেন/আকেনাটেন হাটুঁতে হাত রেখে নত হতেন ও পরে হাঁটু গেড়ে প্রাণিপাত করতেন। ইহুদীরা এই প্রথা গ্রহণ করে। ইসলাম ধর্মে নামাজ/সালাত আদায় করার সময় এই প্রথা পালন করা হয়। সনাতন ধর্মে ষাষ্টাঙ্গে প্রণাম এই প্রথারই পরিবর্তিত রূপ।

১০) প্রার্থনার শেষে ইহুদী এবং খ্রীস্ট ধর্মাবলম্বীরা ”আমেন” শব্দটা ব্যবহার করেন। হিব্র“ ভাষায় যার কোন অর্থ নেই।
মিশরীয় ধর্ম অনুযায়ী ”আমেন” শব্দটা ঈশ্বরের নাম হিসেবে প্রচলিত।

(তথ্য সুত্র-ঞযব writings of Ashmawy University press of Florida-USA-1998)


ক্রমশ...
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০০৮ সকাল ১০:২৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×