somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গড্ডলিকা প্রবাহ

০২ রা আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৪:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভওনিঃ

সেই দিনই ব্যাপারটা প্রথম টের পাই। অথচ মৃত মানুষ কোনদিন ভালো করে দেখেছি বলে...কিংবা দেখলেও একবার।
হয়তো মরা মানুষ-লাশ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা না থাকার জন্যই অনেক পরে টের পাই। মূলত: যেদিন শেষবার জেবার সাথে কথা হয়; জেবা বলে; মনু জলধর তুমি যেন কেমন হয়ে গেছ! তোমাকে এমন ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে কেন? আচ্ছা তুমি হঠাৎ এমন লাশ হয়ে যাও কেন? আমি কোন কথা বলি না, জেবার দিকে তাকিয়ে থাকি। জেবা চলে যায়।

অনেকটা- চলে হনহন
ছুটে শনশন ফিরেনা।

আর কিছুদিন পরেই আমি বুঝতে পারি আমার নিজের লাশ কাঁধেই আমার ছুটে চলা।এখন আমার গন্তব্য ঠিক করতে হইবো। এই ভাবে মৃত দেহ নিয়ে চলা আমার সম্ভব কি? না কইরা করবা কি? তোমার বোঝা তো তোমার নিজেরই লাশ না কি?

ফাশব্যাক- শাদাকালোঃ

ওহঃ আপনি সিপিবি করতেন?
হ্যাঁ । সিপিবি ভালা না?
আওয়ামী লীগের বি টিম...
আরে আমরা তো ফরহাদের সময় করতাম। সেই সময় সিপিবির খুব জোয়ার ছিল।
আর আপনেও জোয়ারে ভাসছেন।

কি কবো সেই পড়শির কথা
তার হস্ত পদ স্কন্ধ মাথা নাই রে...
ও সে ক্ষাণেক থাকে শূন্যের উপর
ক্ষাণেক থাকে নীড়ে-
বুঝছিস্ মনু জলধর এইটা আমার কাছে মনে হয় আসল স্যুররিয়েলিজম।

আচ্ছা মনু জলধর তুই ক'তো মমতাজের বুকটা ফাইট্টা যায় আর
সোই, কেমনে ধরিবো হিয়া আমারই বধুয়া আন বাড়ি যায় আমারই আঙিনা দিয়া এর মাঝে দর্শনগত কোন পার্থক্য আছে কীনা?
মোটেও নাই।
খালি ভাষার রাজনীতির লাইগ্যা...ফাইট্টা যায় যে এলিটের না।

বুঝছেন নি মনু জলধর ভাই-
কী কও মামুন?
'উই ড্যু কালচার' যা কইছে না।

আইচ্ছা মামুন তুমি বুঝি মফস্বলগিরি করো, এতোদিনেও ঢাকা শহরে ডু কালচার করতে পারলানা।

কাট।

লাইভ এ্যকশন: ৩৫ মি.মি. ক্যামেরায়ঃ

জেবা তুমিতো আমারে দিলাই না-
আচ্ছা মনু জলধর তোমার ল্যাঙ্গুয়েজ দিন দিন এতো খারাপ হচ্ছে কেন? নাহ তোমার সঙ্গে চলাই মুশকিল...

ফাশব্যাক; একটু ঘোলাঃ

দেখেছ সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় দেশে দেশে যুদ্ধ বিরোধী বিক্ষোভ।

সিয়াটলে বিক্ষোভের জন্য ডব্লিউটিও সম্মেলন বাতিল খবর জানো।

আরে বাবা ফিলিস্তিনের খবর সরা; অন্য চ্যানেল দে- শালা আরাফাত হইলো বড় দালাল।

মুজিবের নেতৃত্বে একাত্তরে আমাদের বুর্জোয়া বিপ্লব হইয়া গেছে।
বাংলাদেশ এখন পুঁজিবাদী রাষ্ট্র।
এখন খালি বিপ্লব হয় হয়। তোমরা গোছাইয়া ওঠো।

দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় এইটা আধা সামন্ততান্ত্রিক ও নয়া উপনিবেশিক দেশ।

এইটার একটা বিশেষ তাৎপর্য আছে।
বাংলাদেশে এই প্রথম গ্রেনেড ফাটলো। তাও ব্রিটিশ হাইকমিশনারের গায়ে। পার্টিতো এখনো কোনো ব্যাখ্যা এ ব্যাপারে দেয় নাই। দেখা যাক কী হয়।

আখলাকুর রহমান তো আগেই কইছেন এদেশের কৃষিতে ধনতন্ত্র প্রধান।
হ এই কারণেই কৃষি হুতছে আর কৃষকরা সুইসাইট খায়।

লাইভঃ


বাথরুমে যামু না বিছানায় শুইয়াই-
আইচ্ছা সীমারে যে দেখলাম আমার তো খাড়াইলো না। আমার চোখে খালি জেবারে লয়। তোরা শালা বুর্জোয়া- টেকা দিয়া শইল লছ।


মনু জলধর এইটা তুই খেয়াল করছস কিনা জানি না, ঢাকায় মেয়েদেরকে খুব বেশি মেয়েদের মতো করে ভালোবাসা হয়। দেখ চারদিকে...


কইছি তো। এখন পর্যন্ত বাংলা গানে কফিলের চেয়ে বেশি কাজ কেউ করতে পারে নাই। এই যে মাঠে এই ভাবে ছাড়লাম।

৪.
তুমি এখন কও বাবা, ইলিয়াস তো কবেই কইছেন রবীন্দ্রনাথ বাংলা গানেরে মধ্যবিত্তের জন্য আনছেন আর নজরুল তারে সামন্তধারায় নাকি ঘরানায় নিয়া গেছেন।

ফাশব্যাক ও লাইভের মাঝামাঝি
অনেকটা তারকোভস্কির মতোঃ দরকার মতো ভাঙা কাঁচ দেওয়া-

এইটা হইলো পুঁজির যুগ। যদিও পুঁজি ক্রাইসিসের মধ্যে আছে। তবুও আমিতো মধ্যবিত্ত। বুঝি বিপ্লব হইলে আমারো লাভ আছে। কিন্তু আপাতত পুঁজির গোলাম হই-চাকরিটা ভালো। মার্কেটিং এ। আর এখনতো মার্কেটিং এই পয়সা। টার্গেট পুরা তো...যদিও আর্থার মিলারের ডেথ অফ এ সেলস ম্যান তোমার পড়া। যদিও গ্রেগর সামসা হওয়ার কোন সম্ভবনা তোমার নাই কারণ তুমিতো এখনই তোমার লাশ কাঁধে। তবে আর একটা সম্ভাবনা আছে সেলিম মোরশেদের অম্লানদের গল্পের নায়কের মতো ফিউচার ব্রাইট করবা আর তোমার বউ আর একজনরে কইবো আপনি যে এতো স্ট্রং আগে জানতাম না। তুমিতো সময়ই পাইবা না। কী আর করবা। জেবা তো আর একজনের ঘরে। তবে মাঝে মাঝে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কিছু পুঁজি দিও। আরে তুমি তো জানোই পুঁজি হইলো যৌথ মালিকানা। ঘাবড়াইওনা।

আর্টফিল্ম-বিকল্পধারাঃ

এরপরও তো তোমার ক্রিয়েটিভিটি নষ্ট হয় নাই।
কপচানি রাখেন। নিজের লাশ নিয়া এখন আমি কী করবো।
এই লাশ বইবার তৌফিক খোদা তোমারে দেন, রাব্বানা ওয়াতানা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও... ছুম্মা আমিন।

শোন ঐ দূর পাহাড়ের চূড়ায় একটা গাছ আছে। ঐট হইলো সঞ্জীবনী গাছ। ঐ গাছের রস তোমার জীবন ফিরাইয়া দিতে পারে। যদি নিজের লাশ বহন কইরা সেখানে যাইতে পারো।

আলিফ লায়লাঃ

আমার লাশ কাঁধে আমি ছুটছি-দৌড়াচ্ছি-হাঁটছি, রোদ-জল-নদী
হাঁটু খসে পড়ছে- তৃষ্ণায় গলা কাঠ- জিভ জূলে যাচ্ছে- কুকুরের মতো হাঁপাচ্ছি। হাজার বছর ধরে পথ চলে যেই পাহাড়ের কাছে পৌঁছলাম

হায়
পাহাড়টা নদীর স্রোতে ভাসছে সমুদ্রে ডুববে বলে...

অতঃপর শেষ হইল
যদিও হইল না শেষ...
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৪:১৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×