somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফকির ইলিয়াস
আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

অশুভ শক্তিরা প্রশ্রয় পেলে

২৭ শে জুলাই, ২০০৮ সকাল ৭:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অশুভ শক্তিরা প্রশ্রয় পেলে
ফকির ইলিয়াস
============================================
অনেকটা পরিকল্পিত সফরে বেরিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সিনেটর বারাক ওবামা। তিনি জর্ডান, ইসরায়েল, ইরান, আফগানিস্তান সফর করছেন। এরপর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাবেন। তার লক্ষ্য, একটি সংবাদ পৌঁছে দেওয়া। আর তা হচ্ছে,সকল অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে মানবতার বিজয় সুনিশ্চিত করা।তিনি ইতিমধ্যে সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের সকল নেতাকে। তিনি ক্ষমতায় যেতে পারলে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে, বিশ্বে এক নতুন দিনের শুভ সূচনা করবেন।
বারাক ওবামা তা পারবেন কিনা, তা বেশ প্রশ্নসাপেক্ষ। কিন্তু এ কথা নিশ্চিত যে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রিপাবলিকান সরকারের নানা ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বিশ্ববাসী। বিভিন্ন দেশের মানুষ আজ নানা ধরনের সংকটের শিকার। চাল উৎপাদনের স্বর্গরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রে আজ চালের আকাল। এমনকি জননিরাপত্তাও এখানে বিঘ্নিত প্রতিদিন।
বারাক ওবামা বলেছেন, ২০১০ সালের মধ্যে ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে মার্কিনি সৈন্য সরিয়ে আনা হবে। এ বিষয়ে তিনি মতবিনিময় করেছেন দুটি দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের সঙ্গে। সব মিলিয়ে একটি আশার বাণী লক্ষ করছেন বিশ্ববাসী। করদাতা মার্কিনিরা চাইছেন হতাশার কাল শেষ হোক। অবসান হোক সকল দুঃস্বপ্নের। নতুন সূর্য উঠুক।
একটি কথা আমরা জানি সমাজে অশুভ শক্তিরা যদি রাষ্ট্রপক্ষের প্রশ্রয় পায়, তাহলে সে রাষ্ট্রে কখনোই শান্তিআশা করা যায় না। এ বিষয়টি আমাকে ভাবায় বারবার। একটি রাষ্ট্রে অশুভ শক্তিকে মদদ জোগানোর বিভিন্ন পথ থাকে। সরকারকে অশুভ শক্তি পুষতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। পরোক্ষভাবে কালো শক্তির পৃষ্ঠপোষকতা করা যায়। দেওয়া যায় অপশক্তিকে প্রশ্রয়।
একটি সংবাদ আমাকে খুব ভাবনায় ফেলেছে। বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার তাদের কিছু নীতি থেকে সরে এসেছে। সম্প্রতি সরকারি পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে উদ্ধার করা অবৈধ অর্থ সরকার-এর প্রকৃত মালিকদেরকে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন?
ওয়ান-ইলেভেনের পর বর্তমান সরকার বারবার বলেছিল, তারা অবৈধভাবে বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে রাষ্ট্রের উন্নয়নে, জনগণের উন্নয়নে ব্যয় করবে। এবং তা ছিল রাষ্ট্রের জনগণেরও দাবি। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত পাল্টাতে গেলো কেন সরকার? কী ঘটছে নেপথ্যে? এ কেমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত?
বাংলাদেশে কারা অশুভ শক্তি, তা ওয়ান-ইলেভেনের পর মোটামুটি জানতে এবং বুঝতে পেরেছে মানুষ। টিভিতে দেখলাম দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী বলেছেন, দুর্নীতি দমন করতে হলে সবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এই কথা কি নতুন শুনছে বাংলাদেশবাসী? না, তা নতুন নয়। তারপরও তাহলে এই দেশে রাজনৈতিক সৃজনশীলতা গড়ে ওঠে না কেন? কেন ঘাতক রাজাকারদের বির"দ্ধে বাকি সবগুলো রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি, কিংবা পারছে না? এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ব্যক্তি স্বার্থ, দলীয় হীন স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও রহস্যময়তা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারাই, বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধান অন্তরায়। ওয়ান-ইলেভেনও এতে কোনো নতুন মাত্রা যোগ করতে পারেনি।
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে একটি অমীমাংশিত সমাধান দিয়েই বর্তমান ক্ষমতাসীনদেরকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। আগামী সংসদে যারা জয়ী হয়ে আসবেন তারা কি তবে ওয়ান-ইলেভেনের ছায়া-প্রতিভু হিসেবে টিকে থাকতে পারবেন? দীর্ঘ জরুরি আইনের মাধ্যমে কি প্রকৃত গণতন্ত্র কোনো দেশে প্রতিষ্ঠা হয়েছে?
বসনিয়ান সার্বদের নেতা রাদোভান কারাদজিচকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার ধিকৃত অভিযোগ। যুদ্ধাপরাধের দায়ে তিনি এখন বিশ্ব মানবতার কাঠগড়ায়। বেলগ্রেডে গত ২১ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এক দশক তিনি লম্বা দাড়ি রেখে লুকিয়ে ছিলেন। তাকে বিজ্ঞ বিচারকের আদেশে ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইব্যুনালের অধীনে নেদারল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন বিশ্ববাসী দেখবে তার বিচার। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে এটা মানবতার বিজয়। এবং এই বিজয় সুনিশ্চিত না হলে প্রজন্মের পথচলা অসম্ভব প্রায় হয়ে পড়ে। খুবই দুঃখের বিষয় বাংলাদেশের অশুভ শক্তিরা অতীতেও খুব বেশি প্রশ্রয় পেয়েছে। অবৈধ অর্থ ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে ওয়ান-ইলেভেনের চেতনাধারীরাও একই পথ ধরলেন। তারপর তারা আর কিভাবে পূর্বনীতি থেকে সরে আসবেন, তাই দেখার বিষয়।
---------------------------------------------------------------------------------
দৈনিক ভোরের কাগজ । ২৭জুলাই ২০০৮ রোববার প্রকাশিত



৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×