somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহানগরীর গরীব ও দুঃস্থ মানুষদের জীবনটাকে বদলে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে আমি নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছি-মতিন খান

২৬ শে জুলাই, ২০০৮ রাত ২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


‘আমরা রাজশাহীবাসী’ র সমর্থিত প্রার্থী মো. আবদুল মতিন খান বলেন, স্বতন্ত্র, নিরপেক্ষ প্রার্থী হিসেবে আমি নির্বাচন করছি। মহানগরীর গরীব ও দুঃস্থ মানুষদের জীবনটাকে বদলে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে আমি নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছি। বেকার যুবকদের জীবনটাকে স্বাস্থ্যবান করার যত রকমের চেষ্টা আছে তার সবই করার চেষ্টা করবো।
মতিন খান আরও বলেন, বিগত সময়ে মশার ওষুধ বিক্রি করে অনেকে কোটি কোটিপতি হয়েছেন। আমি নির্বাচিত হলে নগরবাসির জীবন বিপন্ন করে এধরনের কোন দুর্নীতি চলবে না। তিনি সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম আকাশের সঙ্গে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। আবদুল মতিন খানের সাক্ষাৎকারটি প্রশ্নোত্তর আকারে প্রদান করা হলো।
প্রতিবেদক : ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পট পরিবর্তনের পর বর্তমান তত্ত¡াবধায়ক সরকারের কর্মকান্ডকে মূল্যায়ণ করুন।
মতিন খান : ২০০৭ এর ১১ জানুয়ারির পট পরিবর্তনের পরের সরকারের কর্মকান্ড ও উদ্যোগকে আমি সমর্থন করি। তাদের কিছু কিছু ব্যর্থতা আছে। একইভাবে যদি মানুষের পেটে খাবার বিশেষ করে গরীবদের পেটে ভাত দেবার চেষ্টা হতো তাহলে আরও ভাল হতো। তবে আমি হতাশ নই। দেশ অবশ্যই এগিয়ে যাবে সামনের দিকে। দেশের জন্যে জাতির ভালোর জন্যে এধরনের একটা স্টেপ দরকার ছিল। বিগত ৩৭ বছরের মধ্যে যা করার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। এই সরকার তাই করার চেষ্টা করছে। অতীতে রাজনীতির নামে অনেক ভন্ডামী হয়েছে। আমাদের দেশে গরীবরা আরও গরীব হয়, বড়লোক আরও বড় হয়। এটা দূর করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম নির্বাচনটা সুষ্ঠু ও সম্মানজনক হবে। কিন্তু তা আমরা দেখছি না। সরকার এতে ব্যর্থ। সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে অনেকে নির্ধারিত ব্যয়ের চেয়ে অনেক বেশী ব্যয় করছে। সরকার এটা দেখছে না। এব্যাপারে কোন আইন-কানুন আছে বলে মনে হয় না। আমার জীবনে এমন নির্বাচন আগে কখনও দেখিনি। এটা খুবই দুঃখজনক। যদিও রাজনৈতিক সরকারের আমলের নির্বাচনে কারচুপি, সন্ত্রাস হয়েছে। সরকার নির্বাচনমুখী যেসমস্ত উদ্যোগ এর কথা বলেছিল, সে ব্যাপারে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে গেছে বলে আমি মনে করি।
প্রতিবেদক : নির্দলীয় নির্বাচন হলেও অনেকে দলীয় সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করছে বলে অভিযোগ আছে। এ ব্যাপারে আপনি কি বলেন?
মতিন খান : নির্দলীয় নির্বাচন হবার কথা থাকলেও প্রায় সবাই দলের সমর্থন ও নাম করে ভোট করছে। এটা সম্পূর্ণ ভন্ডামী। সরকারের এ বিষয়ে অনেক ব্যর্থতা আছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
প্রতিবেদক : সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে অনেকে রাজনীতিবিরোধী অভিযান বলে মনে করে। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কি?
মতিন খান : জাতীয়ভাবে যারা দুর্নীতি করেছে তারা অভিযুক্ত হয়েছেন। আমি মনে করি না যে, সরকার দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোন কিছু করেছে। বরং অনেকের সাজা হচ্ছে না। এটিই বড় আশ্চর্যের ব্যাপার। কাজেই আমি বলতে চাই, যারা দলীয় প্রার্থী আছেন তারা যদি আবার নির্বাচিত হন তাহলে তারা অবশ্যই দলীয়করণ করবে। আমরা শুনছি করপোরেশনের কর্মচারিদের নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকার যেভাবে বলেছিল যে, প্রার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। তার কোন বালাই নেই। এভাবে সত্যি সত্যি যারা শিক্ষিত-যোগ্য তাদের মানহানি হয়েছে বলে আমি মনে করি।
প্রতিবেদক : রাজশাহীর প্রতি বিগত সরকারের কোন বৈষ্যমূলক আচরণ ছিল কি?
মতিন খান : বিগত সময়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে তাদের সময়ে রাজশাহীর মানুষ হিসেবে আমরা অনেক বৈষম্যমূলক আচরণ পেয়েছি। তাতে মনে হয় সরকার উদাসীন ছিল। আমি মনে করি আমাদের যারা নেতা ছিলেন তারা নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
প্রতিবেদক : শিক্ষানগরী হিসেবে রাজশাহীকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ণ করেন?
মতিন খান : আমাদের যা আয়-ব্যয় হয় তর সবকিছু শিক্ষাকে ঘিরে। কাজেই রাজশাহীকে শিক্ষানগরী বলতেই হয়। তবে প্রকৃত অর্থে শিক্ষানগরী বলতে হলে আরও কিছু সংযুক্ত করতে হয়। এখানে ভকেশনাল প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ফ্যাশন ডিজাইনার ইনস্টিটিউট, টেক্সটাইল ইনস্টিটিটিউট স্থাপন করতে হবে। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষার বুনিয়াদ সঠিকভাবে হচ্ছে না। তাই আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না। মেধাবি শিক্ষকের অভাবে আমরা ভাল ছাত্র তৈরী করতে পারছি না।
প্রতিবেদক : নির্বাচিত হলে রাজশাহীর জন্য কি করবেন?
মতিন খান : ১৯৮৭ সালে রাজশাহী পৌরসভা, রাজশাহী সিটি করপোরেশনে রুপান্তরিত হলেও দীর্ঘ ২২ বছরে কোটি কোটি টাকা খরচ করে উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিতভাবে কিছু রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। যা কিনা বিপুল পরিমাণে অর্থ অপচয়ের শামিল। বিগত দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের কারণে সিটি করপোরেশন রাজশাহীর জনগণকে প্রকৃত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করেছে এবং নিজেরা প্রচুর অর্থ ও প্রতিপত্তির মালিক হয়েছে। তাই এ সকল দুর্নীতি ও অনিয়মের পরিবর্তে একটি গতিশীল ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের মাধ্যমে সিটি করপোরেশন পরিচালনা একান্ত প্রয়োজন। আর এজন্য প্রয়োজন সৎ, যোগ্য ও নিষ্ঠাবান আধুনিক কর্মঠ একজন জনপ্রতিনিধি। এই অঙ্গিকার নিয়েই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি।
নির্বাচিত হলে দুর্নীতিমুক্ত ও গতিশীল সিটি করপোরেশন প্রশাসন গঠন, পাইপ লাইনের মাধ্যমে রাজশাহী শহরে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, সোয়ারেজ ড্রেন ও পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, আর্সেনিকমুক্ত সুপেয় পানি নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহের ব্যবস্থা করা, ডাটাবেজ ও কম্পিউটার সিটি হিসেবে রাজশাহীকে গড়ে তোলা, হোল্ডিং ট্যাক্স সাধারণ নাগরিকের উপার্জনের আওতায় রাখা, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ, রাজশাহীতে টেস্টভ্যেনু ও খেলাধুলার সার্বিক উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ, দক্ষ জনশক্তি গড়ার লক্ষ্যে বিনামূল্যে বেকার যুবকদের কারিগরী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, বস্তির উন্নয়ন, ছিন্নমূল মানুষ ও প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি থানা এলাকায় চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করবো।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×