somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভূতের ভয় আর বাঁশের সাঁকো

২৪ শে জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মার বড় জ্যাঠামশাই এর দুই বিয়ে। প্রথম পক্ষের ছেলে আমাদের বড় মামা। বড় মামা ছিলেন ডাক্তার। তিনি মুঙ্গেরে থাকতেন। মামা ছিলেন খুব ভাল মানুষ। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। সেইজন্যেই বোধ হয় বড়মামা আমাদের খুব ভালবাসতেন।

মার জ্যাঠামশাই এর দ্বিতীয় পক্ষের এক ছেলে,এক মেয়ে। মেয়েটা বয়সে আমার থেকে ছোট। রেখা মাসী। তার সাথে আমার খুব ভাব ছিল। মায়ের মেজ জ্যাঠামশাই খুব অল্প বয়সেই মারা যান। তাঁকে আমরা দেখিনি। মামাদের জমিতে ছিল মটরশুঁটি ক্ষেত। সেই ক্ষেতে রেখা মাসির সাথে মটরশুঁটি তুলতে যেতাম। একদিন দুপুরবেলা, সেখানে ক্ষেতের পাশে একটা গাছে দেখলাম একটা বউ লালপেড়ে শাড়ী,কপালে সিঁদুরের টিপ পরা. গাছের একটা ডালে পা ঝুলিয়ে বসে আছে। বেশ মজা লাগল গাছে চড়া বউ দেখে, আর কিছু ভাবিনি। বাড়ী এসে মাকে গল্প করলাম। মা ভয় পেয়ে গেলেন,বললেন খবরদার আর ওদিকে যাবিনা।

মামাবাড়ীতে থাকাকালীন আমার এক ভাই হল। মা সেইজন্য বাপের বাড়ী এসেছিলেন, সকলে খুব খুশী। মার জ্যাঠতুতো বোনেদের কোলে করে সবসময় ভাই ঘুরতে লাগল। মাত্র কয়েক মাস বয়স,একদিন এক মাসির কোলে ভাই কেঁদে উঠে নীল হয়ে গেল। বাড়ীর সবাই খুব ভয় পেয়ে গেল। মা কাঁদতে লাগলেন। সকলে নিশ্চিত হল ভাইকে ভূতে ধরেছে।ওঝা ডাকা হল। ওঝা এসেই আমাকে আর আমার পরের ভাই কে দূরে সরিয়ে রাখতে বলল। তারপর ওইটুকু ছোটভাইকে ঝাঁটা দিয়ে পেটাতে লাগল। পেটাতে পেটাতে বলল, বল তুই কে?
এই টুকু ছেলে কাঁদতে কাঁদতে বলল, আমি ধোপার ছেলে।
ওঝা রেগে মেগে বলল, তুই ওকে ধরেছিস কেন?
ভাই কেঁদে কেঁদে বলল ,আমার ওর মাকে খুব পছন্দ, মাকে না পেয়ে ওর ছেলেকে ধরেছি।
ওঝা বলল ,তুই চলে যা,আর যাওয়ার সময় চিহ্ন ফেলে যা।
ধোপার ছেলে বলল, আমি চলে গেলে নিমগাছের ডালটা ভেঙ্গে যাবে।
কথা বলার সাথে সাথে নিমগাছের ডালটা ভেঙ্গে পড়ল। ভাই সুস্থ হয়ে গেল।

এর কিছুদিন পরে আমরা বাড়ী ফিরে যাব, কিন্তু বাশেঁর সাঁকো পেরতে গিয়ে ভয়ে মরি। কিছুতেই আর সাঁকো পার হওয়া হল না, ফিরে এলাম। এদিকে দাদু তো পড়লেন মহামুশকিলে। বাড়ী না ফিরলে বাবা রাগ করবেন।দাদু তখন ক্যাতরা বলে এক প্রজাকে ডাকলেন। তার মাথার ঝাঁকায় চেপে সাঁকো পার হলাম। সেই থেকে মামারবাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা আর হয়নি। একে ভূতের ভয় তার ওপর বাঁশের সাঁকো পেরোনো।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:১০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×