somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মরণীয় বরণীয় দশ আবিষ্কারক

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১। আর্কিমেডিস: সিসিলির বিজ্ঞানী, আবিষ্কারক ও গণিতবিদ আর্কিমেডিস (খ্রি.পূ ২৮৭-২১২) পৃথিবীর সর্বকালের সেরা মানুষের একজন। তিনি লিভার বা দ-যন্ত্র, দ-চক্র, কপিকল আবিষ্কার করেন। জলসেচের জন্য তিনি আবিষ্কার করেন ওয়াটার স্ক্রু । আয়নায় আলোর প্রতিফলন ব্যবহার করে আগুন তৈরি করার কৌশলও তাঁরই আবিষ্কার। লিভার আবিষ্কারের পরে তিনি এতই উত্তেজিত ও উল্লসিত ছিলেন যে তিনি গর্ব করে বলেছিলেন, ‘আমাকে একটি লিভার দাও, আর পৃথিবীর বাইরে দাঁড়াবার একটু জায়গা দাও। আমি পৃথিবীকে নাড়িয়ে দেব’।

২। গুটেনবার্গ: জার্মানির জোহানেস গুটেনবার্গ (১৩৯৫-১৪৬৮খ্রি.) পেশায় ছিলেন একজন স্বর্ণের দোকানের একজন কারিগর। স্বর্ণের দোকানে কাজ করতে করতেই তাঁর মাথায় আসে মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কারের বিষয়টি। তিনি আবিষ্কার করেন পৃথিবীর প্রথম আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র। তাঁর এ আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে মুদ্রণজগতে বিপ্লব শুরু হয়। মানুষের মধ্যে জ্ঞান ও ভাবের আদান-প্রদান দ্রুততর হয়। মানব সভ্যতার অগ্রগতি ব্যাপক সাধিত হয়।

৩। বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন: রাজনীতিবিদ হয়েও যে বিজ্ঞানী, গবেষক, আবিষ্কারক হওয়া যায় তা জানা যায় বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিনের (১৭০৬-১৭৯০খ্রি.) জীবনী পড়েই। বিদ্যুতের গবেষণায় তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। বজ্রপাত যে এক ধরনের বিদ্যুত এ তথ্যের পরীক্ষামূলক প্রমাণ তিনিই প্রথম করেন। তিনি বজ্রপাতের হাত থেকে মানুষ ও তাদের ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য আবিষ্কার করেন বজ্রনিরোধ দ-। এছাড়া তিনি আবিষ্কার করেন ফ্রাঙ্কলিন স্টোভ। তিনি আমেরিকার জনগণকে বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ো তোলার জন্য পাঠচক্র, লাইব্রেরি থেকে শুরু করে নানা সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

৪। জেমস ওয়াট: বষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কারক হিসেবে জেমস ওয়াটের (১৭৩৬-১৮১৯ খ্রি.) নাম সকলেই জানে। এই বাষ্পীয় ইঞ্জিন দিয়েই পরবর্তিতে রেলগাড়ি চালানো হয়। তাঁর অন্যান্য আবিষ্কারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল সমান্তরাল রুলার, প্রতিফলন চতুর্থক, স্কেল এবং টেলিস্কোপের জন্য কিছু যন্ত্রাংশ।

৫। চার্লস ব্যাবেজ: চার্লস ব্যাবেজকে (১৮৯১-১৯৭১ খ্রি.) বলা হয় আধুনিক কম্পিউটারের জনক। মানুষের প্রয়োজনে মানুষের মতো করে গাণিতিক হিসাব মানুষের তৈরি যন্তসামগ্রী করে দেবে এমনটা ভাবাও ছিল যে সময়ে অনেক কষ্টসাধ্য সেই সময়ে চার্লস ব্যাবেজ প্রথমে ডিফারেন্স মেশিন এবং পরে বিশ্লেষণী মেশিন আবিষ্কার করেন। এর সাহায্যে সঠিকভাবে বার্ণৌলি সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

৬। লুই পাস্তুর: আগেকার যুগে ধারণা করা হত রোগ হল মানুষের পাপের কারণে ঈশ্বরের অভিশাপের ফল। লুই পাস্তুর (১৮২২-১৮৯৫ খ্রি.) আমাদের জানালেন ঈশ্বর নয়, বরং বিভিন্ন প্রকার জীবানুই মানুষের শরীরে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখের কারণ। কেবল মানুষ নয়, প্রাণি এমনকি উদ্ভিদের শরীরের নানা রোগও ছড়ায় এই জীবানুর মাধ্যমে। তিনি রেশমের গুটিপোকার আক্রমন থেকে চাষীদের রক্ষা করলেন, কুকুরে কামড়ালে যে জলাতঙ্ক রোগ হয় তিনি তার প্রতিষেধক আবিষ্কার করলেন। দুধ ও নানা ধরনের তরল পদার্থকে সংরক্ষণের জন্য আবিষ্কার করলেন এমন একটি প্রক্রিয়া যার সাহায্যে এগুলোকে পচনের হাত থেকে রক্ষা করা যায়। তাঁর নামেই এর নাম করা হয় পাস্তুরিতকরণ।

৭। আলেকজান্ডার বেল: আলেকজান্ডার বেলের (১৮৪৭-১৯২২ খ্রি.) নাম সবাই জানে টেলিফোনের আবিষ্কারক হিসেবে। বালক বয়সেই তিনি গম থেকে ভূঁষি ছড়ানোর জন্য এক ধরনের যন্ত্র আবিষ্কার করেন। বড় হয়ে তিনি তারের মধ্য দিয়ে কথা বলার কৌশল আবিষ্কারে মন দেন। এবং সফলও হন। তিনি আবিষ্কার করেন টেলিফোন যন্ত্র। এছাড়াও তিনি আবিষ্কার করেন মেটাল ডিটেক্টর যন্ত্র, অডিওমিটার, বোবাদের কথা বলার যন্ত্র, সমুদ্রপথে বরফস্তুপ খোঁজার ডিভাইস ইত্যাদি।

৮। থমাস আলভা এডিসন: রেলগাড়িতে চকলেট এবং খবরের কাগজ বিক্রি করা একটি বালক যিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মানুষের কল্যাণে আবিষ্কার করেন দুই হাজারেরও বেশি যন্ত্রসামগ্রী। তিনি থমাস আলভা এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১ খ্রি.)। তাঁর আবিষ্কারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বৈদ্যুতিক বাল্ব, ফোনোগ্রাফ, বৈদ্যুতিক রেলওয়ে, টেলিগ্রাফ ও টেলিফোনের কিছু যন্ত্রাংশ। তাঁর সকল আবিষ্কারই মানুষের কল্যাণে নিবেদিত। তাই তিনি একবার বলেছিলেন, ‘আমি গর্বিত যে আমি কোন ধ্বংসকারী যন্ত্র আবিষ্কার করিনি।’

৯। আলেকজান্ডার ফ্লেমিং: রোগ হলে ঔষধ প্রয়োজন হয় রোগ সারাবার জন্য। কিন্তু মানুষের শরীরে যেন রোগের জীবানু ঢুকতেই না পারে সেই চেষ্টাই করেছিলেন আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১-১৯৫৫ খ্রি.)। পেনিসিলিন তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। এ আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে সিফিলিস, গ্যাংগ্রিন, যক্ষার মতো মরণব্যাধি থেকে মানুষ রক্ষা পায়।

১০। মার্কোনি: রেডিওর আবিষ্কারক হিসেবে মার্কোনির (১৮৭৪-১৮৩৭ খ্রি.) নাম জগৎজোড়া। তাঁর আগেও কেউ কেউ এ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সবার চেয়ে সফল হয়েছিলেন মার্কোনি। এঁদেও মধ্যে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু অন্যতম। কিন্তু মার্কোনিই প্রথম তিন হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে বার্তা পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাই তাঁকেই বলা হয় রেডিওর আবিষ্কারক।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×