somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফকির ইলিয়াস
আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

কবির আত্মকথন ,কবিতার সুষম সাম্রাজ্য

২২ শে জুলাই, ২০০৮ সকাল ৮:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবির আত্মকথন, কবিতার সুষম সাম্রাজ্য
ফকির ইলিয়াস
====================================
আমি বুঝতে পারি কিছু কথা আমার মননে দানা বাঁধে। আমি বলতে চাই। লিখতে চাই। প্রকাশিত হতে চাই। কখনো ছন্দোবদ্ধ। কখনো মুক্ত নদীর মতো প্রবাহিত হয়ে যেতে চাই। মনে পড়ে যায় শামসুর রাহমানকে। তিনি বলতেন, আমি তো আর কোনো কাজ করতে পারি না। তাই লিখে যাই। কবির কথায় এক ধরনের আর্তনাদ লক্ষ্য করি। ‘আমি তো আর কিছুই পারি না।’ আর কী হতে পারলে শামসুর রাহমান কবিতা কিংবা গদ্য লিখতেন না, সে সব বিষয়ে অনেক খোলামেলা কথাও বলেছেন তিনি।
তাহলে কি ‘আর কোনো কিছু করতে না পারা’ মানুষরাই লেখক হয়ে যায়? কিংবা যেতে পারে?
নিউইয়র্কের পঞ্চম এভিন্যু আর সাইত্রিশ নম্বর সড়কের কোণা ধরে হাঁটতে হাঁটতে এ সব কথা ভাবি। আর কয়েকটি সড়ক পরেই ব্রায়ান্ট পার্ক। হঠাৎ কে যেন আমার পিছু পিছু, কিছু বলতে থাকে। খুব নিচু স্বরে। ‘স্মোক’ ‘স্মোক’। আমি সম্বিৎ ফিরে পাই। একজন মধ্যবয়সী কৃষ্ণাঙ্গ। গোপনে গাঁজা, আফিম ধরনের কিছু বিক্রি করছে। আমাকে দেখে তাই হাঁকছে, ‘স্মোক’।
স্মোক করার অভ্যেস নেই আমার। কোনোদিন চেষ্টা করেও দেখিনি। পঞ্চম এভিন্যু, বাণিজ্য এলাকা বলেই পরিচিত। এখানে অবৈধ দ্রব্য বিক্রি করছে তা ভেবেই কিছুটা হোঁচট খাই। নিজমনে পথ চলতে থাকি। এই উচ্চবিত্তের এলাকায় নেশা বিক্রি করা হচ্ছে! এর সঙ্গে কারা? যারা এখানে লক্ষ ডলার বেতন পায় বছরে, তারাও এসব নেশা গ্রহণ করে? মানুষ কেন নেশাগ্রস্ত হয়? লেখালেখিও কি এক ধরনের নেশা? লেখালেখি করে জীবনে কি কিছু পাওয়া যায়? এমন অনেক কথার জিজ্ঞাসা উড়িয়ে দিয়ে বাতাসের ওজন ভারী করি।
নিজেকে প্রকাশের প্রখরতা নিয়ে সেই কৈশোরকে ঢেলে দিয়েছিলাম উত্তাল বর্ষার শরীরে। বসন্তের কৃষ্ণচূড়া দেখে দেখে যখন পার হতাম সুরমার ক্বীন ব্রিজ, তখন মনে হতো এই শহরে ভোর হয় জীবনের স্বপ্ন নিয়ে। রিকশাঅলার ক্রিং ক্রিং আওয়াজ আর লাল ইট বহরকারী হলুদ ট্রাকগুলোর হর্ন যেন ফাটিয়ে দিতে চাইতো কর্ণযুগল। ''পাবলিক কেরিয়ার সিলেট এরিয়া'', কিংবা ''পাঁচশ গজ দূরে থাকুক''- সাইনগুলো পড়া হয়ে যেতো হাঁটতে হাঁটতে। বেদের নৌকোগুলো বাঁধা পড়তো চৈত্রের খরায় যে নদীতে, সেই নদী সুরমার খেয়া পার হতে হতেই তাকিয়ে দেখতাম নদীটির একপাড় ভাঙছে। তবে কি খুব শিগগির গড়ে উঠবে অন্য পাড়? এমন প্রশ্নও জাগতো মনে অনেকটা পশ্চিমে হেলে পড়ার সূর্যের মতো।
আমি সব সময় সূর্যাস্তকে মনের শেষ প্রশ্ন করতাম কেন? একটি দিন কি তবে কয়েক টুকরো স্মৃতি নিয়েই ক্রমশ ডুবে যায়। আজ মনে পড়ছে সেই কবিতাটির কথা। যা লিখেছিলাম সতেরো বছর বয়সে।
আমার কোনো বাল্যভাগ্য ছিল না
শিশির ঢেকে দিয়েছিল সবুজ সূর্যাস্তের স্মৃতি। তাই
বলেই বোধ হয় হারানো সূর্যকে আমি খুঁজি
অবিনাশী আত্মার ঘ্রাণে। বনে এবং বীমাহীন
জীবনে। যেখানে সূর্য এবং ভাগ্য হাঁটে ঈশানের
সমান্তরাল বিভায়।

‘বাল্যভাগ্য’ কবিতাটি দীর্ঘদিন পর কাঁচা হাতে লেখা ডায়েরির পাতা থেকে কুড়িয়ে তুলি। সেসময় জীবনকে বীমাহীন ভেবেছিলাম। আজ কি জীবন হতে পেরেছে কবিতায় বীমাকৃত?


দুই.
কবিতা, চিত্রকলা, শিল্পচারুকে খুঁজে খুঁজে পথ চলতাম পীচঢালা কালো দাগগুলো গোনে গোনে। সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে প্রথম যেদিন ঢুঁ মারি সেদিন আমার গভীর দৃষ্টি কাড়েন একজন ত্যাগী পুরুষ। খুব প্রখর ধ্যানী মনে হয়েছিল তাকে প্রথম দেখায়। মুহম্মদ নুরুল হক। উপমহাদেশের এক অন্যতম গ্রন্থগারিক। কথা বলে মনে হয়েছিল এক জীবন্ত গ্রন্থকোষ তিনি। তাঁর হাত ধরেই সাহিত্য সংসদে এসে বই পড়ার অভ্যেস গড়ে উঠে আমার। তিনিই শিখিয়ে দেন গদ্যের, কবিতার ভেতরে কিভাবে ঢুকে যেতে হয়।
অনেক সময় কলেজের ক্লাস ফাঁকি দিয়েও তাই ছুটে যাওয়া হতো অসমাপ্ত গ্রন্থটির পাঠ শেষ করার জন্য। এতে লাভ এবং ক্ষতি দুটোই যে হয়েছে, তা এখন খুব ভালো করে বুঝতে পারি। কিন্তু সব লাভও কি জীবনকে তুষ্ট করতে পারে সমানভাবে? কোনো অতৃপ্ত আত্মার স্বপ্নকথা বলতে-বলতে-বলতে কিংবা উপন্যাসের কোনো চরিত্রের মাঝে ডুবে যেতে যেতে মনে হয়েছে আমিই সেই চরিত্র। লেখক কিংবা লেখিকা যা বলতে চেয়েছেন, আমি যেন তারই প্রতিচ্ছায়া।
একজন কবি তার ছায়া দেখা কখন শিখেন? কোনো মূর্ত প্রতীক কবিকে নিয়ে যায় প্রেমের নিখিল বাগানে? জীবনানন্দ দাশের ‘কবিতার কথা’ পড়তে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছি অনেকবার। বুঝা হয়ে ওঠেনি। তাই পড়েছি, ভেবেছি, পড়েছি। রাতের আলোতে ডুবে গিয়ে সমৃদ্ধ করেছি নিজেকে। মনে মনে আওড়িয়েছি--
এসো আজ কিছুক্ষণ স্বপ্ন দেখা যাক!
পথে ঘাটে মাঠে বনে কেমন জোনাক
জোনাকি, তোমার হাতে কাজ থাকে যদি,
পুরনো সে নদী
খানিক পেরিয়ে এসো, এইটুকু পথ
পাঁচিলের এপাশেই সোনালি শপথ!
[জোনাকি /আহসান হাবীব]

জীবনে কতোবার শপথ ভঙ্গ করেছি, এর হিসাব নিজের কাছ থেকে গেলে হাসিই পায়। কারণ শপথ তো কেবল উন্মাদেরাই করে! তবে কি আমি উন্মাদ ছিলাম, কবিতার জন্য? সুরের জন্য? ছন্দের বিদীর্ণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমি কি প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম সেই প্রথম উন্মাদনা! এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বাসিয়া নদীর তীরে বসে থেকেছি অনেকগুলো বিকেল। মাথায় দীর্ঘ চুলের ঢেউ। পাছে কে ফিসফিসিয়ে বলেছে- ‘হবে না কিছুই’। কেউ বলেছে''ওহ !তারে আবার নতুন সমাজতন্ত্রে পেয়েছে।’ কবিতা, সমাজতন্ত্রের সাক্ষী হয়ে থাকে কি না - সে প্রশ্নের জবাব আমি খুঁজিনি কখনো। তবে কবিতা মানবতাবাদের দোসর এবং হাতিয়ার দুটোই হয়, তা আমি জেনেছি বহু আগেই।
‘তুমি পর্বতের পাশে বসে আছো:
তোমাকে পর্বত থেকে আরো যেন উঁচু মনে হয়,
তুমি মেঘে মেঘে উড়ে যাও, তোমাকে উড়িয়ে
দ্রুত বাতাস বইতে থাকে লোকালয়ে,
তুমি স্তনের কাছে কোমল হরিণ পোষ,
সে-হরিণ একটি হৃদয়।’
[হরিণ/আবুল হাসান]

কবিতাকে ভালোবেসে আমি তাহলে আজীবন কি পুষেছি? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেই ফিরে যাই প্রাণে ঘেরা সিলেট শহরে। জেলা শিল্পকলা একাডেমী ভবনটি সুরমার তীরেই অবস্থিত। সেখানে বসে আপন মনে গান শিখাচ্ছেন কবি-গীতিকার সৈয়দ মুফাজ্জিল আলী। ভরাট কণ্ঠ তার। আমি একজন বিবাগী কিশোর। গেয়েই চলেছেন...
আমি যাইমু ও যাইমু আল্লাহরও সঙ্গে
আল্লাহ বিনে হাসন রাজা কিছুই নাহি সঙ্গে

তাঁর সঙ্গে কোরাস গাইছেন একদল ছাত্রছাত্রী। শিল্পকলা একাডেমীর পাশেই সারদা স্মৃতি ভবন। সেখানে চলছে হয়তো কোনো রাজনৈতিক সেমিনার। কিন্তু শিক্ষানবিশ শিল্পীদলের রেওয়াজ থামছে না। এই না থামার দৃশ্য দেখতে দেখতেই চোখ রেখেছি শ্রাবণের সুরমা নদীতে।

তিন.
বানের পানিতে কলাগাছের ভেলা ভাসিয়ে ভাদ্রের পাকা ধান তুলে আনছে কৃষক । সে দৃশ্য দেখে আমি আপ্লুত হয়েছি বারবার। বন্যা এসেছে তো কি হয়েছে, - বানের পানি নেমে গেলে আবার শুকাবে ধান। ফসলের ঘ্রাণ মাতোয়ারা করবে কিষাণীর মন। একজন বাউল দার্শনিক কবি, আমার পিতামহ ফকির ওমর শাহ সে কথা লিখে গেছেন শত বছর আগে।
বানের পানি ধান নিলো মোর
সুখ নিতে তো পারলো না
তোমার লাগি রাখছি সখী
বাঁশের বাক্সে ছয় আনা।

মানুষ একসময় প্রেমের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হিসেবে বাঁশের বাক্সে ছয়আনা জমা রেখেছে তার প্রেমিকার জন্য। তাতেই সুখ ছিল। তৃপ্তি ছিল। এখন হীরের আংটিও সুখ এনে দিতে পারছে না। এর কারণ কি? কারণ হচ্ছে অনেক কৃত্রিম মুখোশ পরে আছে বর্তমান সমাজ। এখানে কবিও প্রাণ খুলে লিখতে গিয়ে বাধাগ্রস্ত হন। কবিতার নায়িকার জন্য, কবিকে ত্যাগ করে যায় তার ব্যক্তিগত জীবনের ঐশ্বর্য।
বিভিন্ন ভাষাভাষি কবির কথা, জীবন ধারা আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখে। তাদের কথা শুনি। মিলাই বাংলার সবুজ সীমানার সাথে অন্যকোনো ভূখণ্ডের সবুজের সজীবতা। নিউইয়র্কের কবিদের আড্ডাভূমি গ্রীনিচ ভিলেজের ‘গ্রীনিচ ক্যাফেতে’ বসে শুনে যাই কোনো তরুণ কবির সদ্য রচিত পঙক্তিমালা। যেখানে লব্ধ অভিজ্ঞতার অনেক আলোই আমাকে ঝলক দিয়েছে মাঝে মাঝে। আমার পরিচিত এক কবি রিয়েন রবস। একদিন দেখি তিনি খুব বেদনাগ্রস্ত মনে বসে আছেন ক্যাফের এক কোণে। জিজ্ঞাসা করি, কি হয়েছে? রিয়েন খুব দুঃখ করে বলেন, গতকাল তার মেয়ে বান্ধবী তাকে ত্যাগ করে গেছেন। কারণ কি জানতে চাই আমি। কবি বলেন, টানাপড়েন চলছিল আমার কবিতা লেখাকে কেন্দ্র করে। আমার কবিতার এক‘নামনায়িকা' নিয়ে ঘটে বিপত্তি। আমার মেয়ে বান্ধবী মনে করছিলেন আমি ঐ নামের মেয়েটির প্রেমে পড়েই তাকে নিয়ে কবিতা লিখছি।’
কবিরা লিখতে গিয়ে মাঝে মাঝে এভাবেই ফেরারি হয়ে যান। কে খোঁজ রাখে কার? এই বিশাল বিশ্বে কার এতো সময় আছে খোঁজ করার। তন্ন তন্ন করে তাকিয়ে দেখার।
এখানে সূর্য ওঠে
সহসা বৃষ্টি পড়ে
এখানে ফসল ফলে
শিশুরা ক্ষুধায় মরে।

এখানে অনেক নদী
মেঘেরা রঙিন শাড়ি
এখানে ফুলের পাখি
ফেরারি কবির খোঁজে।

এখানে নবীন সারি
শিশুরা ক্ষুধায় কাঁদে
এখানে শোভন সবি
কবিরা দ্বীপান্তরে।
[ফেরারি কবির খোঁজে/আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ]

যে শব্দলগ্ন মন বিচ্ছন্নতার সঙ্গে ঘর বাঁধে- সেই মন কি প্রকৃত ঘরের দেখা পায় কোনোদিন? বিভিন্ন ভাষাভাষি অনেক কবির আত্মদহনের ঘটনাবলী আমাকে কাতর করে তোলে। একজন প্রতিভাবান কবি তার পঙক্তিমালা নিয়ে প্রকাশকের পিছু পিছু ছুটছেন। প্রকাশক কবিকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। কিংবা ‘আরো লিখুন- লিখে যান’ মার্কা উপদেশমালা প্রকাশক ঝুলিয়ে দিচ্ছেন কবির গলায়। ভেবে অবাক হই বাংলা সাহিত্য প্রেমিকরা, বাংলা কবিতামোদীরা জীবনানন্দ দাশের মতো তেজী কবিকে তার জীবদ্দশায় যথার্থ সম্মান দেখাতে পারেনি। কেন পারেনি?
এই জিজ্ঞাসা এখানো আমার পাঁজর ভাঙে মাঝে মাঝে। পিঁপড়ারা সারিবদ্ধ হয়ে খুদ্ দানা সংগ্রহ করার জন্য এগিয়ে যায়। পাখিরা ঝাঁক বেঁধে একে অপরের ডানা মিলিয়ে উড়ে যায় আকাশে। মানুষ তেমনটি পারে না কেন? মানুষ তো শ্রেষ্ঠ জীবের দাবিদার। তবে কেন এই রক্তের ফোয়ারায় দাঁড়িয়ে মানুষ বার বার বলে- আরো আধিপত্য চাই!
এ এক ভারি অদ্ভুত সময়
কে কার আস্তিনের তলায় কার জন্যে
কোন হিংস্রতা লুকিয়ে রেখেছে
আমরা জানি না।
কাঁধে হাত রাখতেও এখন আমাদের ভয়।
[অদ্ভুত সময়/সুভাষ মুখোপাধ্যায়]
সেসময় ঘিরে ধরছে আমাদের চারপাশ। আমরা ভেসে যাচ্ছি। ঠাঁই পাচ্ছি না।

চার.
প্রতিদিনই আমরা ভিন্ন কবিতার ছায়ামাত্রা মাড়িয়ে পথ চলি। কেউ চলে গেল বলে আমারা যতোটা শোকগ্রস্ত হই না, তার চেয়ে অনেক বেশি আনন্দিত হই কারো আগমনে। বিস্মৃতপ্রায় নদীদের কংকাল খুঁজে আমরা খুব কমই ফিরি গ্রামীণ প্রান্তরে।

আমলকী গাছে ঠেস দিয়ে আসে শীত
উড়ে গেল তিনটে প্রজাপতি
একটি কিশোরী তার করমচা রঙের হাত মেলে দিলে বিকেলের দিকে
সূর্য খুশী হয়ে উঠলেন তাঁর পুনরায় যুবা হতে সাধ হলো।
[নিসর্গ/সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়]
জীবনের রূপান্তর হয়। রূপান্তর হয় কবিতারও। সেই সত্যকে মেনে নিয়ে এগিয়ে যায় প্রজন্ম। কলম হচ্ছে একটি চেতনার প্রতীক। শক্তির উৎস। কলমই পারে তার নিজের সুষম সাম্রাজ্যবাদ সৃষ্টি করে যেতে। পারে নির্মাণ করে যেতে আঁচড়ের সৌরভূগোল।
মনের সঞ্চিত দানা ভেঙে পলি সৃষ্টির মানসেই কলম হাতে তুলে নিয়েছিলাম। যারা ভাবতে জানে, তারা বিরহেও ভাসতে জানে। এ বুঝি কবিতার সহাবস্থান বিশ্বের সমকালকে সমানভাবেই আলোকিত করে যায়। কারণ একটি সূর্যই আলো দেয় সবাইকে। দেশে দেশে শুধুমাত্র পরিবেশ-প্রতিবেশ ভিন্ন। কিন্তু প্রকাশের প্রাণরসায়ন সবারই এক।
কবিতা যে সব আত্মকথন লিখে যায়, তা জীবনেরই প্রবচনপর্ব। ভাষা এবং চিন্তাভেদে এতে বিশেষ কোনো পার্থক্য আছে বলে এখন আর মনে হয় না।
----------------------------------------------------------------------------------
দৈনিক ভোরের কাগজ। সাহিত্য সাময়িকী ।
১৮ জুলাই ২০০৮ শুক্রবার প্রকাশিত





সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০০৮ সকাল ৮:৫৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×