somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাগো তোমায় আর দূর্নীতিবাজদের হাতে ছেড়ে দেবনা।

১৮ ই জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিনকানসেনে( জাপানের দ্রুতগতির ট্রেন ) চেপে ওসাকা যাওয়ার সময় বিজয়ের মনটা আরো খারাপ হয়ে গেলো। বেশকিছুদিন ধরেই তার মন খারাপ। বিজয় জাপানে আসে ১/১১ এর দুই মাস পর। রাজনৈতিক দলগুলোর যেকোন উপায়ে ক্ষমতা যওয়ার লিপ্সা, হানাহানি যখন চরম পর্যায়ে তখনি ১/১১ এর আবির্ভাব। দেশের মানুষ হাফ ছেড়ে বাচে। যাক, এবার তাহলে বাংলা আমার সত্যিই সোনার বাংলায় পরিণত হবে। জনগনের অফুরন্ত ভালবাসা আর সমর্থন পেলো দেশটাকে চরম বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষাকারীরা। বিজয়ের মনেও অনেক আনন্দ দেশের পরির্তনে। ভাল ছাত্র হয়েও যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ পায় না শুধুমাত্র লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতির জন্যে, তখন এই পরির্তনে তার মনে সত্যিই অনেক আনন্দ। সে ভাবে আর হয়ত তার মত কোন ভাল ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী না পাওয়ার দুঃখ পেতে হবেনা, গরিব মেধাবী ছাত্রকে চাকুরী পেতে টাকার কাছে হার মানতে হবেনা। দেশে থাকবেনা হানাহানি, হরতাল। দারিদ্রতা থাকবে জাদুঘরে, কর্মমুখর হয়ে উঠবে দেশ। নাই বা থাকুক আমাদের বড় বড় কলকারখানা, আমাদের আছে জনশক্তি আর উর্বর মাটি। সবুজ ফসলে ভরে উঠবে সোনার বাংলা, দেশ হবে স্বয়ংম্সপন্ন।
অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিজয় জাপানে আসে উচ্চতর শিক্ষার জন্যে। দেশে ফিরে মাতৃভুমির কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করবে। বিভিন্ন দেশে অধ্যয়নরত বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করে, বন্ধুরাও উৎসাহ দেয়। সবাই মিলে তাগিদ অনুভব করে দেশের জন্যে কাজ করতে। তারা অনেক পরিকল্পনা করে, এগিয়ে নিতে হবে সোনার এই জন্মভুমিকে। সোনার বাংলা অচিরেই পরিণত হবে মধ্য আয়ের দেশে-বিজয় স্বপ্ন দেখে। কেউ আর অযাচিতভাবে খবরদারি করতে পারবেনা। এভাবেই সুখ স্বপ্নদেখে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকে।
দিন যায়, রাত আসে। সময় বয়ে যেতে থাকে। সময় পরিবর্তনের সাথে বিজয় একি দেখে। পট পরিবর্তনের নায়কেরা আপস করতে শুরু করে দূর্নীতিবাজদের সাথে। তৎকালীন সময়ের দূর্নীতিবাজ যুবরাজকে ছেড়ে দেওয়ার পায়তারা চলছে, ছেড়ে দেওয়া হয়েছে আত্নস্বীকৃত রাজাকার মন্ত্রীকে। জনগনের ভালবাসা নিয়ে ক্ষমতায় আসা সরকার দূর্নীতিবাজদের সাথে নির্লজ্জভাবে আপস করছে। এসব দেখে বিজয়ের মনে অনেক কষ্ট। বেশকিছুদিন ধরেই তার মন ভাল নেই। দেশ কি তাহলে আবার দূর্নীতিবাজদের হাতে পড়বে?
বিজয় ওসাকায় যাচ্ছে আন্তর্জাতিক গবেষণামূলক কর্মশালায় অংশ নিতে। কর্মশালাতে তার গবেষণামূলক কাজের উপস্থাপনা আছে। উপস্থাপনার দিকে তার মন নেই। সে ভাবছে দেশটা আবার পিছিয়ে পড়বে। দেশ নিয়ে তার স্বপ্ন কি ভেঙ্গে যাবে? ভাবনার ছেদ ঘটে জনৈক ভদ্রলোকের কথায়- Excuse me, Are you Indian? উত্তরে বিজয় বলল, No, I am Bangladeshi. ভদ্রলোক তখন বলল, আরে আমি ও তো বাংলাদেশী। শিনকানসেনে তারা পাশাপাশি সিটে বসে ওসাকায় যাচ্ছে। আলাপে বিজয় জানতে পারে উনি বাংলাদেশের এক নামকরা বিশ্বদ্যালয়ের অধ্যাপক। উনিও ওসাকায় যাচ্ছেন কর্মশালায় যোগদান করতে। বিজয় ভাবে স্যারের সাথে তার মনের ভাবনা, কষ্টগুলো বলবে। স্যারের কাছে জানতে চায় দেশের অবস্থা। স্যারের মুখে একি কথা শুনল বিজয়। নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পাচ্ছেনা সে। দেশের কিছু সুবিধাবাদী সুশীল সমাজ নাকি পরিকল্পিত ভাবে ১/১১ ঘটিয়েছে। এরা নাকি দেশ প্রেমিক না। দূর্নীতিবাজদের পক্ষে সাফাই গাইতে শুরু করল। এসব কথা শুনার পর বিজয় আর আগ্রহবোধ করলনা। বিজয় ভাবছে রাজনীতিবিদের শুধু দোষ কি লাভ? এই আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবি শিক্ষক। সবচেয়ে আগে তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের বিচার করা উচিত।বিজয়ের মনটা আরও খারাপ হয়ে যায়। সে ভাবতে থাকে সরকার কি আসলেই দূর্নীতিবাজদের ছাড় দিচ্ছে? সে আর ভাবতে পারেনা, দেশকে নিয়ে এক অজানা আশংকা তার মনকে ব্যথিত করে তোলে।
পাদ্‌টীকা: বিজয়ের মতো আমরা ভাবতে চাইনা দেশ আবার দূর্নীতিবাজদের দখলে পড়ুক। এই দেশ আমার, আপনার- চলুন সবাই মিলে দেশটাকে সোনার দেশে পরিণত করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×