somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Fuel Cell vs. Water Car - Are We thinking wrong?

১৬ ই জুলাই, ২০০৮ দুপুর ২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পোস্টটি লিখে দেখলাম অনেক বড় হয়ে গেছে। তাই পয়েন্ট আকারে লিখলাম যাতে করে যে পয়েন্ট টা পড়তে চান সেটাই সহজে খুজে পড়তে পারেন।


প্রাককথন

বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে হট টপিক কি? সবাই হয়তো বলবেন, এনার্জি। তাই না? আমি এনার্জির সাথে আরেকটি জিনিস যোগ করবো। সেটা হল এনভায়রনমেন্ট বা পরিবেশ। এমন একটা এনার্জি ও সেই রিলেটেড প্রসেস থাকবে যেটা পরিবেশ বান্ধব বা এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি হবে। গ্লোবাল ওয়ার্মি করে করে যেভাবে পরিবেশবাদীরা মাথা খারাপ করে ফেলছেন সেখানে দ্রুত একটা উপায় বিজ্ঞানীদের বের করতেই হবে। মাথায় রাখতে হবে খরচের ব্যাপারটাও। কারণ জ্বালানি তো খালি বিলাত আমরিকার জন্য না। আমাদের জন্যও। আর ইকোনমি যে কোন ইন্ডাস্ট্রির মুখ্য বিষয় থাকে সবসময়। কাজেই সব মিলিয়ে কি হল ? লক্ষ্য করুন -

এনার্জি + এনাভয়রনমেন্ট + ইকোনমি।

এই ব্রত থেকেই এল রিনিউয়েবল এনার্জি। সোলার, নিউক্লিয়ার ইত্যাদি। এরা কি এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি? কোন সন্দেহ নাই। ইকোনমিক? এনার্জি ইফিসিয়েন্ট? শেষ দুইটা প্রশ্নের উত্তর বোমা মারলেও কেউ স্থির হয়ে বলতে পারবে না। কারণ আজ যা দূর ভবিষ্যত কাল তা বর্তমান হলেও তো হতে পারে। সোলার ও নিউক্লিয়ার নিয়ে গবেষণা চলছে। সেই গবেষণার পথ ধরে আরেকটি টেকনোলজি চলে এল। যার নাম ফুয়েল সেল।


ফুয়েল সেলের কার্যপদ্ধতি

অসাধারণ এই ফুয়েল সেল। সন্দেহ নাই। যার বাইপ্রোডাক্ট পানি তার চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে? ফুয়েল সেলের প্রিন্সিপালটা একটু বলি।

সেলে কি থাকে? এনোড ও ক্যাথোড। এইসব ইলেক্ট্রোকেমিস্ট্রির প্রাথমিক পাঠ। ফুয়েল সেলে হাইড্রোজেন ফুয়েল হিসেবে ঢুকে এনোডে ইলেকট্রন ছেড়ে পজিটিভ চার্জ হয়ে বের হয়ে যাবে। আর এনভায়রনমেন্ট থেকে অক্সিজেন ক্যাথোডে সেই ইলেকট্রন নিয়ে অক্সাইড আয়ন তৈরি করবে। ফলে তৈরি হবে পানি (উপজাত)। সেলের এ পাশ থেকে ও পাশ ইলেকট্রন ঘুরাঘুরির ফলে ইলেকট্রিকাল এনার্জি তৈরি হবে। ব্যাপারটা আরেকটু ভেঙে বললে এমন ইলেকট্রোডের সাথে একটা ডিভাইস কাপল করা থাকবে যা ইলেকট্রিক্যাল এনার্জিটাকে মেকানিক্যাল এনার্জিতে কনভার্ট করতে পারে। এমন ডিভাইসের কথা চিন্তা করা দুরূহ নয়। ইলেকট্রিক মটর হতে পারে।

ফুয়েল সেলের কর্মদক্ষতা
এইভাবে যে এনার্জি পাবো তা কতটুকু এনার্জি এফিসিয়েন্ট? একটি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনের কথাই ভাবুন। যে মেকানিক্যাল এনার্জি ইঞ্জিনটি তৈরি করবে তার পুরোটাই কি কাজে লাগবে? না লাগবে না। তার মানে যে এনার্জি তৈরি হবে কাজে লাগানোর জন্য তার কিছুটা কাজে লাগবে কিছুটা নষ্ট হবে। তাইতো। রাসায়নিক বিক্রিয়াকেও এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। যার জন্য প্রযোজ্য সূত্রটির নাম গিবস ফ্রি এনার্জি ইকুয়েশন (৩)। এটি বলে বিক্রিয়া থেকে প্রাপ্ত শক্তির বা এনথালপির (DELH) এক অংশ প্রকৃতিকে ট্যাক্স হিসেবে দিতে হবে অর্থাৎ নষ্ট হবে এনট্রপিতে ( Tx DELS ) অতঃপর অবশিষ্ট শক্তি দিয়ে কাজের কাজ করা যাবে যেটাকে বলা হচ্ছে মুক্ত শক্তি (DEL G)। আর লব্ধি শক্তি (এক্ষেত্রে মুক্তশক্তি) কে প্রাথমিক শক্তি (এক্ষেত্রে DELH) দিয়ে ভাগ দিলে যা আসবে তাই কর্মদক্ষতা (১)। আর কার্যকর শক্তিই হবে ইলেকট্রিক্যাল শক্তি (২)। সবমিলিয়ে দাড়ায় ।

Efficiency= ( DELG/DELH )x100(1)
E=-DEL G/nF (2)
DELG =DELH - Tx DELS (3)

সুতরাং একটু হিসেব করে দেখলেই বুঝবেন তাপমাত্রা কম হলে এই ফুয়েল সেলের কর্মদক্ষতা বাড়বে। বাড়বে ভোল্টেজ। হিসেব টা করার আগে খেয়াল রাখবেন মুক্ত শক্তি তাপমাত্রা নির্ভরশীল যতটা এনট্রপি বা এনথালপি কিন্তু ততটা না।

যা হোক বর্তমান ব্যবস্থায় ফুয়েল সেলের কর্মদক্ষতা প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ। গ্যাসোলিনের ৪০ ভাগ। এখনই আশাবাদী হওয়ার দরকার নেই। কারণ ৮০ ভাগ শুধু ইলেট্রিক্যাল এনার্জিতে রূপান্তরে। তাকে মটর দিয়ে মেকানিক্যাল এনার্জিতে রূপান্তরের কর্মদক্ষতা হবে আরো ৮০ ভাগ। মানে টোটাল ৬৪ ভাগ। কিন্তু বিশুদ্ধতম হাইড্রোজেন কি সংরক্ষণ উপযোগী ও পাওয়া এতই সোজা হবে? অবিশুদ্ধ ও তা পরিশোধনের জন্য আরো কিছু ইফিসিয়েন্সি খোয়া যাওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কি?

কেন হাইড্রোজেন ?
সেলটা এমন যে আপনি জারণ হয় এমন যেকোন কিছু ফুয়েল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এমনকি জৈব যৌগ (এলকোহল, হাইড্রোকার্বন ইত্যাদি) ব্যবহার করলেও আমরা উপজাত হিসেবে পানিই পাবো। কিন্তু সমস্যা হল তাপমাত্রা। কম তাপমাত্রায় হাইড্রোজেন এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরী। অন্য কার্বনযুক্ত যৌগ কম তাপমাত্রায় স্লথ বিক্রিয়ার পাশাপাশি ক্যাটালিস্টের ক্ষতি করতে পারে যেখানে উল্লেখ্য ক্যাটালিস্ট হিসেবে প্লাটিনাম ব্যবহার করা লাগতে পারে। সুতরাং যেহেতু কম তাপমাত্রায় এই সেলের কর্মদক্ষতা সর্বাধিক এবং এমন তাপমাত্রায় হাইড্রোজেনই সবচেয়ে দক্ষ সেহেতু এই হাইড্রোজেনই এই ফুয়েল সেলের এ পর্যন্ত সবচেয়ে ইফেকটিভ ফুয়েল।

হাইড্রোজেনের উৎস
সুতরাং পরিবেশ বান্ধব এই প্রজেক্ট আপাতত হাইড্রোজেন ছাড়া চলছে না। হাইড্রোজেনের উৎস কি? এখানেই ঝামেলার শুরু। মিথেন + পানি দিয়ে হাইড্রোজেন পেতে গেলে (সার কারখানায় এই পদ্ধতি চালু আছে) যে কার্বন বেচে যাবে তার কি হবে? সেটাও তো তখন উপজাত। তার মানে আপনাকে হাইড্রোজেন ও কার্বন আলাদা করতে হবে। কার্বনের সদগতি করতে হবে। তার উপর হাইড্রোজেন যদি ট্যাংকে করেই নিতে চান তার জন্য হাইড্রোজেন ফুয়েলিং স্টেশন বসাতে হবে অর্থাৎ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ। হাইড্রোজেন কমপ্রেস করে এলপিজির মত লিকুইড করার চিন্তা যারা করছেন তারা দয়া করে পিরিয়ডিক টেবিল থেকে হাইড্রোজেনের গলনাংকটা দেখে নিবেন। তাই বিজ্ঞানীরা ছেড়ে দে মা কেদে বাচি করে নতুন ফুয়েল সেল নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন যা অধিক তাপমাত্রায় ইফিসিয়েন্সী বজায় রাখবে। যাতে করে আমাদের কাছে যে কার্বনযুক্ত ফুয়েল আছে (এলকোহল বা অন্যান্য হাইড্রোকার্বন) তা ব্যবহার করা যায়, হাইড্রোজেন না। সেক্ষেত্রে প্রচলিত পদ্ধতি থেকে পার্থক্য থাকবে এতটুকুই যে এই বার তা অন্তত পরিবশে বান্ধব হবে।

ভবিষ্যত
ফুয়েল সেল হাইড্রোজেনের বিকল্প কোন ফুয়েলের ব্যবহার উপযোগী হয়তো হবে কোন একদিন। আপাতত চিন্তা হাইড্রোজেন কিভাবে পাওয়া যায়। সেটা পানি হলে মন্দ হত না। পানিকে ভাঙ্গতে যে শক্তি লাগবে গড়তেও তাই পাওয়া যাবে অথবা তার কিছু কম পাওয়া যাবে। থার্মোডিনামিক্স তাই বলে। কাজেই পানিকে ইলেকট্রোলাইসিস প্রক্রিয়ায় ভেঙ্গে তা থেকে প্রাপ্ত হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন (যাদের সম্মিলিত ভাবে এইচএইচও বা ব্রাউনস গ্যাস বলা হচ্ছে) দিয়ে ফুয়েল সেল চালানো অবশ্যই কল্পনাপ্রসূত। এখানে কোন না কোন মডিফিকেশন আপনাকে অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু মডিফিকেশনটা কি? এই পোস্টটি বড় হয়ে গেছে অনেক। আমি নেক্সট পোস্টে তা আপনাদের বলার চেষ্টা করবো। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০০৮ দুপুর ২:০৯
১০টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×