somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উদাসী কথন: আমার বাবা-মা যত গরীবই হোক না কেন আমার বাবা মা, আমার দেশ যত খারাপই হোকনা কেন আমারি দেশ!

১১ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলায় স্কুল লাইব্রেরীতে পড়া একটা গল্পের কথা খুব মনে পড়ছে।


কম্বোডিয়ার এক পাদ্রীকে নিয়ে লেখা। জন্ম আমেরিকায়, এমসময় বিটলস আর এলএসডির ভক্ত পরে চার্চে গিয়ে হাতে পায়ে ধরে তওবা করে কম্বোডিয়ায় চলে আসেন। ওখানটার এক গরীব পাহাড়ী গ্রামের চার্চে ধর্ম প্রচার আর মানবতার সেবায় লিপ্ত হন। ভালো গীটার বাজাতে পারতেন। খুব রাতে আনমনে পুরোনো দিনের কথা মনে করতেন আর গান গাইতেন।
তখন দেশের সময়টা খুব সঙ্গীন। তার উপর বছরের একটা দিন খুব খারাপ যেতো। তার সামনে ঘটে যেতো সরকারী বাহিনীর অনাচার, সে কিছুই বলতে পারতো না। স্হানীয় একটি স্কুলে আসতো পুরো আর্মির বহর। প্রধান শিক্ষক লাইন ধরে ঐ দিনের মধ্যে ১২ বছরে অবতীর্ণ ছেলেদের ডাকতেন। ডাকা শেষ হলে ঐ ব্যাটেলিয়নের ক্যাপটেন একটা লম্বা চওড়া ভাষন দিতেন দেশপ্রেমের। তারপর গাড়ীতে করে নিয়ে যেতেন ঐসব শিশুদের নিয়ে। এদেরকে আর্মি ট্রেনিং দেওয়ানো হবে তারপর যুদ্ধক্ষেত্রে নামানো হবে বিদ্রোহী দমনের নামে । এক সময় দেখা গেলো পুরো গ্রামে কোনো যুবক নেই, শুধু আর্মিদের বহর যারা পুরো গ্রামটা টহল দিচ্ছে বিদ্রোহী দমনের নামে। কোনো এক বছর এই পাদ্রী দেখলো গ্রামে এ্যাম্বুসের সময় ক্রশফায়ারে পরে গ্রামের একটা শিশু সে রাতে মারা যেতে। তার মাথাটা ঘুরে গেলো। তারপরের দিন সেই বিশেষ দিন-রিক্রুটম্যান্ট ডে। আর্মির বহর বড় জীপে করে ক্রন্দনরত শিশুদের নিয়ে যাচ্ছে। পাদ্রী সোজা এসে ক্যাপটেনের পথ আটকে দাড়ালো," এসব কি হচ্ছে?"
-সরে দাড়ান, মহাশয়!
-এই অসহায় আত্মাদের একটু দয়া করো!
-আমি শেষবারের মতো বলছি সরে দাড়ান।
সিগারেটে শেষ ফুটা দিয়ে পাদ্রী বলে বসলো,"কি করবেন, মেরে ফেলবেন? মেরে ফেলেন আমাকে, তাও এদের রেহাই দেন!"
ক্যাপটেন কোনো কথা না বলে হাতে থাকা রাইফেলের বেয়নেট দিয়ে আচমকা গুতো দিয়ে বসলো সজোড়ে বুকের পাজড়ে।সে তখনই লুটিয়ে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। আনুমানিক দু'সপ্তাহ পর হুশ আসে। প্রচন্ড জ্বরে আবিস্কার করে তার বুকের একটা পাজড় ভেঙ্গে ফেলেছে। উনি সেদিনই চার্চ ছেড়ে চলে যান নিরুদ্দেশ তার সহকারীর হাতে কাজকর্ম বুঝিয়ে দিয়ে।
তার কয়েকমাস পর সরকারী বাহিনীর হিটলিস্টে তার নাম আসে। তখন সে কোনো এক জঙ্গলে একটা বড় এ্যাম্বুশ করছিলো। প্লানটা ছিলো ২ সপ্তাহের। প্রধান সমস্যা হলো তাদের খাবার আর রসদ ফুরিয়ে গেছে আর এই বনের মধ্য দিয়ে পার হতে হবে মেইন সাপ্লাইয়ের দিকে, কিন্তু মাঝে সরকারী বাহিনীর শক্তিশালী ক্যাম্প। প্রচন্ড এ্যাম্বুশ হয় সে রাতে, প্রকৃতিও ছিলো বেশ দুর্যোগপূর্ণ। বৃস্টির সাথে দমকা হাওয়া, তাই স্নাইপার গুলো কাজ করছিলো না, কিন্তু ওদের ট্যান্কের সামনে দাড়ানো খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো। একটা জিনিস খুব আশ্চর্য্যের শত্রু পক্ষের অস্ত্র আর তাদের অস্ত্রগুলো একই দেশের- আমেরিকা!
তখন পাদ্রী একটা ডিসিশন নেয়। বুকে বেধে নেয় ছয়টা সিফোর। কেউ মানছিলো না কিন্তু বাধাও দিতে পারছিলো না। একজন শুধু আলিঙ্গন করে বললো," কেনো এই ডিসিশনটা আমি নিলাম না?"
পাদ্রী এগিয়ে যায় এবং সেনাবাহিনীর পুরো অস্ত্রের গুদাম সহ কয়েকটি ট্যান্কের সামনে প্রচন্ড বিস্ফোরন ঘটিয়ে পঙ্গু করে দেয় ওদের। পাদ্রীর লাশটা পরে কেউ খুজে পায়নি। এখনও যুদ্ধ চলছে, হয়তো সামনে চলবে, তবে ভাবতে আশ্চর্য লাগে, আমরা যারা আমেরিকা যাবার স্বপ্নে বিভোর, হয়তোবা সেদেশ সব পেয়েছির দেশ, সেদেশের কেউ অন্যদেশের অনাচারের বিরুদ্ধে লড়েছিলো।

সেদিন সাভারে গিয়েছিলাম- আপনগায়।আমেরিকান ব্রাদারকে দেখে সেরকম একজন লোকের কথাই মনে পড়লো। আমাদের গরীব দেশ, অনিয়ম নোংরামী ছাড়া কিছুই নেই, কিন্তু এরকম কিছু মানুষ যখন চোখে আঙ্গুল দিয়ে কিছু দেখিয়ে দিতে চায় তখন মনে হয় আমরা ভুল করছি কোনো একটা বিষয়ে!

তবে এসব কথার উপর আমার মনে পড়ে তামাটে বর্ণের জংলি টুপি পরা স্বাধীনতা প্রেমী এক পাগল বিপ্লবী- চে গুয়েভেরা!

ছোটবেলায় সবারই একজন আদর্শ থাকে। আমারও একজন ছিলেন। না তেমন কোনো বড় কেউ নয়, আমার বাবা। একটু বাউন্ডুলে টাইপের। সবসময় অন্যের সমস্যাগুলোর সমাধান করা তার একটা পেশন ছিলো আর ছিলো বন্ধুদের নিয়ে প্রতি বৃহস্পতিবার রাতভর সিনেমা দেখা আর আড্ডা দেয়া। মনে পড়ে একবার কাউকে না বলে ১ মাসের জন্য উধাও। যখন ফিরলেন হাতে ছিলো দুটো বড় লাগেজ, কোথায় গিয়েছিলেন- বৈদেশ ভ্রমন- সিঙ্গাপুর, শারজাহ প্রভৃতি। সবাই সালিশ বসালেন, বিচার করলেন কিন্তু তিনি নেই, থোড়াই কেয়ার।
যতদূর জানি উনি বুকে প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে ফরিদপুর ছাড়েন,প্রায় সবকিছুই বিলি করে আসেন। ঢাকায় এসে প্রায় শূন্য হাতে শুরু করেন সবকিছু। হয়তো আমরা এরকম পরিস্হিতির সাথে পরিচিত ছিলাম না, তাই অনেক কিছু চেয়েও পাইনি, অথবা উনি যা করেছেন বা যেভাবে করছেন তাতে আর আগের পজিশনে আর ফিরে আসা হবে না, ফলে মাঝে মাঝে তুমুল ঝগড়া লাগতো আমার সাথে। কিন্তু উনি মোটেও কন্টিনিউ করতেন না। আমি কথা বলা বন্ধ রাখলেও সে কিছুক্ষন পরে সব স্বাভাবিক করে ফেলতেন।
একবার আমার প্রচন্ড জ্বর আসলো। টানা দুদিন ১০৫ এর উপরে জ্বর। উনি রাত ভর জেগে পানি ঢাললেন। আমি জ্বরের মাঝে অবচেতনে তাকে প্রচুর বকাবাজী করলাম। দুদিন পর জ্বর কমলে আমি খুলনা যেতে চাইছিলাম। সে আমার হাত ধরে বসলেন, জানালেন পড়ালেখার দরকার নেই, চান্সেরও দরকার নেই, এই শরীর নিয়ে কখনোই খুলনা যেতে দেবেন না। আমার ঘাড়ের রগ মহা ত্যাড়া, তাই গোমড়া মুখে পরীক্ষা দিতে আসি। আমি যখন চট্টগ্রামে ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরু করি, তখন কিছুদিন পর চিঠি লেখা আর টাকা নেয়া বন্ধ করে দিলাম। বাবা মামাকে নিয়ে ছুটে আসলেন। ক্যাম্পাসে হৈ চৈ পড়ে গেলো আমার বাবা এসেছেন। উল্লেখ্য প্রথম দিকে গিয়েই যেকোনো কারনেই হোক ক্যাম্পাসের তিন হলে বেশ পরিচিত হয়ে উঠি। বাবা মামাকে নিয়ে আসার পর আমার সাথে, আমার রুম মেটের, ক্লাশ মেটের সাথে কথা বললেন, আমার কাছে মনে হলো আমাদের সবকিছুই বোধ হয় আগের পজিশনে ফিরে এসেছে। দীর্ঘ ৮ মাসের বরফ গললেও দূরত্ব থেকেই যায়। তবুও এখন মাঝে মাঝে মনে হয় তাকে একটা সরি বলি বা বলি একটা থ্যান্কস। কখনো বলা হয় নি, সে কখনো এসবের ধারও ধারেননি। এখনও মনে হয় সে এখনও এমন কিছু করছে যা আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব না। তার মতো আমি কখনোই হতে পারবো না।
সে আমার কাছে আরেক চে গুয়েভেরা, অথবা আমার ছোটকালের দেখা গুরু গুজরান খার আরেক রূপ।


আর এটাও বুঝি, হয়তো আমার বাবা অনেক কিছু আমাদের দিতে পারেন নি, অথবা পারেননি দিতে পৃথিবীর সমস্ট সুখ, অথবা যেরকমই হোক না কেন, সে আমার বাবা!


যদি বলা যায় দেশ বা বাবা- যেকোনো একজনকে বেছে নাও: তাহলে আমি বেশ সমস্যায় পড়বো। কারন দুটোই আমার কাছে সমান আর এটাও বিশ্বাস করি আল্লাহ কখনোই আমাকে এ পরিস্হিতিতে ফেলবেন না কখনোই না! কারন আমার কাছে দুটোই সমান প্রিয় যেমন প্রিয় আমার দুটো হাত, বা কিডনী, বা চোখ। হতে পারে আমার দেশ খুব গরীব, চারিদিকে অরাজকতা, নোংরা-ময়লায় ভর্তি, আপনি বলেন আমার দেশকে কখনো খারাপ বলাটা কতটা যুক্তিযুক্ত অথবা কখনো কি উচিত হবে তাকে একা ফেলে যাওয়া?

সকল সমস্যার বোগাদাদী-ইউনানী-কবিরাজী সমাধান:

সবকিছুরই সমাধান আছে, সবকিছুরই। হ্যাকারের ভাষায়: Nothing is impossible। আমিও এটা বলতে চাই। হ্যাকররা সমস্যার সমাধান করে প্রিসাইস প্রোবাবিলিস্টিক ক্যালকুলেশন আর এ্যালগোরিদমের মারপ্যাচে। কারন তাদের কাছে আছে হাজারো অপশন আর একটা ট্যাক্টফুল প্লান।
ধরা যেতে পারে একটা নিউক্লিয়ার রিএ্যাকশন এ্যাকসিডেন্টলি আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে গেলো, মডারেটর আর কুলার কাজ করছে না মোটেও। শুধু সময় গুনতে হচ্ছে হিরোশিমা-নাগাসাকির চাইতেও শক্তিশালী নিউক্লিয়ার ব্লাস্টের। কি করা যায়?

Trust me: science has the solution!

আমাদের দেশও সেরকম একটা বিস্ফোরন মুখে, শুধু শুধু কিছু প্রক্রিয়া বিস্ফোরনটাকে দীর্ঘায়িত করছে। কিন্তু সমাধান আছে, অবশ্যই আছে এবং এটা আমাদের কাছেই। আর তাই বিস্ফোরনটা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। হয়তোবা হতে পারে অথবা নাও হতে পারে- এতেই কাজ হবে।

তবে তার আগে আমাদের একটা সত্য কথা বুকে গেথে ফেলতে হবে," কোনো কিছুর মূল্য বা অন্য কিছু কোনোদিনও আগের অবস্হায় ফিরবে না, বরংচ প্রতিদিন উর্ধ্বগতির দ্রব্যমূল্যের ঘোড়া কখনোই টেনে ধরা যাবে না।"


এই ফলাফলটা মেনে এগুতে হবে। আমাদের মতো দেশে সবসময় ব্যায়টাকে কন্ট্রোল করতে শিখানো হয় আয়টাকে ধ্রবক ধরে-এটা হলো প্রথম ভুল। শুধরে নেই, ব্যায় যা আছে তাই থাকবে, তবে আয়ের বাড়াটাকে শক্তভাবে বাড়তে দিতে হবে আপন গতীতে বা ত্বরনায়িত। তাহলেই সমস্যার সমাধান। এটা সামস্টিক ভাবে হতে পারে অথবা হতে পারে ব্যাক্তিগত। তবে সামস্টিক ভাবে করাটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।বুঝিয়ে বলার দরকার বোধ হয়।

ধরা যাক আমার ইনকাম মাসে ৩০ টাকা ছিলো আর দশ বছর আগে আমার ব্যায় ছিলো মাসে ১০ টাকা। এখন আমার আয় বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা কিন্তু ব্যায় হচ্ছে ৩৩ টাকা। একবছর পর এই ব্যায় দাড়াবে ৩৫.৩ টাকা কিন্তু আয় হবে ৩৫.০৫ টাকা (যদি প্রোমোশন ফীবছর হয় আর পরিবারের সংখ্যাও না বাড়ে)। কিন্তু আমরা যদি সামস্টিক ভাবে এটাকে ৩৫+১০+৫=৫০ টাকায় নিয়ে আসি, আর চেস্টা করি এটাকে বাড়াবার ধান্ধায়, তাহলে ১০ বছর পর এটা আর সমস্যা থাকে না, বরংচ মানুষ তখন ছোট ছোট আশা আকাঙ্খাগুলো নিয়ে চিন্তা করতে খুব একটা কস্ট বোধ করবে না। তার মানে আমরা ব্যায়ের দিকে খেয়াল না করে আয়ের দিকে খেয়াল করি আর চেস্টা করি কিছু একটা করার (তবে ভাই, ডেসটিনি মোটেও না; শেয়ার বাজার, কনসালটেন্সী, প্রোফেশনাল ক্ষ্যাপ দেয়া ইত্যাদি)।
সরকার যেটা করতে পারে ডিসেন্ট্রালাইজ করার ব্যাপারটাকে তরান্বিত করা। তবে এটা সরকারের জন্য মোটেও সহজ নয়। একমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়া সবকিছুতেই দরকার স্হানীয় সরকার আর এডিপিতে হিউজ ইনভেস্টমেন্ট, যেটা আরো বড় প্রেসার। আমাদের এখানে অল্টারনেটিভ কিছু চিন্তা করতে হবে কিন্তু প্লান একই।

আরেকটা সমাধান আছে, অতি সস্তা শব্দের সমাধান- বাইরে চলে গিয়ে ফরেন কারেন্সিতে কিছু কামানো(এটা করতে গিয়ে যেনো নিমকহারাম না হয়ে যাই)।
তবে যাই করা হোউক না কেন, সবকিছুই আমাদেরকে একটা ভয়ন্কর দিকে ঠেলে দিচ্ছে অতিমাত্রায় পুজিবাদের পদধ্বনি। আমরা এটাকে ঠেকাতে পারবো না। এটা মনে রাখতে হবে পুজিবাদ কায়েম হবার ৭০-৮০ বছর পরেও আমেরিকায় হত্যা, দুর্নীতি, লুট, ধর্ষন ছিলো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এমনকি আমরা মালয়েশিয়ার দিকে তাকাই, প্রতিবছর ধর্ষনের পরিমান যেভাবে বাড়ছে সেটা সত্যিই আশন্কাজনক। সেখানকার স্বাস্হ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করেন কারন সে নাকি একজন পর্নস্টার ছিলেন। সেখানকরা প্রধানমন্ত্রী নাকি কিছুমাত্রার গে। টিআইবির মানের দিক থেকেও বাড়ছে কয়েকবছর, যদি তাদের টার্গেট শীর্ষ দশে আসার, কিন্তু কর্পোরেট করাপশনগুলোর লবিং খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠছে।ইন্ডিয়া আবার এসব দিক থেকে বেশ সুবিধা জনক পর্যায়ে, তবুই সেখানকার এক আদালতে রায় দাবার সময় বলেছে এসিড সন্ত্রাস রুখবার জন্য বাংলাদেশের আইন আর পরিস্হিতির কথা তুলনা করে ওগুলো এ্যাডোপ্ট সুপারিশ করেন।

এগুলো আমার আলোচনার উদ্দেশ্য নয়: এ্যান্টার্কটিকার বরফ গলবেই, অনাচার চলবেই এদেশে- বড্ড দেরী করে ফেলেছি আমরা। তবে হতাশ হলে চলবে না।

সমাধান পেতে হলে দেখতে হবে আমি কি করছি আর আমার ফোকাসটা কোনদিকে!

১) আমাকে বাচতে হলে আমার আয়ের উৎস বাড়াতে হবে, সেটা যেকোনো ভাবেই হোক। এটা প্রথমেই দরকার।

২) আমার পজিশন রক্ষিত হবার পর আমার নীচে যারা আছে তাদেরকে একটা টান দিতে হবে। আমরা অনেকেই একটা ভুল করছি, উপরে উঠার পর স্বার্থপর থুক্কু স্বার্থনিজের মতো সবকিছু ভুলে যাই যারা আমার নীচে আছে। ভুলটা করি এখানেই, আমার সাফল্যের স্ট্যাবিলিটি কখনোই এতে থাকে না, একসময় আমার হাতে গড়া আমার ক্যারিয়ারে ধ্বস নামবেই।আমি যদি আমার পজিশনটা ভালো জায়গায় বা অবস্হানে এনে তারপর আমার নীচের পজিশনে বা দিকে যারা আছে তাদেরকে টেনে উপরে উঠাই, তাহলে তখন আমার পজিশন বলে কিছু থাকবে না, হবে আমাদের পজিশন। আর যখন আমাদের পজিশন আসবে তখন টিম লীডার হিসেবে আমার নামই আগে আসবে উপরে উঠার বেলায়। উপরে উঠার হারটা স্ট্যাবল হবে। অমর্ত্যের কথাই ধরি, সে তার কর্মজীবনে প্রায় ৪০০০ ইন্ডিয়ানকে বাইরে নিয়ে গেছেন, রিসার্চ করিয়েছেন, কাজ দিয়েছেন। মনে হয় তার নোবেল পাবার ব্যাপারে বা লবিং এর ব্যাপারে এটাও একটা কনসার্ন!

৩) উপরের দুটো করার পর নিজেদের অবস্হানে থেকে সামস্টিক ভাবে নিজের দেশকে রিপ্রেজেন্ট করা। মাতব্বরী কথা বা ফালতু দোষারোপ না করে দেশের যেকোনো ইস্যু নিয়ে লবিং করা। আমাদের দেশ যতই জঘন্য হোক, যতই নোংরা হোক- এটা নিয়ে আফসোস বা মায়াকান্না না করে বরংচ সত্য জিনসটাকে রিপ্রেজেন্ট করা যেখানে আমাদের সফলতার সাথে সাথে পিছিয়ে থাকার কারনটাও জানানো।

কিছু বোকার দল একটা কথা ভুলে যায়-সমস্যা যত আছে কাজ করার সুযোগ তত আছে। আর যত কাজ করার সুযোগ আছে উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে কর্মসংস্হানের বিশাল সুযোগও বর্তমান। কিন্তু মাকাল বোকার দল এটা বুঝে না, আর তাই কোন জায়গার কোন বাহরাইন দু একজনের অপকর্মকে ফোকাস করে পুরো জাতিকে নিষিদ্ধ করে তখন আমার দেশেরই কিছু আবাল ভাই আমাদের দেশের সকল মানুষকে বাইরে বসে গাল মন্দ করে-যেটা আসলে উর্বর মস্তিস্কের পরিচায়ক। অথচ একজন দুজনকে দিয়ে পুরো জাতিকে বিচার করা আর তাদের সাথে গলা মেলানো কি রকম কাজ এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

আমার এই পোস্টের একটাই অনুরোধ কেউ নিজের দেশকে কখনো বকবেন না, তাহলে তো নিজের বাবা-মাকে অস্বীকার করারই নামান্তর!
৩০টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×