somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কারো উপর রাগ করে নিজের মোবাইল বন্ধ রাখলে ক্ষতি আল্টিমেটলি নিজের;)- একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা

১৪ ই জুন, ২০০৮ দুপুর ১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'ও'র উপরে আমি একটু রাগX( করেছি। ওর উপর রাগ প্রকাশ করতে চাইলে আমি সাধারণত যা করি, এবারও তা-ই করলাম। মোবাইল ফোনটা এই অপশনে সেট করলাম যাতে লিস্টেড কয়েকজন ছাড়া কেউ রিং করে আমাকে পাবে না। তারা পাবে- 'ইউজার বিজি'। আমার মোবাইলে কোন রিং হবে না। রিংটা আপনাআপনি কেটে যাবে। তবে মিসকলের লিস্ট-এ নম্বরটা থেকে যাবে। পরে আমি দেখতে পাব, কে কল করার চেষ্টা করেছিল। এই অপশনটা 'সনি এরিকসন'-এর সেট-এ আছে ( এটা মোবাইল সেট-এর বিজ্ঞাপন ভেবে নেবেন না), অন্য সেট-এ আছে কিনা জানা নেই।
তো, বরাবরের মতো বাবা-মা,রুমমেট,দুই ক্রাইম রিপোর্টার আর চীফ রিপোর্টারের নম্বরটা লিস্ট-এ রেখে ঐ অপশনটা চালু করলাম রাতে। রাতে 'ও' ট্রাই করলো কয়েকবার, আমি ওর নম্বর দেখি আর মনে মনে প্রতিশোধের আনন্দ ফুলকি দিয়ে ওঠে। ‌'সরি', 'মাপ চাই' জাতীয় মেসেজের পর্ব শেষ করে 'শয়তান, ফোন ধরতে না চাইলে বন্ধ করে রাখ' টাইপের মেসেজেও আমি বিচলিত হই না। ঐ অপশনে রেখেই রাতে ঘুমাই। পরদিনও একই অবস্থা। পরিচিত অন্য কারো নম্বর দেখতে পেলে তার নম্বরটাও সাময়িকভাবে লিস্ট-এ রেখে তাকে মিসকল দেই। অপরিচিত নম্বর হলে আর দেই না।
সকাল থেকে অপরিচিত আরেকটা নম্বর থেকে বার বার চেষ্টা করা হতে থাকে। তবে এইরকম 'অভিমান-পর্ব' সময়ে আমি অপরিচিত নম্বরে মিসকল ব্যাক করি না। যদি 'ও' হয় ফোনের অপরপ্রান্তে - আমার সাথে কথা বলার সুযোগ তো আমি 'ও'কে দেব না!
রাত এগারোটার দিকে ঐ অপরিচিত নম্বর থেকে মেসেজ আসে... 'মেসেজ পেলে ফোন কোরো। জরুরী। ম...' আঁৎকে উঠি। 'ম' চাচা! নতুন নম্বর নিয়েছেন বোধহয়। আমার কাছে আছে পুরনোটা। তিনি তো সাধারণত আমাকে ফোন করেন না। তার ফোন করা - তা-ও সারাদিন চেষ্টা করার মানে অবশ্যই জরুরী কিছু।
তক্ষুণি চাচাকে ফোন করি। 'কোথায় ছিলে সারাদিন?'
তাকে তো আর সত্য কথাটা বলতে পারি না। বলি, 'ফোনে একটু সমস্যা হয়েছে ।'
'কালকে আসতে পারবা একটু অফিসে?'
'জ্বি পারব। দুপুরে। ডিউটি শেষে।'
'আচ্ছা , আস।'
কি কারণে তা আর জিজ্ঞাসা করি না। অবশ্যই জরুরী কোন কারণে, না হলে উনি যেতে বলতেন না অফিসে।
.. দুপুরে ডিউটি শেষে যাই তার অফিসে। নতুন একটি পত্রিকার অফিস। আগেও একবার এসেছিলাম। তবে তার রুমে না। রিপোর্টিং সেকশনে, তাদের ক্রাইম রিপোর্টারের সাথে।
পারিবারিক কিছু আলাপচারিতার পর তিনি আসল কথায় এলেন, স্বাস্থ্যপাতার দায়িত্ব নিতে পারে, এরকম কাউকে খুঁজছেন তিনি। আমি দু-একজনের নাম বললাম। কিন্তু পত্রিকা যে টাকা দেবে তাতে তারা কাজ করবেন বলে মনে হয় না। চাচাও একমত হলেন। তবে ম্যানেজমেন্ট এজন্য ঐ টাকাই বরাদ্দ রেখেছে। তাই তিনিও পুরনো,অভিজ্ঞদের পাওয়ার আশা করছেন না। আগের দিন ডাঃ 'ক'- এর সাথেও কথা হয়েছে। তিনিও অত কমে কাজ করবেন না বলে জানিয়েছিলেন। ডাঃ 'ক' অন্য একটি নামকরা পত্রিকার সাথে যুক্ত আছেন দীর্ঘদিন ধরে।
আমি উৎফুল্ল হয়ে উঠি। এবার চাচা আসছেন আসল কথায়। আমার একটা সাধ পূরণ হতে যাচ্ছে। মেডিক্যাল রিপোর্টার হিসেবে জনকন্ঠে আমি এর চেয়ে বেশীই পাচ্ছি। কিন্তু মেডিক্যালে থাকার সময় তো প্রায় শেষ হয়ে আসছে। ইন্টার্ণীর মাঝামাঝি সময়। কোন পত্রিকার স্বাস্থ্য পাতার দায়িত্ব নেয়ার আশা রিপোর্টিং-এর শুরু থেকেই। পত্রিকার সাথেও থাকা হবে, আবার রিপোর্টিং-এর রেগুলার ঝামেলাটাও পোহাতে হবে না।
চাচা বললেন, 'এই জন্যই তোমাকে কাল সারাদিন ফোন করেছিলাম। যে আগে স্বাস্থ্য পাতা টেম্পরারী বেসিসে দেখতো, সে হঠাৎ করে চলে গেছে। তিনদিনের মধ্যে পরের সপ্তাহের পাতাটা বের করতে হবে।'
আমি বলতে চাইলাম, কোন ব্যাপার না, তিনদিনের মধ্যে আমি বের করতে পারব। কিন্তু তার আগেই তার পরের কথাটা আমার সকল আশার প্রদীপ নিভিয়ে দিল - ' ডাঃ 'ক' আজকে সকালে ফোন করে বলেছেন, ঐ বেতনেই তিনি করবেন। আজকে বিকেলে তার আসার কথা। যদি না করেন, বা না আসেন.. তাহলে আমি তোমাকে জানাবো। তাহলে দুদিনের মধ্যে কিন্তু পেস্টিং-এ দিতে হবে।'
সে-ই সুযোগ আর আসেনি। ডাঃ 'ক' শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য পাতা দেখছেন ঐ পত্রিকার। এখনও। আজও মনে হয়, আহা! হয়তো- ফোনটা খোলা থাকলে আমি ঐ দিনই চাচার সাথে দেখা করতে পারতাম ! পরদিন সকালে ডাঃ 'ক' -এর ঐ ফোন আসার আগেই আমার কাজ করার ব্যাপারটা চূড়ান্ত হয়ে যেত! শুধু একটা দিন ফোনটা ঐ অপশনে রাখার খেসারত। ....
....রিপোর্টিং ছেড়েছি অনেকদিন। কোন পত্রিকার স্বাস্থ্যপাতার দায়িত্ব আর নেয়া হয়নি। মাঝে নাম-ডাকহীন আরেক পত্রিকার স্বাস্থ্য পাতায় পুরো দায়িত্ব পাওয়ার আশ্বাসে কিছুদিন কাজ করি। তবে চার মাস পরই সে আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় ছেড়ে দিয়ে আসি- সে আরেক কাহিনী।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০০৮ রাত ৮:১৪
১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×