somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গতকাল @ বসুন্ধরা সিটি

১৪ ই জুন, ২০০৮ সকাল ১০:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল ১৩ জুন আমার জন্মদিন ছিল। এরপর আবার ছুটির দিন। কিছু আত্নীয়ও দুপুরে আসার কথা। ঘুম থেকে উঠেই আব্বা বাজারে গেল আর আম্মা আর আমার বৌ লীমা রান্নাঘরে। স্বাভাবিকভাবেই দিনটি বাসায় কাটানোর ইচ্ছা।

সকাল ১০ টায় লীমার অনুমতি নিয়ে (কত অনুগত!) চুপিচুপি গেলাম বসুন্ধরা সিটি। বসুন্ধরার সামনে বাস থেকে নেমে দেখলাম দুজন সিড়িতে বসে আছেন। একজন আনুমানিক ৩৫ বছর ধরে দেহটাকে বহন করা মিলটন অন্যজন কাচাপাকা চুল গোফের এক সুপুরুষ (পরে জেনেছি তিনি ক্যামেরাম্যান)। দুজনই পেপার পড়ছেন। আগেই বলে রাখি আমি শাশ্বতর জন্য করা এই মহান উদ্যোগে সামিল হতে যাইনি। গিয়েছিলাম যাদের সাথে এখানে প্রতিদিন এতটা সময় কাটাই তাদের দূর থেকে একটু দেখতে।

গিয়েই বুঝলাম এখনও লোকজন আসেনি। অন্তত যাদের কাছে টি শার্ট আর ব্যানার তারা আসেনি। আমি ঘুরতে লাগলাম বসুন্ধরা মার্কেটে আর দেখছিলাম মানুষের এক্সপ্রেশন। বসুন্ধরা সিটি এখন ওয়ারিদময়। ২০% ডিসকাউন্টের ইরানী দোকান ঘুরলাম। মেয়েদের অন্তর্বাসের একটি দোকানে দেখলাম একটি মেয়ে সব সামলাচ্ছে। আমি নিজেকে দুষ্টামী থেকে সংযত করলাম। আরেক মেয়েকে দেখলাম বোরকা পড়ে তার বয়ফ্রেন্ডের জন্য একগোছা গোলাপ নিয়ে ঢুকতে। তার বয়ফ্রেন্ড তাকে কিস করল। আমার চরিত্র বদ তবুও সদরঘাটে দাড়িয়ে চুমাচুমি করার কথা ভাবতে পারি না।

প্রায় ১১.৩০ টায় আরও কয়েকজন ব্লগার এল। তারা কেন জানি ছুটাছুটি করছিল। একবার মার্কেটের ভিতরে, একবার বাইরে। ২ জন মেয়েকে দেখে ভাবলাম তারা কোন ব্লগার। মৌসুম জানা মুনিয়া শাহানা সারিয়া - নাহ্ কাওর সাথে মিলে না (তাদের কাউকে চিনি না)। আমি অন্য অনেককেই চিনলাম না। মনে হয় ১২.৩০ টার দিকে তারা গেটে দাড়ালেন। এবার আমার পালা।

দুই গেটে দুই দল। একদিকে ঐ ২ মেয়েসহ ক্যামেরাম্যান, অন্যগেটে মিলটন ও অন্যরা। কেউ গেট দিয়ে ঢুকার সময় তারা বিনীতভাবে তাদের উদ্দেশ্য বলছেন। এমন সময় ঠিক সিনেমার নায়িকাদের মত ২ সখী নিয়ে এক সুন্দরী আসলেন। লোকে আমাকে কখনও কখনও আমার চরিত্র নিয়ে কত কি বলেছে। কিন্তু ঐ ৩ মেয়েকে দেখে মিলটন ২৮ দাত বের করে যে হাসি দিল তা দেখে মুখ ফিরিয়ে নিলাম। একটু পরেই তাকিয়ে দেখি মেয়েটাও নাই মিলটনও নাই।

আমি ক্যামেরাম্যানের গেট দিয়ে ঢুকলাম। কতজনকে কত বিনয়ের সাথে তিনি সাহায্যের কথা বলছেন। আর আমাকে পাত্তাই দিলেন না! আমি ভিতরে ঢুকে লিয়া মনির সাহায্যের বাক্সে রাগ হয়ে ২০ টাকা ফেললাম। আবার বের হয়ে ট্রাই করলাম অন্য গেটে। একই ঘটনা!! রেগে আবারও ঢুকলাম ক্যামেরাম্যানের গেট দিয়ে। এবার পাত্তা পেলাম। মজা করার জন্য শ্বাশতর ডিটেইল শুনলাম। তাকে বললাম আপনারা কি রাজশাহী থেকে এসেছেন? তিনি ঐ ২ মেয়েকে দেখিয়ে বললেন, ওরা এসেছে। তিনি আরও বললেন তারা সামহোয়ার ইন............। আমি বললাম - সামহোয়ার ইন, এইটা আবার কি? উনি বললেন যে এইটা একটা বাংলা ব্লগিং সাইট। আমি ভয়ে আর জিজ্ঞেস করি নাই - ব্লগিং কি। আমি একটা ৫০০/- টাকার নোট বের করলাম। তিনি বললেন পুরোটা রেখে দিব? সাহস কত!!! আমি কিছু রাখতে বলে তার নাম জানতে চাইলাম। তিনি লম্বা একটি নামের পর বললেন ডাকনাম রনজু। তার কোমল হাতে হাত মিলিয়ে 'গুড লাক' বলে চলে আসলাম। কিন্তু তিনি আমাকে তো টি-শার্ট দিলেন না। যে টাকা আমি দিলাম তাতে একটা টি-শার্ট পেতে পারি। কিন্তু কিছুই পেলাম না। বঙ্গবন্ধুর মত আমিও জানতে চাই - 'আমার টি-শার্ট কই'?

ব্লগার বন্ধুরা, আমি আপনাদের মত এত মহৎ হৃদয় না যে শ্বাশতর জন্য কিছু করব। আমি নিতান্তই আপনাদের একটু দেখতে গিয়েছিলাম। আপনাদের শুভেচ্ছা। স্যালুট করি আপনাদের মানবতা। আশা করি এই লেখার কারনে রনজু ভাই বা মিলটন ভাই রাগ করবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০০৮ দুপুর ১:০১
২৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×