somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রঙীন ঘুড়ির হরেক ভাবনা - ১

০৯ ই জুন, ২০০৮ ভোর ৫:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশ আরেকবার হাতঘড়ির দিকে তাকালো -
পৌনে বারটা বাজে।
নীলিমার ওখানে যাওয়ার কথা দশটার দিকে।
এখন ছুটতে হবে সেই মগবাজারে।

নিজের উপর ওর এমন রাগ লাগছে যে আর কি বলবে !
ছুটির দিনেও অফিসে এসে জনসেবামূলক কাজ নিয়ে দৌড় ঝাপ করে ঘাম ছুটাতে হলো।
একেই বলে খাল কেটে কুমির আনা। শুধু কুমির আনা পর্যন্ত ব্যাপারটা গড়ালেও চলতো। কিন্তু শেষে দেখা গেল নেমন্তন প্রাপ্ত ঐ কুমির কে খাইয়ে দাইয়ে আদর যত্ন করে তারপর রক্ষা। X(

আকাশদের অফিস এর প্রতিষ্ঠার পঁচিশ বছর উদযাপন করবে। এই নিয়ে ক’দিন ধরে অফিসে বেশ তুমুল আলাপ আলোচনা। আর সাধারন - অতি সাধারন পরিকল্পনার ছড়াছড়ি। আকাশ সচরাচর অফিসের কালেক্টিভ অ্যাফেয়ার গুলোতে অর্থবহ অবদান রাখে। তবে এই সময়, মানে নীলিমার সাথে ইয়ে হওয়ার পর ছুটির দিন গুলো মাটি করা রীতিমত শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য ওর কাছে।/:)

দুদিন আগের ঘটনা। কনফারেন্স রুমে একেক জনের বাহারী পরিকল্পনা শুনতে শুনতে আকাশ আলতো করেই তার কল্পনাটা প্রকাশ করেছিল। :-*
ওরে বাবা! আর যায় কোথায়? ওর বস খপ্‌ করে সেই কল্পনার লাটাই ধরে তার শুরুতে ‘পরি’ লাগিয়ে অনুষ্ঠানের যাবতীয় ‘পরিকল্পনা’র ভার আকাশের উপর ন্যস্ত করে তারপর যেন ক্ষেমা দিলেন।

তারপর কলিগরা সবাই এসে আকাশকে অভিনন্দন জানিয়ে গেল।
ভাবটা এমন যেন সে সদ্য অস্কার বিজয়ী একজন নন্দিত অভিনেতা।
সবাই সাধুবাদ জানিয়ে যাচ্ছে।
অস্কার না পাক, আকাশ কিন্তু সেই চরম পরিতাপের সময়ও মুখে তার মৃদু হাসির রেখা টেনে রেখেছিল। বোধকরি ঐ লাইনে গেলেও তার তেমন অসুবিধা হতো না। :P

সে চটপট তার আইডিয়াটা ড্রাফ্‌ট করে ফেললো।

আইটেম : ঘুড়ি
থীম: আমাদের সামনে বিশাল আকাশ। ব্যাপক তার বিস্তৃতি। আকাশ ছোয়ার সবচেয়ে সুলভ মাধ্যম হচ্ছে ঘুড়ি। আমাদের ফিরে দেখা আর আগামীর পথ চলার যোগসূত্রতা ঘটাবে এই মাধ্যমটি। এবারকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর প্লট হচ্ছে - ঘুড়ি আর ঘুড়ির বাক্স।
প্রয়োগ:
১। মেইন গেট। মেইন গেট এর বাম পাশে থাকবে একটা ভার্টিকাল মেম্বার। তার সাথে লাগোয়া অ্যানটিক টাইপের একটা বাক্স। বাক্সের আলতালায় একটা ঢাউশ সাইজের পুরানো আমলের তালা ঝুলছে। বাক্সের আধ খোলা ডালা গলিয়ে রং বেরং এর বিভিন্ন সাইজের ঘুড়ি গুলো বেরিয়ে আসবে। সব ঘুড়ি গুলো ঐ ভার্টিকাল মেম্বার বেয়ে বেয়ে উপরে উঠে আসছে যেন। তাদের সবার গায়ে নম্বর আঁকা। গননা শুরু হয়েছে ১ থেকে। এভাবে একে একে ২৪ পর্যন্ত... মোট চব্বিশটা ঘুড়ি ভার্টিকাল মেম্বার এর চূড়া অবধি পৌঁছে যাবে। তারপর বড় একটা ঘুড়ি যাতে লেখা থাকবে ২৫। এই ঘুড়িটি চিকন একটি রডের সাথে ঝালাই করতে হবে। ফলে ২৫ লেখা বড় ঘুড়িটি থেকে থেকে ভাসতে থাকবে বাতাসের সাথে সাথে সাথে।
মেইন ফোকাস হাইলাইটেড আর সাথে হাল্কা লাইভ ইফেক্ট।
প্রোগ্রাম বিকালে শুরু হয়ে রাতে গড়াবে তাই দুটো হ্যালোজেন লাইট অ্যাঙ্গেলে সেট করতে হবে যাতে পুরো কম্পোজিশনটা আলোকিত থাকে।

২। কেক এর ডিজাইন।কেক টাও হবে ঘুড়ির আদলে। দুইটা ঘুড়ি। বেইসে বড় একটা ঘুড়ি যার রং হবে একটু হাল্কা ফ্লেভারের ।আর উপরের ঘুড়িটা অনেক উজ্জ্বল রং এর হবে। তার মাঝে বড় করে লেখা থাকবে ২৫ আর সাথে অফিসের লোগো।

আকাশ ড্রাফট করা ডকুমেন্টটা ওর বসের মেইল এ চালান করে দিয়ে আজাদ মিয়াকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। প্রথমে কেক এর অর্ডার দিল সুমি’স হট কেক এ। তারপর প্রয়োজনীয় সব জিনিষ গুলো ঘুরে ঘুরে কিনে আজাদ মিয়ার হাতে অফিসে পাঠিয়ে রাতে ও বাড়ী ফিরলো।
দোকান থেকে সে নিজের জন্যও একটা রঙ্গীন ঘুড়ি কিনছিলো। বাড়িতে ঢুকবার সময় ঐ ঘুড়ি হাতে দেখে মা জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি রে হঠাৎ ঘুড়ি ?’
আকাশ মা’কে দুষ্টুমি মাখা এক চিলতে হাসি উপহার দিয়ে বললো - কাল অফিস শুদ্ধু সবাইকে নিয়ে ঘুড়ি উড়াবো মা।
তারপর ওদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নিজের পরিকল্পনার কথা এক নিশ্বাসে মা'কে বলে আকাশ নিজ রুমে চলে এলো।

প্রচন্ড ক্লান্ত ও আজকে।
জলদি করে গোসল - তারপর খাওয়া দাওয়া সেরেই ঘুম।
ওহ! তার আগে নীলিমার সাথে কথা বলতে হবে। ওর কি যেন একটা জরুরী কথা আছে।
খাওয়া সেরে নীলিমার সাথে কথা বলে জান গেল ম্যাডামের সাথে আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবারে সকাল দশটায় সাক্ষাত করতে হবে মগবাজার আড়ং এ।:D

যাইহোক, ক্লান্তির কারনেই হয়তো ঝটপট সব কাম কাজ শেষ করে বিছানায় শোয়ার প্রায় সাথে সাথেই সে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল।
B-)
(বাকিটা পরের পর্বে)

ছবি সূত্র: Click This Link flyingkite&f=t&FindID=0&P=1&PP=12&sortby=PD&cname=&SearchID=
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১০ রাত ১২:৪৬
১০টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×