somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রামের স্কুল

০৫ ই জুন, ২০০৮ দুপুর ২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রামের স্কুলে যে দিন প্রথম গিয়েছিলাম সেদিন অবাক হয়ে ছিলাম, কারণ আগে ঢাকার স্কুলে পড়েছি স্কুল ভবন ছিল বহুতল বিশিষ্ট পরিপাটি, কিন্তু এখানে স্কুল ভবনের অবস্থা খুব করুন, ক্লাস রুম তিনটা, সব গুলো রুমের দরজা ভাঙ্গা, এলাকার সব গরু ছাগল আর কুকুর বিড়াল এখানে রাত কাটায় আর ছাত্রদের প্রতি দিন সকালে এসে গরু ছাগলের মলমুত্র পরিস্কার করে এখানে ক্লাস করতে হয়।
বাবা চাকরি নিয়ে গ্রামে চলে আসায় এখানে ভর্তি হতে এসেছি। প্রথম দিন স্কুল দেখে বাসায় এসে বলেছিলাম যে আমি ওখানে ভর্তি হবনা। অবশ্য ঐ স্কুলে পরে তিন বছর পড়েছি। অভিজ্ঞতাটাও ছিল চমৎকার।
স্কুলে শিক্ষক ছিল চার জন, পুরো স্কুল কন্ট্রোল করতে তাদের কষ্ট করতে হতো তাই তারা প্রায়ই ক্লাস নিত না।
স্কুলে কোন পিয়ন ছিল না তাই কোন ঘন্টা বাজতো না। স্যাররা যখন ইচ্ছে তখন ক্লাস নিত , কখনো আধঘন্টা কখনো আবার দুই ঘন্টা পর্যন্ত ক্লাস নিত।কোন ক্লাস শেষ হলেই সবাই মিলে মাঠে বের হয়ে আসতো আর শরু করতো খেলা।প্রতি ক্লাস পর পর টিফিনের মজা আর কত রকম খেলা ,দারিয়াবান্ধা ,বরফ পানি সহ আর ও কত রকমের খেলা ছেলেদের সব চেয়ে প্রিয় খেলা ছিল গাদম খেলা( কোর্ট কেটে খেলা পা দিয়ে ছুয়ে দিতে হয় সঠিক নামটা জানিনা) । এসব কিছু আমার কাছে ছিল নতুন। আগে ঢাকায় থেকেছি তাই প্রথম দিকে স্কুলের সবার সাথে মিশতে আমার বেশ কষ্ট হত,ভাষাটা একটা বড় সমস্যা হত।ওদের অনেক কথা আমি বুঝতে পারতাম না তাই আমাকে নিয়ে বেশ হাসি ঠাট্টা হত। পরে যখন ওদের সাথে মিশতে শুরু করলাম তখন সময়টা বেশ মজায় কাটিয়েছি।
স্কুলের সামনে বিক্রি করা আটআনা দামের আইসক্রিম কিংবা পলিপ্যাকে ভরে বিক্রি করা রঙ্গিন পানির ফানটাও তখন অমৃত মনে হত।
গ্রামের স্কুলের স্যাররা এমনিতে মারতে পছন্দ করে তাই মারার জন্য বিশেষ ভাবে বানানো বেত থেকে অনেক বারই পিঠ বাঁচাতে পারিনি।
যতনা পড়ার জন্য মার খেতাম তার থেকে বেশ খেতাম দুষ্টামি করার জন্য।
স্কুলের পাশের ক্ষেত থেকে শসা চুড়ি করার জন্য মার খেয়েছি, আবার মার খেয়েছি ক্লাসে মারমারি করার জন্য। আজ যার সাথ মারামারি করছি কাল আবার তার সাথে গলাগলি ধরে থেকেছি । গ্রামের স্কুলে পড়ে একটা জিনিস বুঝেছি গ্রামের ছেলেরা তাদের সহপাঠিকে যতটা আপন করে নিতে পারে শহরের ছেলেরা ততটা পারেনা।
টিফিনের সময় সবাই মিলে একসাথে মুড়ি খাওয়া, কারও কোথাও কেটে গেলে দৌড়ে গিয়ে দুর্বাঘাস চিবিয়ে এনে দেওয়াআর ক্লাস শেষে সবাই মিলে ক্ষেতের আইল দিয়ে দৌড়ে বাড়ি ফেরা ,এই স্মৃতিগুলো মনে পড়লে কষ্ট লাগে। মনে হয় পরে আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এত মজা করতে পারিনি।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০০৮ দুপুর ২:১৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×