somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফুল তা খেতে কেমন

০৩ রা জুন, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
গেছিলাম খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে! কিন্তু প্রকৃতিও যে আমাদের নিয়ে খেলা করবে তা বুঝতে পারিনি!! গিয়ে দেখি বৃষ্টি হচ্ছে! আর একই সাথে প্রখর রোদ!!! রিতিমত পানিতে সেদ্ধ করে মারার প্লান করেছে মনে হয় প্রকৃতি আমাদের। সেদ্ধতো হয়েছিই এর সাথে চাপাচাপির যে অবস্থা। তাতে আমি নিজেই মনে হয় আলু ভর্তা হয়ে গেছি। এখন খালি ভাতে মেখে খেয়ে ফেলাটাই বাকি!

এইসবই ভাবছিলাম বুয়েটের মধ্যে হাটতে হাটতে। ঘড়িতে তখন রাত ১০:৩০। হঠাৎ নেট এর কানেকশনটা গেছে চলে। সেই সুযোগে আমার এই একাকি নৈশ বিহার! তবে প্রকৃতি মনে হয় আমার এই রাগ সহ্য করল না। তাই মান ভাঙ্গাতেই কিনা, অপরুপ একটা দৃশ্য তৈরি করল আমার সামনে। হঠাৎ দেখি পায়ের নিচে অনেক কাঠ গোলাপ! পুর পথটাই কাঠ গোলাপে ঢাকা!! পাশে মাজা সমান উচু সিল্‌ভিয়া মাথায় লাল ফুলের মঞ্জরী। পাশের জবা গাছটাকেও অপরুপ লাগছে সিকিওরিটি লাইটে! কিন্তু মাথায় ‘ভর্তা খাওয়া’ টাইপের একটা কথা রয়ে গেছে! তাই আমার অসম্পুর্ন একটা এক্সপেরিমেন্ট এর কথা মনে পড়ে গেল। সময়ও হাতে আছে প্রচুর। এক্সপেরিমেন্টটা কম্পলিট করে ফেললাম!! সেই এক্স পেরিমেন্ট এর রেজাল্টই লিখব এখন...

সিল্‌ভিয়াঃ-এই ফুলে একধরনে মধু আছে। তিতকুটে টাইপের মিষ্টী স্বাদ! তবে ফুলের পাপড়ী খেতে একটু কর্কশ। জিভে ঘসা লাগে! পাপড়ি স্বাদ হীন। গন্ধও নেই।

কাঠ গোলাপঃ-
এই ফুলের গন্ধ অতুলনীয়! পাপড়ি রসাল এবং পুরু। খাওয়ার সময় তেমন কোন স্বাদ পাওয়া যায় না। তবে গিলে ফেলার পর মনে হয় একটা মাছি চিবিয়ে গিলেফেলেছি! ...ইয়াক!! (কানে কানে বলে রাখি! মাছি চিবিয়ে খেতে কেমন, তা আমার জানা আছে!)

জবাঃ- এই ফুলটা খেতে ভাল। যারা আমার মত ঢেঁড়স পছন্দ করেন। তাদের নিঃসন্দেহে ভাল লাগবে। গোড়ার দিকটা অনেকটা কাঁচা ঢেঁড়স এর মত!

কৃষ্ণ চূড়াঃ- এই ফুলের জন্য বুয়েটের মেইন ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে হল শেরেবাংলা হলের দিকে। সেই পথটা রীতিমত লাল হয়ে আছে ঝরা কৃষ্ণ চুড়ায়!! সিকিউরিটি লাইটে লাল রংটা কেমন যেন কালচে দেখাছে। রক্তের মত! এই ফুলের স্বাদের কথা বলতে গেলে এর গঠনের কথা বলতে হবে। পাপড়ী পাঁচটা। এদের মধ্যে একজন রাজকন্যা বাকি চার জন সহচরী! আমি একটাকে রাজকন্যা বলি কারন এইটাই সবচেয়ে সুন্দরী(!!!)। আপনারাও কাছ থেকে দেখলে বুঝতে পারবেন। আমি জিরফের মত লম্বা জানতাম। তবে রীতিমত কৃষ্ণ চুড়ার ছিড়ে ফেলব, তা জানলাম তখন!! সহচরীদের স্বাদ ভালই। লাল শাকের মত। অনেকটা কাঁচা হলুদের গন্ধ আছে তাতে! তবে রাজকন্যা দেখতে ভাল হলে কি হবে, খেতে একে বারে...ইয়াক!! কাঁচা হলুদের সাথে বিটকেলে একটা গন্ধ আছে!!!

রজনীগন্ধাঃ- বিস্বাদ ফুলের কথা যদি বলতেই হয় তাহলে সবার সেরা হচ্ছে রজনী গন্ধা!! এই একমাত্র ফুলই আমি চিবানোর পর গিলে ফেলতে পারিনি!!! এত সুন্দর গন্ধ! কিন্তু খেতে এত খারাপ! আইরনিক্যাল ব্যাপার।

গোলাপঃ- তবে সবচেয়ে ভাল মনে হয় গোলাপ। পাপড়ীর স্বাদ নেই তেমন! লজ্জার কথা, তাও বলি। আমার এক বন্ধু বলে প্রিয়ার ঠোঁট নাকি গোলাপে পাপড়ীর মত!!! তাই এক্সট্রা আগ্রহ নিয়েই খেলাম এর পাপড়ী গুল। একটু পানসে মিষ্টি মত! তবে এত সুন্দর সেন্ট!! মনে হয় গোলাপ জল। স্বাদের দিকথেকে এটাই সবার সেরা!!! ইম্প্রেসিভ একটা ডেমো পাওয়া গেল আরকি!!!

রেইন্ট্রিঃ-
এর ফুল গুল খেতে ভালই!! শন পাপড়ীর মত! তবে মিষ্টি না!

রাধা চূড়াঃ- ফেরার পথে আহসানুল্লা হলের সামনে, ঐযে যেখানে ছাত্রী হলের রাস্তাটা এসে মিশেছে। সেখানে দেখা হল রাধা চুড়ার সাথে। এই ফুলে আসল নাম জানিনা। আমি এটাকে বলি ‘রাধা চুড়া’। কৃষ্ণ চূড়ার মতই অনেক বড় গাছ। ফুল গুলো একে বারে হলুদ। কৃষ্ণ চুড়ার মত লালচে কমলা না। তবে এই গাছে কাকদের কলোনী। শয়ে শয়ে কাঁক। তাই এর ফুল খাব কিনা ভাবছিলাম। কিন্তু আজ বৃষ্টি হয়েছেতো! পরিষ্কার হয়ে গেছে মনে হয়। তাই খেয়ে ফেললাম একটা!! একে বারেই স্বাদ হীন। পাপড়ী গুলা শক্ত টিস্যু পেপারের মত!! না আসলে লাউ এর বীজের বীজ পত্র গুলা আলাদা করএ মাঝখানে একটা পাপড়ীর মত পাতা থাকে। এটা মনে হয় ঐটার মতই স্বাদ!! স্বাদ হীন।

শাপলাঃ- এর ফুল গুলা খেতে পানসে। একটা সেন্ট আছে। তবে রেধে খাওয়া যেতে পারে।

অবশ্য পেট ভরে যদি ফুল খেতে চান। তাহেলে আমাদের সবার প্রিয় ফুল কপিই ভরসা!!!

বিদায়।

লেখাটি পাওয়া গেছে

লিংক
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১২ দুপুর ১:৫১
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×