somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরমাত্মায় অন্তর্লীন কবি আহমদ ময়েজ মুখোমুখি আবু মকসুদ

৩১ শে মে, ২০০৮ রাত ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরমাত্মায় অন্তর্লীন কবি আহমদ ময়েজ
মুখোমুখি আবু মকসুদ
নব্বই দশক থেকে বাংলা কবিতার ভূগোলে অনেক বিবর্তন ঘটেছে। এই দশকের কবিতায় প্রাকৃত-অপ্রাকৃত-অতিপ্রাকৃত দৃশ্যপটের সংযুক্তি হলেও বদলে গেছে ব্যক্তি মানুষের জীবনের অভিব্যক্তি। কবিতায় দেখা দিয়েছে ভাবপ্রবণতা, উদ্বুদ্ধকরণ, মানসিক বেদনার উপস্থাপন, জীবনের অপূর্ণতাকে পূর্ণতা দেয়ার ঐকান্তিক অভিলাস। বিষয়বৈচিত্রে পিপাসার্ত মনে আকাঙ্খা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে নব্বই দশকের কবিতা। কবি আহমদ ময়েজ এই বদলের একজন সহযাত্রী।
আহমদ ময়েজ কি কেবল নব্বই দশকের কবি? তার শুরু দেখতে পাই আশির দশকে। নব্বই থেকে তার স্ফুরণ ঘটেছে, তিনি হয়ে ওঠেছেন আরো সচেতন। আমাদের পরিচিত সাহিত্যিক পরিমণ্ডল জুড়ে তার অবস্থান Ñ স্বকীয়তায়-নিজস্বতায়। এই কবির শিকড় প্রোথিত বয়েসী-বটবৃক্ষে, পিতামহ মরমি মজিরের মরমিয়া সঙ্গীতের সার্বজনীনতা, মাধুর্যতার ধারাবাহিকতায় তিনি পরিস্ফুট। কবি হিসেবে তিনি একজন সংবেদনশীল বংশীবাদক, নির্জনতা তাঁর কবিতার দৃশ্যমান অনুসঙ্গ, তাঁর কবিতা আমাদের ভেঙে ফেলে, নতুন করে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে, পাখির পালকে তুলে দেন অপূর্ব এক সুর। আবার কখনও বার বার নোঙর ফেলার বেদনায় তিনি আহত।
এই কবির শিল্পের রস সঞ্চারণের অনেক ধরণের মাধ্যম দেখা গেলেও মরমিয়া ঐতিহ্য ধারণ করে তিনি নবতরে শিল্পের ভেতর জীবনকে দেখার চেষ্টা করেন। আমরা তা আস্বাদন করে তৃপ্ত। মানুষের চরমক্লান্তিÍ কিংবা স্বস্থির নিঃশ্বাস, অন্তরাত্মার আকাঙ্খা বা পরমাত্মার প্রতি অন্তর্লীন আগ্রহকে কবিতা শিল্পে রূপান্তরিত করে তিনি সুন্দরের পরাকাষ্টা তৈরি করেন। আমরা জানি কবিতা নির্বাসিত সুন্দর, যার পরিপূর্ণ কায়া কারো পক্ষেই ধরা সম্ভব নয়। আহমদ ময়েজ সুন্দরের খোঁজে বস্তুবিশ্বে নান্দনিকতার সেতু বানান। আমরা এই বানানো সেতুর নাম দিতে পারি কবিতা।
বাসভূমি’র নিয়মিত লেখক লন্ডন প্রবাসী কবি সম্পাদক আবু মকসুদ এর মুখোমুখি বসে তিনি নিজের কবিতা সম্পর্কে বলেছেন, গল্পও এসেছে। স্বার্থবাদী রাজনীতির প্রতি ক্ষোভ, একরৈখিক-অসহিষ্ণু-উদ্ধতপনার বিপরীতে প্রেমময় ভাবনা নিয়ে খোলাখোলি কথা বলেছেন। স্বাক্ষাৎকারটি ‘শব্দপাঠ’ এর সৌজন্যে প্রকাশিত হলো।
আপনার কবিতার কৌশলগত দিক বলুন। কোন-ভাবের ভেতর দিয়ে আপনি অগ্রসর হন কিংবা যে দর্শন আপনাকে স্পর্শ করেছে Ñ বাউল জগৎ, তা কি প্রকৃত-অর্থে বস্তুতগত জীবন ধারণ করে?
বস্তুবাদীরা বুদ্ধি করে কবিতা লেখেন Ñ তারা এর কৌশলগত নাম দিয়েছেন বুদ্ধিবৃত্তিক কবিতা। বাউলরা বস্তুবাদী নন। তাদের ভাব চাই, বস্তুও চাই। ভাব দিয়েই বস্তুকে ধরার চেষ্টা করেন। আর কবিতায় কেবলমাত্র দর্শন থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কবিতা দর্শনের জন্য লেখা হয় না। দর্শন ফলাতে হলে দর্শনের ভাষা ভিনড়ব, একটি সুশৃঙ্খল যুক্তি-চিন্তার ভেতর দিয়ে অগ্রসর হতে হয়। আজকাল প্রায়ই বলতে শুনি, কবিতায় দর্শন থাকতে হবে, না হলে কবিতা হবে না। এসব ফালতু উদ্দ্যতপনা। দর্শন কিসে নেই? কবিতাচর্চায় সুনির্দিষ্ট বিষয় বলে কিছু নেই। দর্শন আসতেই পারে, তেমনি চিত্রকল্প, উপমা-উৎপ্রেক্ষা Ñ এসব কবিতার অলঙ্কার হিসেবেই গণ্য করা হবে। কেবল এসব থাকলেও কবিতা বলা যাবে না। কবিতার প্রধান বিষয় এবং শুদ্ধতা হলো ছন্দ ও ভাষা। এ দুয়ের কমতি হলে কবিতাকে দুর্বল করে ফেলে। এমনকি বক্তব্যও এক্ষেত্রে গৌন। সব কিছুর সমন্বয় ঘটলে সার্থক কবিতা বলেই উলে-খিত হবে।
আপনার মেঘের পোয়াতি মেয়ে নিয়ে কথা বলতে চাই ...
এটা একটা মুহূর্তমাত্র। জোড়াসন্তানের পিতৃত্ব পাবার পর কিছুদিন এই ঘোরের ভেতর ছিলাম। ঐ সময় এক বৃষ্টিভেজা রাতে বার্মিংহাম শহরে রাত্রি যাপন করি। মোষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। কবি সৈয়দ মবনুর বাসায়। লেপ দিয়ে মাথামুড়ে শুয়ে আছি। হামাগুড়ি দিয়ে বৃষ্টির শব্দ তুষকের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে। সেই ধ্বনি আমাকে পোয়াতি করে তুলে। আর মাথার ভেতর মরমি মজিরের একটি লাইন বার বার ঘুরপাক খাচ্ছে Ñ ‘মৃদঙ্গে উঠিছে ধ্বনি, শুন
তার পদধ্বনি রে, সেই ধ্বনিরই কম্পন আমার হিয়াতে শুনিলাম, আমার মন মন রে কেনে বা তারে চিনিলাম?’ সেই সঙ্গে আমি জোড়া-জোড়া পা, লক্ষকোটি পায়ের আওয়াজ শুনতে পাই। ভাবুন একে তো ধ্বনি, তার উপরে জেনে ফেলার যন্ত্রণা আমাকে আকুল করে তোলে। এক ইন্দ্রজালকে ছিনড়ব করে অন্যএক রক্তমাংস-চিত্রের ভেতর ঢুকে পড়ি Ñ তাহার বিচরণভূমি অরণ্য নগর/ কেউ তাকে বধ করো না, রঙিয়ো চোখ/ সে আমার গহন মেঘদূত।
আপনার কবিতা ‘বৃক্ষের গুরু’ Ñ সেখানেও ফকিরী চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন ...
হ্যা, অনেকটা তাই। হাজারো কোলাহলের ভেতর নিজের মধ্যে একা হয়ে যাওয়া এ রকম একটি মুহূর্তে জানতে পারি, এ পথ আমার নয়/ অচেনা। আমি তো স্বার্থমুখী মানুষ। নগরের চৌকস কলাকৌশল জেনে গেছে যে জীবন, তার দ্বারা স্বার্থের উর্ধ্বে উঠা বড় কঠিন। অন্য অর্থে বলা যায়, আধুনিক মানুষ বলতেই স্বার্থবাদী। এই স্বার্থ ভিনড়ব অর্থে ভিনড়ব দ্যুৎনায় প্রবাহিত। হিসাব-নিকাস কষে যে জীবন মধুচন্দ্রিমা ভোগ করে, সেখানে সিক্তআবেগ অনুপস্থিত থাকে। একটা উদাহরণ দেই। আধুনিক নাগরিক-মানুষ কানড়বাটাকেও লুকিয়ে রাখে, এমনকি নিজের নিকটতম মানুষের মৃত্যুর সময়ও তারা হিসাব করে কাঁদে, সেটাই আধুনিক ভদ্রতা। একজন প্রকৃত আবেগঘন মানুষ সেটা পারে না। সত্য সে লুকাতে পারে না Ñ আপনা থেকে গড়িয়ে পড়ে। এ জন্যই আধুনিক জীবনকে তুচ্ছ করে বৃক্ষের গুরু কবিতায় পিতৃপরিচয় এসেছে এভাবেÑ ‘নমশুদ্র আমি তোমার সন্তান/ হে পিতা/ একবার শুধু কও, নদী কেন এতো বাঁক নেয়?’ এবং সেটা বাউল কিংবা ফকিরী-চিন্তা হলেও আমার গ্রহণ করতে আপত্তি নেই। এর পিছনে আরও কিছু ঘটনা প্রবাহ রয়েছে। আমার পিতা ছোট বেলা আমাকে একটি শাস্তি দিয়েছিলেন। আমাদের গ্রামের একজন শিক্ষক ছিলেন যার পূর্বপুরুষ জমিদারদের রাইয়ত (প্রজা) ছিলেন। গ্রাম্যভাষায় যাদের গোলাম বলা হয়। ছোট বেলা একদিন সকালে আরবি পড়া থেকে বাড়ি ফিরে দেখি আমাদের চেপ্টা-বারান্দায় একটি হাতাওয়ালা চেয়ারে শুভ্র দাড়ি-গোফ, কাধঝাকানো চুলওয়ালা একজন লোক বসা, পরনে লাল শাল্লু। আর আব্বা তার সঙ্গে গভীরভাবে কথা বলছেন। আমি পাশকাটিয়ে ঘরে ঢুকতেই আমাকে আব্বা ডেকে এনে বললেন Ñ মুরুব্বীকে সালাম করতে হয়, উনাকে পায়ে ধরে সালাম করো। দীর্ঘদিন পর আমাকে এর ব্যাখ্যা খুঁজতে হয়েছিল। এই শাল্লু পড়া ভদ্রলোক মনের দুঃখে শিক্ষকতার পেশা ছেড়ে ব্রতচারী জীবন গ্রহণ করেছিলেন। তিনি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন বটে, কিন্তু পূর্বপুরুষ যেহেতু জমিদারদের রাইয়ত ছিলেন সেহেতু কোনো সৈয়দ সাহেবের বাড়ি (উলে-খ্য, অধমের গ্রামের বাড়ি জগনড়বাথপুর থানার সৈয়দপুর গ্রামে) তিনি বসার জন্য চেয়ার বা ভদ্রগোচের সম্মানটুকু পেতেন না। অথচ যে বাড়িতে বেড়াতে গেলেন সেই বাড়িতে হয়তো তার ছাত্রছাত্রীও আছে। শিক্ষকের এহেন অপমান একজন ছোট্ট ছাত্রের সামনে অত্যন্ত অসহনীয় বেদনার বিষয়। যে ছাত্র স্কুলে গেলে তাকে সালাম করছে অথচ তারই বাড়ি তিনি বংশনাক্রমিক গরিবীজীবনের অপরাধে সামান্যতম বসার আসনটুকু পাচ্ছেন না, সেই ছাত্রকে তিনি কী শিক্ষা দেবেন। এই বেদনায় ভদ্রলোক ব্রতচারী জীবন গ্রহণ করেছিলেন। আমার বৃক্ষের গুরু কবিতাটি সেই অভিজ্ঞতার আলোকে সনিড়ববেশিত হয়েছে।
‘একদা জেনেছি এও, প্রাণের বিনাশ নেই/ দীর্ঘ ঘুমের শেষে ফিরে আসে অনন্ত ধারায়’ Ñ আপনি পরজনমে বিশ্বাসী।
বিশ্বাস শব্দটা অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ও বহুমাত্রিক। কোনো মানুষই সবকিছুতে বিশ্বাস রাখে না। আবার কোনো মানুষই সব কিছুতে অবিশ্বাসও রাখে না। অর্থাৎ কেউই পূর্ণ নাস্তিক নয় বা আস্তিকও নয়। যে যেটা বিশ্বাস করে সেই বিষয়েই সে আস্তিক। তবে বিশ্বাস শব্দ আমার কাছে এক প্রত্যয়, দৃঢ়তার নাম Ñ ঋজু শক্ত করে দাঁড়াবার নাম। মানুষের কাছে এটি থাকতে হয়, নাহলে মেরুদণ্ডহীন স্থূল-মানবে পরিণত হতে হয়। অনেকে আবার উদ্দ্যতপনাকে ঋজুতা ভেবে গুরুজনের সঙ্গে বেয়াদবী করেন। আল-াহ-বিশ্বাসে চমৎকার ব্যাখ্যা করেছেন বাউল শাহ আবদুল করিম। কবিবন্ধু এটিএম কায়সারের মাধ্যমে শোনা। তার ব্যাখ্যা হলোÑ ‘শক্তিরবিনাশ নেই Ñ আল-াহরও বিনাশ নেই, শক্তি ছাড়া সবকিছু অচল। শক্তিসর্বত্র বিরাজমান। শক্তিছাড়া এ দেহও অচল ... ।’ আমার শেষ কথা, বিশ্বাসের জন্য এতো যুক্তির প্রয়োজন লাগে না। না হলে একে আত্মবিশ্বাস বলা যেতো না। বিশ্বাস ঘনভালোবাসার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
.. তাহলে বলতে পারি আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী।
না, ঈশ্বরে আমার বিশ্বাস নেই। ঈশ্বরকে আমি চিনি না, তার সাথে আমার পরিচয় ঘটেনি। বরং প্রভুর প্রেমময় জগৎ আমাকে স্পর্শ করে।
প্রভু-ঈশ্বর কি এক নয়?
না, চিন্তাগত-ভাবগত দিক থেকে অনেক দূরত্বে অবস্থান করে। আপনি লক্ষ্য করবেন কোনো কোনো লেখক সচেতনভাবে ঈশ্বর শব্দ ব্যবহার করে থাকেন। প্রগতিশীলরা একটু বেশী। রাশান বইগুলোর অনুবাদে দেখতাম স্রষ্টার স্থলে ঈশ্বর শব্দ ব্যবহার করা হতো। এখনও এই ধারার লেখকরা ইংরেজি/আরবী/ফারসি সাহিত্যের অনুবাদে খোদা/আল-াহ/প্রভুর স্থলে ঈশ্বর শব্দ ব্যবহার করেন Ñ তারা বোধহয় ঈশ্বরকে প্রগতিশীল মনে করেন। আমার কাছে ঈশ্বর পুরুষবাদী-কর্কষ শব্দরূপে প্রতিয়মান। তার আয়েশের জন্য, খায়েশের জন্য একজন ঈশ্বরীও লাগে। তাছাড়া এধরণের শব্দের অর্থ একটি অবকাঠামো তৈরি করে দেয়। স্রষ্টা চিন্তার ক্ষেত্রে আমি এই অবকাঠামোগত ঈশ্বরের ভেতর তিষ্টাতে পারি না। বরং নিরাকার শব্দের ভেতর নিজেকে স্থাপন করা যায় Ñ লেখক হিসেবে আমার জন্য ঐ জায়গাটুকু নিরাপদ।
প্রান্তের রেখা ধরে ঘোড়াটি মিলিয়ে যায় ...
আর ব্যাখ্যা চাইবেন না।
কেন?
আসলে কবিতার ব্যাখ্যা হয় না। জোর করে বলতে গেলে এর স্বাদ বিনষ্ট হয়।
গল্পের কথা বলি, কবিতা লিখছেন আবার গল্পও, তবে আপনার গল্পে গল্প নেই ...
কী নেই আর কী আছে সেটা আমার ভাবার বিষয় নয়। কবিতায় যা পারি না তা গল্পে বলার চেষ্টা করি। গল্পে যেটা বলতে চাই না কবিতায় সেটা আড়াল করি। মূলত আমার গল্প-কবিতার গল্প এরকমই। শরৎচন্দ্রকে কে বলেছিলÑ আপনি এতো কাহিনী লিখেন ...। শরৎবাবু উত্তরে বলেছিলেনÑ আমি কোনো কাহিনী লিখিনি, যা অঙ্কণ করেছি তা কেবলই চরিত্র।
বিলেতের প্রসঙ্গে আসি। বাঙালি যেখানে যায় সেখানে তার সাহিত্য-সংস্কৃতি-পত্রিকা-প্রকাশনা নিয়ে হৈচৈ করে। এর ভালোমন্দে যাচ্ছি না। আপনি একটি কাগজের সাহিত্য সম্পাদক। সেই আলোকে এখানকার লেখালেখি সম্পর্কে আপনার মতামত চাই।
আমার মতামত দিয়ে লেখার মান বাড়বে না। আসলে আমরা অনেকেই একটা ঘোরের ভেতর দিয়ে বাঙালিপনায় মেতে আছি। ঘোর কেটে গেলে মানুষটা একেবারে শূন্য হয়ে যায়। কাউকে শূন্য করে দেয়ার অধিকার আমার নেই। তারপর কিছু রাজনীতিও আছে, এর সঙ্গে কিছু লেখালেখিও আছে। দুয়ের চাপে ব্যক্তিমানুষটির অবস্থা একেবারে গোবেচারা। এই সবকিছু নিয়ে আমরা বাঙালি Ñ এভাবে বিষয়টি মানতে পারি না। যে ধীমান ব্যক্তিটির কথা ভাবি, এসব চর্চার ভেতর তো এর জন্ম হয় না। তাহলে আমরা কোন্ প্রজন্মে এসে মাথা উঁচিয়ে বলবো Ñ আমি বিশ্বমায়ের সন্তান?
সমালোচক মনজুরুল আজিম পলাশ লিখেছেন, আপনি পড়েন কম ভাবেন বেশি। অমরনাথ চক্রবর্তী আপনার কবিতার সুর নিয়ে কথা বলেছেন। সংক্ষিপ্ত লেখায় তিনি সেই সুরকে, সেই গীতকে সনাক্ত করেছেন ভিনড়ব জগতের বাসিন্দারূপে। একটি আপনার লেখা বিষয়ে গভীর অনুসন্ধিৎসু। অন্যটি কল্পনা প্রসুত হলেও এর সঙ্গে আপনার মতামত জানা প্রয়োজন।
প্রথমে বলি মনজুরুল আজিম পলাশ ঠিকই বলেছেন। আমি বেশি পড়তে পারি না। ভালো একটা লেখা পড়তে গিয়ে এতো আপ্লুত হই যে ভাবনায় পড়ে যাই। এর ভেতর নিজেকে আবিষ্কার করার চেষ্টা করি। অমরনাথ
চক্রবর্তী সঙ্গীত বুঝেন ভালো। অবশ্য তাঁর মূল বিষয় দর্শন। অত্যন্ত প্রাজ্ঞপুরুষ এই ভদ্রলোক এই বৃদ্ধ বয়সে তারুণ্যের সুর খোঁজতে চেষ্টা করেছেন মাত্র। আমার কবিতার ভেতরের একটি বিষয় নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। আমি নিজেও এই সুরকে এতো করে দেখার চেষ্টা করিনি। অথচ বিষয়টি ঘটে গেছে। এছাড়াও ‘বিমূর্ত’ বিষয়ের ভেতরও তিনি বস্তুনিষ্ঠ বিষয় খোঁজে নিতে পেরেছেন নিজের যোগ্যতা বলে। তাঁর ‘শুদ্ধ-সুদূরের কবি আহমদ ময়েজ’ মন্তব্য আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।
কবিতার আঙ্গিক নিয়ে কোনো ভাবনা নেই কেন?
ভাবনা কিছুটা আছে। আঙ্গিক ভাঙা কঠিন বলেই এ পথে আমাদের উৎসাহ কম। বরং ভাষা-শৈলী দিয়ে চমক লাগাবার কসরৎ করছি বেশি।
তাহলে কী আমরা কিছুই করছি না, নিরন্তর কেবল কাগজই ভরে যাচ্ছি?
চেষ্টা তো আছে। নতুন কিছু হচ্ছে না। সবচে বেশি করছি আস্ফালন। নিজেই নিজের কাজকে বলছি ‘বিরল’ ঘটনা। এগুলোর মাধ্যমে অহঙ্কার, দাম্ভিকতাকে কেবল প্রশ্রয়ই দেয়া হচ্ছে। এসব প্রকৃত চিন্তাধারার লেখকের তেমন ক্ষতি করতে পারে না। কিছু সময় ব্যয় হয় মাত্র। জোর করে কবিতা চাপিয়ে দেয়ার বিষয় নয়। পাণ্ডিত্য-দাম্ভিকতা দিয়ে নন্দনচর্চায় শাসন করা যায় না। এর জন্য বিশাল ব্যক্তিত্ব ও মন দরকার। আলিঙ্গন করতে হবে। না হলে মানুষে মানুষে ‘সিনাসাক’ হবে কী করে।
আপনার কবিতা বাউল আশ্রিত?
এটা কী দোষের কিছু? তাছাড়া রবীন্দ্রনাথ থেকে জয়ঘোস্বামী কেউ কি বাউল-মরমি-ফকিরী জগৎকে অস্বীকার করতে পেরেছেন? অনাদিকাল থেকে মানুষের ভেতর বাউল প্রকাশ-অপ্রকাশ হয়ে বিরাজিত। আপনি নিজেকে একজন কোনো না কোনোভাবে বাউল। যে কাজটি আপনি নিঃস্বার্থভাবে সম্পাদিত করলেন সেই অংশটি বাউল এবং এটি প্রকাশিত। যে কাজটি নিঃস্বার্থরূপে নিরুপন ভাবনার মধ্যে রয়ে গেছে অথচ যেকোনো কার্যকারণে কাজটি সম্পাদিত হচ্ছে না সেই ভাবনার অংশটুকুও বাউল এবং অপ্রকাশিত।
আপনি এতো রাজনীতি বিমুখ কেন? আপনার কবিতায় রাজনীতি নেই।
রাজনীতি আমার কবিতায় আছে, তবে স্থূলভাবে নেই। কারণ রাজনৈতিক শ্লোগান রাজপথের জন্যে Ñ কবিতার জন্যে নয়। তবে কবিতায় যখন মানুষের কথা আসে এবং রাজনীত যখন মানুষের কল্যাণচিন্তা থেকে উৎসারিত হয় তখন কবি এবং রাজনীতিক একই সমতলে এসে দাঁড়ান। আমার রাজনীতি দলকেন্দ্রীক নয়। প্রত্যেকটি মানুষই সচেতন-অবচেতন মনে রাজনীতির অধীন। এই গ্রহের একজন সদস্য হিসেবে আমাকেও রাজনীতি সচেতনতার ভেতর থাকতে হয়। বাংলাদেশের মতো একটি সদ্য স্বাধীনদেশের মানুষ হিসেবে রাজনীতি আরও বেশি স্পর্শ করে। অথবা দেশের যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে একজন সচেতন কবির নীরবতা অসঙ্গতীপূর্ণ। যেনতেন ইস্যু ধরে লম্পঝম্প আমার ধাতে নেই। প্রসঙ্গত বলা যায়, সম্প্রতি আপনারা আমাকে ‘একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদে’র বিচারের জন্য বিবৃতিতে অংশ নিতে অনুরোধ করেছিলেন। বিষয়টি ছিল বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে নালিশজাতীয় চাপ। আমার বুঝে আসে না, হঠাৎ করে এই সরকারের কাছে নালিশ করার গুরুত্বটা কোথায়? এই সরকারের আলাদা বৈশিষ্ট্যই বা কী? এতোকাল কি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় ছিল না? তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করার কথা ভাবলেন না কেন? উদ্দেশ্য ছাড়া মানুষ হঠাৎ করে দেশপ্রেমিক হয় না। দেশপ্রেমিক মানুষ একটি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে বেড়ে ওঠে। প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক আমিও চাই এবং এ নিয়ে যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনীতি করেন, কেবল ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে হাজারও মানুষের দেশপ্রেমকে প্রশড়ববিদ্ধ করেন, তাদের সেই রাজনৈতিক ব্যবসাটা বন্ধ হওয়া দরকার। কিন্তু বিচারটা করবে কে? বিষয় হলো পক্ষ-বিপক্ষের রাজনীতি সবসময়ই যার যার স্বপক্ষের হাত ধরাধরি করে অগ্রসর হয়। বর্তমান সরকার কোন পক্ষের? তারা যাদের আশির্বাদপুষ্ট, যারা বিশ্বব্যাংক তথা আমেরিকার স্বাথর্ সংশি-ষ্টতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণ করেন তারা কী করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর করবেন? তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ ও
যুদ্ধাপরাধীদের স্বার্থ তো একই যায়গায় প্রোথিত। তারাও তো তথাকথিত রাজনীতিবিদদের মতো এই বিষয়টি নিয়ে বানিজ্যে মেতেছেন Ñ মানুষের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়ার মাধ্যমে। তারা যে স্বচ্ছ নন তা দিব্যি চোখে দেখা যাচ্ছে। অপরাধীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো কোনো নীতিনৈতিকতার ভেতর পড়ে না। এতোদিন ভেবেছিলাম প্রকৃত রাজনৈতিক অপরাধে অপরাধীদের ধরে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করবেন। এখন বুঝতে পারছি তা কেবল বাহবাহ কুড়ানোর জন্য। নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী অপরাধীর উপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। আবার সরকারের মত ও পথের সঙ্গে একমত হয়ে আত্মসমর্পণ করলে, তাকে সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এই খেলা আমরা বুঝি। আর তাদের (এই সরকারের) দেশীয় শক্তিকোথায়? তথাকথিত সুশীল সমাজ, বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতিবিদ-সাংবাদিক যারা বামেও আছেন ডানেও আছেন আবার ধর্মেও আছেন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তো বন্দুকওয়ালারা আছেনই। তারা কী করছেন? তারা দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক নেতাদের ঠেকানোর নামে পুরোদেশকে রাজনীতিশূন্যতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন, রাষ্ট্রের ভেতর সৎ-অসৎ ব্যবসায়ীর হিসাব কষতে গিয়ে অর্থনীতির প্রধান শক্তিকে অকেজো করে দিচ্ছেন। অতএব রাজনীতি সচেতনতার কারণেই আমি এদের কাছে নালিশ বা আবেদন জানাতে পারি না। তারা নিজেরাই স্বচ্ছ নন। আপনার নিশ্চয় মনে আছে বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদের উপর যখন ঘৃণিত হামলা চালানো হলো সেদিন তাৎক্ষণিক তাকে নিয়ে সাহিত্য সাময়িকী সংখ্যাটি করতে গিয়ে সম্পাদকীয় নোটে উলে-খ করেছিলাম, ‘অন্ধকারের বিষধর সাপ রক্তের হুলিখেলা বড় বেশি ভালোবাসে, ভালোবাসুক Ñ তবু অসুন্দরের কাছে কোনো নালিশ নয় আজ। চাই না দয়া-দাক্ষিণ্য। বাংলাদেশের অসুস্থ-ভঙ্গুর রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে ভাষাবিজ্ঞানী, কবি হুমায়ুন আজাদের জন্য কোনো নালিশ বা কোনো ধরণের প্রার্থনা জানাতে চাই না। আমাদের আছে কেবল ঘৃণা Ñ অহংবোধ আর দম্ভের বিরুদ্ধে ঘৃণা। যদি জেগে উঠে কোনো দিন এই দেশ, এই কাল, আর কোনোদিন যদি আসে কোনো নতুন পাখি Ñ নতুন ভৈরবী নিয়ে, তার জন্য তোলা রইলো বিচারের আরজিপত্র।’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে বদরুদ্দিন ওমরের একটি কথা স্মরণযোগ্য। তিনি বলেছেনÑ যুদ্ধাপরাধী মীমাংসিত একটি বিষয়। বর্তমান সময়ে যারা যুদ্ধাপরাধী কে বা কারা তা নিয়ে হৈ চৈ করছেন তারা দৃষ্টিকে অন্যতর দিকে নিবদ্ধ করতে প্রয়াসী।
আমাদের বুঝতে হবেÑ ভালো-মন্দ যাই হোক স্বচ্ছ রাজনীতি দিয়েই অসৎ রাজনীতিকে ঠেকাতে হবে। এর বিকল্প কখনই বন্দুকের নল হতে পারে না।
আমার কবিতায় রাজনীতি সচেতনতা আছে। তবে সেটা কোন রাজনীতি, রাষ্ট্রের জন্য না দলের জন্য। একজন প্রকৃত কবিকে যদিও রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হয় তথাপি একটি কল্যাণকর রাষ্ট্রের আকাঙ্খা, মনস্তাত্ত্বিকভাবে মানুষের ভেতরকার ক্রোধ নিবারণ এবং সহনশীল মানসিকতার চাষ করতে প্রয়াসী হওয়া একজন সত্যিকার কবির কাজ। এ পথে অগ্রসর হতে হয় ধীর লয়ে।
আপনি প্রায়ই বলেন লেখ্যচিন্তার সঙ্গে ব্যক্তিচরিত্রের মিল থাকতে হবে। আমরা যা বলি বা ভাবি তা কি লালন করি?
করা উচিৎ। নিদেনপক্ষে চেষ্টা থাকতে হবে। এটা হলো নুন্যতম মনুষ্যচরিত্র। দ্বৈতচরিত্র দু’মুখো সাপের মতো। তার বর্জ্যরে দুর্গন্ধ নিয়ে সে চিন্তিত নয়। এধরণের লোক সবসময় কলহ নিয়েই ব্যস্ত বিধায় তাদের মধ্যে আত্মজিজ্ঞাসা নেই।
আপনার সম্পাদিত ভূমিজ-এ উলে-খ করেছিলেন Ñ চিন্তার ঐক্য চাই। বিশেষ করে পৃথিবীর বিভিনড়ব জায়গায় বাঙালি লেখদের চিন্তার সমন্বয়ের প্রতি জোর দিয়েছেন। প্রশড়ব হচ্ছে চিন্তার ঐক্য কখনও কি সম্ভব?
কেন নয়, রাষ্ট্রের অবকাঠামো কি চিন্তার ঐক্য নয়? আমাদের বিভিনড়ব উৎসব-পর্ব-ঈদ এগুলো কি? এই যে আপনারা ত্রয়ীসম্পাদক মিলে শব্দপাঠ বের করেন এটাতো আপনাদের চিন্তার সমন্বয়। এই বিষয়কেই আমি আরও বৃহৎ-অর্থে বলার চেষ্টা করেছিলাম। মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে যেনো আমরা একই গ্রন্থিতে দাঁড়াতে পারি।
ছোটকাগজে ‘পাণ্ডুলিপি’ বের করার ধারণা খুব বেশি দিনের নয়। এখন তো যত্রতত্র। পাণ্ডুলিপি হিসেবে ‘বিমূর্ত চরণে রাখি কালের ক্ষমা’ অনেক দেরিতে বের হয়েছে। গ্রন্থাকারে কবে দেখতে পাবো?
‘বিমূর্ত চরণে রাখি কালের ক্ষমা’ পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা হয়েছে। তারও অনেক মূর্ত-বিমূর্ত কারণও রয়েছে। সেদিকে আর নাই বা গেলাম। এটা আগামী দিনের জন্য সঞ্চিত-অভিজ্ঞতা হিসেবে তোলা থাক। গ্রন্থের পূর্বে পাণ্ডুলিপি প্রকাশের অর্থই হলো পাঠককে আলোচনার সুযোগ করে দেয়া। বিচক্ষক সমালোচকই পারেন একজন লেখকের অপূর্ণতাকে ধরিয়ে দিতে। ‘বিমূর্ত চরণে রাখি কালের ক্ষমা’পাণ্ডুলিপির উপর আলোচনা হয়েছে/হচ্ছে। এর জন্যই অপেক্ষা করা ...। গ্রন্থের জন্য আমার কোনো তাড়া নেই।
এখানে, এই প্রবাসে বাঙালিদের মধ্যে আপনার প্রিয় কবি কে?
সিনেমার নায়ক/নায়িকাদের যেভাবে প্রশড়ব করা হয়, আপনার প্রিয় অভিনেতা/অভিনেত্রী কে অনেকটা সেরকম হয়ে গেল না? বলতে পারতেন কার কার কবিতা ভাবায় বেশি। না আমার কোনো প্রিয় কবি নেই। প্রিয় কবি হতে হলে তার সবকটা কবিতাই ভালো লাগতে হবে। দেখা গেছে আপনার কবিতা যখন পড়ি তখন অনেক অংশই ভালো লাগে না। কিন্তু এর একটি শব্দ কিংবা অপূর্ণ একটি বাক্য হঠাৎ ঝলসে উঠেছে Ñ ঐ জায়গাটাই আমার ভালোলাগার জায়গা। ঐ ভালোলাগাকে আমি নিজের সঙ্গে সারাদিন বিভিনড়বভাবে ব্যাখ্যা করি। আবার যে কবিতাটির চিন্তাভাবনা একটি জায়গায় এসে সীমাবদ্ধ হয়ে যায় তার সঙ্গে আমি বসবাস করতে পারি না।
আহমদ ময়েজ-এর ‘বিমূর্ত চরণে রাখি কালের ক্ষমা’র পাণ্ডুলিপি থেকে নির্বাচিত কবিতা
দূরগামী
উঠানভর্তি সূতানলি
কৌটা কৌটা নীল বিষ
আকণ্ঠ পান শেষে
গুড়ারোদ চাষ করে চৈতি খরা।
সরাও পথের কাঁটা
বহুদূর দেখিবারে চাই।
তোমাদের দিন শেষ-ক্ষীণ এক শব্দ শুনি
ভেঙে পড়ে নদী আইল
মাতম মাতম করে উপচে পড়ে
সোমত্ত বয়স।
আঁধার জড়িয়ে রাখে রাতের কপাট
আন্ধা প্রকোষ্ঠ চিরে স্বপড়বরা জেগে ওঠে
পুষ্পিত আত্মার চারুবাক।
তখন স্পর্শ শেষে নিমগড়ব শরীর
উগরে দেয় জলের দাপট।
কারো কারো ধ্যান ভাঙে Ñ
ধাঙর হাওয়ার ঘ্রাণে;
আমি তো ঘুমের ভেতর জেগে রই
আগত দিনের টানে।
বৃক্ষের গুরু
মনভৃঙ্গার চরণ ধুয়ে কী স্বাদ পেয়েছো তুমি
এ পথ আমার নয়
অচেনা।
অগাধ ভজন-স্তুতি কোন পাত্র ধরিবে বলো?
কখনও বৃন্দাবন কখনও রসুল
দুই হস্ত ধরেছে শরাব Ñ দৃষ্টির অতল সাগর।
চাণক্য-পথিক যে-জন সেও জানে, বাতিঘর কোনখানে
কার স্পর্শে বলো অযামিনী পেয়েছিল মানবজীবন?
সারল্য কিনেছে ঝুড়ি, ফলহীন বৃক্ষের খোলস।
নমশূদ্র আমি তোমার সন্তান
হে পিতা
একবার শুধু কও, নদী কেন এতো বাঁক নেয়?
সৃষ্টির অহং যার সে নয় বন্ধু আমার
প্রার্থনা শুধু জানিবার।
যে বালি নিজেই একা শুয়ে রয়, উদাস করে শূন্য উদ্যান
কেন আর শঙ্কা দিয়ে করো তার ভীতির সঞ্চার।
জগৎ পিতা সে যদি তোমারই হয়
তবে আর হাস্য করে কার লাগি তাম্বুল যোগাও!
দেহজ বন্দর ঘুরে পঞ্চঘোর খুলে দাও
স্তনের চাবি সে তো নাভিমূল-
বলেছিল বৃক্ষের গুরু।
পথের অসুখ ...
আমি তো আজন্ম সই পথে পথে ঘুরি। বাঁধি গান
সড়বাত হই। ফেরার আশায় দেহজ নৌকা বানাই
শব্দফেরি শেষ হলে বিনম্র ধ্যানে অঙ্গ মাড়াই
এই কাঙাল শরীরে আজও তাম্র মাটির টান
ধ্যানী মানুষের রক্তস্রোত উতাল করিয়া তোলে
ধ্বনির গীতল হাওয়ায় উতরোল নিঃশ্বাস
মনোজ কপাট ভাঙে আচানক, মায়ার বিশ্বাস
দু’হাত বাঁধে। এলাচি-বাদাম দোর খুলে Ñ
সহসা হেসে ওঠে। এ-কোন সর্বনাশী চিরে বুক
এ-কম্পন থেমে গেলে চোখের ভাষায় শব্দ ফোটে
কী মায়া লুকিয়ে রাখো এই পথে? পথের অসুখ
যারে পায়, তার কি কপালে আর মায়াঘর জোটে?
নিম গাছ ঠিকানা জানি, ঐখানে ছিল এক ঘর
ও মন কীসের টানে ভাসো দূর চাড়াল নগর।
মেঘের পোয়াতি মেয়ে
মেঘের পোয়াতি মেয়ে বর্ষা
তাহার বিচরণভূমি অরণ্যনগর
কেউ তাকে বধ করো না, রাঙিয়ো না চোখ
সে আমার গহন, মেঘদূত
মেঘের বার্তাবাহক সকল কোমের।
এতো কানড়বা বুকে নিয়ে ভরসায় হাঁটে ...
ধুলার পৃথিবী পায় চরণ-নূপুর
সিড়বগ্ধ শরীরে খেলে বীজগান
ভরাট মাটির গন্ধ
সরিষাদানার গন্ধ
মেঘবতী রচনা করে অসংখ্য পায়ের আওয়াজ।
জোড়া-জোড়া পা
লক্ষ কোটি পা
মন্ত্রমুগ্ধ করে বেড়ে ওঠে
আমাদের ঘরে।
মেঘের শরীরে আজ জ্যোৎসড়বা-প্লাবন
শৈত্যপ্রবাহ-দিনে বর্ষা ঘুমায় চাঁদ ও তারার দেশে।
ক্রুদ্ধ বাতাস
কেউ কি জানে কোথায় হারিয়েছে এই পথ
পথের অন্ধকারে অগিড়ববিষ রুয়ে দিলে
মৃত্যুর নীরবতা পান করে পাখির নিঃশ্বাস
পিপাসায় ক্ষীণ আজ অরণ্য-প্রাচীন।
একদা জেনেছি খুব Ñ
প্রান্তের রেখা ধরে ঘোড়াটি মিলিয়ে যাবে
সে কি ছিল কালের বাহন, নিয়ে যাবে বাড়ির পথে?
তারও যে পিপাসা বাড়ে, পিপাসায় আয়ু মরে
মিথ্যার চাদরে ঢাকে ধুলার কেশর।
একদা জেনেছি খুব, রক্তই ফিরিয়ে দেবে রক্তের দাম
রক্ত কি মানুষের ঠিকানা দেবে, এই বলে
কেউ কেউ সনড়ব্যাসী হয়।
আমাকে সনড়ব্যাস করো না হে কালের বাহন
ক্রোধের আগুনে আমি মরিতে চাহি না;
মানুষ বিনাশী বড়
বিনাশের মাল্য কিনে সাম্রাজ্য বাড়ায়
জল ও মৃত্তিকায় চির ধরে
রাতের অন্ধকারে উড়ে যায় বালিহাঁস,
ঠিকানার খোঁজে ...
একদা জেনেছি এও, প্রাণের বিনাশ নেই
দীর্ঘ ঘুমের শেষে ফিরে আসে অনন্ত ধারায়
আগুনের খোলে আজ এ কেমন স্বপড়ব ঘুমায়
অগিড়ববিষ জড়িয়ে রাখে রাতের ডানায়
হায় রে সময় Ñ
ডানাভরা আগুন নিয়ে মৃত্যুর ঠিকানা খোঁজে ক্রুদ্ধ বাতাস ...
ক্ষয়িষ্ণু সময়
তিনতক্তা চিনিলা মরম, আমি নাই
আমার গলই খায় মরুর ছত্রাক
নিরাগ মানুষ আমি ভজন শোনাই
অবেলায় ফুটে রই রাতের মন্দ্রাক।
গৈরিক আকাশ নামে কলবের পারে
এখানে প্রাখর্য নেই : রুহের তাগিদ
ফতুয়া খুলেছি কবে সেতারের তারে
আনকোরা হাত ছোঁয় হইতে আবিদ।
ঘুণপোকা বাসা বাধে মগজের কোষে
মগজ খুবলে খায় ক্ষয়িষ্ণু সময়
বিবাদে রক্ত ঝরায় মানুষ ও মোষে
ভাসানে তুলিয়া দেই খোদার প্রণয়।
যতো দূর সরে যাই পেরিয়ে আঁধার
অগাধ চৈতন্য আনে গার্হস্থ্যবিদ্যার।
সনাতন
ঢেউয়ে ঢেউয়ে ঢেউ বাড়ে, ঢেউয়ের কাহিনী তুমি লিখে রাখো
গাঙ-ঢেউ-বিল-ঢেউ পাহাড় শিথান করে সমুদ্র দেখো
গাঙচিল তোমারে দেখে, তখন গল্প শুরু :
এমত প্রারম্ভকালে শেষটুকু লিখে রাখো ...
Ñ কী করে জানলে এসব
জলের ভাসানে ভাসে বেহুলার ভেলা
তাহার দরদ লিখে প্রকৃতি-মানুষ
উজানে সরোদ নেই, গীত নেই ধুলার হাওয়া
এ নিয়ে রচিবে কেবা সাতভাই চম্পা আর পারুল-কাহন
ধান-দুব্বা তুলে রাখে জননী আমার
টঙঘরে তোলা রয় লাঙল পিতার
এসব উজানে নেই, খড়কুটা মাথায় বাঁধে উজানি ছাওয়াল
কচি-মুখ ম্লান দেখে তারে কিছু দয়া করে দিনের মজুর
রোজ আনে রোজ খাটে
তাই নিয়ে সওদা করে উজানের ঘাটে।
ভাটির জলের টানে পঞ্চ-কথা লেখা রয়;
মানুষ তোবায় এসব তরুমনে Ñ তরুমন গোপনে বাড়ে
এসব কি রচিবার কথা, বপিত রয়েছে যাহা আদিম পুরাণে?
কেউ কেউ বিছরাইয়া মরে, চোখে গেঁথে নতুন ভাষা
মিথ্যা মাদুলি কি চিনিতে পারে রুহের কম্পন?
কী করে নাগ পোষে কামরূপ-নারী?
ভেদ ও রাগিনী যার ইন্দ্রিয় শে-াক
এসব মরমকথা নিয়ত বাড়ে আগুনকোণা গ্রামে
এসব রূপকথা পাচার হয় বহু দূর উজানে উজানে
ভাটি আর ভাটি নেই, দিন দিন উজানই বাড়ে
সনাতন মাঝি : বাস্তুভিটা ছেড়ে আরও ভাটিতে নামে।
কমলা-কমলা ভোরের মানুষ
দৈব-দয়ায় ভালোবেসেছিলে, দিয়েছিলে দূরপাহাড়ের গল্প
ঢালুপথে অন্ধকার ঘাসটুকু আমার Ñ
বছরের তিনশ পয়ষট্টি ভোর তোমাকে দিলাম
আমি তো ভাঙ খেয়েছি Ñ এ নিয়ে আর ভান করো না
কিংবা তুকমার বিচির মতো ভিজিয়ো না ফণিমনসার মন;
কাঁটাভরা অঙ্গ নিয়ে জীবন গেলো
তবু তারে ভালোবাসে কমলা-কমলা ভোরের মানুষ
আস্তিক মনুষ্যপ্রদীপ
এ কোন ভাষায় তুমি পূনর্বার আরক্ত করো
এ কোন মধ্যরাতে ঘুঘুর ডাক?
পাখিদের ভাষা আমি বুঝি, তুলে আনি নয়নকুঞ্জে
চৈতন্যের কোলাহলে একটি ধ্বনির গুম্বিরা তোমার নগড়বতাকে ঢেকে দিতে পারে
এক ব্রতচারীর ওম-তাপে একদিন পৃথিবী নামক গ্রহটির অস্তিত্ব অনুভব করি
তখন ধ্বনির গুঞ্জনে
চারদিক আলোকিত করে
আমার শৈশবের উঠোনজুড়ে ফুটেছিল অসংখ্য মনুষ্যপ্রদীপ
এভাবে মানুষের গুল্মের ভেতর পার হয় অখণ্ড সময়
একদিন অনুভব করি আমার বামপাশের একটি হাড় খসে গিয়ে
নাই হয়ে যায়
হাওয়ার জন্য আদমের এ কেমন রোদন, বিষণড়ব নিনাদ
আমি জানি না।
শুধু জানি চন্দ্রধূলা বুকে নিয়ে নিমাই সনড়ব্যাস
নাভির চাক্কি কুণ্ডলে হাত রেখে অনুভব করে
আস্তিক মনুষ্যপ্রদীপ
আস্তিক মনুষ্যপ্রদীপ
আস্তিক মনুষ্যপ্রদীপ।
সোহিনীর কণ্ঠে শোনা ভয়হীন প্রার্থনাগীত
জলদ গম্ভীর এক ফেরারি আত্মা প্রশড়ববাণে বিদ্ধ হলে
পারুবনে উড়ে আসে ভাঁজহীন তুলসিপত্র
আমরা পড়তে পারি না, আমাদের চোখ খুবলে খায়
দখিনের খবিস হাওয়া।
পথের দাগ মুছে দিতে উদ্যত নগড়ব সময়।
সহসা খুলে যাও উজ্জ্বল দিন
বোয়ামে তুলে রাখি মুঠিভরা চাঁদনী আলো;
কাল ফেরি হবে বাদুড়পাড়ায়।
দায়হীন সঙ্গ আর চাই না Ñ এই বলে অন্ধকার দিয়েছি ঠেলে,
জাফপাথরের ক্লেদ কী করে দেবে সখি
আমাদের সূর্যের দিন?
পেলব স্তুতি শোনে ক্লান্ত পথিক
এবে বলি, দায়হীন শব্দের ফেনা
তারচে অনেক ভালো, সোহিনীর কণ্ঠে শোনা
ভয়হীন প্রার্থনাগীত।
নগর ও সন্তান
শীতের চা গরম ভোর, একটি ফ্যাকাসে নোট ধরিয়ে দিয়ে বললে Ñ
শেক্সপিয়ারের এই পুরাণ নগরীতে আমরা ক-দিনের অতিথিমাত্র
এই বেহায়া নগরী ছেড়ে আমরা একদিন চলে যাবো।
অথচ ঋভু এই নগরটিকে ভালোবাসে
তাশমিত এর আদলে একটি পিরামিড বানাবার স্বপড়ব দেখে
ওরা আমাদেরই সন্তান
এই জনপথ আমাদেরও স্বপড়ব বোনে।
স্মৃতির বয়ান
কোলাহল থেমে গেলে পাতার শব্দ শুনি
পায়ে পায়ে শুকনো পাতা হেঁটে যায়
এমন চাতাল সময় কার লাগি চরণ বোনো
ধ্রুপদী মেঘের প্রার্থনা শেষে
কোনো এক রমণীয় হাত
বাতাসেই লিখে রাখে স্মৃতির বয়ান
স্মৃতিরা বিন্যাস হয় মাঠময়
ফুটে রয় ঘাসফুল
নাকফুল দিইনি বলে
কালের সাক্ষী থাকো বনের ঘুঘু
আজীবন রোদন ঝরুক বনজ গৃহে
চন্দ্রলেখা দিন ও বিরতির কোলাহল
ক.
আহারে লক্ষ্মী মায়া, কেঁদো না
বিধৌত বনভূমি : চিকন হয়ে নেমে আসে পায়রার ধ্বনি।
করকমল শান্ত করো
ছারপোকাদের কলহে আজ তক্তপোষ ভারাক্রান্ত।
যে-জল উপচে পড়ে নিজেই গড়ায়
সে-জল তোমার নয়, পথের কণ্টক।
ভৈরবরাগিনী শেষে Ñ
চন্দ্রলেখা-দিন পাঠ করে কামিনীর বন
তোমার চরণযুগল সড়বাত হোক শিশিরদানায়।
যে-জন দিবস জানে
তার কি ভয় ধরে, বিদগ্ধ সময়?
দুর্জন কেবলই হল্লা করে : আফিমের টান।
চপল হাওয়ার ঘ্রাণে সুখ চায় Ñ ক্লান্ত বাটামুখ
স্পর্শ হয়নি আজও, ধর্মের সুখ।
খ.
পাণ্ডুলিপি গুটিয়ে রয় মেঘভার বক্ষ নিয়ে
অবিন্যস্ত অক্ষরগুলো পারদদানার সাথে মিশে যায়
পলকহীন দৃষ্টি আজ বলে ওঠে Ñ
ওগো মেঘ আর কাঁদায়ো না তারে।
ক্লেদ ও ঘৃণার ভার
দু-পায়ে মাড়িয়ে হাঁটা Ñ জিরোবার ঠাঁই নেই কোনো
এই ব্রহ্মসভায় তুমি চিরদিন একা
মধ্যপথে যাত্রাবিরতির কোলাহল
ঝরাপালকের মতো শুয়ে থাক।
বুকের ভেতর নড়ে ওঠে চৈতী পারু
স্রোতের চিহ্নটুকু মনে রেখো
এ পথ তুলে দেবে জারি-মানুষের গান Ñ
যে পায়ে লেগে রয় পাতার সঙ্গীত।
সাগিড়বক পুরুষ বলে আল্পথ সমানে ভাঙ্গি।
চৈতী কি দহনের কাল?
পারুদের টুপাভাত গন্ধ ছড়ায়
পুটিমাছ ধরব বলে আমরাও গেয়েছিলাম
জলের সঙ্গীত
দলবাঁধা সখিগান মিইয়ে যায়
পুবের বেতগোটা বনে
কে ভেঙেছিল দোয়েলের বাসা
আমি নই।
আমাদের রোদনটুকু মিইয়ে যায়
দোয়েল-মায়ের সকরুণ ডাকে।
বৈতল দিনের ডাক মনে রেখো
এই পথ তুলে দেবে রাগীদুপুরের কষাঘাত
যে-পায়ে লেগে রয় ধূলাভর্তি সর্ষের মাঠ।
কাঁটাভর্তি নায়ের পেট
টাকি মাছের লম্ফঝম্প, নিয়ে যাই দূরের গঞ্জে
তখনও ভাঙেনি হাট
জোনাকজ্বলা সন্ধ্যায় বাড়ি এলে
বুকের ভেতর নড়ে ওঠে চৈতী-পারু
তাহাদের স্বপড়বটুকু লিখে রাখি
অকাল বেলায়।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×