সেই সূত্রে মেয়েটিও নারায়ণগন্জ থাকে। মাঝে মাঝে কুমিল্লাতে যায়। ছেলেটি আসে নারায়ণগন্জ।
ছেলেটি কোম্পানির কাজে সারাদিন মটর সাইকেল দাবড়িয়ে বেড়ায়। আজ কুমিল্লা তো কাল চাঁদপুর, পরশু বি বাড়িয়া। পাশাপাশি ফেনী, নোয়াখালী যখোন তখোন। ফোনে (তখন মোবাইল এভেলেবল ছিলো না)মাঝে-মধ্যে কথা হয় মেয়েটির সাথে।
কোনো এক বিষ্যুদবার অফিস শেষে ছেলেটি মটর সাইকেল নিয়ে সোজা চলে এলো নারায়ণগন্জ। শুক্কুরবার সারাদিন মেয়েটিকে নিয়ে ঢাকা আর নারায়ণগন্জ-এ ঘুরলো। আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে !
শনিবার খুব সকালে ছেলেটি মেয়েটির কাছে বিদায় নিয়ে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো। অফিস ৯ টায়। চিটাগাং রোড হয়ে ছেলেটি মটর সাইকেল ছুটালো কুমিল্লার পথে। সকাল বেলার রোদবিহিন চমৎকার আবহাওয়া। হেলমেট না পরেই ড্রাইভ করছে ছেলেটি। কাঁচপুর ব্রিজ, সোনারগাঁ, মেঘনা ব্রিজ পার হয়ে গেল। অবশেষে পৌঁছলো দাউদকান্দি ব্রিজ।
ব্রিজের এক তৃতীয়াংশ পার হয়েছে। হঠাৎ সামনে নজর পড়লো। চমকে উঠলো ছেলেটি। একটা ট্রাক সোজা এগিয়ে আসছে তার দিকে। রাস্তার ডান দিক ধরে। ছেলেটি বায়ে চাপতে চাপতে ব্রিজের ফুটপাতের সাথে মিশে গেছে। ট্রাকটা ছেলেটির মটর সাইকেল থেকে মাত্র ১০/১২ হাত দুরে...
হঠাৎ করে জেগে উঠলো ট্রাকের ড্রাইভার (এতোক্ষণ সম্ভবত ঘুমাচ্ছিলো)। পাগলের মতো ট্রাকের হুইল ঘুরাতে লাগলো বামে। ঘুরিয়েও ফেললো কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ট্রাকের পুরো শরীর ঘোরালেও পেছনের চাকার উপরে থাকা 'মার্টঘার্ট' প্রচন্ড জোরে বাড়ি মারলো মটর সাইকেলের ডান দিকে। ছেলেটির ডান হাতের দুটো আঙ্গুল ফেটে আটকে গেলো এক্সেলেটরের সাথে। ডান পায়ের দুটো আঙ্গুলের হাড় মড়াৎ করে ভেঙ্গে গেলো।
এর মধ্যে ১৫/২০ গজ চলে গেছে ট্রাকটি। তারপর ব্রেক চেপেছে। জানালা দিয়ে তাকিয়ে ছেলেটিকে মটর সাইকেলের উপর বসে থাকতে দেখে ভুত দেখার মতো ভয় পেয়েছে। সে ভেবেছে এতোক্ষণে মটর সাইকেল আরোহী ইন্নালিল্লাহে...রাজেউন হয়ে গেছে। ছেলেটিকে জিন্দা দেখে ট্রাকের গতি বাড়িয়ে দিলো ৩ গুন। আর ছেলেটি...??
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০০৮ দুপুর ১:১৫