জাতিসংঘ মহাসচিবের দূতিয়ালির পর এবার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের তাগিদ দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
Published : 09 Sep 2013, 11:26 AM
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
“একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদ্ধতি খুঁজে বের করতে কার্যকর সংলাপে বসার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে চিঠিতে।”
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রোববার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে জন কেরির ওই চিঠি পৌঁছে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে দেশে যে রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
“আর কালক্ষেপণ না করে সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সমঝোতায় পৌঁছানো জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন জন কেরি।”
একই ধরনের চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও পাঠানো হয়েছে বলে শমসের মবিন চৌধুরী জানান।
তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, তিনি এ বিষয়ে ‘কিছু জানেন না’।
সংবিধান অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে, যা নিয়ে বিরোধী দলের আপত্তি।
সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার পর থেকেই তা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের শরিকরা।
দুই দলের অনড় অবস্থানের মধ্যেই গত ২৩ অগাস্ট শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে ফোন করে নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন। দুই নেত্রীকেই তিনি বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বলেন, সংবিধান মেনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে। তবে বিরোধী দল কোনো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে সরকার স্বাগত জানাবে।
অন্যদিকে বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া জাতিসংঘের মহাসচিবকে বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের কোনো বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনও জরুরি।
দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের এই মুখোমুখি অবস্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে সমঝোতা ও সংলাপের তাগিদ দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতাও চলছে।
জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দলও ঢাকা সফর করছেন।
আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে তা নিয়ে প্রধান দুই দলের সমঝোতা হলে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয় কেটে যেতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ।