somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাপানে আত্মহত্যার তরঙ্গোচ্ছ্বাস

১৯ শে মে, ২০০৮ রাত ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আত্মহত্যার জন্য ব্যবহৃত উপকরণ ও নিয়ম এবং এর শিকার ব্যক্তিবর্গের বিস্তারিত বর্ণনাসহ বিগত কয়েক সপ্তাহ যাবত জাপানী মিডিয়া ব্যাপকভাবে হাউড্রজেন সালফাইড গ্যাস দ্বারা সংগঠিত আত্মহত্যার বিবরণ প্রচার করছে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলো এত বিস্তারিত ও রোমাঞ্চকর হয়েছে যে জাপান সুইসাইড প্রিভেনশন এসোসিয়েশন প্রতিবেদন প্রচারে আরো সতর্ক হবার জন্য প্রচার সংস্থাগুলোকে অনুরোধ করেছে। এই বিস্ময়কর ঘটনা জাপানী ব্লগারদের এ বিষয়ে আলাপ করতে আলোড়িত করেছে যেখানে তাদের বিভিন্নমুখী দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছেঃ

ব্লগার মিসুটো সাম্প্রতিক এই প্রবনতা বিষয়ে মন্তব্য করেছেনঃ

প্রতিদিন ৯০ জন মানুষ আত্মহত্যা করছে।
বছরে ৩০ হাজার!
আপাতদৃষ্টিতে আত্মহত্যার প্রধান কারণ হতাশা।
এটা ঠিক যে এই সংখ্যা শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে সর্বাধিক।
যাই হোক, এটা ব্যাপক, আমি বিষ্মিত।
সম্প্রতি হাইড্রজেন সালফাইড গ্যাসের মাধ্যমে আত্মহত্যার বেশ কিছু খবর শোনা গেছে।
আশা করবো আত্মহত্যার সংখ্যা ক্রমশ কমে যাবে।

ব্লগার হাকোবি লিখেছেনঃ

আত্মহত্যা প্রতিরোধ করার জন্য (যার অর্থ মানুষকে বাঁচতে চাইতে শেখানো) একজন মানুষের আসল অনুভূতি দরকার।
এবং
তার বেঁচে থাকা সমাজ ও মানুষের চাইতে হবে, আমি মনে করি।

শুনেছি হাইড্রজেন গ্যাসের মাধ্যমে সংগঠিত আত্মহত্যার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।
যদিও রাসায়নিক পদার্থসমূহ এবং সেই সাথে কিভাবে হাইড্রজেন সালফাইড গ্যাস তৈরী করা হয় সে সম্পর্কিত তথ্যাবলী তুলে নেয়া হচ্ছে, হয়তো “হাইড্রোজেন সালফাইডের” মাধ্যমে “এখন” সংগঠিত আত্মহত্যার পরিমাণ “কমানোর” ব্যর্থতা মোচনের এটাই একমাত্র অবলম্বন।
কোন ব্যাপার না যতই প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হোক না কেন, সমাজ যদি এখন যেমন আছে তেমনই থাকে সম্ভাব্য আত্মহত্যার ঘটনা বোধহয় কমবে না।


টোকিওর একটা স্থানীয় পৌরসভার আত্মহত্যা বিরোধী গন-সংযোগ অভিযানের পোস্টার “আমরা বাঁচতে চাই”।

প্রচার মাধ্যমে যেভাবে বিষয়টা পরিচালনা করা হচ্ছে তা নিয়ে অনেক ব্লগারই সমালোচনামুখর। এই ব্লগার পরামর্শ দিয়েছেন যেন প্রচার মাধ্যম আত্মহত্যার সব খবর প্রদান বন্ধ করে দেয়ঃ

এটা কি ঠিক নয় যে আমরা আত্মহত্যার ঘটনাচক্র বন্ধের জন্য কিছু করবো?

কোন এক কারণে এমন প্রবণতা দেখা যায় যে মানুষ জনকে যা করতে বলা হয় সেগুলি তারা করে না এবং তারা তাই করে যা তাদের করতে নিষেধ করা হয়।
সুতরাং যখন প্রচার মাধ্যমে বলা হয় যে “এটা করো না” তখন কেউ কেউ এমন থাকবে যারা তা করতে উৎসাহিত হবে, তাই নয় কি?

অবশ্যই প্রচার মাধ্যম সত্যই তুলে ধরবে।
কিন্তু হাইড্রজেন সালফাইড গ্যাসের মাধ্যমে আত্মহত্যার খবর প্রদান বন্ধ করা কি উচিত নয়?

জাপানীরা তথ্যে বিশ্বাস করে।
এবং আমার মনে হয় যখন তারা টেলিভিশনে কোন জিনিস আর দেখে না তখন দ্রুতই তাদের কাছে সেটা পুরাতন হয়ে যায়।
এটা ঠিক, মানুষ জন খুব সহজেই কোন একটা জিনিসে ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
কিছুদিন আগের কোরিয়া বুম এবং হাঙ্কাচি ওজি (রুমাল রাজকুমার) এর কথা মনে আছে?
আমার মনে হয় এমন অনেক জিনিস আছে যা প্রচারিত না হলে মানুষজন ভুলে যাবে।
* একমাত্র সেইসব মানুষ ছাড়া যারা এগুলোকে সত্যিই ভীষণ পছন্দ করে।

বিষের পিঠার কথা মনে আছে!
দেখুন, সে সব ভুলে গেছেন নিশ্চয়ই, ঠিক?

সমস্যা এখনও সমাধান হয়নি অথচ মনে হচ্ছে এ অবস্থায় বিষয়টা ফেলে রাখা হবে। জাপানি মানুষদের এটা একধরণের বৈশিষ্ট্য, আমিও এমন।
কিন্তু এটাকে একটা বাজে অভ্যাস মনে করি।

এবং তাই, যদি প্রচার মাধ্যম হাইড্রজেন সালফাইড দিয়ে সংগঠিত আত্মহত্যার কথা প্রচার না করে সম্ভবত আত্মহত্যার এই বৃত্তকে ভাঙা যাবে।
সেটাই ঠিক! প্রচার মাধ্যমকে বন্ধ করতে হবে!
…. ছি ছি

ব্লগার তাইশিব্রিয়ান আলোচনা করেছেন কিভাবে ইন্টারনেট নিন্দার লক্ষ্য হয়ে উঠেছে এবং চিহ্নিত করেছে যে জাপানী প্রচার মাধ্যম আত্মহত্যার ঘটনা প্রচার বিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কতৃক আরোপিত বিধিমালা মানছে নাঃ

উদাহরণসরূপ, ইন্টারনেটের উন্মুক্ত ও সমতল বিশ্বে হাইড্রজেন সালফাইড সাদা করার ঝুঁকির বর্ণনা সম্বলিত সাইট যেমন আছে তেমন আছে হাইড্রজেন সালফাইডের চেয়েও অনেক বেশী প্রাণঘাতী জৈব রাসায়নিক পদার্থের বিবরণ। যার জন্য, এই তথ্য সাধারণ মানুষজনের জন্য উন্মুক্ত রাখা ঠিক নয় যতক্ষণ না সেগুলো বিশেষ কোন উদ্দেশ্যে তালাশ করা হয় এবং এর ঝুঁকি অবশ্যই বিবেচনা করে গণমাধ্যম কেবল একটা ইংগিত দিতে পারে কিভাবে এগুলো খুঁজে পাওয়া সম্ভব। তবে এসব মুছে ফেলার প্রচেষ্টাকে পর্যবেক্ষণ করা আসলে ইদুর-বিড়ালের দৌড় মাত্র যা কেবল একটা জঘন্য আবর্তন তৈরী করেঃ [প্রথমত আপনার ছিল] কয়লার গুলি, এরপরে হাইড্রজেন সালফার এবং এর পরে ….

বিধিমালা অনুযায়ী, স্বাস্থ্য সংস্থা নিদৃষ্ট করে দিয়েছে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করার জন্য কিভাবে প্রচার মাধ্যম সংবাদ পরিবেশন করবেঃ


• ছবি অথবা আত্মহত্যার চিরকুট প্রকাশ করবেন না
• অনুসৃত পদ্ধতি বিস্তারিত জানাবেন না
• একেবারে মামুলী কোন কারণ দেখাবেন না
• আত্মহত্যাকে মহান বা রোমাঞ্চকর করবেন না
• ধর্মীয় বা সংস্কৃতিক গৎবাঁধা বিষয় হিসাবে উপস্থাপন করবেন না
• আত্মহত্যার নিন্দাকে বাদ দেবেন না

বর্তমানে এই বিষয়গুলো কদাচিত গণমাধ্যম অনুসরণ করে থাকে।

গ্লোবালভয়েসে হানাকো তোকিতার লেখা মূল পোস্ট।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০০৮ বিকাল ৩:০৫
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

সততা হলে প্রতারণার ফাঁদ হতে পারে

লিখেছেন মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম নাদিম, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৯

বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। ক্রেতাদের মনে যে প্রশ্নগুলো থাকা উচিত:

(১) ওজন মাপার যন্ত্র কী ঠিক আছে?
(২) মিষ্টির মান কেমন?
(৩) মিষ্টি পূর্বের দামের সাথে এখনের দামের পার্থক্য কত?
(৪) এই দোকানে এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×