somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এটিএম বুথ ও কিছু কথা

১৯ শে মে, ২০০৮ রাত ১২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শাহাবুদ্দিন শুভ

আমরা জানি ব্যাংক গুলো পরের ধনে পোদ্দারী করে। যাদের টাকা পয়সা নিয়ে তাদের চলা সেই গ্রাহকদের কেন তাদের লাভের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমাদের দেশের বেসরকারী ব্যাংক গুলো গ্রাহকদের অনলাইনে যে শুধুই ভাল সেবা দিচ্ছে তা কিন্তু নয়। কিছু সংখ্যক গ্রাহককে তারা প্রতারিত করছে বিভিন্ন ভাবে। যে পরিমাণ সেবা গ্রাহকদের দেওয়ার কথা সে পরিমাণ সেবা কি গ্রাহকরা পাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে তাদের বর্তমান কার্যক্রমে। তেমনি সর্বশেষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন সাভার ব্যাংক কলোনির ইঞ্জিনিয়ার আজাদ মোহাম্মদ। তিনি ডাচ বাংলা ব্যাংকের সাভার বাজার বুথ থেকে এক হাজার টাকা উত্তোলন করার সময় দুটি পাঁচশত টাকার নোট পান, যেগুলো বাজারে চলার অযোগ্য। যার ফলে তার নেট তি হয়েছে একহাজার টাকা। তার সাথে ভোগান্তি ফ্রি।
একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ই- মেইল পেলাম সাথে সাথে পড়তে গিয়ে যা দেখলাম তা দেখে আমি কিন্তু অবাক হইনি। অবাক হাবার কথাও নয়। আমাদের দেশে সব সম্ভব! যদিও বাংলাদেশে বেশ ক’বছরে ব্যাংকিং খাতে প্রায় বিপ্লব ঘটেছে বল্ াযায়। সবগুলো বেসরকারী ব্যাংক প্রতিযোগীতায় টিকে থাকার জন্য প্রতিনিয়ত নিচ্ছে নতুন উদ্যেগ। গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে দিচ্ছে সব লোভনীয় অফার। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অনলাইন সেবা। কিন্তু বাস্তবে এখনো অনেক ব্যাংক পুরোপুরি এই সেবা না দিতে পারছে না গ্রাহকদের। আশাকরি যারা তাদের অনলাইন সেবাটা কেমন তা আপনি যে ব্যাংকেরই গ্রাহক হোন না কেন একটু ভালভাবে পরখ করলে তা বুঝতে পারবেন। অনলাইন সেবা বলতে সাধারণ গ্রাহকরা এ্টাই বুঝেন যে তাদের প্রয়োজনে যে কোন সময় ব্যাংকের অনুমোদিত বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন (শর্ত সাপে)ে। কিš বাস্তবে দেখা যায় প্রায় সময় তার উল্টো ঘটনা ঘটছে।
মেইলের কথায় আসি। আমার ই-মেইল একাউন্টে যে মেইলটি এসেছে তা খুলে দেখি ২টি পাঁচশত টাকার নোটের দু পৃষ্টা করে চারটি কপি আমাকে পাঠিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার আজাদ মোহাম্মদ ঢাকা থেকে। তার সাথে মানি রিসিটের একটি কপি এবং তিনি কি ভাবে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন তাও জানিয়েছেন। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮.১৫ মিনিটে এটিএম কার্ড আইডি নং ৫৯১৩৭০৫৪ দিয়ে এক হাজার টাকা উত্তোলন করেন ডাচ বাংলা ব্যাংকের সাভার বাজার বুথ থেকে। এ সময় দুটি পাচশত টাকার নোট পান,যেগুলো বাজারে চলার অযোগ্য। এই নোট দেখে তিনি সাথে সাথে বুথে কর্তব্যরত সিকিউরিটিকে দেখান। একটি নোট তিনটি অংশে বিভক্ত এবং অন্যটিতে চারাটি চিদ্র এবং উপরদিকের পুরোটা অংশ ছেড়া। রাত ৯ দিকে তিনি মতিঝিল কার্ড সেকশনে বিষয়টি অবহিত করে কোন সমাধান পান নি। পরে ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের সাভার বাাজার শাখায় যান এবং ব্যবস্থাপকের অনুপস্থিতিতে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে তা জানালে উক্ত নোটগুলো পরিবর্তন করে দিতে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন। পরে ব্যবস্থাপককে ঘটনা জানানোর পর তিনি জানান যে তিন জন ক্যাশিয়ার মিলে এটিএম বুথে টাকা রাখেন। তাই কে এই টাকা গুলো কে রেখেছে তা খুজে বের করা কঠিন। তাই সমবেদনা জানানো ছাড়া কোন উপায় নেই।
এখন প্রশ্ন হলো, ডাচ বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা যদি জানাতে না পারেন তার ব্যাংকের বুথে কে বা কোন ক্যাশিয়ার এই টাকা রেখেছে তাহলে জানবে টা কে? আর এ ধরনের ঘটনা যদি নিয়মিত ঘটতে থাকে তাহলে তাদের ব্যাংক যে সুনাম অর্জন করেছে তা ধরে রাখতে পারবে? তাছাড়া এটাও ভাবার দরকার একজন ক্যাশিয়ার অথবা কতৃপরে কারণে কেন গ্রাহকরা দুর্ভোগ পুহাবে। এ ব্যাপারে ব্যাংক কতৃপকে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।
ইদানিং পত্রিকার পাতা খুললেই অথবা যে কোন টেলিভিশন চ্যানেল অন করার সাথে সাথে চোখে পড়ে বিভিন্ন বেসরকারী ব্যাংক গুলোর চমকপ্রদ সব বিজ্ঞাপন। বিভিন্ন চ্যানেল যে কয়েকটি সংবাদ ভিত্তিক অনুষ্ঠান প্রচার করে সেগুলোর সিংহভাগ অংশ জুড়েই থাকে বেসরকারী ব্যাংকগুলোর বিজ্ঞাপন। যেমন এটিএন বাংলায় দিচ্ছে ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক সংবাদ শিরোনাম। আবার মধ্য বিরতীর পর দিচ্ছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক বাণ্যিজ্যিক সংবাদ। চ্যানেল আইতে দিচ্ছে ইর্স্টান ব্যাংক বিরতী, আবার যুমনা ব্যাংক বাণিজ্যিক সংবাদ। এভাবে বিভিন্ন চ্যানেল জুড়েই আছে অনুষ্ঠান গুলোতে ব্যাংক গুলোর নাম প্রচারের জন্য। যেভাবে তারা নাম প্রচারের নেমেছে বা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে যে চব্বিশ ঘন্টা অনলাইন সেবা দিচ্ছে তাদের গ্রাহকদের আসলেই কি তারা তা পাচ্ছেন, নিশ্চয় না। বেসরকারী ব্যাংকগুলো বাহির দিক দিয়ে দেখতে যতই ফিটফাট মনে হয় না কেন তাদের বাস্তব কর্মকান্ড কিন্তু তেমন নয়। অর্থাৎ প্রবাদ বাক্যের মত দেখতে ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট এই অবস্থা হচ্ছে আমাদের ব্যাংকগুলোর।

আগে যখন সোনালী ব্যাংক, রুপালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক গুলোতে যেতাম তখন তাদের এত চাকচিক্য বা এত সুন্দর ডেকোরেশন দেখিনি যা ইদানিং দেখতে পাওয়া যায় বিভিন্ন বেসরকারী ব্যাংক গুলোতে । কার চেয়ে কে বেশী চাকচিক্য দেখাবেন এবং গ্রাহকদের নিজেদের কাছে টানতে পারবেন এই জন্য সারাণ ব্যস্ত থাকেন। এজন্য প্রায় সবগুলো ব্যাংকের মাঠ জুড়ে রয়েছে এক বা একাধিক কাষ্টমার রিলেশন অফিসার। যারা ব্যাংকের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা মানুষের সামনে তুলে ধরেন। কি কি দিচ্ছে তার ব্যাংক। বিভিন্ন ভাল সুযোগ সুবিধার কথা ভেবে গ্রাহকরাও কেবলই তাদের দিকে ছুটছে। তবে কে কি সুবিধা পচ্ছেন তা নিজেরাই ভাল জানেন।
বিভিন্ন সব লোভনীয় সুযোগ সুবিধার কথা বলে বেসরকারী ব্যাকগুলো যেভাবে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করছে তা বন্ধের জন্য অভিভাবক ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজর দেওয়া উচিত। তা না হলে বেসরকারী ব্যাংগুলোর স্বেচ্চাছারিতা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে। আর গ্রাহকরা এতসব চার্জ দেওয়ার পরও তাদের কাংখিত সেবা থেকে বঞ্চিত হবে প্রতিনিয়ত। তাই হাজার হাজার গ্রাহকদের কথা ভেবে অনতি বিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংকে এগিয়ে আসতে হবে এসব প্রতিরোধ করার জন্য।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×