somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাহিত্য একাডেমীর ২৫ বছর পূর্তি

১৬ ই মে, ২০০৮ বিকাল ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়েটি আত্মহত্যা করেছিল

সাহিত্য একাডেমীর ২৫ বছর পূর্তি। খবরটা আগেই জানতাম। ভেতরে ভেতরে এক ধরনের উত্তেজনা। বিস্ময়ে দুচোখ ঘুমের মধ্যেও তাকিয়ে থাকে। ভাবি সাহিত্য একাডেমী কি ঘোড়া? মেলাতে পারিনা। আমার চোখের সামনে ঘোড়া দৌড়ের দৃশ্য ভেসে উঠে। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ঘোড়াটাই বারবার জিতে নিচ্ছে পুরস্কার। বেগবান ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হওয়া চালককে দেখি এক ধরনের বীরত্বপূর্ণ দ¦ীপ্তিতে চারপাশ মুখরিত করতে। লোকটার জন্য ভেতর থেকেই শ্রদ্ধা তৈরি হয়। ভাবি তার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের অহঙ্ককার নেই কেন? কিংবা তার বারবার বিজয়ী হওয়ার রহস্যটা কী? আমি থেতলে পড়া সময়ের সঙ্গে লোকটার ক্রমো সাফল্যকে মেলাতে চেষ্টা করি। এখানে জীবন হেসে উঠে। একবার রেললাইনের পাশে এক কিশোরী মেয়েকে টুকরো টুকরো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি। খুব আফসোস হয়েছিল মেয়েটির জন্য। এত অভিমান কেন? কোনো উত্তর পাই নি। তার মৃত্যুর পরও চারদিকে ফিসফিস আওয়াজ উঠেছিল। ভেবেছি আওয়াজগুলো কি সত্যি সূচের মতো ধারালো?

চম্পক নগরে কি আমার বাড়ি ?

সাহিত্য একাডেমীকে দূর থেকেই দেখেছি। ১৯৯৯ কিংবা ২০০০ সালের কথা । কবিতাকে সঙ্গী করে জীবন নিয়ে জুয়ার আসরে বসার দীর্ঘ প্রস্তুতি চলছে। রক্তের ভেতরে তুমুল উত্তেজনা। এক একটি দুর্বল কবিতা দাঁড় করিয়ে দেয় সম্ভাবনার নতুন প্রান্তে। কিন্তু কবিতা যে অধরা। ধরা যাচ্ছে না, ছোঁয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে ধরা না ধরার বেদনাও প্রসব ব্যথার মতো ভয়ানক। তারপরও থেমে যায় নি। এখন ভাবি এ সাহস কী সাহিত্য একাডেমীর কাছ থেকে পেয়েছি? হয়তো । অথচ একাডেমীর সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রটা ছিল অনেকটা ধীর পায়ে চলার মতো। আমার কলেজে কবি মহিবুর রহিম সদ্য জয়েন করেছেন। তার সঙ্গে পরিচয় ছিল সুখকর। তার কাছে বুঝেছি কবিতা নারীর শয্যার মতোই আরামদায়ক। তবে নারীর জন্য সব পুরুষের যেমন চিরকালীন টান থাকে তেমনি কবিতার জন্যও। ঠিক এই কারণে সাহিত্য একাডেমীর প্রতি একটা অজানা টান ভেতর থেকে তৈরি হয়েছিল। কবিতার ঘোর নেশায় প্রতিনিয়তই শহরে আসি। কবি সৈয়দ মোহাম্মদ মাশুকের বাসায় তুমুল আড্ডা জমে। মাশুক ভাই ¯ৃ§তি আওড়ায় আশির দশকে তিনি ঢাকা থেকে সাহিত্য একাডেমীর আড্ডার জন্যই ব্রাক্ষণবাড়িয়া আসতেন। তর্ক ,বিতকর্, উত্তেজনা কী ছিলনা সেই আড্ডায় ? সরকার আমিন এর কাছে শুনেছি পিয়াল হাসান ও রাজিব নূরের সঙ্গে তুমুল আড্ডার গল্প। আমার ঈর্ষা হত। প্রতিদিনইতো ইন্ড্রাসট্রিয়াল স্কুলের সামনে দিয়ে যাই। মাঠের পাশেই এককোণে একাডেমীর অফিস কক্ষ। গম্ভীর প্রকৃতির কিছু লোক একসঙ্গে বসে এমন কী গল্প করে? কোনো উত্তর পাই না। তবে কবিতার মতো অজানা টান অনুভব করি। আড্ডার প্রতি আমার চিরকালীন পক্ষপাত। তারপরও বাইরের পরিবেশ ভরসা দেয় না। লোকে বলাবলি করে সাহিত্য একাডেমী হিন্দু সংস্কৃতির লালন করে। আমার মন এসবে সায় দিত না। কারণ সংস্কৃতির আবার ধর্ম আছে নাকি ? সংস্কৃতি তো সব কালের সব মানুষের। আমার পূর্বপুরুষ ইসলাম গ্রহণ করেছে কত বছর আগে? যাকে আমরা হিন্দু সংস্কৃতি বলছি সেই হিন্দু সংস্কৃতি বাদ দিলে বাঙালির কি কিছু থাকে?

এসো আগুন গিলে পুরোনো বটবৃক্ষ হই

সাহিত্য সংস্কৃতির জন্য কি কোনো ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন আছে? এর উত্তরে অনেক কথা বলা যায়। আমার ধারনা সব প্রতিষ্ঠানই ব্যক্তির জন্য ক্ষতিকর। কারণ একজন মানুষের চিন্তার বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার পরপরই সে জানেনা চিন্তাটাকে গ্রহণ করবে কিনা। বিশেষ করে তার শুরুর সময়টা। এ সময় সে দ্বারস্থ হয় কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের কাছে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার অভিজ্ঞতার আলোকে অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে। অথচ সে জানে না শুরুর কালের ব্যক্তির সম্ভাবনা। ফলে মনের অজান্তেই সম্ভাবনার শোকবার্তা ঘোষিত হয়। এতসবের পরেও প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন অস্বীকার করা যায় না। তবে প্রতিষ্ঠানেরও শ্রেণীবিন্যাস আছে। কারণ যে কোনো চিন্তা চেতনা অঙ্কুরিত হওয়ার পর তার সুভাস ছড়াতে প্রতিষ্ঠানের দরকার। সাহিত্যের ক্ষেত্রে এটি আরো বেশি জরুরী। একজন কবি দিলওয়ার কিংবা ওমর আলী মতো ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান নগরায়নের এ কালে মফস্বলে জীবন নিয়ে জুয়া খেলবে আশা করা যায় না। কিস্তু সুভাগ্য তারা তাই করেছেন। কিন্তু দিলওয়ার বা ওমর আলী তো সবকালে মফস্বলে জন্মায় না। আবার জন্মালেও অখ্যাত গ্রামে পড়ে থাকবে আশা করা যায়? এজন্য প্রয়োজন প্রতিষ্ঠানের। এ প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমীর মতো আমলাতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান না। প্রতিষ্ঠানে জীবনের চর্চা হবে , চর্চা হবে আত্মজিজ্ঞাসার। সাহিত্য একাডেমী সম্ভবত এ ধরনের একটা রুপরেখা দাঁড় করিয়েছে। জ্ঞানচর্চার বিকল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে সাহিত্য একাডেমী বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিচ্ছে। শিক্ষা যখন কর্পোরেট কোম্পানির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান তখন সাহিত্য একাডেমীকে ধরে নিতে পারি প্রতিবাদের স্মারক। কিংবা প্রতিষ্ঠানের প্রতিপ্রতিষ্ঠান। সারাদেশে সাহিত্য একাডেমীর মতো প্রতিষ্ঠান না থাকলে কী হতো কে জানে? কারণ তথাকথিত একাডেমীতে পড়ার সুযোগ আমার হয়েছে। এখন ভাবি একাডেমী কি বর্ণমালা আর ক্যারিয়ার গঠনই শিক্ষা দেবে? জীবনের অর্থ কী এসবই? আসলে প্রতিযোগিতার বিশ্বে টিকে থাকার সংগ্রামে মানুষ ভুলে যাচ্ছে জীবনের অর্থ। সবখানেই এখন কর্পোরেটদের আধিপত্য। কোনো কোনো ধনাঢ্য বয়স্ক ব্যক্তি নাকি একাধিক বিয়ে করছেন কর্পোরেট কালচারে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য। বুঝে উঠতে পারি না। সাহিত্য একাডেমী নিয়ে লিখতে বসে আমার এক বন্ধুর কথা মনে পড়ে। বেচারা আমার সঙ্গে অনার্স কাসে ভর্তি হয়েছিল। প্রথম পার্ট পরিক্ষা দেয়ার পর থার্ড কাস পাওয়ায় আর পড়েনি। একাডেমী শিক্ষার প্রতি তার প্রচ- অনিহা। সে বলতো এখানে কী কিছু শেখায়? উদীচির কাছে আমি ঋণি। উদীচি হচ্ছে আমার বিশ্ববিদ্যালয়। উদীচির উচিত ছিল একটা কালচারাল বিশ্ববিদ্যালয় করা। এ অর্থে সাহিত্য একাডেমীর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো কী প্রকৃত শিক্ষার্থীর জন্য স্কুল কিংবা কলেজ নয়?

জলের কোনো রং নেই

সাহিত্য একাডেমীর সঙ্গে আমার যোগসূত্রতা সাংগঠনিক ভাবে তৈরি হয়নি। তাই বলে নিজেকে সাহিত্য একাডেমীর বাইরের মনে হয়না। সৈয়দ মোহাম্মদ মাশুকের বাসায় কবি জয়দুল হোসেনের সঙ্গে পরিচয়।তারপর থেকে শহরে গেলে তার সঙ্গে মাঝে মধ্যে কথা হয়। গম্ভীর প্রকৃতির লোক। অল্প কথা বলে। অন্যদিকে তার সম্পর্কে নানা কথা প্রচলিত। তিনি নাকি নাস্তিক। আমি এসবে মাথা ঘামায় না। আস্তিকতা নাস্তিকতা ব্যক্তির নিজস্ব ব্যাপার। কারণ এমন লোককে তো দেখি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। শুক্রবারে জুমার নামাজে প্রথম কাতারে দাঁড়ায়। কিন্তু ঘুষও খাই। র্দুনীতি করে দেশটার বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে। আমার কাছে তার ধর্মের কোনো অর্থ হয় না। জয়দুল হোসেনের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। পরবর্তীতে তাকে আমি আবিষ্কার করি অন্যভাবে। এতো দেখি অন্য ধাতুতে গড়া। দেখতে বয়স্ক মনে হলেও ভেতরে সার্বক্ষণিক তরুণ। সাহিত্য সংস্কৃতি নিয়েই পড়ে থাকে। তার মধ্যে যে গাম্ভীর্যতা এটা স্বভাবের। প্রকৃত অর্থে সে তরুণদের বন্ধু। নিজের সর্ম্পকে উচ্চাকাঙ্খা নেই। প্রায়ই বলে বয়স তো শেষ আমি যা পারি নাই তরুণরা তা করবে। আমিও ইতিমধ্যে ঢাকা চলে আসি। তার সঙ্গে যোগাযোগের ভাটা পড়ে। একদিন ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় গেলে জয়দুল হোসেন বললো সাহিত্য একাডেমী তরুণ কবিদের জন্য ওয়ার্কসপ করবে। সময় পেলে চলে এসো। ঢাকা থেকে সরকার আমিন, শামীম রেজা, ওবায়েদ আকাশ, আমিনুর রহমান সুলতানসহ অনেক কবি আসবে। আমার যাওয়া হয় নি। পরে শুনেছি ঐ অনুষ্ঠান নিয়েও নোংরা রাজনীতি হয়েছিল। ব্রাক্ষণবাড়িয়া গেলে জয়দুল হোসেন বললো এটা নতুন কিছু নয়। সাহিত্য একাডেমীর বৈশাখী মেলা নিয়েও অনেক রাজনীতি হয়েছে। মেলা বন্ধ হয়নি। সাহিত্য একাডেমীর মেলা আয়োজন আমাকে ভাবিয়ে তুলে। আল মাহমুদ সাহিত্যলোক পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসে ব্রাক্ষণবাড়িয়া শহরের সাংস্কৃতিক পরিবেশের কথা বলছিলেন। শহরের অলিগলিতে নাকি সুরের সাধনা হতো। এখনকার পরিবেশ দেখলে মন খারাপ হয়ে যায়। আল মাহমুদের সময়ের পরিবেশ আমরা দেখিনি। তবে এটুকু বলতে পারি আমরা ব্রাক্ষণবাড়িয়া সাহিত্য সংস্কৃতির অনুষ্ঠান বলতে সাহিত্য একাডেমীর বৈশাখী মেলা আর সারা বছরে তাদের নিজস্ব কিছু অনুষ্ঠান। এর বাইরে অন্যান্য সংগঠনের কিছু অনুষ্ঠান। বছরের বাকি সময় খাঁ খাঁ অবস্থা। সরকারি অনুষ্ঠানও মাঝে মাঝে হয় না যে এমন নয়। যেমন সরকারের উদ্যেগে দেখেছি বৈশাখী মেলা। কিন্তু এ মেলাতো জমে না। অথচ সাহিত্য একাডেমীর মেলায় হাজার হাজার মানুষের ভীড়।



কপাল পুড়লে হৃদয়ে ঘাস জন্মায়

সাহিত্য একাডেমীর সঙ্গে নাড়ীর টান সবসময়ই অনুভব করেছি। তবে জয়দুল হোসেনের সঙ্গে সর্ম্পকের মাত্রা গভীর হওয়ার পর তা আরও বেড়ে গেছে। অন্তঃসারশূন্য ঢাকা নগরীতে বসে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কথা মনে করলে চোখের সামনে ভাসে কতিপয় লেখক আর সাহিত্য একাডেমী। সাহিত্য একাডেমী আরও একটা কারণে আমার কাছে প্রতিনিয়ত মনে পড়ে। বছর কয়েক আগে আমার সম্পাদনায় যা কিছু সোনা রং নামে সাম্প্রতিক ব্রাক্ষণবাড়িয়ার একটি কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংকলনের সম্পাদকীয়তে কাকসম কবি শব্দটি নিয়ে বির্তকের শুরু হয়। এ নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে । তাদের দাবি কাক সম শব্দের অর্থ নাকি কাকের মতো বুঝায়। আমার অপরাধ তাদের কাক বলেছি। এই অপরাধের জন্য আমার সঙ্গে অভিযোগের তর্জনি কবি জয়দুল হোসেনের দিকেও। তারা বলাবলি করছে আমার দ্বারা এ কাজ সম্ভব নয়। স্বাভাবিক কারণেই এর সঙ্গে সাহিত্য একাডেমী এসে যায়। কারণ সাহিত্য একাডেমী জয়দুল হোসেন মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। সাহিত্য একাডেমীকে জড়িয়ে এ ধরনের অপবাদ আমাকে এখনো পীড়া দেয়। অথচ সত্য হচ্ছে আমি কারো প্ররোচনায় বিষয়টি নিয়ে লিখি নি। সংকলনটির সঙ্গে কবি জয়দুল হোসেনের সহযোগিতার সর্ম্পক ছিল। কিন্তু সম্পাদকীয় বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত। ভাবলে নিজের কাছেই লজ্জা পাই। একটা সাধারণ শব্দ নিয়ে এত মাখামাখি ? সমঅধিকার, সমনীতি, সমমান, সমমর্যাদা এ শব্দগুলোর মতোই কাকসম শব্দটি। অথচ এ শব্দটিই কিনা কবিতার মতো রহস্য তৈরি করে সম্পর্কগুলোতে চিড় ধরিয়ে দিল।

আনন্দ বাজারের ঘাটে নৌকা

ব্রাক্ষণবাড়িয়া বিষয়ক গবেষক মুহম্মদ মুসার একটি বক্তব্য সব সময় আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তিনি বলেন ব্রাক্ষণবাড়িয়া সাহিত্য সংস্কৃতির রাজধানী। এখানকার লেখকদের সাহিত্যকর্মের কথা উল্লেখ করে আমাদের বুঝাতেন অমুক কবি বাংলা কবিতায় এই করেছেন। ঐ লেখক উপন্যাসে এই করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। বাসায় নিয়ে দেখাতেন ষাটের দশকে প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিন ভেলা, পরিচয়। মুগ্ধ হয়ে যেতাম। পাকিস্তানিরা তখন ধর্মের নামে সবকিছুকে ইসলামি সংস্করণ করছে। বাঙালির সংস্কৃতি হিন্দু সংস্কৃতি, রবীন্দ্রনাথ হিন্দু , তাই রবীন্দ্রনাথকে সব জায়গা থেকে বর্জন করা হলো। ঠিক সে সময়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে ওরা রবীন্দ্রনাথ সংখ্যা বের করেছিল। কলকাতায় নাকি সংকলনটির বেশ প্রশংসা করা হয়েছিল। মান্নান সৈয়দের ষাটের দশকের পত্র পত্রিকা আলোচনায় ঐ সংখ্যার প্রশংসা পড়েছি। আমি আমার সময়ের সাহিত্য কাগজের সঙ্গে তুলনা করে অবাক হয়ে যাই। মানের দিকে আমাদের সময় ধারে কাছেও নেই। পরবর্তী সময়ে সাহিত্য একাডেমী পত্রিকাটি কেবল মানের দিকে ঐগুলোর সঙ্গে তুলনা চলে। পত্রিকাটির জন্য আফসোস হয়। একাডেমীতে গেলেই জয়দুল হোসেন কে ফুসলায়। ঢাকা থেকে কবি পিয়াস মজিদও জয়দুল হোসেনকে উৎসাহ দেয়। বলে পত্রিকাটি বের করেন ইত্যাদি ইত্যাদি। অবশেষে দীর্ঘ বিরতির পর সাহিত্য একাডেমী পত্রিকা প্রকাশিত হলো। এখানে ও তরুণদের জয় জয়কার। অকাল প্রয়াত কবি খান মোহাম্মদ ফারাবী সংখ্যা।

তবুও মেয়ে কবিতা বুঝেনা

ঢাকা শহরের ভূস্থরের নাকি ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। ছোটখাটো ভূকম্পনে শহর ধসে যাবার সম্ভাবনা। ভাবি ব্রাক্ষণবাড়িয়া শহরে যদি সাহিত্য একাডেমী না থাকে কেমন হবে ? আঁতকে উঠি। ভূকম্পনের পরবর্তী অবস্থা চোখের সামনে ভাসে। চারপাশ কেমন যেন ভারি হয়ে উঠে। আল মাহমুদ তো দেখেছিলেন সুরের শহর । আর আমরা দেখেছি সংস্কৃতির টানাপোড়েনের শহর। যদি সাহিত্য একাডেমী সত্যি না থাকে এত শূন্যতা কী দিয়ে ঢাকবো ? কবি সৈম আকবর কে ফোন দিয়ে কোথায় এসে দাঁড়াতে বলবো? পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায়। কিন্তু ভাবতে ভালো লাগছে , সাহিত্য একাডেমী ২৫ বছর পূর্তি পালন করছে। সময়ের করতালিতে সাহিত্য একাডেমীকে নানা বন্ধুর পথ অতিক্রম করতে হচ্ছে সত্য। তবে কালের করতলে সাহিত্য একাডেমী ইতিহাসের অন্তত কিছু পৃষ্ঠা হলেও দখল করবে। এই উপলব্ধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আল মাহমুদের একটি কবিতার লাইন মনে পড়ছে, ও পাড়ার মেয়ে রোজেনা সারা অঙ্গে ঢেউ তার তবু মেয়ে কবিতা বুঝে না। সময়ও কি রোজেনার মতো নয় ?
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

সততা হলে প্রতারণার ফাঁদ হতে পারে

লিখেছেন মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম নাদিম, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৯

বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। ক্রেতাদের মনে যে প্রশ্নগুলো থাকা উচিত:

(১) ওজন মাপার যন্ত্র কী ঠিক আছে?
(২) মিষ্টির মান কেমন?
(৩) মিষ্টি পূর্বের দামের সাথে এখনের দামের পার্থক্য কত?
(৪) এই দোকানে এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×