আগুন ! আগুন - রণক ইকরাম
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
দ্রব্যমূল্যের আকাশযাত্রার এই সময়ে 'আগুন' শব্দটি নতুন করে লাইমলাইটে চলে এসেছে। এ বিষয়ে আমার বন্ধু আগুনের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। প্রসঙ্গটা তুলতেই ও ক্ষেপে গিয়ে বলল, 'আমি যদি আগুনের আবিষ্কর্তাকে খুঁজে পেতাম তাহলে তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারতাম।' ওর কথা শুনে আমি ব্যাপক টেনশিত হয়ে এর ব্যাখ্যা চাইলাম। তখণ আমার বন্ধুটিও দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে বলতে শুরু করল- অর্থের মতো আগুনও অনেক অনর্থের মুল। আর বাস্তবতাই তো বলে যে আগুন পোড়ানোর মুল। আগুন আবিস্কার না হলে আমরা খাওয়া-দাওয়া অত বিলাসী হতে পারতাম না। ডিকশনারিতে 'ভোজনবিলাস' বলে কোনো শব্দ থাকত না। ফলে দ্রব্যমূল্যের ওপর কোনো চাপ থাকত না, বাজারেও আগুন লাগত না।
তবে আগুন কিন্তু কখনো কখনো সুনামও বয়ে আনতে পারে। জীবনের শেষ লগ্নে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত তার ছেলেদের বলে গেল-'বাবারা আমি তো সারাজীবন খারাপ কাজই করলাম, তাই আমি মরার পর তোরা এমন কাজ করবি যাতে আমার সুনাম হয়! আমার আত্মা শান্তি পায়।' কথাগুলো শেষ হতেই সেই ডাকাত মারা গেল। এখন ডাকাতের ছেলেরা ভাবতে শুরু করল, কীভাবে বাবার সুনাম করা যায়। ওরা ডাকাতি করা ছাড়া আর কিছুই তো শিখেনি। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিল বাবার মতো তারাও ডাকাতি করবে তবে নতুন স্টাইলে! তারা এবার ডাকাতি করার পাশাপাশি ডাকাতি শেষে ডাকাতি করা ঘরে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যেত। লোকজন বলতে শুরু করল, ওদের বাপটাই ভালো ছিল, ডাকাতি করে চলে যেত কিন্তু কারো ঘরে আগুন দিত না।
কবি নজরুল বলেছিলেন-'আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি।' বলা বাহুল্য-সেই হাবিয়ার প্রভাব থেকে বাঙালিরা আজো মুক্ত হতে পারেনি। এখনো সামান্য কারণেই স্লোগান ওঠে- 'অমুক ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে।' তবে পিছনে কথা হলো ঘরে ঘরে আগুন এখনো জ্বলছে। যেমন প্রায় প্রতিদিন কী এক অদৃশ্য ভূত পেট্রোল ঢালছে দ্রব্যমূল্যের বাজারে। ভাব দেখে মনে হয় দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার কেবল লাগামই ছিঁড়েনি বরং কেউ পশ্চাৎদেশে কেরোসিন ঢেলে দিয়েছে। যে কারণে পাগলা ঘোড়ার কেবল ছুটছে তো ছুটছেই! এই ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরতে পারে এমন রাজকুমার আমরা পাইনি। তাই দুঃখ বলবৎ আছে। গায়করা নিরন্তর গেয়ে চলছে- 'ধিকি ধিকি আগুন জ্বলে। বুকে নদী বইয়া চলে।' হায় হৃদয়ে আগুন, বাজারে আগুন তাই পেটেও আগুন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কাঁচা আম পাড়ার অভিযান
গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমানের দেয়াল
অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১
তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন