somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুরনো, শক্তিমান ও সেলেব্রেটি ব্লগার বিষয়ে শিপনের পোস্ট ও মাহবুব মোর্শেদের প্রিয় পোস্ট

২৯ শে এপ্রিল, ২০০৮ দুপুর ১২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার প্রিয় ব্লগার আবদুর রাজ্জাক শিপন একটা পোস্ট দিছেন 'একটি শীতল পাটি বৈঠক ! "পুরনো শক্তিমান ব্লগাররা তুলনামূলক নতুনদের পোস্টে মন্তব্য দিতে নারাজ"- এ বিষয়ে আপনার কি মত ?' (Click This Link) নামে। ঘটনা ২৬ তারিখের। ২৬, ২৭, ২৮ তিনদিনই ব্লগে লগ ইন করছিলাম। কিন্তু ওরিয়ানা ফালাচির একটা লেখা কপি-পেস্ট করা ছাড়া আর তেমন কোনো কাজ করতে পারি নাই। হাতে সময় ছিল কম। অন্য কাজ ছিল। ফলে, কমেন্ট আর করা হয়ে ওঠে নাই। যদিও সেইখানে কোনোভাবে আমার কথা উঠছিল। কথা এমনভাবে উঠছিল যাতে আমার সেইখানে কিছু বলার অবকাশ আছিল। আমি কইতেও চাইছিলাম। তখন কইতে পারি নাই বইলা বিষয় ছাড়ি নাই। তাই আইজকা পোস্ট দিলাম। শুধু শিপনের বিষয় না, আরও কিছু বিষয়ে কথা বলবো বইলা মন্তব্য না করে আলাদা পোস্ট দিবার বাসনা করলাম।
ব্লগার হিসাবে আমি পুরানা বটে। ২০০৬-এর ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত নিয়মিত ব্লগে লিখতেছি। যত লিখতেছি তার চেয়ে বেশি পড়তেছি। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সকালবেলা আমার অভ্যাস হইলো একটার পর একটা পিছনের পাতা উল্টায়া পোস্ট দেখা। পড়ার মতো পোস্ট পাইলে রাইট ক্লিক করে আলাদ উইন্ডোতে নিয়া সেটা পড়া। এই কাজটা আমি অফলাইনে থাইকাই করি। যদি পড়ে পড়ে কোনো পোস্ট বিষয়ে আমার মনে গুরুতর বিবাদ তৈয়ার হয় তাইলে কমেন্ট করি। তর্কও করি। একমত পোষণ করার জন্য পারতপক্ষে কমেন্ট করি না। তবে অনেক ক্ষেত্রে সেটাও করছি। শুরু থেকে দেখা ও ফিরতি দেখা, কমেন্ট ও ফিরতি কমেন্ট, রেটিং ও ফিরতি রেটিংয়ের অভ্যাসটা আমি তৈয়ার করি নাই। সামহয়ারের প্রথমে একটা রেওয়াজই দাঁড়ায়ে গেছলো যে, তুমি আমারে কমেন্ট দিবা, ভাল বলবা আমিও তোমারে কমেন্ট দিবো ভাল বলবো। এই রেওয়াজে কিছু কিছু ছোট ছোট গ্রুপ দাঁড়ায়া গেছলো। অবশ্যই কিছু গ্রুপ আছিল যেইখানে খারাপ লেখকরা একত্র হইয়া নিজেদের সংগঠিত কইরা একটা কিছু হওনের বাসনা করছিলেন। সেই ছোট গ্রুপগুলা টেকে নাই। কেউ কেবল পরস্পরের পিঠ চাপড়ানি দিয়া ভাল লেখক হিসাবে নাম করতে পারে নাই। নাম যারা করছেন তারা লেখার গুনেই করছেন। ব্লগ একটা সামাজিক জায়গা বটে। সেইখানে লেখা পড়া, লেখার মাধ্যমে যেমন সামাজিকতা তৈয়ার হয় তেমনি কমেন্ট দিয়া সেই সামাজিকতায় জোর আসে। নতুন মাত্রা তৈয়ার হয়। কিন্তু সেটা যদি কারো মধ্যে এমন অভ্যাস তৈরি করে যাতে কেউ ভালো লেখাকে খারাপ আর খারাপ লেখাকে ভালো বলতে প্রলুদ্ধ করে তবে সেই অভ্যাসকে একটু পর্যালোচনা করা দরকার। এই পর্যালোচনা থেকেই আমি শুরু থেকেই ফাও কমেন্ট করা থেকে, গোষ্ঠী তৈরির প্রক্রিয়া থেকে নিজেরে আলগা রাখছি। একথাও সত্য বহু ভাল পোস্টে স্রেফ আলস্য ও সময়াভাবে কমেন্ট দিতে পারি নাই। তবে, ব্লগে সব ভাল লেখা আমি মনোযোগ সহকারে পড়ছি, এইটা জানি।
ব্লগে অনেকেই আছে যারা শুধু কমেন্ট কইরাই ক্ষান্ত নন। কমেন্ট তাদের ব্যবসা, পেশা, টিজিং, ইরিটেটিং-এর হাতিয়ার। কমেন্ট অনেকের যুদ্ধাস্ত্র। ব্লগ তাদের কাছে লেখার জায়গা যতটা, তার চেয়ে বেশি লড়াইয়ের ময়দান। এইকাজ যারা করেন, তারা সবাই খারাপ লেখেন বইলাই এই পথ বেছে নেন সেইটা আমি বলছি না। কিন্তু এই দলে মেলা লোক আছেন যারা লেখতে পারেন না লেখার ব্যাপারে প্রো-অ্যাকটিভ হইতে পারেন না। স্রেফ রিঅ্যাকটিভ চিন্তার চর্চা করেন। তাদের জন্য আমার খুব দুঃখ হয়। অনর্থক কমেন্ট থেকে সচেতনভাবে সরে আসার পেছনে এইটা আরেক কারণ। আমি ব্লগারের লেখাকে গুরুত্ব দেই। তার প্রতিক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ। তবে লেখা থাকলে প্রতিক্রিয়াও জমে।
অবশ্য কমেন্টের মাধ্যমে একটা দাদাগিরি আমি করতে পারতাম বলে, অনেকে মনে করেন। সেইটা হইলো, নতুন লেখকদের উৎসাহ দান। ভাল বইলা, সমালোচনা কইরা, পরামর্শ দিয়া তাদের লেখাকে বেগবান করতে পারতাম। কিন্তু আমি এই ধরনের দাদাগিরিতে বিশ্বাস করি না। কে কেমনে লেখবে সেই ব্যাপারে উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য দিতে আমি অভ্যস্ত না। আর আমিও একজন নবীন লেখক হিসেবে এই ধরনের সমালোচনা এড়ায়ে চলি। আরও ভালো হইলে আরও ভাল হইতো জাতীয় কথা যারা বলেন তাদের কাছ থেকে দূরে থাকি। ফলে, আমি দাদাগিরি করতে পারলাম না। ব্লগে পুরানা বইলা এই সুযোগ আমি নিতে চাই না।
শিপন ভালোবাইসা শক্তিমান ও সেলেব্রেটি কথা দুইটা বলতে পারেন। আমি বিনয় কইরা এইটারে মেনে নিতে পারি আবার অস্বীকার করতে পারি। কিন্তু দুইটা শব্দই আমার কাছে ক্ষমতাকেন্দ্রিক লাগতেছে। ফলে, আমি এই দুইটা শব্দ কোনোভাবেই পছন্দ করতে পারতেছি না। ভালো লেখলে আপনি বলতে পারেন উনি ভালো লেখেন। কিন্তু শক্তিমান আর সেলেব্রেটি মানে কী? এইখানে কি আমি জব্বারের বলি খেলতেছি নাকি গ্ল্যামার ঝরানোর কাজ করতেছি?

শিপনের পোস্টে একজন বলছেন, আমি যে কারো পোস্ট পড়ি নাই, পড়ার সময় পাইনা সেইটা আমার প্রিয় পোস্টের লিস্ট দেখলেই বুঝা যায়। বাহ! কী সুন্দর যুক্তি। প্রিয় পোস্ট বিষয়ে অনেকেই আমারে জিগাইছেন। আমি উত্তর দিলেও হয়তো কারো মনপুত হয় নাই। আইজকা আবার বলি, ব্লগে আগে বিভিন্ন টেকনিক্যাল জ্ঞানের প্রদর্শনী হইতো, এই যেমন ফন্ট রঙিন করা, বোল্ড ইটালিক করা, ছোট বড় করা। এইগুলা কোনোদিনই আমি শিখতে পারি নাই। প্রিয় পোস্টের বিষয়টা যুক্ত হওয়ার বহু দিন পর্যন্ত বিষয়টা বুঝতে পারি নাই। মেলাদিন জায়গাটা ফাঁকা ছিল। কিন্তু একদিন শোকেসে যোগ করুণ অপশনটা পেয়ে নিজের একের পর একটা পোস্ট যোগ করতে থাকলাম। খুব মজা পাইছিলাম সন্দেহ নাই। তখন সেইসময় আমার মনে যে ভাবনাটা কাজ করছিল সেইটা হইলো, কেউ আমার ব্লগে আইলে শুধু প্রথম পাতাটা দেখেই হয়তো চইলা যাইতে পারেন। সেক্ষেত্রে তার উদ্দেশে যদি বিভিন্ন ধরনের কিছু ব্লগের লিস্ট হাজির করা হয় তাইলে হয়তো তিনি ব্লগের পাতা উল্টাইতেও পারেন। আবার কিছু পোস্ট আমার দরকার লাগতে পেরে ভেবেও ওইখানে অ্যাড করছিলাম। বিষয় হইলো, প্রিয় পোস্টের বিষয়টা আমি প্রিয় হিসাবে না নিয়া অন্যভাবে নিছিলাম। এখনও চিন্তাটারে কার্যকর মনে হয়। কেউ যদি কষ্ট পান যে, তার পোস্ট এইখানে যুক্ত হইতে পারতো তবে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে রাখলাম।

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০০৮ দুপুর ২:০৪
৩৪টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×