(মধ্যযুগের বাংলা গীতি কবিতা)
চন্ডীদাস
মরম না জানে ধরম বাখানে
এমন আছয়ে যারা।
কাজ নাই সখি তাদের কথায়
বাহিরে রহুন তারা।।
আমার বাহির দুয়ারে কপাট লেগেছে
ভিতর দুয়ার খোলা।
তোরা নিসাড় হইয়া আয় লো সজনি
আঁধার পেরিলে আলা।।
আলার ভেতরে কালাটি আছে
চৌঙটি রয়েছে তথা।।
সে দেশের কথা এ দেশে কহিলে
লাগিবে মরমে ব্যাথা।
তোরা পর-পতি সনে শয়নে স্বপনে
সতত করিবি লেহা।
তোরা সিনান করিবি নীর না ছুঁইবি
ভাবিনী ভাবের দেহা।।
কহে চন্ডীদাস এমতি হইলে
তবে ত পিরীতি সাজে।
তোরা না হইবি সতী না হবি অসতী
থাকিবি ধরণী মাঝে।
কবি পরিচিতিঃ
নামঃ চন্ডীদাস
জন্মঃ আনুমানিক ১৪শ শতক।
মৃত্যুঃ আনুমানিক ১৫শ শতক।
রাধাকৃষ্ণের আধ্যাত্মিক প্রেমের বিষয় নিয়ে চন্ডীদাস বহু পদ রচনা করেছেন। তবে এই নামের অনেকগুলি পদ প্রক্ষিপ্ত বলেও মনে হয়। রামী সম্পর্কিত কাহিনীর তিনিই সম্ভবত নায়ক। শ্রীচৈতন্য চন্ডীদাসের পদ আস্বাদন করেছিলেন বলে জানা যায়। চন্ডীদাস মূলত বিরহের কবি। তাঁর ধারার প্রধান বৈশিষ্ট্য সরলতা, আন্তরিকতা ও পূর্ণ আত্মসমর্পণচিত্ততা। এখানে তাঁর প্রেমতত্ব বিষয়ক একটি পদ সঙ্কলিত হয়েছে।
সহায়ক গ্রন্থঃ মধ্যযুগের বাঙলা গীতিকবিতা : সম্পাদনা- মুহম্মদ আবদুল হাই ও আহমদ শরীফ; পদাবলী পরিচয় : হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়; মধ্যযুগের কবি ও কাব্য : শঙ্করী প্রসাদ বসু; মানবধর্ম ও বাংলা কাব্যে মধ্যযুগ : অরবিন্দ পোদ্দার; প্রাচীন কাব্য : সৌন্দর্য জিজ্ঞাসা ও নব মূল্যায়ন : ক্ষেত্রগুপ্ত।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০০৮ ভোর ৪:২৪