somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল-মাহমুদ, ফরহাদ মাজহার কিংবা সলিমুল্লাহ গং-এরাঃ লাইনের প্রথমে থাকা মানুষ

১৯ শে এপ্রিল, ২০০৮ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্কুল জীবনে নিশ্চয়ই এসেম্বিলিতে দাড়ানোর অভিজ্ঞতা আছে সবার । অতীব দুঃখের সাথে বলতে হয় এই এসেম্বিলি নামক যন্ত্রনায় সবার সামনে কিংবা সামনের দিকে দাড়ানো আমার জন্য বাধ্যতামুলক ছিল । বলা বাহুল্যে যে তা বলাই বাহুল্য প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত আমি সগর্বে সব্বার প্রথমে দাড়াইয়্যা সার্কাস এর দলনেতা হিসেবেই ছিলাম । কিন্তু আমার সেই শখ আর আহলাদ ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠিবার পর থেকেই কমিতে লাগিল । বড় হচ্ছি বলে কথা !!!! আমার উচ্চতা সেই হারে না বাড়িলেও আমি সব্বার শেষে দাড়াইয়্যা বান্দারামি করতাম । আর আমার মতো স্বল্প দৈর্ঘ্যের সতীর্থ শুধু গজরাইত, কিছু কইত পারত না । কেননা স্কুলে বান্দারামি সহ অন্যান্য বিষয়েও শ্রেষ্ঠতের সুবাদে আমার এই সুবিধা ভোগ, স্বল্প দৈর্ঘ্যের হয়ে দীর্ঘদেহীদের কাতারে দাড়ানো ।

আসল প্রসংগে আসি, প্রসংগ ফরহাদ মজহার এণ্ড গং ।
পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে যাহার সর্বদা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে চায় । আর বিখ্যাত মানুষদের জন্য সেটা একধরণের রোগ । সেই বিখ্যাতদের দিনকাল পড়তির দিকে থাকলে প্রয়োজনে নিজের নাক ভাংগিয়া হলেও পত্রিকার হেড লাইন হতে চায় । সেইটা হালে বিখ্যাত পরের অভাগাদের গল্প ।
কিন্তু তার থেকেও ভয়ংকর হয় সেই মানুষের যাদের অযুত সম্ভবনা থাকে । কিন্তু সকল সম্ভবনা অংকুরেই বিনষ্ট হয় । এরা সম্ভবনাকেই বাস্তব মনে করে ধরাকে সরা জ্ঞান করে । কিন্তু প্রকৃত বাস্তবে এদেরই বলে লোকটার খুবই সম্ভবনা ছিল কিন্তু টিকতে পারল না ,শেষ পর্যন্ত পাবনা !!!

সেই রকম খুবই সম্ভবনাময় আরো ভালো কবি ছিলেন আমাদের আল মাহমুদ । ছিলেন বলা ঠিক নয় কেননা তার সৃষ্টি এখনও আছে । তিনি ছিলেন উদারপন্থি মুক্তমনা মানুষ । মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা অগ্রগণ্য । আর তার বন্ধু কাম রাইভেল ছিলেন শামসুর রাহমান । তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে চাকরি টিকিয়ে রেখে ছিলেন । আর আল মাহমুদ যুদ্ধ শেষে পরবর্তীতে দেখা যায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের সাথে তাদের মুখপাত্র বনে যান । আর শামসুর রাহমান ১৯৭১ এর ভুল দ্বিতীয়বার করেননি । তিনি মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে বড় মনে করে তার জন্যই সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন ।
দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য । আর তাই আল মাহমুদের মতন একজন বিদ্বান অযুত সম্ভবনার কবি অনেকাংশেই পরিত্যাজ্য । শুধু মাত্র সবার সামনে থাকতে , লাইনের সামনে দাড়ানোর নেশায় আল মাহমুদ কখন নিজের লাইন ভেংগে খাটো ভংগুর একটি লাইনের সামনে দাড়িয়েছেন শুধু সামনে থাকতে পারবেন বলে । আর তার আসল লাইনে তিনি পিছিয়ে পড়ছিলেন সেই ক্ষোভেই নিজের স্বত্তাকে অস্বিকার করে লাইনের সামনে দাড়ানোর সেই নেশার কাছে তিনি পরাজিত হলেন । নিজের মুক্তমন উদার চিত্তের বদলে বেছে নিলেন লাইনে সামনে দাড়নোর বিনিময়ে অন্য পথ ।

ফরহাদ মজহার কিংবা সলিমুল্লাহ খান; হাল আমলের জ্ঞানীগুণী মানুষ । ফরহাদ মজাহার তারপরও কিছু সাহিত্য কর্ম করেছেন আর সেখানে সলিমুল্লাহ খান স্রেফ নবীশ । ঊনিশ শতকের ফ্যাশন তাদের পেয়ে বসেছে । প্রতিষ্ঠিত স্বীকৃত বিষয়কে অস্বিকার করার যে ফ্যাশন সেটাই তারা নিয়েছে । ফরহাদ মজহার বলল, মুক্তিযোদ্ধারাও সন্ত্রাসী জঙ্গী, তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তুলনা করলেন ইসলামি(!!!) জঙ্গীদের সাথে । কিছু লোক তাতেই বাহবা দিলেন । বলা বাহুল্য যে এই কিছু লোক কারা !!! নাজমুল হুদা তারচেয়ে ও অনেক দামি কথা বলেছে, জামাত শিবির অখণ্ড পাকিস্থান চেয়ে কোন দোষ করিনি । শুধু নাজমুল হুদা বলেছে বলে কথাটা বেহুদা হয়ে যায় ফরহাদ মজহার বলেই তা জ্ঞানীগুণীর কথা হয়ে যায়!!!

সলিমুল্লাহ খানরা বলে বসলেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কোন সাহিত্যিক নন । তার লেখা এতো অপাঠ্য যে সলিমুল্লাহ খানরা তা পড়ে উঠতে পারিনি । সলিমুল্লাহ খানের আর কোন যোগ্যতা না থাকলেও কোন কিছু কে অগ্রাহ্য করার গুণ কিংবা ফ্যাশন আছে সেটা আমার জানা । আবার অগ্রাহ্য বস্তুকে তথাকথিত যুক্তি দিয়ে গ্রাহ্য করার অচেষ্টা এরা করে । তবে শুনেছিলাম তিনি নাকি পণ্ডিত ব্যাক্তি ব্যাপক পড়াশুনা । কিন্তু যে পাঠক ইলিয়াস পড়তে পারেনা সে তাহলে কেমনতর পাঠক ?? আমার মনে সন্দেহ জাগে । ইলয়াসের 'খোয়াবনামা " পড়ার পর কোন নতুন কিংবা নবীশ পাঠক হলেই বলতাম দাত খিচে "খোয়াবনামা"র প্রথম ৪০ পৃষ্ঠা পড়ে ফেলবি, সেটুকু পড়তেই কষ্ট তারপর আর কষ্ট করতে হবেনা । আপনা-আপনিই পড়া হয়ে যাবে । আমরই ভুল সলিমুল্লাহ কেও সেভাবেই পড়তে বলা উচিত ছিল ।

আসলে এরা লাইনের প্রথমে থাকা মানুষ । যদি লাইন পিছিয়ে পড়ে তবে সাথে সাথে লাইন ভাংগতে এরা দ্বিধা করে না । আরেকটি লাইন বানিয়ে তার প্রথমে থাকা চাই । যে করেই হোক লাইনের প্রথমে থাকা চাই ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০০৮ দুপুর ১:১৭
৩০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×