somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার কাব্যবিলাস : নোয়াখালী [দুই] সংযোজন

১৭ ই এপ্রিল, ২০০৮ দুপুর ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনজুর হাছান লিটন : আমার প্রেরণা

মনজুর হাছান লিটন, নোয়াখালীর মেধাদীপ্ত এক ঝক্ঝকে কবি তিনি। চমৎকার তাঁর হাতের লেখা। আল্পনা করতেন তিনি। ভালো আবৃত্তি করতেন। এখনো শুনি এমন কথা অনেকের স্মৃতিচারণে। মাষ্টারদা সূর্যসেনের পাশাপাশি সমাজতান্ত্রিক আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন তিনি। আমার সমাজতন্ত্রপাঠও তাঁর কাছে। বাঙালি লোকজধারায় অনুরুক্ত দীর্ঘদেহী এ কবি ১৪০০ সাল উপলক্ষে বাঙালি উৎসব আয়োজন করে। যার ফলে পরবর্তীতে নোয়াখালীতে বিজয়মেলা, একুশের উৎসব, স্বাধীনতা উৎসব, বৈশাখী উৎসব আয়োজনে ধারাবাহিকতা নির্মাণ হয়। নোয়াখালী সাংস্কৃতিক উৎসবগুলো প্রাণময় হয়ে ওঠে। হাস্যোজ্জ্বল তিনি, প্রচন্ড অভিমান আর ক্ষোভ নিয়ে প্রয়াত হয়েছেন দুই হাজার দুই সালের ৯ সেপ্টেম্বর। জীবিতকালে প্রতিভার দাম পায় নি এ কবি। প্রয়াণের কিছুদিন আগে রক্ষণশীল সাংস্কৃতিক মোড়লিপণার অদ্ভুত পরিস্থিতির স্বীকার হন তিনি। মফস্বল শহরগুলোতে এ সাংস্কৃতিক চর্চায় ব্যাধির অস্তিত্ব ও প্রকোপ বেশি হয়ে থাকে। নোয়াখালীতে রাজনৈতিক শক্তি দূর্বলতায়, পাশাপাশি কথিত সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিতে এ ব্যাধিটি সাংস্কৃতিক অগ্রসরতায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। যার ধারাবাহিকতায় বিগত সময় পেরিয়ে এখনোর নোয়াখালীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনে বর্তমান।

কদ্দিন আগে পুনশ্চঃ পড়ছিলাম মোতাহের হোসেন চৌধুরীর সংস্কৃতিকথা প্রবন্ধটি। নিজেকে বাঁচাও, নিজেকে মহান কর, সুন্দর কর, বিচিত্র কর-এ হল সংস্কৃতির শিক্ষা। সংস্কৃতি ব্যক্তিকেন্দ্রিক। ব্যক্তির মধ্যে যে 'আমিত্ব' থাকে তাকে মহৎ হৃদয়ের অধিকারী করে ন্যায় ও সৎপথে পারিচালিত করা, সুন্দর করে তোলাই সংস্কৃতির কাজ। দশজনের মাঝে এতজন হওয়া নয় বরং এগারজন হওয়াই সংস্কৃতির নিদের্শ। ভালোর ভেতর দিয়ে জীবনকে সুন্দর, সহজ ও গতিশীল করে তোলাই সংস্কৃতির কাজ। আর জীবনের মূল্যবোধ তৈরি করাও।

সংস্কৃতিকথা'য় যা বলা হলো তার অনুপস্থিতি আমাদের মধ্যে ঢের। যারা সংস্কৃতিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেবল তারা মোড়ল হতে জানেন, অন্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে জানেন। আর পেশিজোর প্রকাশতো আছেই। সংস্কৃতির বিকাশ, উত্তোরণ নিয়ে ভাবেন না। সুবিধা ভোগের আকাঙ্খায় চিন্তা ভাবনায় আমরা আমাদের সংস্কৃতিবান রুচি-নৈতিকতার বোধটুকু হারিয়ে ফেলছি। আবার যারা নেতৃত্ব দেয়ার উপযোগিতা লাভ করেছে তারা পারছে না নেতৃত্ব বিকাশে, তারা পারছে না প্রগতিবাদের অস্ফুরণ ঘটাতে। এ চিত্র কেবল নোয়াখালীর নয়। অন্যান্য শহরগুলোতে অনুরূপ। এ প্রতিবন্ধকতার মাঝেও নোয়াখালীর সন্তানরা এগিয়ে যাচ্ছে তাদের যোগ্যতা-মনন বিকাশে।

যাই হোক, মনজুর হাছান লিটন সৌভাগ্যবশত আমার আমার মেজমামা। প্রিয় মানুষ আমার। আমার প্রেরণা তিনি। তিনি লিখতেন বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক পত্রিকায়। ডাকযোগে পত্রিকাগুলো বাসায়আসতো। ছাঁপার অক্ষরে তাঁর নাম দ্যাখে চমকিত হতাম। ভাবতাম, মানে আয়েশ হতো, ইস আমার নামটা যদি ছাঁপার হতো ! মেজমামার বদৌলতে বাসায় নোয়াখালী কবিতা উৎসব উপলক্ষে আসা কবি-অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ, আসাদ চৌধুরী, মোহন রায়হান_এঁদের সাক্ষাত পাই প্রথমবারের মত। তখন অ্যাতোটা বোধগম্য হয়নি তাঁদের। শুধু বুঝতাম এঁরা বড় মাপের।

মেজমামাকে উপস্থিত রেখে কবিতা লেখার চেষ্টা করলাম। এর পিছনে নাম ছাঁপার লোভ ছিলো বেশ। লিখেও ফেললাম একটা কী দুটো। লুকিয়ে রাখলাম সযতনে। কোথাও পাঠানো কিঙবা কাউকে দ্যাখানোর সাহস আমার ছিলো না।

পাশাপাশি মেজমামার অনুপ্রেরণায় স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ লেখার চেষ্টা করলাম। ছাঁপা হতো না কোথাও।




>> চলমান >> পরবর্তী >> আমার প্রথম কবিতা প্রকাশ
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:১৮
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×