somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগ চরিত মানস...

২১ শে মার্চ, ২০০৮ দুপুর ২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওয়ামি'র ব্লগ বাতিল হইলো, আমি উল্লসিত হইলাম অসংখ্য ব্লগারের সাথে...সাধুবাদ-ধন্যবাদ জানাইলাম...ইত্যবসরে ব্রাত্য রাইসু একখান পোস্ট দিলেন ওয়ামি'র ব্লগ বাতিল হওয়া নিয়া প্রশ্ন উত্থাপন কইরা। তার প্রশ্ন সরল, ওয়ামি'র ব্লগ বাতিল যদি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বা মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা করনের দায়ে হইয়া থাকে তাইলে সেইটা নিয়ম কইরা সকলের জন্যই করা প্রয়োজন...নিয়ম যদি সকলের লেইগা প্রযোজ্য কিম্বা বাস্তবায়িত না হয় তাইলে সেই নিয়ম আর নিয়ম থাকে না...সেইটা হয় অনিয়ম।

ব্রাত্য রাইসু'র মূল কথা ছিলো একব্লগে দুই আইন কেমনে হয় এই প্রসঙ্গে...মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষচারন আর বিরোধীতাকারী, এরা কি সমান জায়েজকৃত বিচার পান? এই প্রশ্নের উত্তরও সরল...না, পান না! কিন্তু তার পরেও আসলে প্রশ্ন থাকে...কথা কওনের অনেক গুলি জায়গা ফাকা হয়। ব্লগের ধোঁয়াটে নীতিমালা মাইনা চললে আসলে কইয়া দেওন যায়...এই ভূমিতে সকল মতাবলম্বীর লেইগাই সমান গুরুত্ব আরোপ করা হইছে, কিন্তু আইনের প্রয়োগে ঝামেলা আছে। আইনের প্রয়োগের চাইতে পরিস্থিতি সামলানোটাই বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়...আর এই রম প্রক্রিয়ার লেইগাই ব্লগে একটা সংস্কৃতি গইড়া উঠছে...যেই সংস্কৃতি কেবল প্রতিরোধের সংস্কৃতি...যেই সংস্কৃতি অনেকটাই উগ্র জাতীয়তাবাদী...কখনো তা হয় ভূখন্ড-ভাষা ভিত্তিক, কখনো তা হয় ধর্মকেন্দ্রীক।

এই সব জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতি-আচরন নিয়া বিরোধ সকল সমাজেই গইড়া উঠে বা উঠতেছে...ট্রান্স-কালচারাল দুনিয়ায় এই তত্ত্ব খুব অপ্রয়োজনীয় তত্ত্বও না। ব্রাত্য রাইসু যেইরম জাতীয়তাবাদের এইসব ঘেরাটোপের ভিতর থাকতে চান না...প্রশ্নের কলেবর উন্মুক্ত করতে চান, আমি নিজেও জাতীয়তাবাদের এইসব প্রকাশ থেইকা দূরে থাকতে চাই। মুক্তির একটা যুদ্ধ আমার কাছে কেবল একটা সময়ের নাম না...চেতনার নাম! কিন্তু এই চেতনা কি যে কোন পবিত্র গ্রন্থের মতো গাইড বই সূলভ আচরনে পর্যবসিত হয়? আমার মনে হয় না...মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা হইলো তার থেইকা পাওয়া উপলব্ধি, শিক্ষা।

মুক্তিযোদ্ধাগো আবেগ ক্ষোভরে আমি শ্রদ্ধা করি, যেমন শ্রদ্ধা করি তাগো হতাশারেও...আর তাই কোন একজন যদি তাগো ক্ষোভরে কুকুরসূলভ আচরনের লগে তুলনা করবার চায়, তারে আমি প্রতিরোধ করতেও চাই। এইখানে ভূখন্ডভিত্তিক জাতীয়তাবোধ যতোনা কাজ করে তার চাইতে অনেক বেশী কাজ করে এই শ্রদ্ধাবোধের চেতনা...একটা যুদ্ধের চেতনারে আমি উপলব্ধি করি তার প্রত্যাশা দিয়া, কখনোই তার অর্জন দিয়া নয়! সকল মুক্তিযোদ্ধারে নিয়া কথা কওয়া আর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বিভ্রান্ত একজন যোদ্ধারে নিয়া কথা কওয়া কখনোই এক হইতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধা শব্দের আর্কাইক ভ্যাল্যু তৈরী হয়...আর তাই সার্বিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা শব্দ নিয়া কোন মতামত দেওনটা স্পর্ধা হয় অনেক সময়...আর সেই মন্তব্য যদি একজন আল বদর পুত্র করে যার রাজনৈতিক সহমর্মীতা আছে ৭১'এর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চেতনার প্রতি, তখন আসলেই প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি আমি। এই প্রতিরোধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে না বরং অনেকটাই ব্যক্তিমানসের বিরুদ্ধে...যার মতাদর্শ যতো না মানবসভ্যতার উন্নয়নের পক্ষে তার চাইতে অনেক বেশী মানবিকতার বিরুদ্ধে...

এই অবস্থানের প্রয়োজনে আমি ব্রাত্য রাইসুর অবস্থান আমি অনেক বেশি প্রয়োজনীয় মনে করি...যেরম মনে করি মানস চৌধুরীর চিন্তাভঙ্গী...প্রশ্ন কইরা নিজেরে একস্তর থেইকা আরেক স্তরে নিয়া যাইতে পারে এই চিন্তার প‌্যাটার্ন। প্রশ্নহীনতা মানুষরে বরং মুক্তির চেতনা থেইকা দূরে সরায়...

এই ব্লগে অনেকরেই দেখি মতের অমিল হইলেই বিরুদ্ধজনরে রাজাকার বা ড়াজাকার অভীধায় অভিহিত করতে কসুর করে না। এইটা হইতে পারে কৌশল...কিন্তু কৌশল হইলেও তা যে কোন ধরনের চিন্তার প‌্যাটার্নের লেইগা হুমকীস্বরূপ দাঁড়ায়...আর এইরম হুমকী কখনোই ভালো কোন পথের খোঁজ দেখায় না...আজকাল সুশীল গালি দেওনের আরেকটা ফ্যাশন শুরু হইছে, এই গালি যারা দেয় তারা নিশ্চিত সুশীলতা কারে কয় সেইটা জানেন না, এইটা আমি হলফ কইরা কইতে পারি। ব্রাত্য রাইসু-মানস চৌধুরীগো আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি...তাগো জীবনযাপন তাগো তর্ক করনের পদ্ধতির লগে আমি পরিচিত বিধায় জানি এই গালি প্রদানকারীগো অনেকের চাইতেই সমাজের সংস্কার আর নিয়মের তোয়াক্কা না কইরা চলা মানুষ এরা...তাগো প্রশ্ন আমাগোও পথ দেখাইতে পারে চিন্তার অবগুন্ঠনমুক্ত করনের প্রক্রিয়ায়...

জামায়াতে ইসলামী বা অন্যান্য মৌলবাদী ধর্মভিত্তিক স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির বিরোধীতা করতে গিয়া যখন আমরা মানস চৌঃ কিম্বা ব্রাত্য রাইসুরে নিয়া রসিকতা করি...তাতে আমরা আরো জটিলতায় আক্রান্ত হই। প্রশ্নহীনতারে নিজেগো আদর্শ হিসাবে নেওনের ধান্দা করি...এই অবস্থা আর ধর্মীয় মৌলবাদের পার্থক্য কি কেউ নিরূপন করবার পারবেন?



১৭টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×