২রা ফেব্রুয়ারী, ২০০৮। সাইফ কোচিং-এর সামনে এসে দাড়ালো রাশেদ।
তারপর আরেকবার বাবার দিকে তাকিয়ে বলল, "না গেলে হয়না?"
বাবা বললেন, "কোচিং-এ পড়তে তোর সমস্যাটা কোথায়? তুই কি ফাকিবাজ হয়ে যাচ্ছিস নাকি?"
রাশেদ বলল, "হয়তো.."
রাশেদ একটু জোকসপ্রিয় ছেলে। ওর বয়স ১৬হল। নবম শ্রেণীতে পড়ে। ওর জোকস এতটাই শক্তিশালী যে তা থেকে ওর বাবা-মা পর্যন্ত নিস্তার পায়না। প্রায় সময়ই সে তার মায়ের সাথে পর্যন্ত জোকস করে। ওর বাবাও ওর মতো। মাঝখানে পড়ে ওর মাও ওদের মতো হয়ে যাচ্ছে।
পরেরদিন। কোচিং-এ ঢুকলো রাশেদ। ঢুকে দেখে ওর এক ক্লাসমেটেও আছে। রাশেদযে খুব ভালছাত্র তা না। ও মোটামুটি ভাল ছাত্র। কিন্তু ওর বন্ধুটি লেখাপড়ায় তেমন একটা ভালনা। কিন্তু কথাবার্তা সুন্দর। কোচিং-এ গিয়ে দেখলো ওর বন্ধু শামীম, আরেকটা অপরিচিত ছেলে সাকিব এবং একটা মেয়ে। মেয়েটার নাম জেবা। কোচিং-এ প্রথম দিন ও বেশিএকটা কথা বলতে পারলো না। ও জোকসপ্রিয় হলেও খুব ভদ্র এবং নিরীহ। ওর বন্ধুদেরকে দেখলো মেয়েটাকে জ্বালিয়ে একেবারে অবস্থা খারাপ করে দেয়। মেয়েটা মাঝেমধ্যে জ্বলে। ওরা এতো মজার মজার কথা বলে যে রাশেদ কি করবে বুঝে ওঠে না। খালি মুখে হাত দিয়ে হাসে। এটাও ওই মেয়ের পছন্দ হয়না।
একদিন ওর বন্ধুরা খুব বেশি দুষ্টামী করছিলো। তা দেখে ওই মেয়েটা একদম এতটাই রাগ করলো যে নাম দেয়া শুরু করে দিল। সাকিলের নাম দিল "লিডার"। শামীমকে বলল "বান্দর" আর রাশেদকে মুখে হাত দিয়ে হাসতে দেখে তোতলানো শুরু করলো। নাম আর খুজে পাচ্ছেনা। তারপর বললো, "আর তুমি, তুমি, তুমি একটা মিচকা শয়তান"
রাশেদের গা জ্বলে গেল কথাটা শুনে। "আমার সাথে ফাইজলামতি কর!!! দেখামু মজা"-মনে মনে রাশেদ বলল। তারপর থেকে ওর বন্ধুদের সাথে ও তাল মেলায়। তারপর আস্তে আস্তে ও বুঝতে পারলো যে ওই ওদের লিডার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যখন দেখতো বেশি ভেজাল তখন আস্তে করে সরে পড়তো। ওর বন্ধুরাও ছিল ওইটাইপের। রাশেদ যতটা সম্ভব কম কথা বলতো মেয়েটার সাথে। কিন্তু কেনযোনো মেয়েটা ওর উপরেই সবসময় ক্ষেপে যেত। রাশেদতো ক্ষেপিয়েই খুশি। ও জ্বলতো আর রাশেদ হাসতো। আর মনে মনে বলতো, "মিচকা শয়তান বলছো না। এইবার বুঝবা মিচকা শয়তান কারে কয়!!!"
তারপর থেকে রাশেদ জেবার আর শিক্ষকদের প্রত্যেকটি কথা খেয়াল করতো। ওর বন্ধুদের কাছে শুনলো যে জেবাকে তাদের ইংরেজী শিক্ষক নাম দিয়েছেন, "লিকুইড" তার মতে, "মেয়েরা তরল পদার্থের মতো। তাদের যে পাত্রে রাখা হয় তারা সে পাত্রের আকার ধারণ করে।" কথাটা ভাল কথা। এটা মেয়েদের একটা গুন। কিন্তু কেনযেন জেবা এই গুনটাকে বেগুন বানিয়ে "লিকুইড" বলা মাত্রই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠতো।"
চলবে........
কাহিনীতে নাম খোজা খুবই কষ্টকর একটা কাজ। লেখার শেষে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এখানে কাউকে হেয় করা কোন উদ্দেশ্য নেই। রাশেদ ভাই ব্যপারটিকে সহজভাবেই নেবেন। আপনি আমার খুব বেশি প্রিয় লোক বলে আপনার নামের হিরোর নামকরণ করলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০০৮ রাত ১২:৪৬