somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোজনামচা ও একটি প্রার্থনা

১৩ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবহাওয়াটা দিন দিন সুন্দর হয়ে যাচ্ছে। যদিও মাঝে মাঝে কিঞ্চিত ব্যাঘাত ঘটায় ঝড়-বৃষ্টি। তবে তা কোনভাবেই ইংলিশ ওয়েদার না। গাছে গাছে ফুল ফুটা শুরু হয়েছে। শহর থেকে একটু দুরে থাকি। বন-জঙ্গলের পরিমান একটু বেশি। ট্রাম ধরতে হাটতে হয় বেশ কিছুক্ষন। তাই আসতে যেতে হরেক রকমের ফুল-ফলের দেখা পাওয়া যায়। যেমন-চেরী, ব্রামবল, আপেল। হেটে যেতে যেতে অথবা ছুটির দিনে সাইকেল থামিয়ে কিছু পেড়ে পকেট ভর্তি হবে।
হয়ত অন্যান্য দিনও সুন্দর ছিলো। কিন্তু দেখার চান্স হতো কম। অন্ধকার থাকতে অফিস শুরু হতো আর যখন বের হতাম তখনও অন্ধকার। তাই সুন্দর অসুন্দর বুঝা যেতো না।

ছোটবেলায় যখন স্কুলে যেতাম তখন এরকম অনেক ফল খাওয়া হতো। বিশেষ করে হরতকি (যদিও তিতা), আমলকি, আমড়া (বরিশালি না, স্হানীয়,ব্যাপক টক), তেতুল, নটকল। এসব গাছ হয়তো কারো টিলার উপরে অবস্হিত। কিন্তু ফলগুলো যারা রাস্তা দিয়ে যায় তাদের জন্য। একমাত্র নটকল ছাড়া অন্যান্যগুলো আমাদের মতো বাদর ছাড়া আর কেউ হাত দিতো না। শুধু কি আর রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া জিনিসগুলো সখ মেটাতো। মাঝে মাঝে মশা, জোকের ভয় উপেক্ষা করে নির্ঝন টিলায় অভিযান। তবে মা টের পেলে সন্ধ্যার পর একটু অন্যরকম আদর করতো। গ্রামের স্কুলে ছিলো না কোন রকমের লাঞ্চের ব্যবস্হা। এসব বন্য ফল আর রঙ্গিন বরফ(আইসক্রিম) আমাদের ক্ষুধা মেটাতো। বিলের ধারের বন্ধুদের হয়তো চাহিদা থাকতো আমলকি,নটকল এগুলোর প্রতি আর আমাদের ছিলো বেতফলের চাহিদা যা ওদের ওখানে বেশি হতো এবং তুলতে প্রচন্ড কষ্ট হতো। দুই গ্রুপেই হতো আদান প্রধান। আমের সিজনে তো কথাই নেই। কাচা আম আছাড় মেরে অথবা দরজার চিপায় ফাটিয়ে লবন মরিচ দিয়ে। আহ, জ্বিবে পানি এসে গেলো।:P

অফিসের সবাই এখন ছুটি নিতে ব্যস্ত। সামার আসলেই কেউ না কেউ অনুপস্হিত। সবগুলো ছুটি একসাথে পাওয়া যাবে না। তাই এক সপ্তাহ অথবা ২/৩দিন করে ছুটি নেওয়া হয়। আমি এখনো শুরু করিনি। বছরে ৪২দিন(শনি,রবি সহ) ছুটি। দেশে যাবার প্লান নেই তাই সামারেই অথবা রোজার মাসটা ছুটি কাটানোর ইচ্ছে।

বছর শেষে অফিস থেকে ক্যালেন্ডার, ডায়রী দেয়। ডায়রী কখনো ব্যবহার করিনি। এতো জরুরী কোন ব্যক্তি আমি না যে ডায়রীতে পরবর্তি এপোয়েন্ট টুকে রাখতে হবে। একথা শুনে বস বলেছিলো আর বেশিদিন না। এখন দেখতেছি তাই। অনেক কিছুই মনে থাকে না। কাভার্ডগুলো বিভিন্ন রকমের ফাইল আর ডকুমেন্টে ভরে যাচ্ছে/:)। টেবিলেও অনেকরকমের টিভাইস। পাওয়ার সাপ্লাই থেকে শুরু করে ভোল্টেজ রেগুলেটর। পড়াশোনাকে বাইবাই বলতে মাস্টার্স শেষ করে চোখ বন্ধ করে চাকরী শুরু করেছি। কিন্তু শান্তি নাই। এখনো বসে বসে ডকুমেন্ট পড়তে হয়। আর স্টেনডার্ডগুলো এতো স্টেনডার্ড করে লেখা হয় যে কয়েকবার না পড়লে মাথা দিয়ে ঢুকে না। ছাত্র থাকতে কোনকিছু না বুঝলে গ্রুফ ফাইট দেওয়া যেতো। এখন তাও সম্ভব না। সবই একা একা সমাধান করতে হয়। এখন মনে হচ্ছে ছাত্র জীবনটাই ভালো ছিলো:((

অবসর চলে যায় কার্টুন আর বিভিন্ন চ্যানেলের খবর দেখে। বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে সব দেশেই খাদ্য ঘাটতি চলছে। গতদিন দেখলাম মিশর, ইউ.কে তে খাদ্য ঘাটতি জন্য ঐদেশের সরকার থেকে সবাই বেশ টেনশনে আছে। অষ্ট্রেলিয়ার উপর ছিলো একটা ডকুমেন্টারী। খরায় ওদের গম চাষ হয়নি। বায়ো ফুয়েলের জন্য খাদ্যগুলো এখন জ্বালানী তেল হিসেবে ব্যবহ্রত হচ্ছে। তৃতীয় বিশ্বের অবস্হা বিশেষ করে যাদের ইকোনমী আমদানী নির্ভর ওদের অবস্হা দিন দিন খারাপ হচ্ছে।

দেশে আমাকে খুব একটা টাকা পাঠাতে হয় না। তাই নিয়মিত কতো ইউরোতে কতো টাকা সেই হিসেব করা হয় না। প্রথম যখন জার্মান মার্ক ছিলো তখন মনে হয় ১ মার্ক = ৩১ টাকা ছিলো সর্বোচ্চ। ইউরো আসার পর এক ইউরো সমান ৪৮ টাকা পেতাম। আর এখন ১০৬ টাকার উপরে। পাউন্ডের অবস্হা তো আরও একধাপ এগিয়ে। টিভি খুললেই দেখা যায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে লোকজনের হাতে টাকার ভান্ডিল। রাখার জায়গা নেই। কিন্তু মুল্য এক ডলারেরও না। দেশের বর্তমান পরিস্হিতি দিন দিন যে অবস্হার দিকে যাচ্ছে তাতে আমরা মনে হয় খুব একটা দুরে নেই। গরীব মানুষগুলো কি খেয়ে বেচে আছে সেইটা আমার কাছে বিরাট একটা বিষ্ময়।
এই অবস্হা থেকে পরিত্রানের উপায় জানা নেই। শুধু একটাই প্রার্থনা, আমার দেশের সাধারন মানুষগুলো যেনো খেয়ে পরে বাচতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৪:৪৪
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×