রহমতের ঘাড়মাথা বাহিয়া উঠিয়া যাওয়া দূরুদূরু কেশের শ্রেণী, আচমকা বাতাসে বাম হইতে ডানে এলাইয়া পড়িলেই পাড়ার সবচেয়ে বড় শিশ্নবাজ, চাবী ঘুরাইতে ঘুরাইতে আসিয়া ফতোয়া দিল, ইহা দুই মাত্রার আচরণ। একই কেশে দুই মাত্রার চরিত্র থাকিতে পারিবেনা। তাহা হইলে তেল আর জেল একাকার হইয়া যাইবে এবং পাড়াতুত বিশুদ্ধ বাতাবরণ নষ্ট হইয়া যাবে, মহিলারা নিশ্চিন্তে চলিতে পারিবেনা। রহমত ফতোয়ার ফজিলত বুঝিতে না বুঝিতেই, শিশ্নবাজ ইয়ারসুলভ ভঙ্গিতে কাছে টানিয়া চোখ টিপ মারিয়া কহিল, পাড়ার মহিলাদের দ্বায়িত্ব তো তার আর তার সাঙ্গপাঙ্গরই উপর, মদনমেহনের কাহিনীটাও তাই নিজেদের মাঝেই ভাগাভাগি করিয়া নেয়া দরকার। তাহারা না দেখিলে পর-পাড়ার লোকেরা উটের গ্রীবার মত চোখ তুলিয়া তাহাদের ভাঁজ গুলাকে লেহন করিতে থাকিবে। ইহা তো হয় না, হইতে দেয়া যায় না। রহমত ফতোয়ার প্রাথমিক ধাক্কা কাটাইয়া উঠিতে ছিল মাত্র, তখনি শিশ্নবাজ আবারো বলিয়া উঠিল, ‌উই যে দেখ; রহমত দেখিল একটি সম্পূর্ণ বাক্স হেলিতে দুলিতে গলদঘর্ম হইয়া এদিকেই আসিতেছে। শিশ্নবাজ কহিল, ‌’উহা গত বছরের রিক্রুট, পাড়ার নারীদের নিরাপত্তা লইয়া লেখাজোকার কর্মটি উহাই এখন দেখিয়া থাকেন, শরীরের তেলের মত আবেগেও তাহার কোন কমতি নাই। তেল দিয়া জগৎ ভাসাইয়া দিবার ক্ষমতা রাখেন, ফলে নারী নিয়া তার কোন আগ্রহ নাই । রহমত তখনো লক্ষ্য করে নাই, শিশ্নবাজের ডান কাঁধের উপরে একগুচ্ছো অভিমান লইয়া একটি বেলুন দুলিতে ছিল, বস্তুত সেটি ছিল শিশ্নবাজের বালকদিগের মায়েদের পটাইবার প্রস্তুতি। কিন্তু চলমান বাক্সটির আগুয়ান গতিতে যে উষ্ণ তেল উৎপাদিত হইতেছিল তাহার একটি ফোঁটা আসিয়া বেলুনে পড়িতেই তাহা ফটাস করিয়া ফাটিয়া গেল। ইহাতে অনুমানের চাইতে এত বেশি শব্দ হইল যে শূন্যস্থান পূরণ করিবার জন্য ফাগুনের সকল ঋণাত্বক বাতাস হু হু করিয়া আসিয়া শিশ্নবাজের রোদ চশমাটি খুলিয়া মাটিতে ফালাইয়া দিল। রহমতের জীবনে উহা ছিল বিপুল বিষ্ময়। সে দেখিল! পাড়ার বিখ্যাত শিশ্নবাজ মাথা নিচু করিয়া ফালাইয়াছে। কিন্তু অঘটন যা ঘটিবার তা ইতোমধ্যে ঘটিয়া গিয়াছে.....শিশ্নবাজের দুই চক্ষুর জায়গায় শূণ্যস্থান এবং তার একটিতে লেখা রহিয়াছে......দলীয় বিশ্বস্ততার প্রমাণ স্বরূপ উত্তলিত....এবং দ্বিতীয়টিতে...বিশুদ্ধ দৃষ্টির জন্য উৎসর্গীকৃত।