somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অস্ট্রেলিয়ার ৪ সমকালীন সাহিত্যিক

০৭ ই মার্চ, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




রিচার্ড ফ্যানেগন

রিচার্ড ফ্যানেগন লেখালেখি শুরু করেন ইতিহাস নিয়ে। ইতিহাস বিষয়ক চার চারটি বই লেখার পর শুরু করেন গল্প উপন্যাস লেখা। তার প্রথম উপন্যাস ডেথ অব এ রিভার গাইড (১৯৯৭)। এই উপন্যাসের কাহিনী বলার আগে চলুন রিচার্ড ফ্যানেগনের জীবন-কাহিনী একটু জেনে নেই। তার জন্ম ১৯৬১ সালে, তাসমানিয়ায়। ১৬ বছর বয়সে তিনি স্কুলের পাঠ চুকে ফেলেন। পরবর্তীতে অক্সফোর্ডে পড়ার জন্য রোডেস স্কলারশিপ পান। দেশে ফিরে বেঁচে থাকার জন্য তাকে বিভিন্ন রকম কাজে জড়াতে হয়Ñ শ্রমিকের কাজ থেকে শুরু করে রিভার গাইডের কাজ পর্যন্ত। তার ডেথ অব এ রিভার গাইড-এর গল্পও বর্ণিত হয়েছে এলাজ কসিনি নামের এক রিভার গাইডের জীবনকে কেন্দ্র করে। শেষ পর্যন্ত যার সলিল সমাধি হয় নদীতেইÑ ডুবে গিয়ে। রিচার্ড ফ্যানেগনের পরের উপন্যাস দ্য সাউন্ড অব ওয়ান হ্যান্ড ক্যাপিং (১৯৯৮)। এক সেøাভানিয়ান অভিবাসীকে নিয়ে এর কাহিনী। এই বইয়ের গল্পটিকেই রিচার্ড চলচ্চিত্রে রূপ দেন এবং নিজেই সেটি পরিচালনা করেন। ১৯৯৮ সালেই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় এবং বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভলে প্রদর্শিত হলে সেটি ‘গোল্ডেন বেয়ার ফর বেস্ট ফিল্ম’ ক্যাটাগরিতে মনোয়ন পায়। রিচার্ড ফ্যানেগনের শেষ উপন্যাস গোল্ড’স বুক অব ফিশ : এ নভেল ইন টুয়েলভ ফিশ (২০০২)। এটি বিলি গোল্ড নামে এক অভিযুক্ত চিত্রশিল্পীর প্রেম কাহিনী নিয়ে রচিত। ১৮২৮ সালের ঘটনা সেটি। এক কালো মেয়ের সঙ্গে বিলি গোল্ডের প্রেম, সামাজিক বাধাÑ সেসবই উঠে এসেছে বইটিতে।


শার্লি হ্যাজার্ড

সিডনিতে জন্ম শার্লি হ্যাজার্ডের, ১৯৩১ সালে। তার বাবা-মার কূটনৈতিক চাকরির কারণে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেরিয়েছেন। মাত্র ১৬ বছরে তিনি হংকং-এ ব্রিটিশ ইন্টিলিজেন্স বিভাগে চাকরি শুরু করেন। পরবর্তীতে আমেরিকার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সচিবালয়ে কাজ করেন। জাতিসংঘের চাকরি ছাড়ার পর শার্লি পুরোদমে লেখালেখি শুরু করেন। তার লেখার ভিতরেও উঠে আসে জাতিসংঘের বিভিন্ন অসংগতির চিত্র। যেমন ১৯৭৩-এ বের হওয়া বইটির শিরোনামই বলে দেয় তাÑ ডিফিট অব অ্যান আইডিয়াল : এ স্টাডি অব দ্য সেল্ফ-ডেস্ট্রাকশন অব দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস। শার্লি হ্যাজার্ড কিছু নন-ফিকশনও লিখেছেন। যেমন কাউন্টারেন্স অব ট্রুথ : দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস অ্যান্ড দ্য ওয়ালদেহিম কেস (১৯৯০), গ্রিন অন ক্যাপ্রি : এ মেমোয়ার (২০০০)Ñ এটি তার বন্ধু লেখক গ্রাহাম গ্রিনকে নিয়ে লেখা, কামিং অব এইজ ইন অস্ট্রেলিয়া (১৯৮৫)Ñ অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনে তার বয়ার লেকচারের সংকলন। শার্লি হ্যাজার্ডের ফিকশন উপন্যাস ৫টিÑ দ্য ইভিনিং অব দ্য হলিডে (১৯৬৬), পিপল ইন গ্লাস হাউজেজ (১৯৬৭), দ্য বে অব নুন (১৯৭০), দ্য ট্রানজিট অব ভেনাস (১৯৮০) এবং পাক্কা ২২ বছর বিরতি দিয়ে লেখেন দ্য গ্রেট ফায়ার (২০০৩)। দ্য গ্রেট ফায়ার ২০০৪-এর ‘ম্যান বুকার প্রাইজ ফর ফিকশন’ এবং ২০০৫-এর ‘ইন্টারন্যাশরাল ইমপ্যাক ডাবলিন লিটারেরি অ্যাওয়ার্ড’-এর শর্টলিস্টে মনোনীত হয়।

টিম উইনটন

টিম উইনটনের যখন ১৯ বছর তখন পার্থের কার্টিন ইউনিভার্সিটি থেকে ক্রিয়েটিভ রাইটিং কোর্স করছেন। সেই তখনই লিখে ফেলেন আস্ত এক উপন্যাস। নাম অ্যান ওপেন সুইমার (১৯৮২)। বইটি ‘অস্ট্রেলিয়ান/ ভগেল ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড’ জিতে যায়। আর এ পুরস্কার জেতার পরই ঘুরে যায় টিম উইনটনের জীবনের লক্ষ্য। এরপর তিনি ফুল-টাইম লেখক বনে যান। শ্যালোস (১৯৮৬) ও কাউডস্টার (১৯৯১) উপন্যাস দুটির জন্য তিনি দু দুবার অস্ট্রেলিয়ার সম্মানজনক পুরস্কার ‘মাইলস ফ্রাংকলিন অ্যাওয়ার্ডস’ পান। তার দ্যাট আই, দ্য স্কাই (১৯৮৬) এতটাই পাঠকপ্রিয়তা পায় যে এটি পরবর্তীতে মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে রূপ দেয়া হয়। তার দ্য রাইডারস উপন্যাসটি ১৯৯৫-তে ‘বুকার প্রাইজ ফর ফিকশন’র শর্টলিস্টে মনোনীত হয় এবং ‘কমনওয়েলথ্ রাইটার্স প্রাইজ’ জেতে। টিম উইনটনের জন্ম পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায়, পার্থেÑ ১৯৬০ সালে। সেখানেই তার পরিপুষ্টি। তাই ঘুরে-ফিরে বারবার তার উপন্যাসে উঠে আসে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রকৃতি। ১৯৮৮-তে তিনি প্রথম শিশুদের জন্য বই লেখা শুরু করেন। প্রথম বইটির নাম ছিল জিস। তার কয়েকটি গল্প সংকলনও রয়েছে। টিম উইনটন তরুণ লিখিয়েদের অনুপ্রাণিত করতে ‘টিম উইনটন অ্যাওয়ার্ড ফর ইয়াং রাইটার্স’ নামে একটি পুরস্কারও চালু করেছেন।


সোনিয়া হার্টনেট

মাত্র পনেরো বছর বয়সেই বেরিয়ে যায় মেয়েটির প্রথম উপন্যাস। নাম ট্রাবল অল দ্য ওয়ে। সেটি ১৯৮৪ সালের কথা। সোনিয়া হার্টনেট ফিকশন লেখেন এবং সবই মূলত টিনএজদের নিয়ে। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলো হলোÑ উইলফুল ব্লু (১৯৯৪), সিøপিং ডগস (১৯৯৫), ব্ল্যাক ফক্সেস (১৯৯৬), থার্সডে’স চাইল্ড (২০০২)। থার্সডে’স চাইল্ড সে বছর গার্ডিয়ান চিল্ড্রেন’স ফিকশন প্রাইজ পায়। সোনিয়া হার্টনেট ২০০০ এবং ২০০৩ সালে ‘দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’ পত্রিকার বছরের সেরা তরুণ ঔপন্যাসিক ঘোষিত হন। ২০০৪-এ প্রকাশিত হয় তার দ্য সিলভার ডংকি এবং ২০০৫-এ সারেন্ডার। শেষের উপন্যাসটি ২০০৬ এর ‘কমনওয়েলথ্ রাইটার্স প্রাইজ’ পায়। সর্বশেষ প্রকাশিত এ বছরের দ্য গোস্ট চাইল্ড উপন্যাসটিও ‘কমনওয়েলথ্ রাইটার্স প্রাইজ’-এর জন্য মনোনীত হয়েছে।
সোনিয়া হার্টনেটের জন্ম মেলবোর্নে, ১৯৬৮ সালে।

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×