৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলনের সূত্রপাত, ৭০ এর নির্বাচনের প্রেক্ষিতঃ -
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে আইউব খানের বিদায়ের আগে শেখ মুজিবুর রহমানসহ আরো অনেক নেতার রিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করে - যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত - এবং তা তার পতনকে ত্বরান্বিত করে। এই সময়ের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে জনতা একের পর এক অন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধিকার আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সেই আন্দোলনগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল -
• আইউব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন
• ১৯৬২ সালের শরিফ শিক্ষা কমিশন বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন - যেখানে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে বাংলা বর্ণমালার পরিবর্তে রোমান হরফ ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছিল
• ১৯৬৬ সালের হামদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বিরোধী আন্দোলন
এই সকল প্রতিরোধ আন্দোলনের ফসল হিসাবে বাঙালির স্বাধিকারে প্রশ্নটি আরো সামনে চলে আসে। তাকে পাকাপাকি রাজনৈতিক রূপ দেন শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে লাহোরে বিরোধী দলগুলোর সন্মেলনে ৬ দফা প্রস্তাব উত্থাপনের মাধ্যমে। ৬ দফা ছিলো মুলত বাঙালির স্বাধিকার ও পাকিস্থানের দুই অংশের মধ্যকার সমস্যাবলী সমাধানের আইনানুগ ও সাংবিধানিক পথনির্দেশ। সকল বিরোধী দল এই প্রস্তাব সমর্থন করলে স্বৈরাচারী আইউব খান ক্ষুদ্ধ ও বিচলিত হয়ে পড়েন। গ্রেফতার হন শেখ মুজিব সহ আরো অনেক নেতা। তাদের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে বিশেষ ট্রাইবুন্যালে বিচার শুরু করা হয়। কিন্তু জনতার প্রবল আন্দোলনের শত শত মানুষের জীবন বিসর্জন - বন্দী আর আহত হওয়ায় প্রবল চাপে শেখ মুজিবুর রহমান ও সঙ্গীদের মুক্তি দেওয়া হয়। এতেও আন্দোলনের তীব্রতা না কমলে ১৯৬৯ এর ২৫ শে মার্চ আরেক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেন। এদিকে শেখ মুজিবুর রহমান কারামুক্তির পর ১৯৬৯ এর ২৬ থেকে ২৮ শে ফেব্রুয়ারীর রাওয়ালপিন্ডির গোল টেবিল বৈঠকে যোগ দিয়ে সরাসরি দুইটি ভিন্ন দেশের প্রস্তাব উত্থাপনের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের ধারনার গোরাপত্তন করেন। এদিকে ইয়াহিয়া খান পাকিস্থান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলি ভুট্টো আর অন্যান্য ইসলামপন্থী দলগুলোর গোপন সমযোতা আর সামরিক গোয়েন্দা রিপোর্টে পাকিস্থানপন্থীদের বিজয়ের নিশ্চিত আভাসের প্রেক্ষিতে ১৯৭০ সাধারন নির্বাচন ঘোষনা করে। কয়েকবার নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করে অবশেষে ডিসেম্বর মাসে সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
-----------
পরের পর্ব: নির্বাচন পরবর্তী ঘটনা পঞ্জি । ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা । ৭ মার্চের ভাষন ,আলোচনার নামে কালক্ষেপনঃ-
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০০৮ রাত ১২:১৫