somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘোরাঘুরি ব্লগ: উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ/ সমুদ্র যেখানে মা (১ম পর্ব)

০৫ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৪:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[ভ্রমনকাহিনী কখনও লিখিনি, প্রথম চেষ্টা। তবে আমি আগাগোড়া পুঁজিবাদী মানুষ, ভ্রমনকাহিনীর চেয়ে গাইড হয়ে যাবার চান্স আছে]

১. যেভাবে কুফা কাটল
সাইপান এয়ারপোর্টে যখন নামলাম, তখন আমি প্রায় বিধ্বস্ত; যতটা না শারীরিক, তারচেয়ে বেশী মানসিক। নর্থওয়েস্ট এয়ারলাইন আর নারিতা এয়ারপোর্টওলাদের কান্ডকারখানা এমন ছিল যেন আমি একটা জলজ্যান্ত সন্ত্রাসী। যাহোক, সেগল্প করে পাঠকের মুড নষ্ট করতে চাইনা, বা পরে আরেকদিন করব হয়ত। এখন ঘুরোঘুরির গল্পই করি। সাইপান হলো নর্থ মারিয়ানা আইল্যান্ডসের রাজধানী, বলা যায় মূল বসতিটা এখানেই। আর এই নর্থ মারিয়ানা আইল্যান্ড বড় বড় (তাও তেমন বড় না) তিনটি দ্বীপ নিয়ে তৈরী, সাইপান, টিনিয়ান আর রোটা আইল্যান্ড। এই আইল্যান্ড হলো পৃথিবীর বুকে আমেরিকার যে কয়েকটি কমনওয়েলথ আছে তার একটি; এর রাজনৈতিক অবস্থানটা আমার কাছেও পরিস্কার না, তবে এটুকু বুঝি সরকার চালায় এলাকার লোকেরাই, শুধু তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে একটু দূরে থাকা গুয়াম দ্বীপের আমেরিকান সেনাসদর। বিনিময়ে সম্ভবতঃ সাইপান সরকারকে আমেরিকার কথামতো চলতে হয়, মানে আমেরিকার অবাধ্য না হলেই হয়।

শীতের ছুটিটা এবার লম্বাই ছিল, একটানা নয়দিন। বাসায় বসে টিভি সিরিয়াল আর ডিভিডিতে একটানা মুভি দেখে কাটিয়ে দেয়া যেত, কিন্তু যখনই জানলাম নর্থ মারিয়ানা আইল্যান্ডের রিজোর্ট ভ্রমণে ভিসা'র ঝামেলা নেই, এক মুহূর্তও দেরী করলামনা। ইন্টারনেট ঘেঁটে দিয়ে দিলাম বুকিং, নর্থওয়েস্ট এয়ারে যাওয়া আসা, আর প্লুমেরিয়া হোটেলে পাঁচরাত।
জানুয়ারীর ৪ তারিখে রওনা আর ৯ তারিখে ফিরে আসা, সব ঠিক হয়ে গেল। ব্যাস্, আমদের আর পায় কে? মনের আনন্দে আমরা, মানে আহেম, আমি আর বউ, স্যুটকেস গোছানো শুরু করলাম। এর মধ্যে এক ছোটভাই বলল, সেও একসাথে যাবে; পারলে কলার চেপে ধরি আর কি! সাবধান করে দিলাম, "খামোশ!! কোনভাবেই যেন ওপথ না মাড়াও"। বাসা থেকে এয়ারপোর্ট যাবার ঝক্কি, এয়ারপোর্টের হাজারো চেকিং, প্লেনের একঘেয়ে ভ্রমন আর খিটখিটে মেজাজের বিমানবালাদের আন্তরিকতাবিহীন সেবা -- এসব কিছু ডিঙিয়ে যখন সাইপান এয়ারপোর্টে আমরা পৌঁছলাম, তখন রাত একটা।

এ্যামেরিকান কমনওয়েলথ বলে কতক্ষণ না জানি কতসব চেক-ফেক করায় ভেবে খানিকটা চিন্তিতই ছিলাম সাইপান এয়ারপোর্টে পৌঁছবার পর। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়েই সব খুবই মসৃণভাবে শেষ হয়ে গেল, আমরা হাসিমুখে ঢুকে পড়লাম সাইপানে। স্ত্রীকে বললাম, "হুমম, কুফাটা কাটলো মনে হয়, নাকি বলো? এতক্ষণ ভাবছিলাম ট্রিপটা ভেজালে ভেজালেই কাটবে, শুরুটাই যা ছিল!!(মানে টোকিও এয়ারপোর্ট আর নর্থওয়েস্টের ক্যাতরামি)। কিন্তু মনে হচ্ছে মর্নিং ডাজন্ট নেসেসারিলি শোও দ্য ডে এভরি টাইম।" বউ বলল, "হুঁ", তাকিয়ে দেখি সে অবাক হয়ে এয়ারপোর্টের দেয়াল দেখছে। আসলেই খুব সুন্দর করে তৈরী দেয়াল, মনে হবে প্রাগৈতিহাসিক পাথর তুলে এনে ছিলে ছেঁচে শেইপআপ করে একটার পর একটা বসিয়ে তৈরী করা। আমি আর কি বুঝি এসবের, ঝটপট ক্যামেরা বের করে কতগুলো ফ্ল্যাশ পিটালাম।

এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়েই দেখি আমাদের ট্যুরের মহিলা দাঁড়িয়ে আছে ট্যুর কোম্পানীর প্ল্যাকার্ড হাতে। প্ল্যাকার্ডে জাপানীতে লেখার চেষ্টা করা হয়েছে, "টেল মি ক্লাব", কিন্তু উচ্চারণ করতে হলে সেটা হবে, "তেরু মি কুরাবু"। না ট্যুর কোম্পানীর দোষ না, জাপানী ভাষাটাই ওরকম। সবকিছু চিড়ায় ভিজিয়ে নরম করে না বললে জাপানী ভাষায় কথা বলাটা যেন হয়ে উঠেনা। শুধু কথায় চিড়া না ভিজলেও, কথাকে যে চিড়ায় ভেজানো যায়, সেটা জাপানী ভাষা না শিখলে বুঝবেননা। দেরী করে আজই শেখা শুরু করে দিন।

আমাদের যে ট্যুর টা আয়োজন করা হয়েছে সাইপানে, তার নাম "পাউ পাউ ট্যুর"। পাউ পাউ লোকাল শব্দ, মানে ভুলে গেছি। হবে, হাসি-খুশী টাইপেরই কিছু একটা হবে। পাউপাউ ট্যুর বললেও সেটা শুধু নামেই। ট্যুরের স্কেজ্যুল হলো, প্রথমদিন এয়ারপোর্ট থেকে আমাদের নিয়ে হোটেলে রেখে আসবে, আর ফেরার দিন হোটেল থেকে আমাদের সময়মতো তুলে নিয়ে যাবে। মাঝের চারদিন আমরা ইচ্ছেমতো ঘুরব, তাদের কোন প্ল্যান নেই। সেটাই ভাল আমাদের জন্য, পতাকা হাতে একটা মহিলা ঘুরে বেড়াবে, আর তার পেছনে পেছনে পিঁপড়ের সারির মতো হেঁটে হেঁটে "চমৎকার", "দারুণ", "আহা!" এসব বলে বেড়াব, সেবইষয়ে আমার কোন উৎসাহ নেই।

এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে পাউপাউ ট্যুরের বাসে করে রওয়ানা দিলাম হোটেলের দিকে। অবাক হয়ে গেলাম, খানিকটা সন্ত্রস্তও। শুনেছি সাইপান বীচ রিজোর্ট হিসেবে বিখ্যাত, স্বভাবতই আমাদের ধারনা ছিল নিশ্চয়ই খুব জমজমাট শহর হবে, অথচ দেখি পুরো পথটা অন্ধকার। যেন আমাদের রায়পুরের কোন এক সুনশান রাস্তা দিয়ে বাসে করে যাচ্ছি। পথে পথে হঠাৎ হঠাৎ একটা করে ছোট সুপারমার্কেট টাইপের দোকান দেখা যায়, যেটার দোতলা, তিনতলাগুলো এ্যাপর্টমেন্ট, আর মাঝে মাঝে রাস্তায় নিভুনিভু সোডিয়াম বাতি। এরমাঝে বাস গাইডের বর্ণনা থেকে জানলাম, দ্বীপটা ২০ কি.মি লম্বা আর ৯ কি.মি চওড়া, এবং আমাদের হোটেলটা দ্বীপের উত্তরে। সেটা নাকি দ্বীপের ডাউনটাউন থেকে অন্ততঃ ছ'সাত কিলোমিটার দূরে, এবং সেই হোটেলের আশেপাশে কোন খাবারের দোকান নেই। আছে দামী দামী কিছু রেস্টুরেন্ট। একই সাথে গাইড আমাদের এও জানিয়ে দিল যে কলের পানিও খাওয়া যাবেনা।

মেজাজটা খিঁচড়ে গেল, সস্তার তিন অবস্থা। সাইপানে বড়বড় যে দশটা হোটেল আছে, প্লুমেরিয়া হোটেল তার মাঝে সবচেয়ে সস্তা, কারণ এটা লোকাল কোম্পানীর। ভেবেছি, শউধু থাকার জন্য এত বিলাসিতা করে কি করব। ভেতরে ভেতরে যে এই কাহিনী কে জানত। আমার মনে হলো, "না, কুফা এখনও শেষ হয়নি। পুরো ট্রিপ জুড়েই কুফাটা ঝামেলা করবে।" বউকে বললামও, সে দেখি কিছু বলেনা, মুখ টিপে হাসে শুধু, কারণ তিনি আবার কুসংস্কারে বিশ্বাসী না। ও শুধু খানিকটা হতাশ এজন্যই যে পুরো দ্বীপটা রাত নামলে এত অন্ধকার হয়ে যাবে এটা ওর ধারনায় ছিলনা।

বাস যখন হোটেলে পৌণনছালো, তখন প্রায় রাতদুটো। বাসগাইড দৌড়োদৌড়ি, ছুটোছুটি করে সবার চাবি-টাবি সংগ্রহ করে আনল, একজন একজন করে কিসব বোঝাতে লাগল, যার অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয় অথবা সহজে ভুলে যাওয়া যায় এমন কিছু। যাই হোক, গাইডটা বিদেয় হবার পর ভাবলাম, এতক্ষণে তবে বিশ্রাম নেয়া যাবে, তবে কিদে পাওয়াতে ভাবলাম কিছু খেতে হবে। হোটেলের কাউন্টারের পাশে একটা লম্বা টেবিলের ওপর অনেক কিছু রাখা, টুকটাক খাবারদাবার। আর পাশের একটা ফ্রিজে পানীয়। সাধারণ দামের চারগুন দাম দিয়ে দুটো কড়া ঝালের কোরিয়ান ইনস্ট্যান্ট নুডলস আর মিনারেল ওয়াটারের বোতল কিনে উপরে উঠে আসলাম। সাততলায় আমাদের রূম, রূমে যাবার করিডোরটা বদ্ধ না, মানে বাহির দেখা যায়। করিডোর যখন ক্রস করছিলাম তখন বাহির পানে দুরে তাকাতেই চোখে পড়ল ঘটঘুটে অন্ধকার। যে অন্ধকার এমনই অন্ধকার, যে মনে হবে এখানেই পৃথিবীর শেষ। আমরা দুজনেই মর্মাহত, এ কোন গ্রামে এসে পড়লাম!

যে রূমটা বুকিং দিয়েছিলাম, ক্যাটেগরীতে সেটা ছিল টুইন রূম। একটা টুইনবেড, একটা ডেস্ক আর ছোট ছোট দুটো সোফা, এই ছিল ক্যাটালগের বর্ণনায়, ছোটরূমেও অসুবিধা নেই, শুধু রাত কাটানোর জন্য আর কি লাগে, ভেবে আমরা টুইন রূমেই সন্তুষ্ট ছিলাম। অথচ চাবি ঘুরিয়ে যখন রূমের দরজা খুললাম, তখন আমি অবাক। আমি প্রায় চীৎকার করে বললাম, "দেখ দেখ, কুফা কেটে গেছে।" আসলেই কুফা কেটে গেছে যেন, বিশাল একরূম, যেটাকে বলা যায় ফ্যামিলি সুইট; একটা বেডরূম, একটা ড্রয়িংরূম শ বিশাল এক সুইট, ছাদগুলো যেন আকাশ ছোঁয়। সম্ভবতঃ রূমটা খালি ছিল বলে দিয়ে দেয়া হয়েছিল, কারণ ফরম ফিলাপের জায়গায় "পারপাস" নামে যে ঘরটা থাকে সেখানে লিখেছিলাম "হানিমুন" (যদিও ছয়মাস দেরী)। মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি আসলে কার না ভাল লাগে! আমাদের দুজনেরই সারাদিনের ক্লান্তি একনিমিষেই দূরে চলে গেল।

মহাআনন্দে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াই। চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। আসলেই নিকষ কালো আঁধার, যেন এরপর আর কিছু নেই! হঠাৎ আমরা দুজনেই খেয়াল করলাম কেন এমন ঘনকালো আঁধার! হ্যাঁ, সমুদ্র, হোটেলের সামনেই বিশাল সমুদ্র। আরেকদফা মন ভাল হতে না হতেই উপরে তাকাই। নিকষ কালো আঁধারের মাঝে কখনও নির্মেঘ পরিস্কার আকাশ দেখেছেন? সে দৃশ্য বর্ণনা করা সম্ভব না; মনে হবে তারায় তারায় আকাশে জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে, ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এমন তারার মেলা এক জীবনে একবার দেখলেও মনে হয়, "আহা!"

(কয়েকটা ছবি যোগ করলাম)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০০৮ দুপুর ২:৫৩
১৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×